কুড়িগ্রামে নদীভাঙনে বিলীন ৯টি স্কুল ঝুঁকিতে আরো ১০টি
০১ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম | আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২৪, ১২:০০ এএম
কুড়িগ্রামে তিস্তা, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের অব্যাহত ভাঙনে চলতি বছর ৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয়সহ ৯টি স্কুল নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে আরো ১০টি। ফলে পাঠদান কার্যক্রম ব্যাহত হবার পাশাপাশি কমে যাচ্ছে শিক্ষার্থীর সংখ্যা। বন্যা ও ভাঙনের কারণে ঝরে পড়া শিক্ষার্থীর হার বাড়ার আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। তবে প্রাথমিক শিক্ষা কর্মকতার্রা জানিয়েছেন, বিকল্প ব্যবস্থায় পাঠদান কার্যক্রম চালু রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। আর ঝুঁকিতে থাকা স্কুল রক্ষায় পদক্ষেপ নেয়ার কথা জানিয়েছে পানি উন্নয়ন বোর্ড।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস, পানি উন্নয়ন বোর্ড ও স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বর্ষা মৌসুম শুরুর আগেই গত এপ্রিল মাস থেকে কুড়িগ্রামের তিস্তা, ধরলা ও ব্রহ্মপুত্রের বিভিন্ন পয়েন্টে শুরু হয়েছে ভাঙন। অব্যাহত ভাঙনে ঘরবাড়ি ও ফসলি জমি বিলীন হওয়ার পাশাপাশি নদীগর্ভে চলে গেছে ৭টি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও একটি স্কুল এন্ড কলেজ। এরমধ্যে চিলমারী উপজেলার ৪টি, সদর ও উলিপুর উপজেলায় দুটি করে স্কুল রয়েছে।
যেসব স্কুল ভাঙনকবলিত হয়েছে সেগুলো হচ্ছে, চিলমারী উপজেলার চর বড়ভিটা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, উত্তর খাউরিয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর মুদাফৎ কালিকাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উত্তর খাউরিয়া স্কুল এন্ড কলেজ, সদর উপজেলার ঝুনকারচর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও গোয়ালপুরি ম-লপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ভগবতিপুর উচ্চ বিদ্যালয়, উলিপুর উপজেলার পশ্চিম বজরা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় ও উত্তর সন্তোষ অভিরাম সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়।
ভাঙনকবলিত স্কুলগুলোর মধ্যে কয়েকটির মালামাল পার্শ্ববর্তী ফাঁকা স্থানে রাখা হলেও বিকল্প জায়গার অভাব ও ঘন ঘন বন্যার কারণে পুরোদমে শুরু করা যায়নি পাঠদান কার্যক্রম। ফলে শিশুদের লেখাপড়া প্রায় বন্ধ হয়ে যাওয়ায় উদ্বিগ্ন শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। সদর উপজেলার ঝুনকার চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি ভাঙনের কবলে পড়ে বিলীন হবার পর একই গ্রামের পার্শ্ববর্তী চালাঘর তুলে অস্থায়ীভাবে পাঠদান কার্যক্রম চালানো হচ্ছে। চিলমারী উপজেলা সহকারী শিক্ষা অফিসার একেএম জাকির হোসেন জানান, দফায় দফায় বন্যা সত্ত্বেও ভাঙনে বিলীন তিনটি স্কুল অস্থায়ীভাবে নির্মাণ করে ষাণ¥াসিক পরীক্ষা নেয়া হয়েছে।
অপারদিতে ভাঙনের ঝুঁকিতে থাকা বিদ্যালয়গুলোর মধ্যে চিলমারীর উত্তর ওয়ারি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের অংশ বিশেষ ইতোমধ্যে বিলীন হয়েছে। এছাড়া একই উপজেলার ভাটপাড়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, রাজারহাটের চর খিতাবখাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, খিতাবখাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, কালিরহাট সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, সদর উপজেলার চর সারডোব সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, ছাটকালুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, চর যাত্রাপুর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়, পোড়ারচর সরকারি প্রাথমিক ও কালিরআলগা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে।
