কৃষিভিত্তিক উন্নতি নিশ্চিত করতে হবে
১৪ জুন ২০২৩, ০৭:৫১ পিএম | আপডেট: ১৫ জুন ২০২৩, ১২:০১ এএম
![](https://dailyinqilab.com/mediaStorage/content/images/2023June/1-20230614195146.jpg)
বাংলাদেশ কৃষিনির্ভর এবং অত্যন্ত জনঘনত্বের দেশ। তবুও খাদ্য সংকট নেই তেমন। কৃষির এই ঈর্ষণীয় উন্নতির কারণেই এটা হয়েছে। সম্প্রতি এফএও দেশভিত্তিক কৃষিপণ্য উৎপাদনের পরিসংখ্যান প্রকাশ করেছে ২০২১ সালের তথ্যের ভিত্তিতে। সে মতে, প্রাথমিক কৃষিপণ্য (শুধু ফসল) উৎপাদনে বাংলাদেশের অবস্থান বিশ্বে ১৪তম। উপরন্তু বাংলাদেশ ২২টি কৃষিপণ্য উৎপাদনে বিশ্বে শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় স্থান পেয়েছে। তন্মধ্যে পাট, সুপারি ও শুকনা মরিচে দ্বিতীয়। চাল, রসুন ও অন্যান্য শ্রেণিভুক্ত চিনি জাতীয় ফসলে তৃতীয়। জাম, বরই, করমচা, লটকন ইত্যাদি বেরিজাতীয় ফল ও অন্যান্য শ্রেণিভুক্ত সুগন্ধি মসলায় চতুর্থ। মসুর ডাল ও গ্রীষ্মম-লীয় ফল কাঁঠাল, লিচু ইত্যাদিতে ষষ্ঠ। পেঁয়াজ, আলু, আদা, বেগুন, শিমের বিচি ও নারকেলের ছোবড়ায় সপ্তম। চা ও কুমড়ায় অষ্টম। আম, পেয়ারা ও গাবজাতীয় ফল, ফুলকপি ও ব্রকলি এবং মটরশুঁটি ও পাখির খাদ্য (বীজ) শ্রেণিতে নবম। মোট উৎপাদনের পরিমাণ ৯.৩৩ কোটি টন। মূল্য ৩,৬১১ কোটি মার্কিন ডলার। উক্ত রিপোর্টে বিশ্বের ১৬২টি প্রাথমিক কৃষিপণ্য উৎপাদনের হিসাবের মধ্যে বাংলাদেশের ৬৮টি পণ্য রয়েছে। এফএও’র পূর্বের রিপোর্ট মতে, কৃষিপণ্য উৎপাদনে বিশ্বে শীর্ষ ১০ দেশের তালিকায় বাংলাদেশের পণ্য ছিল ২০০১ সালে ১১টি ও ২০১১ সালে ১৭টি। অর্থাৎ দেশের কৃষি পণ্যের উৎপাদন বৃদ্ধির ধারাবাহিকতা বজায় রয়েছে। ২০২১ সালের পর কৃষি পণ্য উৎপাদনের পরিমাণ আরো বেড়েছে। যেমন: গত অর্থবছরে সরিষার উৎপাদন হয়েছে ১১ টনের অধিক, যা আগের অর্থবছরে ছিল ৮ টনের বেশি। অনুরূপভাবে কৃষির প্রায় সব পণ্যেরই উৎপাদন বেড়েছে। এফএও’র ‘দ্য স্টেট অব ওয়ার্ল্ড ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকুয়াকালচার-২০২২’ প্রতিবেদন মতে, বৈশ্বিক মাছ উৎপাদনে বাংলাদেশ স্বাদু পানিতে তৃতীয়, চাষে তৃতীয়, ইলিশে প্রথম ও সমুদ্রে শীর্ষ ২৫টি দেশের মধ্যে ২৫তম। অন্য তথ্য মতে, উৎপাদনের ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশ্বে ছাগলে চতুর্থ ও ছাগলের মাংসে পঞ্চম এবং গবাদিপশুতে দ্বাদশ ও চায়ে চতুর্থ,ফলে দশম, কাঁঠালে দ্বিতীয়, আমে সপ্তম, পেয়ারায় ৮ম, পেঁপেতে ১৪তম।
কৃষি খাতের উৎপাদন চারগুণ বেড়েছে গত ৫ দশকে। বর্তমানে খাদ্যশস্যের মোট উৎপাদন প্রায় ৫ কোটি মে.টন। কৃষির অবদান জিডিপিতে তৃতীয় ও কর্মসংস্থানে প্রায় তিন চতুর্থাংশ। বার্ষিক প্রবৃদ্ধির গড় হার ৩-৪%। করোনা মহামারির সময়ে দেশের বহু খাতে ধস নামলেও কৃষির উন্নতি অব্যাহতই ছিল এবং এখনো আছে। উপরন্তু পাট, চামড়া ও মৎস্যজাত পণ্যের কিছু রফতানি হচ্ছে। কৃষির এই অভাবনীয় উন্নতির প্রধান অবদান কৃষকের অক্লান্ত পরিশ্রম, উন্নতমানের বীজ ও প্রযুক্তির ব্যবহার এবং কৃষি উপকরণে সরকারের ব্যাপক ভর্তুকি ও ঋণ সহায়তা। কৃষিমন্ত্রী সংসদে গত ৪ জুন বলেছেন, গত ১৩ বছরে সরকার কৃষিতে ৯৭ হাজার ৮৭৩ কোটি ৫৫ লাখ টাকা ভর্তুকি দিয়েছে।
