জনগণ হত্যার সঠিক পরিসংখ্যান জানতে চায়: মির্জা ফখরুল
২৬ জুলাই ২০২৪, ০৮:০৭ পিএম | আপডেট: ২৬ জুলাই ২০২৪, ০৮:০৭ পিএম
গত কয়েকদিনে কতজন নিরীহ মানুষকে হত্যা ও পঙ্গু করা হয়েছে জনগণ তার সঠিক পরিসংখ্যান জানতে চায় বলে মন্তব্য করেছেন বিএনপি মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর। তিনি বলেন, শুধু হতাহতের পরিসংখ্যানই নয়, জনগণের টাকায় কেনা কি পরিমান গোলাবারুদ, টিয়ার সেল, সাউন্ড গ্রেনেড শিক্ষার্থীদের ওপর ব্যবহার করা হয়েছে তার হিসাবও জনগণ জানতে চায়। রাষ্ট্রের টাকায় কেনা হেলিকপ্টার দিয়ে মানুষ হত্যার জবাব জনগণ একদিন কড়ায়-গন্ডায় আদায় করে নিবে। শুক্রবার গণমাধ্যমে পাঠানো এক বিবৃতিতে তিনি এসব কথা বলেন।
মির্জা ফখরুল বলেন, একটি স্বাধীন দেশে সরকারের দায়িত্ব হলো-রাষ্ট্রীয় গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা এবং জনগণের জানমালের নিরাপত্তা দেওয়া, গত কিছুদিন যাবত কোটা সংস্কার আন্দোলনে কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীরা যখন যৌক্তিক দাবি নিয়ে আন্দোলনরত তখন সেই মুহূর্তে সরকার প্রধানসহ সরকারি দলের নেতা-মন্ত্রীরা তাদেরকে তাচ্ছিল্য করে আওয়ামী সন্ত্রাসীদেরকে নির্দেশ দেয় তাদেরকে নির্মূল করার। সরকারি দলের সন্ত্রাসী এবং আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরা যৌথভাবে জনগণের টাকার কেনা গুলি, টিয়ারসেল, রাবার বুলেট, সাউন্ড গ্রেনেড শিক্ষার্থীদেরকে লক্ষ্য করে নিক্ষেপের মাধ্যমে শত শত নিরীহ ছাত্র-ছাত্রীকে গণহারে হত্যা এবং হাজার হাজার ছাত্র-ছাত্রীকে আহত করেছে যা দেশবাসীসহ বিশ্ববাসী অবলক্ষণ করেছে। এই নির্মম অত্যাচারে দেশের সকল শ্রেণী- পেশার মানুষ হতবাক ও ক্ষুদ্ধ হয়েছে এবং কোমলমতি ছাত্র-ছাত্রীদের পাশে দাঁড়িয়েছে। বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলও একটি দায়িত্বশীল রাজনৈতিক দল হিসেবে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনকে নৈতিক সমর্থন দিয়েছে এবং সারা দেশে কর্মসূচিও পালন করেছে। কিন্তু অবৈধ সরকার মরিয়া হয়ে রাষ্ট্রের সকল বাহিনীসহ দলীয় সন্ত্রাসীদেরকে সাধারণ মানুষ, বিএনপি নেতা-কর্মী ও শিক্ষার্থীদের বিরুদ্ধে লেলিয়ে দিয়ে ব্লক রেড দিয়ে গ্রেফতার করছে। এখন পর্যন্ত তাদের হিসাবে প্রায় ৩ হাজার গ্রেফতার করছে। যা জাতির জন্য অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক ও লজ্জার।
তিনি বলেন, ছাত্র জনতার ন্যায় সংগত আন্দোলনকে দমন করার জন্য সেনা বাহিনীকে ব্যবহার কখনই গ্রহণযোগ্য নয়। অবিলম্বে সান্ধ্য আইন প্রত্যাহার এবং সেনা বাহিনীকে ব্যারাকে ফিরিয়ে নেওয়ার দাবী জানাচ্ছি। বরাবরই আওয়ামী লীগ লাশের উপর দিয়ে ক্ষমতায় গিয়েছে এবং ক্ষমতা ধরে রাখার জন্য গত কয়ক দিন যে পরিমাণ নিরীহ ছাত্র-মানুষকে গুলি চালিয়ে পাখির মতো হত্যা করেছে, গণহত্যা চালিয়েছে তা পাকিস্তানী হানাদার বাহিনীর কথাই মনে করিয়ে দেয়।
বিএনপি মহাসচিব বলেন, যে সরকার ক্ষমতায় থাকার জন্য নির্মমভাবে নিরীহ মানুষকে হত্যা করতে পারে এবং রাষ্ট্রীয় সম্পদ ও স্থাপনার নিরাপত্তা দিতে পারে না সেই সরকারের ক্ষমতায় থাকার কোন নৈতিক অধিকার নেই। তাই এই অবৈধ সরকারকে বলবো- অবিলম্বে পদত্যাগ করে জনগণের জানমালের নিরাপত্তা বিধান করার লক্ষ্যে নির্দলীয় নিরপেক্ষ সরকারের কাছে ক্ষমতা হস্তান্তর করে নিরপেক্ষ নির্বাচনের ব্যবস্থা নিন।
বিএনপি মহাসচিব এই গণহত্যা, নির্যাতন, দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব রক্ষার স্বার্থে সকল দেশ প্রেমিক মানুষ, রাজনৈতিক দল, ছাত্র, শিক্ষক, কৃষক, শ্রমিক ও পেশাজীবীদের ঐক্যবদ্ধ হয়ে ভয়াবহ ফ্যাসীবাদী শাসক গোষ্ঠীকে পরাজিত করে জনগণের গণতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা প্রবর্তনের দূর্বার সংগ্রামে অবতীর্ণ হওয়ার আহ্বান জানান।
