মুসলিম বিশ্বের নীরবতায় গাজা গণহত্যায় আরও বেপরোয়া ইসরাইল
০৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০২ পিএম | আপডেট: ০৭ এপ্রিল ২০২৫, ০৮:০২ পিএম

গাজা উপত্যকা সহ পুরো ফিলিস্তিন আজ ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। শিশু, নারী ও সাধারণ জনগণ প্রতিনিয়ত দখলদার ইসরাইলি বাহিনীর বর্বরোচিত হামলায় প্রাণ হারাচ্ছেন।প্রতিদিনই নতুন করে লাশের সারি, ধ্বংস হওয়া ঘরবাড়ি, কান্নার দৃশ্য, নিষ্পাপ শিশুদের আহাজারি সোশ্যাল মিডিয়ায় ভাইরাল হচ্ছে। কিন্তু চরম মানবিক বিপর্যয়ের মুখেও মুসলিম বিশ্বে যেন নেমে এসেছে এক রহস্যময় নীরবতা। এই নীরবতা ও আন্তর্জাতিক নিষ্ক্রিয়তা ইসরাইলের এই আগ্রাসনকে আরও প্রশ্রয় দিচ্ছে।
বিশ্বের ৫০টিরও বেশি মুসলিম-প্রধান দেশ থাকা সত্ত্বেও গাজায় চলমান মানবিক বিপর্যয়ের প্রেক্ষাপটে তাদের প্রতিক্রিয়া বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই সীমাবদ্ধ থেকেছে আনুষ্ঠানিক বিবৃতি ও শোকবার্তায়। কোনো কার্যকর কূটনৈতিক প্রচেষ্টা বা ঐক্যবদ্ধ প্রতিরোধ গড়ে ওঠেনি। বর্তমান বিশ্বের সবচেয়ে আলোচিত ও বেদনাদায়ক মানবিক সংকট গাজা উপত্যকার ধ্বংসযজ্ঞের বিরুদ্ধে মুসলিম দেশগুলোর এই নিষ্ক্রিয়তা, অপারগতা কিংবা ব্যর্থতায় ক্ষোভে ফুঁসছে সারা বিশ্বের মুসলিমরা। এ নিয়ে তোলপাড় চলছে নেট দুনিয়ায়।
এদিকে,গাজা উপত্যকায় বর্বর ইসরায়েলের অবিরাম বোমাবর্ষণ এবং হামলায় প্রতিমুহূর্তেই মৃত্যুর কোলে ঢলে পড়ছে হাজারো নিরস্ত্র ফিলিস্তিনি। এমন হৃদয় বিদারক ঘটনা নাড়িয়ে দিচ্ছে পৃথিবীর সকল মুক্তিকামী মানুষের মন। তাই গাজাবাসির ডাকে ইসরাইলি গণহত্যার বিরুদ্ধে আজ বিশ্বের দেশে দেশে বৈশ্বিক ধর্মঘট কর্মসূচি পালিত হয়েছে। এর অংশ হিসেবে বিক্ষোভে উত্তাল হয়ে পড়ে রাজধানী সহ গোটা বাংলাদেশ। স্কুল-কলেজ-বিশ্ববিদ্যালয় ও ব্যবসা প্রতিষ্ঠান বন্ধ রেখে দলমত নির্বিশেষে রাজপথে নেমে আসে লাখ লাখ মানুষ।নিরস্ত্র নিরীহ গাজাবাসীদের প্রতি সংহতি জানিয়ে বিভিন্ন সংগঠনের উদ্যোগে অনুষ্ঠিত হয় বিক্ষোভ মিছিল।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যের অনেক মুসলিম দেশ এখন নিজেদের নিরাপত্তা ও অর্থনৈতিক স্বার্থে পশ্চিমা শক্তি, বিশেষ করে আমেরিকার ওপর নির্ভরশীল। ফলে এসব দেশ ইসরাইলের গণহত্যার বিরুদ্ধে অবস্থান নিতে সাহস পাচ্ছে না।
আন্তর্জাতিক গণমাধ্যমের খবরে বলা হয়, ইসরাইলের বর্বরোচিত হামলায় শহরের পর শহর ধসে পড়েছে, হাজার হাজার নিরীহ মানুষ প্রাণ হারিয়েছে, আর শিশুদের করুণ আর্তনাদ বাতাসে ভেসে বেড়াচ্ছে। নারী, শিশু ও সাধারণ মানুষ প্রতিনিয়ত মৃত্যুর মুখে পতিত হচ্ছে।নেতানিয়াহুর সরকার ত্রাণ বন্ধ করে মানবতাবিরোধী অপরাধের নতুন মাত্রা তৈরি করেছে। হাসপাতাল, অ্যাম্বুলেন্স ও চিকিৎসাকেন্দ্রেও হামলা চালানো হচ্ছে।সর্বোপরি মানুষের জীবনের নিরাপত্তা বলতে কিছুই নেই।গত ১৭ মাসে গাজায় এক লাখ টনের বেশি বোমা ফেলা হয়েছে। গাজা এখন বসবাসের অযোগ্য। সাংবাদিকদেরও সরিয়ে নেওয়া হচ্ছে, কারণ গাজার বাতাস এখন একদম নিরাপদ নয়।
নেটিজেনরা বলছেন, আজকের গাজার চিত্র মানবিক বিপর্যয়ের এক চূড়ান্ত নিদর্শন। তাই যেসব অমুসলিমের ন্যূনতম মানবতাবোধ রয়েছে তারাও এই নৃশংসতার বিরুদ্ধে দেশে দেশে প্রতিবাদে সরব হয়েছেন। মুসলিম বিশ্বের রহস্যজনক এই নীরবতা কোনভাবেই মেনে নেওয়া যায় না। তারা কী জবাব দিবেন মহান আল্লাহর দরবারে।
২০২৩ সালের ৭ অক্টোবর শুরু হওয়া ইসরায়েলি আগ্রাসনে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে গাজার শিশুরা। হামাসের তথ্যমতে, এখন পর্যন্ত প্রায় ১৯ হাজার শিশু নিহত হয়েছে, যার মধ্যে ২৭৪ জন নবজাতক এবং ৮৭৪ জন এক বছরের কম বয়সী। ঠান্ডা, ক্ষুধা ও অপুষ্টিতেও বহু শিশু মারা গেছে। প্রায় ৩৯ হাজার শিশু মা-বাবা হারিয়ে এতিম হয়েছে—গাজা হয়ে উঠেছে আধুনিক সময়ের সবচেয়ে বড় এতিমখানা।
পর্যবেক্ষকদের মতে, যুক্তরাষ্ট্রের নিঃশর্ত সমর্থনে স্পষ্ট, এটি কোনো যুদ্ধ নয়, বরং পরিকল্পিত হত্যাযজ্ঞ। এ পর্যন্ত নিহত হয়েছে ৫০ হাজার ৬৬৯ ফিলিস্তিনি।ক্ষমতা আর দখলের লালসা আজ ইতিহাসে এক নির্মম অধ্যায় রচনা করছে—যেখানে মানবতা চরমভাবে লাঞ্ছিত।
বিভাগ : জাতীয়
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও






আরও পড়ুন

চা বাগানে ছিল ১৫ ফুট লম্বা অজগর, লাউয়াছড়া উদ্যানে অবমুক্ত

সংস্কার কমিশনে ইসলামী আন্দোলনের প্রস্তাব- বাংলাদেশ জনকল্যাণ রাষ্ট্র

‘এনসিপি বাংলাদেশকে বিনিয়োগের স্বর্গরাজ্য বানাতে চায়’

ট্রান্সশিপমেন্ট বাতিল হলেও স্বাভাবিক বাংলাবান্ধা, নেপালে গেল ১৪৭ টন আলু

বোয়ালমারীতে প্রতিপক্ষের হামলায় আহত দেলোয়ার হোসেন মারা গেছেন

ফিলিস্তিনি মুসলমানদের হত্যাকাণ্ডের বিরুদ্ধে যারা রুখে দাঁড়াচ্ছে না, তাদের ধ্বংস অনিবার্য : মির্জা আব্বাস

ইসরাইলি নৃশংস গণহত্যার প্রতিবাদে গাজীপুরে বিএনপির বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ

মানবাধিকার নিয়ে ইউসিবিডি আয়োজিত সেমিনারে মত প্রকাশের স্বাধীনতার ওপর গুরুত্বারোপ

নোয়াখালীর কোম্পানীগঞ্জে যুবলীগ নেতাসহ গ্রেফতার ৮

পোল্যান্ডে বাংলাদেশের দূত সাবেক আইজিপি ময়নুল ইসলাম

‘গাজা ও রাফা ইসরায়েলের নৃশংস গণহত্যা’র প্রতিবাদে গণসংহতি আন্দোলনের বিক্ষোভ সমাবেশ কাল

ইসরাইলী বর্বরতার বিরেদ্ধে বরিশালে বিএনপি’র বিক্ষোভ

বিদ্যমান বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক আরও জোরদার করতে চায় ঢাকা-মস্কো

ট্রাম্পের শুল্ক নীতি স্থগিতের পরে ঘুরে দাঁড়াল এশিয়ার শেয়ার বাজার

ট্রাম্প প্রশাসনের বিরুদ্ধে শুল্কের মাধ্যমে শেয়ার বাজারে ‘কারসাজির’ অভিযোগ

সবুজ প্রবৃদ্ধির জন্য অংশগ্রহণমূলক বাণিজ্য ও কৌশলগত অংশীদারিত্বে জোর দিলেন সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

সান্দা বিশ্বকাপে স্বর্ণপদক জিতেছেন ইরানের দারিয়াই

চিলমারীর দুই থানার মোড়ে ঘোষণা দিয়ে লড়াই, নিয়ন্ত্রণে আনলেন সেনাবাহিনী ও স্থানীয় প্রশাসন

এথেন্স চলচ্চিত্র ও ভিডিও উৎসবে তিন ইরানি ছবি

হাইকোর্টে আগাম জামিন পেলেন ‘ছোট সাজ্জাদের’ স্ত্রী তামান্না