বিআরআরআই’র সাম্প্রতিক তথ্য মতে, সংস্থাটি এ পর্যন্ত প্রতিকূল ও অনুকূল পরিবেশ উপযোগী উচ্চ ফলনশীল ১০২টি আধুনিক জাত উদ্ভাবন করেছে, যার ৯৫ টি ইনব্রিড ও ৭টি হাইব্রিড। তন্মধ্যে ব্রি ধান ১০৬ জোয়ার-ভাটা অঞ্চলের ও ব্রি ধান ১০৫ ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য। সর্বশেষ ব্রি ধান-১০০, ৮৯ ও ৯২-
এর ফলন বিঘাপ্রতি ৩৩ মণ। এছাড়া,রাবির গবেষকরা উন্নত জাতের কলা, বিএসআরআই আখের ৪৮টি জাত, ঢাবির বিজ্ঞানীরা পাট থেকে অ্যান্টিবায়োটিক উদ্ভাবন এবং মৎস্য বিজ্ঞানীরা বিলুপ্ত হওয়া ২৩টি দেশী প্রজাতির মাছ পুনরুদ্ধার করেছেন। সর্বোপরি দেশের কৃষিবিজ্ঞানীরা ২৫০টি লাগসই কৃষি প্রযুক্তি, পাটের জীন ও পাট থেকে পচনশীল পলি ব্যাগ এবং একই গাছে দু’ধরনের ফসল উৎপাদন উদ্ভাবন করেছেন। সিবির গবেষকরা নতুন সেচযন্ত্র এবং অন্য বিজ্ঞানীরা হাওরে ধান কাটার যন্ত্র উদ্ভাবন করেছেন। পরমাণু শক্তি ব্যবহার করে কৃষিতে নানা উদ্ভাবনের আন্তর্জাতিক স্বীকৃতি পেয়েছে বিনা।
অবশ্য, দেশে কৃষি পণ্য উৎপাদন ব্যাপক বৃদ্ধির পরও বিপুল ঘাটতি রয়েছে বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই। যা আমদানি করতে হয়। বাণিজ্যমন্ত্রী গত ১১ জানুয়ারি সংসদে বলেছেন, দেশে বছরে আলুর চাহিদা ৮৮.৭২ লাখ মে.টন, উৎপাদন হয় ১ কোটি ১ লাখ ৪৫ হাজার মে. টন। চালের চাহিদা ৩.৫২ কোটি মে.টন, উৎপাদন হয় ৩.৫১ কোটি মে.টন। গমের চাহিদা ৬৩.৪৮ লাখ মে.টন, উৎপাদন হয় ১০.৮৬ লাখ মে.টন। ভোজ্য তেলের চাহিদা ২০ লাখ মে.টন, উৎপাদন হয় ২.১৭ লাখ মে.টন। ডালের চাহিদা ৩৩ লাখ মে.টন, উৎপাদন হয় ৮.৩৮ লাখ মে.টন। দুধের চাহিদা ১ কোটি ৫৬ লাখ ৬৮ হাজার মে.টন, উৎপাদন হয় ১ কোটি ৩০ লাখ ৭৪ হাজার মে.টন। পেঁয়াজের চাহিদা ২৫ (হবে ৫৫) লাখ মে.টন, উৎপাদন হয় ৩৬.৪০ লাখ মে.টন। অন্য তথ্য মতে, আদা, রসুনসহ মসল্লা জাতীয় পণ্যের বেশিরভাগই আমদানি করতে হয়। মাছ ও মাংসও কিছু আমদানি হয়। এফএও’র প্রতিবেদন মতে, বাংলাদেশকে বছরে ১ কোটি টনেরও বেশি খাদ্যশস্য আমদানি করতে হয়। বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য মতে, প্রতিবছর ৫-৭ বিলিয়ন ডলারের খাদ্যপণ্য আমদানি করতে হয়, যা ২০২১-২২ অর্থবছরে হয়েছে ৮.৩৪ বিলিয়ন ডলার। তাই মানুষের কৃষি পণ্যের ভোগের পরিমাণ কম। পুষ্টিহীনতার হারও বেশি। উপরন্তু বীজ ও সারেরও বেশিরভাগ আমদানি করতে হয়।
