সরকার আগুন নিয়ে খেলা শুরু করেছে: মির্জা ফখরুল
১৭ এপ্রিল ২০২৩, ০৯:৫৬ পিএম | আপডেট: ০১ মে ২০২৩, ১২:১৫ এএম
সরকার মার্কেটে আগুন নিয়ে খেলা শুরু করেছে বলে অভিযোগ করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, সরকার এখন আগুন নিয়ে খেলা শুরু করেছে। তারা একদিকে বাজারে বাজারে আগুন নিচ্ছেন, অন্যদিকে সমস্ত ইচ্ছা-আশা-আকাক্সক্ষাগুলোকে আগুনে ঝলসিয়ে দিচ্ছেন। পুরো ব্যাপারটাই হচ্ছে তাদের (সরকার) এগুলো সব সাজানো, তৈরি করা এবং এই তৈরি করা নিয়ে সেজন্য বললাম আজকে তারা আগুন নিয়ে খেলা শুরু করেছে। এই আগুন নিয়ে খেলা করে লাভ হবে না, আগুনে কিন্তু আপনারাই (ক্ষমতাসীনরা) সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হবেন।
সোমবার (১৭ এপ্রিল) রাজারবাগে হোটেল হোয়াইট হাউজে গণতন্ত্র মঞ্চের উদ্যোগে রাজনীতিবিদের সম্মানে আয়োজিত ইফতার মাহফিলে তিনি এসব কথা বলেন।
নিউ সুপার মার্কেটের অগ্নিকা-ের দায় সিটি করপোরেশনের মন্তব্য করে করে মির্জা ফখরুল বলেন, প্রধানমন্ত্রী নিউ সুপার মার্কেটে আগুন লাগার পরে তিনি বললেন যে, এটাতে বিএনপি এবং জামায়াত জড়িত আছে কিনা তা খতিয়ে দেখতে হবে। অথচ সুপার মার্কেটের ব্যবসায়ীরা পরিস্কার করে বলছেন, প্রত্যেকটি পত্রিকাতে এসেছে যে, ঢাকা সিটি করপোরেশনের লোকেরা এসেছিলো সকাল বেলা ভোর সাড়ে ৫টার সময়ে, তাদের পরনে ছিলো সিটি করপোরেশনের পোষাক, তারা ড্রিল মেসিন নিয়ে এসেছিলো এবং যে ফুট ব্রিজটা সেটা তারা যখন ড্রিল দিয়ে সিড়ি ভাঙছিলোৃ তখন আগুন লেগে যায়। তারা চেষ্টা করেছিলো আগুন নেভানোর জন্য যখন আগুন ছড়িয়ে পড়ে তখন তারা পালিয়ে গেছে।
আন্দোলন একমাত্র পথ উল্লেখ করে বিএনপি মহাসচিব বলেন, আমরা এখন যে জায়গায় এসে দাঁড়িয়েছি সেই জায়গায় আমাদের একটাই মাত্র পথ খোলা আছে সেই পথ হচ্ছে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে জনগণকে সংগঠিত করে এই ভয়াবহ যে একটা দানবীয় সরকার আমাদের ওপরে চেপে বসে আছে তাদেরকে সরিয়ে জনগণের সরকার প্রতিষ্ঠা করতে হবে। আমরা আন্দোলন শুরু করেছি আমাদের সেই একাত্তর সালের স্বপ্নকে বাস্তবায়ন করবার জন্য, আমরা আন্দোলন শুরু করেছি আমাদের অধিকারকে ফিরে পাবার জন্য, ভাতের অধিকার, ভোটের অধিকার, বেঁচে থাকবার অধিকার, একটি সুন্দর কল্যাণমূলক রাষ্ট্র নির্মান করবার জন্য সেই আন্দোলন শুরু হয়েছে, সংগ্রাম শুরু হয়েছে। আজকে আমরা মানুষের কাছে এই কথাটা বলতে চাই, এখন এই সময় এসেছে যে, আমাদের সবাইকে রুখে দাঁড়াতে হবে, আমাদের সবাইকে একজোট হয়ে আমাদের রাজনৈতিক দল, ব্যক্তি, সংগঠন সকরে একযোগে এই সরকার যারা আমাদের সমস্ত স্বপ্নগুলোকে ভেঙে দিয়েছে, যারা আমাদের অর্জনগুলোকে ধবংস করেছে, তাদেরকে সরিয়ে সত্যিকার অর্থেই জনগণের একটি সরকার, জনগণের একটি পার্লামেন্ট গঠন করতে হবে।
