মার্কেট-শপিংমল ক্রেতাশূন্য
০৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৫ এএম | আপডেট: ০৫ এপ্রিল ২০২৫, ১২:২৫ এএম

ঈদুল ফিতরের পঞ্চম দিনেও ঢাকায় পরিপূর্ণ কর্মচাঞ্চল্য ফেরেনি। গতকাল শুক্রবার সকাল থেকে রাজধানীর বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অনেক দোকানপাট ও মার্কেট এখনো বন্ধ রয়েছে। আবার ঈদের ছুটির শেষ সময়েও দোকানি-ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীদের অনেকে কর্মস্থলে ফেরেননি। বিভিন্ন জনবহুল এলাকার মার্কেট ও শপিংমলগুলোর অনেক দোকানের শাটার নামানো। খোলা থাকা দোকানগুলোতেও বেচাকেনা কম। বিশেষ করে মোহাম্মদপুর, ধানমন্ডি, নিউমার্কেট, গাউছিয়া ও মিরপুরের বিভিন্ন মার্কেটে অন্য ছুটির দিনের মতো ভিড় নেই। আবার এলাকা ও পাড়া-মহল্লার অনেক দোকানেও তালা ঝুলছে। আর খোলা দোকানগুলোতে বিক্রেতাদের অলস সময় কাটাতেও দেখা গেছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, ঈদের ছুটি শেষ হয়ে এলেও মানুষের মধ্যে এখনো উৎসবের আমেজ বিরাজ করছে। দীর্ঘ রোজা ও ঈদের ব্যস্ততা শেষে মানুষ একটু বিশ্রাম নিতে চাইছে। কর্মস্থলে ফেরার বিষয়েও অনেকে দেরি করছেন। সেজন্য এখনো রাজধানীতে ধীরগতি বিরাজ করছে। এ অবস্থায় ব্যবসা-বাণিজ্য ও স্বাভাবিক কার্যক্রমে ফিরতে আরও কয়েকদিন সময় লাগবে বলে মনে করছেন তারা।
ঈদুল ফিতরের ছুটিকে কেন্দ্র বন্ধ রয়েছে রাজধানীর অন্যতম মার্কেট নিউমার্কেট ও আশপাশের এলাকার অধিকাংশ দোকান। যেসব দোকান খুলেছে, তাও রয়েছে ক্রেতাশূন্য। এখনও কাটেনি পবিত্র ঈদুল ফিতরের উৎসবের আমেজ। খুব শিগগিরই দোকান-পাট পুরোদমে খুলবে বলে আশা ব্যবসায়ীদের।
সরেজমিনে দেখা যায়, নিউমার্কেটে নেই সেই চিরচেনা ভিড়। অধিকাংশ মার্কেটের দোকান বন্ধ রয়েছে। অল্প কিছু দোকান খোলা। তাতেও ক্রেতা খুবই কম, হাতেগোনা। কিছু কিছু দোকানে ক্রেতা রয়েছে। আর বাকি দোকানগুলো ক্রেতাশূন্য। ফুটপাতের কয়েকটি দোকান খোলা ছিল।
নিউমার্কেট এলাকার গ্লোব মার্কেটের এক ব্যবসায়ী বলেন, ঈদুল ফিতরের ছুটিতে তিন দিন দোকান বন্ধ ছিল। ঈদের পর দোকান খোলা হয়েছে। ক্রেতা সংখ্যা কয়েকজন। আশা করি ঈদ উৎসবের আমেজ কেটে গেলে আগের মতো পুরোদমে বেচাকেনা হবে। আরেক ব্যবসায়ী বলেন, এ বছর রমজানে কেনাকাটা অন্যান্য বছরের তুলনায় কয়েকগুন বেশি হয়েছে। ব্যবসাও ভালো হয়েছে, তাতে আমরা খুশি। ঈদের পর আজকে দোকান খুলেছি। কিছুদিন পর ক্রেতা বাড়তে থাকবে। ঈদ করতে এখন সবাই গ্রামের গেছেন। যার যার মতো করে আত্মীয়-স্বজনদের সঙ্গে আনন্দ উৎসব করছেন। ছুটি শেষ হলে তারা ঢাকায় ফিরে আসবেন। নিউমার্কেটের দোকানগুলোও পুরনো রূপে ফিরে যাবে। ব্যবসায়ীরাও ভালোভাবে ব্যবসা করতে পারবেন।