দেশে খাদ্য পণ্যের উৎপাদন ঘাটতির অন্যতম কারণ নষ্ট ও অপচয় বেশি। জাতি সংঘের ফুড ওয়েস্ট ইনডেক্স-২০২১ মতে, বাংলাদেশে খাদ্য নষ্ট হয় বছরে ১.০৬ কোটি টন। দ্বিতীয় কারণ, উৎপাদন হারও কম। পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রীর অভিমত: বর্তমানে হেক্টর প্রতি চাল উৎপাদন বাংলাদেশে-২.৭৪ টন, জাপানে ৫ টন, চীনে ৬.৫ টন, ভিয়েতনামে ৫.৮৪ টন। ওয়ার্ল্ড ইন ডাটার তথ্য মতে, ২০২১ সালে বিশ্বে গরুপ্রতি গড় মাংসের পরিমাণ ২১৮ কেজি, যা বাংলাদেশে মাত্র ৭১ কেজি। এরূপ অবস্থা দেশের কৃষির সব পণ্যেই। উন্নত জাতের বীজ ব্যবহারের স্বল্পতার কারণেই এটা হয়েছে। তৃতীয় কারণ, চাষ ব্যবস্থার বেশিরভাগই অযান্ত্রিক ও প্রযুক্তির ব্যবহার না করা। এছাড়া, কৃষি শ্রমিক সংকটের কারণে শ্রমিকের মজুরি বেশি। এসব নানা কারণে দেশে উৎপাদিত কৃষি পণ্যের পরিমাণ কম, মূল্য অত্যধিক, মানও খারাপ। তাই বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকতে পারছে না। খাদ্য মজুদ, প্রক্রিয়াজাত ও প্যাকেটিংয়েরও হার কম। তাই বৈশ্বিক খাদ্য নিরাপত্তা সূচকে বাংলাদেশের অবস্থান তলানীতে। সরকারি পাটকল বন্ধ থাকায় মূল্য কমজনিত পাট চাষে অনিহা সৃষ্টি হয়েছে কৃষকের। ভূগর্ভস্থ পানি বেশি ব্যবহারের কারণে মাটির স্তর নেমে নানা সংকট সৃষ্টি হচ্ছে। অতিরিক্ত রাসায়নিক সার ও কীটনাশক ব্যবহারে ভূমির উর্বরতা হ্রাস পেয়ে উৎপাদন হার কমে যাচ্ছে, প্রাকৃতিক সমস্যাও হচ্ছে। জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব এবং প্রাকৃতিক দুর্যোগেও ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয় প্রতি বছরই। কৃষি পণ্যের সরবরাহও চেইন খুব দুর্বল।
কৃষি বিভাগের ২০২২ সালের তথ্য অনুযায়ী, দেশে আবাদযোগ্য জমির পরিমাণ ৮৮.২৯ লাখ হেক্টর। তন্মধ্যে এক ফসলী জমি ২১.১০ লাখ হেক্টর, দুই ফসলী জমি ৪১.২৫ লাখ হেক্টর, তিন ফসলী জমি ১৮.৬৬ লাখ হেক্টর ও চার ফসলি জমি ১৭ হাজার হেক্টর।এছাড়া, ৪.৩১ লাখ হেক্টর জমি এখনো অনাবাদী বা পতিত রয়েছে। কৃষি জমির ৭৪% জমিতে ধান চাষ হয়। এছাড়া, ২৭% জমি সেচের আওতার বাইরে রয়েছে। সেচকৃত এলাকার ৪৪% বিদ্যুৎ চালিত যন্ত্র ও ৫৬% এলাকা ডিজেল চালিত সেচ যন্ত্র ব্যবহৃত হচ্ছে। ডিজেল চালিত সেচ যন্ত্র ব্যবহারে উৎপাদন ব্যয় বেশি। সেচ দক্ষতা মাত্র ৩৮%। গত ২৭ ডিসেম্বর প্রকাশিত বিবিএস’র কৃষি শুমারি ২০১৯ মতে,গত ১১ বছরে নিট আবাদি জমির পরিমাণ কমেছে। ২০০৮ সালে ছিল ১ কোটি ৯০ লাখ ৭০ হাজার ৭৪৯ একর। আর ২০১৯ সালে তা কমে হয়েছে ১ কোটি ৮৬ লাখ ৩৬ হাজার ৪৩৪ একর (বর্তমানে আরো কমেছে নদী ভাঙ্গন, আবাসন, শিল্প-কারখানা, রাস্তা ইত্যাদিতে)। উপরন্তু ক্ষুদ্র কৃষক পরিবারের সংখ্যা বাড়ছে,যার সংখ্যা মোট কৃষক পরিবারের ৯১.৭% (২০০৮ সালে ছিল ৮৪.৩৯%)।
সরকার ২০২০ সালের মধ্যে দেশের মোট ভূখ-ের ১৭% এলাকাকে সংরক্ষিত বনাঞ্চল করার ঘোষণা দিয়েছেন। যা এখনও পূরণ হয়নি। ২০২১ সাল পর্যন্ত হয়েছে মাত্র ৪.৬১% এলাকা। তাও কমছে বছরে ২.৬% হারে। বন বিভাগের তথ্য মতে, দেশে বছরে ২,৬০০ হেক্টর বন উজাড় হচ্ছে। বর্তমানে মোট বনভূমির পরিমাণ ৪৬ লাখ ৪৬ হাজার ৭০০ একর। তন্মধ্যে ২ লাখ ৫৭ হাজার ১৫৮ একর বেদখলে আছে। দখলদারদের সংখ্যা ১ লাখ ৬০ হাজার ৫৬৬ জন। সংরক্ষিত বনভূমিও দখল হচ্ছে।বনভূম ছাড়াও বৃক্ষের সংখ্যা খুব কম।তাই দেশ মরুপ্রায় হতে চলেছে!