তিনি বলেন, আমরা সবাই একসাথে এক জোট হয়ে ১০ দফা কর্মসূচি দিয়েছে, আমরা রাষ্ট্র সংস্কারের কথা বলেছি। আসুন আমরা সবাই ঐক্যবদ্ধ হয়ে বাধ্য করি এই সরকারকে যে, ১০ দফা দাবি মেনে নিতে। বিরোধী রাজনৈতিক দলসমূহকে সমস্ত শক্তি নিয়ে ঐক্যবদ্ধভাবে জনগণের সংগ্রামে শরিক হওয়ার আহ্বানও রাখেন বিএনপি মহাসচিব।”
মির্জা ফখরুল বলেন, আজকে সেই আওয়ামী লীগ আমি জানি না সেই আওয়ামী লীগ আছে কিনা, সেই আওয়ামী লীগ যুদ্ধের সময়ে একটা ইতিবাচক নেতৃত্বে মধ্যে দিয়ে চলছিলো সেই আওয়ামী লীগের হাতেই আজকে মানুষের সমস্ত আশা-আকাংখাগুলো ভেঙ্গে চূরমান করেছে। সবচেয়ে বড় যে অপরাধটি আওয়ামী লীগের এই সরকার করেছে তা হলো যে, আমাদের সমস্ত গণতান্ত্রিক প্রতিষ্ঠান তারা সম্পূর্ণভাবে ভেঙে দিয়েছে এবং এই প্রতিষ্ঠানগুলোকে ভেঙে দেওয়ার মধ্য দিয়ে বাংলাদেশকে সত্যিকার অর্থে ব্যর্থ রাষ্ট্রের দিকে ঠেলে দেয়া হচ্ছে। আওয়ামী লীগ পুরনো রাজনৈতিক দল যে এতো রাজনৈতিক দেউলিয়াপনার মধ্যে পড়েছে এটা আমরা ভাবতেও পারি না। নির্বাচনের কথা বলছে, সংবিধানের কথা বলছে। সংবিধান কারা পরিবর্তন করেছে, কিভাবে করেছে সেটা এদেশের সব মানুষ জানে। আমরা পরিস্কার করে বলতে চাই এদেশের মানুষ তারা তাদের অধিকার ফিরে পেতে চায়। ন্যুনতম যে অধিকার তারা ভোট দিয়ে প্রতিনিধি নির্বাচন করবে, নির্বাচনের মধ্য দিয়ে সরকার গঠিত হবে, তাদের কথা বলার জন্য পার্লামেন্টে লোক থাকবে এবং সেখানে কথা বলতে পারবে- আজকে সেই অবস্থাকে ধবংস করে দিয়েছে এই সরকার।
গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয়কারী জোনায়েদ সাকির সভাপতিত্বে ও গণতন্ত্র মঞ্চের নেতা রাশেদ খানের সঞ্চালনায় ইফতারপূর্ব আলোচনায় জেএসডির আসম আবদুর রব, বিএনপির আবদুল মঈন খান, নাগরিক ঐক্যের মাহমুদুর রহমান মান্না, গণফোরামের মোস্তফা মোহসীন মন্টু, বাংলাদেশের বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাইফুল হক, জাসদের নাজমুল হক প্রধান, জাতীয় পার্টি(কাজী জাফর) মোস্তফা জামাল হায়দার, কল্যাণ পার্টির সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, গণদলের এটিএম গোলাম মাওলা চৌধুরী, রাষ্ট্র সংস্কার আন্দোলনের হাসনাত কাইয়ুম, জাগপার খন্দকার লুৎফুর রহমান, এনপিপির ফরিদুজ্জামান ফরহাদ, বিকল্পধারা বাংলাদেশের অধ্যাপক নুরুল আমিন ব্যাপারী, পিপলস পার্টির আবদুল কাদের, প্রগতিশীল ন্যাপের পরশ ভাসানী, বক্তব্য রাখেন।