গ্রেফতারকৃতদের গুম করে রেখে নির্যাতন করা হচ্ছে অভিযোগ করে মির্জা ফখরুল বলেন, গ্রেফতারকৃত নেতৃবৃন্দকে গুম করে রেখে নির্যাতন চালিয়ে তিন/চার কিংবা পাঁচ দিন পর আদালতে হাজির করা হচ্ছে যা আইন ও মানবাধিকারের চরম লঙ্ঘন। দেশের নাগরিকদেরকে গুম করে রাখার ভয়াবহ সংস্কৃতি চালু রেখে মানুষের মনে ভীতি সঞ্চার করা হচ্ছে। সরকারকে এ ধরণের লোমহর্ষক কর্মকান্ড পরিহারের আহ্বান জানান তিনি।
বিএনপির অন্যতম এই শীর্ষ নেতা বলেন, বৈষম্য বিরোধী আন্দোলনে শিক্ষার্থীদের ওপর সরকারদলীয় সন্ত্রাসী ও আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী যৌথভাবে হামলা চালিয়ে ইতিহাসে হতাহতের যে বর্বরোচিত নজীর স্থাপন করেছে তা দেশ-বিদেশের সকল স্বৈরাচারের নির্মম নিষ্ঠুরতাকেও হার মানিয়েছে। অবৈধ সরকার নিজেদের সন্ত্রাসী কর্মকা- ও ব্যর্থতা আড়াল করতে বিএনপিসহ বিরোধী দলগুলোর নেতা-কর্মী এবং সাধারণ মানুষকে নির্বিচারে গ্রেফতার করে যাচ্ছে। তারই ধারাবাহিকতায় বিএনপির যুগ্ম মহাসচিব শহীদ উদ্দিন চৌধুরী এ্যানী, বরিশাল মহানগর বিএনপি'র সদস্য সচিব এ্যাডভোকেট জিয়াউদ্দিন সিকদার, নাটোর জেলা বিএনপির সদস্য সচিব রহিম নেওয়াজকে গ্রেফতার এবং ঢাকা মহানগর দক্ষিণ বিএনপি'র গ্রেফতারকৃত সাবেক যুগ্ম আহবায়ক মোশাররফ হোসেন খোকনকে ৩ দিন পর আদালতে তোলা হয়েছে। অব্যাহত গতিতে দেশব্যাপী বিরোধী দলের নেতাকর্মী বাড়ি বাড়ি তল্লাশী হচ্ছে, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান আব্দুল আউয়াল মিন্টুর বাসাসহ অনেক সিনিয়র নেতৃবৃন্দের বাসায় তল্লাশী চালাচ্ছে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী। সাধারণ মানুষকে গ্রেফতার, কারান্তরীণ ও জুলুম-নির্যাতনের ঘটনায় বিবৃতিতে গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে তিনি।
বিএনপি মহাসচিব বিবৃতিতে বিনা অপরাধে গ্রেফতারকৃত বিএনপির উপরোল্লিখিত নেতৃদ্বয়সহ গ্রেফতারকৃত সকল নেতৃবৃন্দের বিরুদ্ধে দায়েরকৃত মিথ্যা মামলা প্রত্যাহার এবং অবিলম্বে সকলের নিঃশর্ত মুক্তির জোর আহ্বান জানান।###
বিভাগ : রাজনীতি
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
এক সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ল ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার
প্রবাসীদের যে জন্য সুখবর দিলো মালয়েশিয়া
জাবি শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় মামলা, তদন্ত কমিটি গঠন, ফটকে তালা, মশাল মিছিল
মাদকের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে থাকবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল
"নতুন সিনেমা নিয়ে ফিরছেন গ্লোবাল তারকা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি"
ড. ইউনূসকে নিয়ে খালেদা জিয়ার পুরোনো যে বক্তব্য ভাইরাল
নতুন নির্বাচন কমিশনের প্রতি ইসলামী আন্দোলনের শুভ কামনা
আলোচনায় ফ্যাসিস্ট হাসিনার ‘টুস করে ফেলে দেয়ার’ হুমকি
দীর্ঘ ১৫ বছর সাংবাদিকরা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে পারেনি: খোকন
'ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে রয়েছে অভিনেতা তারিক আনাম খানের নাটক'
বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান
ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বোর্ড অব গভর্নর সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সম্বর্ধনা
সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সংবর্ধনা
লালমোহনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত যুবদল নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু
চকরিয়ার বিএনপি নেতা আবু তাহের চৌধুরীর মৃত্যুতে সালাহউদ্দিন আহমদ ও হাসিনা আহমদের শোক
উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
বেইজিং সংস্কৃতি ও পর্যটন ব্যুরো ও আটাবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ
দেশের বাজারে ফের বাড়ল সোনার দাম
সবচেয়ে কম মূল্যে বাংলাদেশকে বিদ্যুৎ দিচ্ছে নেপাল: নেপাল রাষ্ট্রদূত