নিউমার্কেট এলাকার কাপড় ব্যবসায়ী তানভীর বলেন, ঈদের আগে প্রচুর বেচাবিক্রি হয়েছে। চারদিন পর দোকান খুলেছি। তবে কাস্টমার (ক্রেতা) নেই। সবাই এখনো বাড়িতে। সামনের সপ্তাহে হয়ত আগের মতো ভিড় হবে। সকাল থেকে কোনো বেচা-বিক্রি হয়নি। সন্ধ্যার পর হয়ত কিছু মানুষজন আসতে পারে। আরেক দোকানি বলেন, ঈদের সময় অনেক ব্যস্ততা যায়। ছুটিতে বাড়ি গিয়েছিলাম, গতকাল ফিরেছি। আজ দোকান খুলেছি কিন্তু মার্কেটে মানুষের আনাগোনা খুবই কম। ফলে বিক্রিও কম। তাছাড়া এখনো স্টাফরা ফেরেনি। ঢাকার বাইরে যাওয়া ক্রেতা এবং শ্রমজীবী মানুষরা এখনো ঢাকায় পুরোপুরি না ফেরায় মার্কেট ও ফুটপাথে প্রাণচাঞ্চল্য দেখা যাচ্ছে না। এ ছাড়া শহরের রাস্তাঘাটেও যানবাহনের চাপ কম। হয়ত আরও কয়েকদিন পরে পরিস্থিতি স্বাভাবিক হবে।
এদিকে, পবিত্র ঈদুল ফিতরের ছুটিতে প্রায় জনশূন্য রাজধানী ঢাকা। কর্মব্যস্ত এই শহরের অধিকাংশ মানুষ গ্রামে চলে গেছেন ঈদ উদযাপন করতে। ফলে দোকানপাট, বাজার, এবং বিশেষ করে রেস্টুরেন্টগুলো অধিকাংশই বন্ধ। এমন পরিস্থিতিতে সবচেয়ে বেশি ভোগান্তিতে পড়েছেন ঢাকায় রয়ে যাওয়া ব্যাচেলরদের জন্য, যারা প্রতিদিনের খাবারের জন্য বাসার কাজের বুয়া, চুক্তিভিত্তিক খাবার অথবা রেস্টুরেন্টের ওপর নির্ভরশীল।
রেস্টুরেন্ট বন্ধ থাকায় ব্যাচেলরদের জন্য খাবারের ব্যবস্থা করা, হয়ে পড়ে অত্যন্ত কঠিন। যাদের বাসায় রান্নার সুবিধা নেই কিংবা যারা নিয়মিত বাইরের খাবারের ওপর নির্ভর করেন, তারা একপ্রকার অনাহার বা অর্ধাহারে দিন কাটাতে বাধ্য হন। স্থানীয় মুদি দোকান বা সুপার শপগুলো খোলা থাকলেও, সেখানে প্যাকেটজাত খাবারের বাইরে তেমন কিছু পাওয়া যায় না। ফলে অনেকেই শুকনো খাবার বা নুডলসেই সারছেন নিজেদের আহার।
ঈদের ছুটিতেও যারা বাড়ি যাননি, বা যেতে পারেননি, তাদের অবস্থাও প্রায় একই। ঢাকায় মেস বা ভাড়া বাসায় থাকা শিক্ষার্থীরা রান্না করতে পারেন না, এবং ঈদের ছুটিতে তাদের বন্ধু-সহপাঠীরা অধিকাংশই গ্রামে চলে যান। ফলে খাবারের অভাবে তাদের সময়টা হয়ে ওঠে অত্যন্ত দুর্বিষহ। অনেকেই বন্ধুদের বাসায় গিয়ে খাবার খাওয়ার চেষ্টা করেন, আবার কেউ কেউ ফাস্টফুডের ওপর নির্ভর করেন, কিন্তু পুরো ছুটির সময় কাটানো একেবারেই কষ্টকর হয়ে পড়ে।
খায়রুল একটি বেসরকারি প্রতিষ্ঠানে চাকরি করেন। তিনি বলেন, আমি একটি মেসে থাকি। প্রতিদিন দুপুরে বাইরে খাই, রাতে খাবার আসে। ঈদের সময় সব রেস্টুরেন্ট বন্ধ, অনেক খুঁজে খুঁজে দূরে একটা রেস্টুরেন্ট পেলাম। আবার রাতের খাবারের কী হবে, তা নিয়ে চিন্তা করতে হয়। পুরো ঈদের সময়টা এভাবেই কাটাতে হবে, এটা বেশ কষ্টকর।
গত ২৮ মার্চ থেকে টানা নয় দিনের সরকারি ছুটি শুরু হয়েছে। যা শেষ হবে ৫ এপ্রিল। সরকারি কর্মকর্তাদের পাশাপাশি কিছু বেসরকারি প্রতিষ্ঠানও ৯ দিন ছুটি দিয়েছে তাদের কর্মকর্তা-কর্মকর্তাদের। স্বাভাবিকভাবেই তারা ছুটি পেয়ে ছুটে গেছেন স্বজনদের কাছে। ছুটি শেষ হলে কোলাহলে পরিপূর্ণ হবে তিলোত্তমা নগরী ঢাকা। আগের রুপে ফিরবে দেশের রাজধানী।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