পরে বিএনপির বরকত উল্লাহ বুলু, জহির উদ্দিন স্বপন, শ্যামা ওবায়েদ, জাতীয় পার্টির আহসান হাবিব লিংকন, গণঅধিকার পরিষদের রেজা কিবরিয়া, নুরুল হক নূর, ভাসানী অনুসারী পরিষদের শেখ রফিকুল ইসলাম বাবলু, জেএসডির শহিদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, পিপলস পার্টির বাবুল সর্দার চাখারী, ন্যাপ ভাসানী আজহারুল ইসলামসহ বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতাদের নিয়ে ইফতার করেন বিএনপি মহাসচিব।#
বিভাগ : রাজনীতি
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
গণমাধ্যমে বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ প্রচারের ওপর গুরুত্বারোপ করলেন উপদেষ্টা
বগুড়ার ধুনট পল্লীতে জয় বাংলা স্লোগান দিয়ে ব্যবসায়ীর ৩৫ হাজার টাকা ছিনতাই
দীর্ঘ ১৩ বছর পর দেশে ফিরছেন কায়কোবাদ
সিদ্দিরগঞ্জে নির্মাণাধীন ভবনের ছাদ থেকে পড়ে বিদ্যুতায়িত, দুই শ্রমিকের মৃত্যু
নাচোলে পিয়ারাবাগানে এক গৃহবধূ খুন
৫ জানুয়ারি থেকে ৪৪তম বিসিএসের মৌখিক পরীক্ষা শুরু
নোয়াখালীর সুবর্ণচরে মোটর থেকে বৈদ্যুতিক তার খুলতে প্রাণ গেল যুবকের
কারখানায় আগুন, পরিদর্শনে হাতেম
নির্বাচনের তারিখ নিয়ে যা জানালেন প্রধান নির্বাচন কমিশনার
কবি জসীমউদ্দিনের মেজ ছেলে ড. জামাল আনোয়ার আর নেই
ভাঙ্গায় দুই গ্রামবাসীর মধ্যে সংঘর্ষে নারী-পুরুষসহ আহত- ১০
আমাদের সংস্কৃতির অংশ হলো সব ধর্মের মাঝে সম্প্রীতি ও সহাবস্থান: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
রাতের আধারে অসহায় ব্যাক্তিদের বাড়ির দরজায় গিয়ে কম্বল দিলেন ইউএনও
জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রশংসা করলেন রাহাত, জানালেন নিজ অনুভূতি
সাবেক দুদক কমিশনার জহরুল হকের পাসপোর্ট বাতিল, দেশত্যাগে নিষেধাজ্ঞা
শ্রীপুরে ভুয়া মেজর আটক
প্রশ্ন: কিসব কারণে বিয়ের বরকত নষ্ট হয়ে যায়?
মানবাধিকার প্রতিষ্ঠার অনুপম দৃষ্টান্ত মুহাম্মদুর রাসূলুল্লাহ (সা:)
আল-কুরআন তাজকেরায়ে মীলাদ নামায়ে আম্বিয়া (আ:)
ভারত উপমহাদেশে মুসলিম সভ্যতার জাগরণে আবুল হাসান আলী নদভির শিক্ষাচিন্তা