এদিকে ভাঙনের ঝুঁকিতে থাকা স্কুলগুলোতে প্রতিনিয়ত উদ্বেগজনকহারে শিক্ষার্থী সংখ্যা কমছে। কোনো কোনো স্কুলে উপস্থিতি নেমে এসেছে ৫০ ভাগের নিচে। নিরাপত্তার অভাব ও ভাঙনের শিকার হয়ে বিভিন্ন স্থানে পরিবার চলে যাওয়ায় এ অবস্থার সৃষ্টি হয়েছে। ভাঙন প্রতিরোধে কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানিয়েছেন শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অভিভাবকরা। ভগবতিপুরের বাসিন্দা মতিয়ার রহমান জানান, স্কুল ভেঙে যাওয়ার পর কোনোমতে একজনের জমিতে চালাঘর তোলা হলেও শিক্ষার্থীর সংখ্যা নেই বললেই চলে।
ছাটকালুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুল গফুর জানান, এবারের বন্যায় স্কুলের মাঠের একটি অংশ ধসে গেছে। ধরলার ঘূর্ণিস্রোত-ভাঙনে স্কুলটি যেকোন সময় বিলীন হতে পারে। পানি উন্নয়ন বোর্ড ও প্রশাসনকে বারবার জানানোর পর জিও ব্যাগ ফেলা হলেও নিশ্চিত হওয়া যাচ্ছে না।
তিস্তার ভাঙনের কবলে পড়া চর খিতাবখাঁ সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী কাওসার হোসেন ও আশা মনি আক্তার জানায়, স্কুলটি ভেঙে গেলে তাদের লেখাপড়া বন্ধ হয়ে যাবে। কারণ আশেপাশে কোনো স্কুল নেই। এ স্কুলের প্রধান শিক্ষক মো. মাহবুব হোসেন জানান, ১১০ জন শিক্ষার্থী মধ্যে ৫০ জন কমবেশি উপস্থিত থাকে, বাকিরা নদী ভাঙনের শিকার হয়ে পরিবার নিয়ে অন্যত্র চলে গেছে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার নবেজ উদ্দিন সরকার জানিয়েছেন, যেসব স্কুল নদীভাঙনে বিলীন হয়েছে, সেখানে স্থানীয়দের সহযোগিতায় অস্থায়ীভাবে চালাঘর তুলে পাঠদান অব্যাহত রাখার নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। পরবর্তী সময়ে বরাদ্দ আসলে স্কুল ভবন নিমার্ণের উদ্যোগ নেয়া হবে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নিবার্হী প্রকৌশলী আব্দুল্লাহ আল মামুন জানান, ভাঙনের ঝুঁকিতে পড়ায় চর সহিষ্ণু কয়েকটি স্কুল ইতোমধ্যে সরিয়ে নেয়া হয়েছে। অন্যগুলো রক্ষায় প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হয়েছে। জিও ব্যাগ ফেলে স্কুলগুলোকে ভাঙনের কবল থেকে রক্ষার চেষ্টা চলছে।
বিভাগ : বিশেষ সংখ্যা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ডিসেম্বরে বাংলাদেশ ও ভারতের পররাষ্ট্র বৈঠক, হাসিনাকে ফেরানো নিয়ে আলোচনা থাকবে
রামু সেনানিবাসে সশস্ত্র বাহিনী দিবস পালিত
এক সপ্তাহে বৈদেশিক মুদ্রার রিজার্ভ বাড়ল ৬ কোটি ১০ লাখ ডলার
প্রবাসীদের যে জন্য সুখবর দিলো মালয়েশিয়া
জাবি শিক্ষার্থী মৃত্যুর ঘটনায় মামলা, তদন্ত কমিটি গঠন, ফটকে তালা, মশাল মিছিল
মাদকের বিরুদ্ধে শক্ত অবস্থানে থাকবে জাতীয়তাবাদী ছাত্রদল
"নতুন সিনেমা নিয়ে ফিরছেন গ্লোবাল তারকা অ্যাঞ্জেলিনা জোলি"
ড. ইউনূসকে নিয়ে খালেদা জিয়ার পুরোনো যে বক্তব্য ভাইরাল
নতুন নির্বাচন কমিশনের প্রতি ইসলামী আন্দোলনের শুভ কামনা
আলোচনায় ফ্যাসিস্ট হাসিনার ‘টুস করে ফেলে দেয়ার’ হুমকি
দীর্ঘ ১৫ বছর সাংবাদিকরা বস্তুনিষ্ঠ সংবাদ পরিবেশন করতে পারেনি: খোকন
'ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে রয়েছে অভিনেতা তারিক আনাম খানের নাটক'
বাংলাদেশ, নেপাল ও ভুটানের মধ্যে আঞ্চলিক সহযোগিতার আহ্বান
ইসলামিক ফাউন্ডেশন এর বোর্ড অব গভর্নর সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সম্বর্ধনা
সৈয়দ মোসাদ্দেক বিল্লাহ আল মাদানীকে জমিয়াতুল মোদার্রেসীন ও দারুননাজাত মাদরাসা’র সংবর্ধনা
লালমোহনে দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত যুবদল নেতা চিকিৎসাধীন অবস্থায় মৃত্যু
চকরিয়ার বিএনপি নেতা আবু তাহের চৌধুরীর মৃত্যুতে সালাহউদ্দিন আহমদ ও হাসিনা আহমদের শোক
উইন্ডিজের বিপক্ষে মাঠে নামছে বাংলাদেশ
বেইজিং সংস্কৃতি ও পর্যটন ব্যুরো ও আটাবের মধ্যে চুক্তি স্বাক্ষরিত
প্রেসিডেন্টের সঙ্গে তিন বাহিনীর প্রধানের সাক্ষাৎ