সম্প্রতি দেশ-বিদেশের কৃষিতে অনেক নতুন বিষয় ও প্রযুক্তি যুক্ত হয়েছে। যেমন: দেশে ভাসমান চাষ,মাচা চাষ,ছাদ ও ঝুলন্ত বাগান, মিশ্র চাষ তথা একই সাথে ফল-সবজী এবং হাঁস-মাছ চাষ, ত্বীন, ড্রাগন, সূর্য ডিম আম, বীজবিহীন বারোমাসি লেবু, হোয়াইট টি, হাইব্রিড ব্ল্যাক বেবি, মধুমালা ও ল্যন ফাই জাতের তরমুজ, পেরিল (ভোজ্য তৈলবীজ জাতীয় ফসল) ও পলিনেট হাউজ (অসময়ে সবজী চাষ) হচ্ছে। এছাড়া, ফিলিপাইনে ‘গোল্ডেন রাইস’ বীজ উদ্ভাবনে বারি সংশ্লিষ্ট রয়েছে। অপরদিকে, এগ্রিভল্টাইক্স পদ্ধতিতে কৃষির ব্যাপক উন্নতি হচ্ছে বিভিন্ন দেশে। এই নবতর পদ্ধতি হচ্ছে, জমির কয়েক মিটার উঁচুতে সোলার প্যানেল স্থাপন সৌর বিদ্যুৎ উৎপাদন এবং তার নিচে কৃষি কাজ করা। এই পদ্ধতিতে বৃষ্টির পানিও সংরক্ষণ করা সম্ভব। আফ্রিকায় ভার্টিক্যাল ফার্মিং তথা বাক্সে অনেক স্তর করে ফল-সবজী চাষ। ইতালির উপকূলে সাগরের তলদেশে খামার করা হয়েছে, যা বিশ্বে প্রথম। যেখানে স্থলভূমির গাছপালার আবাদ করা হচ্ছে। মহাকাশে বীজের অংকুর গজিয়ে তা পৃথিবীতে এনে চাষ করছে চীন। ফলনও বেশি। বিভিন্ন দেশের কৃষিতে ড্রোন ব্যবহার হচ্ছে।
সমলয় পদ্ধতি দেশের কৃষি খাতে নব দিগন্তের সূচনা ঘটিয়েছে। সমলয় পদ্ধতি হচ্ছে: কোনো একটি এলাকার পাশাপাশি ছোট ছোট জমিগুলোর আইল ঠিক রেখেই চাষাবাদের জন্য একই সিস্টেমের আওতায় নিয়ে আসা। এতে জমি বড় হওয়ায় একসঙ্গে সংশ্লিষ্ট মালিকরা একই জাতের ধান একই সময়ে আবাদ করে। তথা বীজতলা থেকে চারা তোলা, চারা রোপণ ও ধান কাটাÑ সবই করা হয় যন্ত্রে। ফলে চাষে সময়, শ্রম ও খরচ কম লাগে। এতে উৎপাদন বেশি হয়-ব্যয় কম হয়। ফলে কৃষকের লাভ হয়। উপরন্তু ধানের নতুন জাত দ্রুত সম্প্রসারণ এবং যন্ত্রের ব্যবহার বাড়ে। তাই এ বছরের বোরো মৌসুমে ৬১টি জেলার ১০০টি জায়গায় সমলয় পদ্ধতিতে বোরো আবাদ করা হয়েছে ব্রির সহযোগিতায়। এই নীতিমালা মতে, প্রতি গ্রুপে কৃষকের সংখ্যা সর্বোচ্চ ৩৫ এবং জমির পরিমাণ ৫০-৬০ একর হতে হবে। উল্লেখ্য যে, ছোট জমিতে যন্ত্রের ব্যবহার কঠিন। কিন্তু বড় জমিতে যন্ত্রের ব্যবহার সহজ। তাই কৃষির সব জমিকে সমলয় পদ্ধতির আওতায় আনা দরকার।
কৃষি পণ্যের প্রক্রিয়াজাতকরণেও গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। কৃষি খাদ্য প্রক্রিয়াকরণ শিল্প নীতিমালা-২০২২ নামে একটি খসড়া চূড়ান্ত করা হয়েছে, যা অচিরেই অনুমোদনের জন্য মন্ত্রিসভায় উপস্থাপন করা হবে বলে জানা গেছে। আগামী পাঁচ বছরে এই শিল্পে অন্তত ৫ বিলিয়ন মার্কিন ডলার বিনিয়োগ ও ১ লাখ মানুষের নতুন কর্মসংস্থানের লক্ষ্য নিয়ে এটি তৈরি করেছে শিল্প মন্ত্রণালয়।