ফিলিস্তিনবাসীদের শান্তি কামনায় বিশেষ দোয়া মাহফিল

বর্ণাঢ্য ‘ড্রোন শো’ দেখে মুগ্ধ লাখো মানুষ

নতুন বছরে সংস্কার ও নির্বাচন নিয়ে অনিশ্চয়তা দূর হোক : মঞ্জু

বুধবার ঢাকায় আসছেন যুক্তরাষ্ট্রের দুই উপসহকারী পররাষ্ট্রমন্ত্রী

পুরোনো পদে ফিরলেন গাঙ্গুলি

আসছে দক্ষিণ আফ্রিকা ইমার্জিং নারী ক্রিকেট দল

রূপায়ণ সিটিতে শতকন্ঠে বর্ষবরণ

বর্ষবরণকে স্বাগত জানিয়ে গাজীপুরে জেলা বিএনপির শোভাযাত্রা

আমরা নতুন বাংলাদেশে প্রবেশ করেছি: ফারুকী

ভারতীয়দের হজ কোটা ৮০ শতাংশ কমাল সৌদি

চীনা দূতাবাসের সৌজন্যে ঢাকার আকাশে ব্যতিক্রমী ড্রোন শো

নাসিরনগর প্রশাসনের বর্ষবরণে উপস্থাপক ছাত্রলীগ কর্মী, সাংবাদিককে এসিল্যান্ড বললেন কিছু হবে না!

মালয়েশিয়ার সাবেক প্রধানমন্ত্রী আব্দুল্লাহ আহমাদ মারা গেছেন

পহেলা বৈশাখ আমাদের সংস্কৃতি, ভালোবাসা আর আনন্দের প্রতীক : সমাজকল্যাণ উপদেষ্টা

নববর্ষে আইন শৃঙ্খলা সুরক্ষায় প্রশংসনীয় ভূমিকায় র্যাব - ৯

ছাত্রদলের সহ সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করায় কুপিয়ে আহত করলো সভাপতি-সম্পাদক

সর্বাধুনিক যুদ্ধজাহাজ তৈরি করছে উত্তর কোরিয়া

লৌহজংয়ে বিএনপির পহেলা বৈশাখ উপলক্ষে আনন্দ শোভাযাত্রা

নতুন বছরের প্রথমার্ধে এর মাধ্যমে নির্বাচনের মাধ্যমে গণতন্ত্র ফিরে আসবে - প্রিন্স

আন্দোলনে গুলি চালানোর নির্দেশ, নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার গ্রেপ্তার