চেনাঅচেনার মাঝখানের মানুষ
২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ২১ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৩:১৬ পিএম
অফিস থেকে বেরিয়েই খটকা লাগল। বেশ অবাকও হলাম। ছেলেটা কি আত্মীয়ের মেয়ের জামাই! এখনও এক বছর পুরো হয়নি, আজকাল ভাল রেজাল্ট কিংবা টাকা দিলেও হুট করে চাকরি হয়ে যায় না, পোক্ত ব্যাকিং না থাকলে। ছেলেটার চাকরি হয়েছিল মাত্র সাতদিনের মধ্যে। নিয়োগপত্র পাওয়ার পর বাসায় এসে পা ছুঁয়ে সালাম করেছিল, নাজনীনকেও। বিশেষ সমাদরে নাশতা করিয়েছিল নাজনীন। শুরুর দিকে-প্রথম যৌবনে নাজনীনের কথায় অবাক হওয়ার একটা চমৎকার ভঙ্গি ছিল। এই ভঙ্গিটা তার চোখে-মুখে মুগ্ধতা ছড়াত।
অনেকদিন পর সেই ভঙ্গিতে কথাটা বলল, ছেলেটা আমাকে সালাম করে ফেলল!
বললাম, করল তো।
বড় ভাল ছেলে, জান, ও যখন সালাম করল, আমি ভাল করে লক্ষ্য করেছি, শ্রদ্ধায় আনত ছিল চোখ। মেয়েটা খুব ভাগ্যবতী, এমন বর আজকাল মেলা ভার। আমার মেয়ের বরটাও ঠিক এরকম হবে-এমন বিনয়ী, শ্রদ্ধাবনত-
নাজনীনের চোখে-মুখে স্বপ্ন আর তৃপ্তি যুগপৎ ছড়িয়ে পড়ল। অল্পে তুষ্ট মানুষ সে। স্বপ্ন আর তৃপ্তি হাত ধরাধরি করে থাকে তার অনুভূতিতে। ওকে হতাশ করার মত কিছু বলার সাহস আমার আগেও ছিল না, এখনও নেই।
তারপরও বললাম, বিনয়ী আর শ্রদ্ধাবনত শব্দ দুটি তো অভিধান থেকে ওঠেই গেছে-
নাজনীন আবারও অবাক ভঙ্গিতে বলল, তাই নাকি! এটা মোটেই সুবিবেচনার কাজ হবে না। পরিবার আর সমাজ লাবণ্য হারিয়ে ফেলবে। মানুষের জীবন তো শুধুমাত্র খেয়ে-পরে বাঁচার নয়। আচার-সংস্কৃতি-ভব্যতা মিলে পূর্ণ হয় জীবন। ব্যতিক্রম কী ভাবা যায়!
আমাকে কথা বলার সুযোগ না দিয়ে নাজনীনই বলল, তবে, এটাও ঠিক, কোন শব্দ এবং কোন প্রসঙ্গ বা বিষয়ই একেবারে ওঠে যায় না, হারিয়ে যায় না। কারও না কারও মধ্যে টিকে থাকে এবং সময় সুযোগে আবারও সাড়ম্বরে হাজির হয়। আর জান তো, বিনয়ে-শ্রদ্ধায় অবনত না হলে ঔদ্ধত্য গা ঝাড়া দিয়ে ওঠে, পরিবেশ কলুষিত হয়ে পড়ে এবং সমাজ শ্বাসকষ্টে ভোগে। এই দুঃসহ পরিস্থিতি থেকে রেহাই পাওয়ার জন্যই সভ্যতার যতসব আয়োজন।
ভাল লাগার কোন বিষয় নিয়ে রাতভর কথা বলতে নাজনীনের কোন আলস্য নেই। ভাল না লাগা কোন বিষয় নিয়ে দুয়েকটি শব্দ ছাড়া পুরো একটি বাক্যও বলতে নারাজ। ও বলে, নেতির প্রভাব মানুষকে খুব দ্রুত প্রভাবিত-শৃঙ্খলিত করে। তাই নেতিবাচক কিছু নিয়ে যত কম নাড়াচাড়া করা যায়, ততই ভাল।
আলোচনার দিক কিছুটা পরিবর্তন করার জন্য বললাম, তোমার কথায় যুক্তি আছে। তোমার মেয়ের বরও এমন বিনয়ী-শ্রদ্ধাবনতচিত্ত হবে-এই সিদ্ধান্তে একটু দ্রুতই যেন পৌঁছে গেলে-
নাজনীনের চোখে-মুখে এবার তার সেই সুন্দর হাসি ছড়িয়ে পড়ল, বলতে পার, আমার অবচেতনের কামনাটি প্রকাশিত হওয়ার আবহ তৈরি করে দিয়েছে ওই ছেলে। আর বলব, কথাটা! চাকরির এই আকালের যুগে তোমার হাত ধরে ছেলেটির একটা গতি হল! আর আমাদের যত কষ্টই হোক, তুমি যথেষ্ট সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কখনও বিনষ্ট হওনি। এরপর আমার চাওয়াটা কি খুব বেশি বড় বলে মনে হচ্ছে তোমার!