দেশে একদিকে মানুষ বাড়ছে, অন্যদিকে কৃষি জমি কমছে। এছাড়া, নানা সংকটও রয়েছে। তাই সব খাদ্য পণ্যের উৎপাদনের হার দ্বিগুণ করা এবং বৈশ্বিক প্রতিযোগিতায় টিকে থাকার সক্ষমতা দরকার। সে জন্য চাষযোগ্য সব পতিত জমিকে চাষের আওতায় আনতে হবে। উপরন্তু চাষের সব জমিকে সেচের আওতায় ও সব সেচ যন্ত্রকে বিদ্যুৎ চালিত করতে হবে (সৌর বিদ্যুত চালিত হলে ব্যয় অনেক কমবে ও পরিবেশের উন্নতি হবে)। সর্বোপরি বর্তমানে দেশের সেচ কাজে মাত্র ২৭% ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহার হচ্ছে। বাকী সেচ কাজ চলছে ভূ-গর্ভস্থ পানিতে। এতে পানির স্তর নেমে গিয়ে দেশের মারাত্মক ক্ষতি হচ্ছে। তাই সেচ কাজে শতভাগ ভূ-উপরিস্থ পানি ব্যবহার করতে হবে। সে জন্য দেশের সব নদী, খাল-বিল, হাওর-বাওর ও পুকুর-দীঘি দখলমুক্ত ও নিয়মিত ভালভাবে সংস্কার করে বর্ষা ও বৃষ্টির পানি ধরে রেখে ব্যবহার এবং ভারতের সাথে অভিন্ন নদীগুলোর পানির ন্যায্য পাওনা আদায় করতে হবে। এটা হলে মাছের উৎপাদন ও নৌ চলাচল বাড়বে। সেচ দক্ষতা শতভাগ করতে হবে। এছাড়া, সব কৃষি পণ্যের সর্বদা লেটেস্ট আবিষ্কৃত উচ্চ ফলনশীল ও পুষ্টিসমৃদ্ধ বীজ এবং প্রযুক্তি ব্যবহার করতে হবে। তাহলে উৎপাদন বৃদ্ধি, ব্যয় হ্রাস ও পুষ্টির ঘাটতি দূর হবে। উপরন্তু সব পণ্যের সার্বক্ষণিক হালনাগাদ চাহিদা ও উৎপাদনের পরিসংখ্যান করতে হবে নির্ভুলভাবে। তাতে যেটার ঘাটতি হবে, সেটা বেশি চাষ করতে হবে এবং প্রণোদনা দিতে হবে। এছাড়া, কৃষিকে শতভাগ যান্ত্রিকরণ করতে হবে। তাহলে উৎপাদন বৃদ্ধি ও ব্যয়-অপচয় কমবে। ফলে উৎপাদন ব্যয় কমে মূল্য কমে যাবে। শ্রমিক সংকটও দূর হবে। ইতোমধ্যেই দেশের কৃষিতে যান্ত্রিকরণ শুরু হয়েছে।সরকার কৃষি যন্ত্র আমদানিতে বিপুল অর্থ ভর্তুকি দিচ্ছেন। তাই অনেক ব্যক্তি ও সংস্থা যন্ত্র তৈরি ও সংযোজনের কারখানা করতে এগিয়ে আসছে। তাই কৃষি যন্ত্র তৈরি, সংযোজন, চালনা ও মেরামত করার জন্য কয়েক লাখ দক্ষ লোক তৈরি করা দরকার। সব বন্ধ পাটকল চালু ও সেখানে সোনালি ব্যাগ তৈরি করে বাজারজাত করা হলে পাটের কদর বাড়বে, পরিবেশের উন্নতি হবে। বনভূমির সব দখলদারকে উচ্ছেদ এবং প্রয়োজন মতো ফলজ গাছ লাগাতে হবে দেশের সর্বত্রই। তাহলে জীববৈচিত্র্য ও প্রাকৃতিক ভারসাম্য রক্ষা হবে। জ্বালানি ও আসবাব পত্রের কাঠ এবং ফলের পরিমাণ বাড়বে। এ ক্ষেত্রে সামাজিক বনায়ন কর্মসূচি অনেক সহায়ক হবে।
বিশ্বব্যাপী হালাল খাদ্য পণ্যের চাহিদা বাড়ছে। ‘হেক্সা রিসার্চ’র মতে, ২০২৪ সালে বৈশ্বিক হালাল পণ্য ও সেবা বাজারের আকার হবে ১২.১৪ ট্রিলিয়ন ডলার। এর কিয়দাংশও ধরতে পারলে দেশের গার্মেন্ট নির্ভর রফতানিতে বৈচিত্র্য আসবে, পরিমাণও বাড়বে। তাই এ দিকে বিশেষ গুরুত্ব দেওয়া দরকার। পরিবেশ রক্ষার জন্য বিশ্বব্যাপী পাট পণ্যের চাহিদা ব্যাপক বাড়ছে। এর সদ্ব্যবহার করা দরকার। সে জন্য পাট পণ্যে বৈচিত্র্য ও আকর্ষণীয় এবং সোনালি ব্যাগ চাহিদা মতো উৎপাদন করে বাজারজাত করা প্রয়োজন। তাহলে পাটের সুদিন ফিরে আসবে। পরিবেশেরও ব্যাপক উন্নতি হবে। তাই বন্ধ হওয়া সব সরকারি পাটকল দ্রুত চালু করা দরকার। সার ও চিনি শিল্পকে সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে।তাহলে আমদানি ও ব্যয় কমবে এবং কর্মসংস্থান বাড়বে। দেশের চামড়ার কদর বিশ্বব্যাপীই রয়েছে। বেঙ্গল গটের চামড়া তো বিশ্বের উৎকৃষ্ট। তাই চামড়া শিল্পের উন্নতি ঘটাতে হবে। তাহলে রফতানি বাড়বে।
সরকারের চাল ও গম মজুদের সক্ষমতা ২২ লাখ টনের মতো। ধান সংরক্ষণের কোন ব্যবস্থা নেই। তাই ২০০টি স্টিলের ‘মিনি পেডি সাইলো (ধান সংরক্ষণের বিশেষ ব্যবস্থা)’ নির্মাণ করা হচ্ছে, যাতে ভেজা ধান রাখলেও স্বয়ংক্রিয়ভাবে শুকিয়ে যাবে। প্রতিটি সাইলোতে ৫ হাজার টন করে মোট ১০ লাখ টন ধান ২-৩ বছর পর্যন্ত সংরক্ষণ করা যাবে। এটা খুব কল্যাণকর উদ্যোগ। তাই এসবের নির্মাণ কাজ নির্দিষ্ট সময়েই ও মানসন্মতভাবে শেষ হওয়া দরকার। উপরন্তু সব খাদ্য পণ্যের মান বাড়াতে হবে। এসব হলেই খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত হবে। পেরিলা ও ছোট মাছ সুপারফুড। তাই এসব এবং অন্য পুষ্টিকর খাদ্য বেশি করে খেলে পুষ্টিহীনতা দূর হবে। পণ্যের সরবরাহ চেইন সময়োপযোগী ও নির্বিঘœ করতে হবে। তাহলে পণ্যের সহজলভতা বাড়বে ও মূল্য কমবে।
সার ও কীট নাশকেরও অপব্যবহার রোধ করতে হবে। সম্ভব হলে এসবের ব্যবহার কমিয়ে প্রাকৃতিক সার ও বালাই নাশক ব্যবহার বাড়াতে হবে। এসব খুবই স্বাস্থ্যসম্মত ও পরিবেশ বান্ধব। এছাড়া, অর্গান ফুডের চাহিদা বৃদ্ধি পাচ্ছে বিশ্বব্যাপীই। প্রতিবছর বিপুল পরিমাণে কৃষি জমি অকৃষি কাজে ব্যবহৃত এবং নদী ভাঙ্গনে বিলীন হচ্ছে। এসব রোধ করা জরুরি। টেকসই হাওর রক্ষা বাঁধও দরকার। দেশের বিশাল সমুদ্র এলাকায় রয়েছে অফুরন্ত সম্পদ, যার অন্যতম মৎস্য, যা আহরণ করতে পারলে মৎস্য উৎপাদনের পরিমাণ অনেক বাড়বে। ঘরে একুইরাম, আঙ্গিনায় চৌবাচ্চা এবং নদী, বিল, হাওর ও উপকূলে ভাসমান খাঁচায় মাছের চাষ বাড়াতে হবে। দেশের সব সার ও চিনি কলকে আধুনিকীকরণ করে সার্বক্ষণিক চালু রাখতে হবে। তাহলে এসবের চাহিদা পূরণ হবে, মূল্য কমবে ও অনেক কর্মসংস্থান হবে। প্রতিটি ফসল উঠার সাথে সাথে তার ন্যায্যমূল্য নিশ্চিত করতে হবে। সরকারিভাবে ক্রয় করা হলেই সেটা হবে। উপরন্তু কৃষককে সার্বিক সহায়তা করতে হবে। তাহলেই কৃষকের উন্নতি হবে। কৃষকের উন্নতি হলেই কৃষির উন্নতি হবে। দেশের উন্নতি টেকসই ও সার্বিক হবে। বিশ্বব্যাপী খাদ্য সংকট চলছে, যা সহজে দূর হবে না। এছাড়া, বর্তমানে দেশে জ্বালানি ও ডলার সংকটের কারণে শিল্প খাতের ব্যাপক ক্ষতি হচ্ছে। বৈশ্বিক মন্দার কারণে শিল্পপণ্য রফতানি কমছে। এলডিসি উত্তরণোত্তর দেশের শিল্প খাতও চরম সংকটে পড়বে।তাই দেশের উন্নতির ধারা অব্যাহত রাখতেও কৃষি ভিত্তিক উন্নতি আবশ্যক।
লেখক: সাংবাদিক ও কলামিস্ট।
বিভাগ : বিশেষ সংখ্যা
বিষয় : year
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
![ঈশ্বরদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় রিক্সা চালক নিহত](https://dailyinqilab.com/mediaStorage/content/images/2024July/SM/accwe-20240706183852.jpg)
ঈশ্বরদীতে সড়ক দুর্ঘটনায় রিক্সা চালক নিহত
![নীলফামারী জেলায় বিপদসীমার কাছ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তার পানি](https://dailyinqilab.com/mediaStorage/content/images/2024July/SM/image-144363-1720258101-20240706183708.jpg)
নীলফামারী জেলায় বিপদসীমার কাছ দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে তিস্তার পানি
![টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিতে কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে : প্রেসিডেন্ট](https://dailyinqilab.com/mediaStorage/content/images/2024July/SM/image-144376-1720267300-20240706183043.jpg)
টেকসই উন্নয়ন ত্বরান্বিতে কৃষি ও কৃষকের উন্নয়ন নিশ্চিত করতে হবে : প্রেসিডেন্ট
![বগুড়ায় যমুনার পানি বৃদ্ধি, ৩৮ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাশ বন্ধ](https://dailyinqilab.com/mediaStorage/content/images/2024July/SM/image-144379-1720268095-20240706182610.jpg)
বগুড়ায় যমুনার পানি বৃদ্ধি, ৩৮ শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে ক্লাশ বন্ধ
![ধর্মঘট ঘোষণা করে শাহবাগ ছাড়লো কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা](https://dailyinqilab.com/mediaStorage/content/images/2024July/SM/1720267883265-20240706181438.jpg)
ধর্মঘট ঘোষণা করে শাহবাগ ছাড়লো কোটাবিরোধী আন্দোলনকারীরা
![ফ্রান্সে আগামীকাল নির্বাচন](https://dailyinqilab.com/mediaStorage/content/images/2024July/SM/image-144346-1720254772-1-20240706180046.jpg)
ফ্রান্সে আগামীকাল নির্বাচন
![সন্তানদেরকে প্রযুক্তির খারাপ বিষয়গুলোর বর্জন শেখাতে হবে : খাদ্যমন্ত্রী](https://dailyinqilab.com/mediaStorage/content/images/2024July/SM/image-144372-1720266667-20240706175803.jpg)
সন্তানদেরকে প্রযুক্তির খারাপ বিষয়গুলোর বর্জন শেখাতে হবে : খাদ্যমন্ত্রী
![গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসনের জেরে ইহুদি বিদ্বেষ বাড়ছে ইউরোপে](https://dailyinqilab.com/mediaStorage/content/images/2024July/SM/000-20240706174708.jpg)
গাজায় ইসরাইলের আগ্রাসনের জেরে ইহুদি বিদ্বেষ বাড়ছে ইউরোপে
![রেকর্ড তাপমাত্রায় ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানল](https://dailyinqilab.com/mediaStorage/content/images/2024July/SM/image-144341-1720253812-20240706173547.jpg)
রেকর্ড তাপমাত্রায় ক্যালিফোর্নিয়ায় দাবানল
![দোয়ারাবাজারে নিখোঁজের ৫ দিন পর লাশ উদ্ধার](https://dailyinqilab.com/mediaStorage/content/images/2024July/SM/news-image-30c2d7e2e9f87359155e9ab230f06cff1720245783-20240706173256.jpg)
দোয়ারাবাজারে নিখোঁজের ৫ দিন পর লাশ উদ্ধার
![ভারতের আসামে বন্যার পরিস্থিতি ভয়াবহ](https://dailyinqilab.com/mediaStorage/content/images/2024July/SM/image-144365-1720259032-20240706173020.jpg)
ভারতের আসামে বন্যার পরিস্থিতি ভয়াবহ
![কঠোরভাবে খাল দখলমুক্ত করা হবে : ডিএসসিসি মেয়র](https://dailyinqilab.com/mediaStorage/content/images/2024July/SM/dura-06-07-24-01-20240706171549.jpg)
কঠোরভাবে খাল দখলমুক্ত করা হবে : ডিএসসিসি মেয়র
![ব্রিটেনে প্রথম মহিলা অর্থমন্ত্রী হয়ে ইতিহাস গড়লেন র্যাচেল রিভস](https://dailyinqilab.com/mediaStorage/content/images/2024July/SM/aa-20240706170040.jpg)
ব্রিটেনে প্রথম মহিলা অর্থমন্ত্রী হয়ে ইতিহাস গড়লেন র্যাচেল রিভস
![ইউকের বিজয়ী লেবার পার্টিকে বাংলাদেশ লেবার পার্টির অভিনন্দন](https://dailyinqilab.com/mediaStorage/content/images/2024July/SM/7de081de-8122-48fe-9319-428f893a4837-20240706165708.jpg)
ইউকের বিজয়ী লেবার পার্টিকে বাংলাদেশ লেবার পার্টির অভিনন্দন
![চতুর্থ দিনের মতো শাহবাগ অবরোধ কোটাবিরোধীদের](https://dailyinqilab.com/mediaStorage/content/images/2024July/SM/1720262929744-20240706165406.jpg)
চতুর্থ দিনের মতো শাহবাগ অবরোধ কোটাবিরোধীদের
![বাঁশ ও কাঠের ভাঙা সাঁকোর ওপর সন্তান জন্ম দিলেন বিলকিছ!](https://dailyinqilab.com/mediaStorage/content/images/2024July/SM/1d646662c4f56af6f4f4e962e17b0a03dfb375b1ee171dca-20240706164728.jpg)
বাঁশ ও কাঠের ভাঙা সাঁকোর ওপর সন্তান জন্ম দিলেন বিলকিছ!
![শৈলকুপায় ২৫ কৃষকের চল্লিশ বিঘা জমির কলাগাছ কর্তন](https://dailyinqilab.com/mediaStorage/content/images/2024July/SM/crop-damage-photo-06-0-20240706164129.jpg)
শৈলকুপায় ২৫ কৃষকের চল্লিশ বিঘা জমির কলাগাছ কর্তন
![সারা দেশে বন্যায় ১৫টি জেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি, নতুন দুঃসংবাদ দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রীর](https://dailyinqilab.com/mediaStorage/content/images/2024July/SM/download-2-20240706163718.jpg)
সারা দেশে বন্যায় ১৫টি জেলার প্রায় ২০ লাখ মানুষ পানিবন্দি, নতুন দুঃসংবাদ দুর্যোগ প্রতিমন্ত্রীর
![টেকনাফে সড়কের পাশ থেকে এক যুবকের লাশ উদ্ধার](https://dailyinqilab.com/mediaStorage/content/images/2024July/SM/img-20240706-wa0005-20240706163228.jpg)
টেকনাফে সড়কের পাশ থেকে এক যুবকের লাশ উদ্ধার
![শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কোটা-পেনশন আন্দোলনে বিএনপির সমর্থনের কথা জানালেন ফখরুল](https://dailyinqilab.com/mediaStorage/content/images/2024July/SM/images-20240706162915.jpg)
শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের কোটা-পেনশন আন্দোলনে বিএনপির সমর্থনের কথা জানালেন ফখরুল