নাজনীনের সঙ্গে আলোচনা আরও দীর্ঘায়িত হয়েছিল যার আচরণের সূত্র ধরে, সেই ছেলেটি-কী তাজ্জব ব্যাপার! নাজনীন এখন সামনে থাকলে, বিস্মিত হত-ওর বিস্ময় প্রকাশিত হত থেমে থেমে দু’চারটি কথায়। হয়ত এই নেতিবাচক আচরণ তাকে বেশি করে আঘাত করত। ছেলেটা এক বছরের মধ্যেই সবকিছু বেমালুম ভুলে গেল! এভাবে ভুলে যাওয়া যায়? ছেলেটা এখন অফিসে যাতায়াত করে প্রজেক্টের মাইক্রোতে। প্রজেক্টের চাকরির লোভনীয় দিকগুলোর একটি এই ট্রান্সপোর্ট। অথচ আমার নিজের অবস্থাটা কোন কারণে কিংবা কাজের চাপে অফিসের সরকারি বাস ফেল করলে পাবলিক বাসে গাদাগাদি দশায় বাসায় ফিরতে হয়।
এইতো ক’দিন আগেও চরাঞ্চল উন্নয়ন প্রকল্পের সহকারী পরিচালক ইকবাল আজিজ বললেন, একমাত্র আপনার অনুরোধেই ঢেঁকি গিলতে হয়নি। আজকাল তো কর্মক্ষমতা আর সততা একসাথে বিরল, ছেলেটির মধ্যে এই বিরল গুণ আছে। জানেন, সেদিন ডিজি সাবকে বলছিলাম, স্যার আহসান সাহেবের দেয়া এই ছেলেটি যেন একেবারে তার নিজেরই কার্বনকপি।
সেই ছেলেটি কিনা-একদম সামনাসামনি, চোখাচোখিও হল। মনে হল, হেসে সালাম দেবে, অথচ আমাকে একদম অচেনা মনে করে সামনে দিয়ে দিব্যি সাবলীল ভঙ্গিতে হেঁটে নতুন নিশান মাইক্রোতে উঠে গেল! এমনও কি হয় কখনও! হবে না কেন, প্রতিদিন কত সীমা-সংখ্যাহীন বিস্ময় চারপাশে কিলবিলিয়ে বেড়ে উঠছে, বিষ উগড়ে দিচ্ছে-
বায়তুল মোকাররম মার্কেটের দিকে হাঁটতে গিয়ে আবার খটকা লাগল। প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে হাঁটা আমার খুব প্রিয় অভ্যাস। ঘুমের সময় এক পায়ের উপর আরেক পা তুলে রাখার অভ্যাসটা শুরুতেই নাজনীন ছাড়িয়েছে।
বাসর রাত শেষে ভোরবেলা ঘুম ভাঙতেই নাজনীন আক্রমণ করে বসল, দেখ আহসান, তুমি পল সায়েন্সের মিডিওয়াকার আর আমি সোসিওলজির ব্রিলিয়ান্ট, তুমি নিম্নমধ্যবিত্তকে রিপ্রেজেন্ট কর, আর আমি মধ্যবিত্তকে। তারপরও তোমাকে ম্যাচ মনে করেছি, তোমার ব্যক্তিত্বের জন্য। তুমি কী জান, ব্যক্তিত্ববান কোন মানুষ এক পায়ের উপর আরেক পা তুলে ঘুমায় না। এটা আত্মবিশ্বাসের অভাব নির্দেশ করে, যা তোমার হওয়ার কথা নয়। এই কুঅভ্যাস বদলাতে হবে। ব্যক্তিত্ববান মানুষ আত্মবিশ্বাসের সাথে হাত-পা স্বাভাবিক রেখে ঘুমায়, তুমিও সেভাবেই ঘুমাবে-
ব্যক্তিত্ব বেশ আহত হলেও তার আক্রমণ ঠেকাবার কোনো যুক্তি খুঁজে পাইনি। সে একদিন রিডার্স ডাইজেস্ট খুলে ঘুমের নানা ভঙ্গি আর ওসবের সঙ্গে ব্যক্তির চারিত্র-বৈশিষ্ট্যের ব্যাখ্যাও দেখিয়ে দিয়েছে।
নাজনীন সাধারণ একটা স্কুলে যোগ দিয়েছিল। ক্যারিয়ার হিসেবে অন্যকিছু বেছে নেয়ার সুযোগ থাকা সত্ত্বেও কোনও দিকে এগোয়নি। শুধু বলেছিল, সাধারণ স্কুলগুলো কি সারাজীবন সাধারণ থাকবে! চার/পাঁচ বছরের মধ্যে বিশিষ্ট হয়ে উঠেছিল সেই স্কুল। নাজনীন কর্মের প্রতি আস্থাশীল। তার ব্যক্তিত্ব, যুক্তিবাদিতা, উৎকর্ষ ও কল্যাণের প্রতি দৃঢ়চিত্ততা খুব দ্রুত অন্য শিক্ষকদের প্রভাবিত কিংবা তাড়িত করেছিল। ওর কথা শুনেছিল সবাই, তার ফলও পেয়েছে। সংসারেও নাজনীন অনেকটা টানাটানির মধ্যেই সুন্দর করে চালিয়ে প্রয়োজনীয় স্বস্তি ও তৃপ্তি সঞ্চার করে চলেছে। ও বলে, স্কুল বল, সংসার বল-সবই ব্যক্তি মানুষের জীবনে বিশেষ যতেœর বিষয়। মানুষের জীবন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিল্প-এজন্য অব্যাহত উদ্ভাবন-মেধা-শ্রম দরকার-এভাবে গ্রহণ করলে সৃজনশীলতার ছোঁয়ায় ভরিয়ে তোলা যায়। অভাব-অনটন সত্তর পার্সেন্টই মনের, বাকিটা বস্তুগত।
প্যান্টের পকেটে হাত ঢুকিয়ে হাঁটার অভ্যাসটা ছাড়াবার সুযোগ নাজনীন পায়নি। ও সঙ্গে থাকলে হাতের ব্যাপারে সচেতন থাকি। পকেটে হাত ঢুকানোটা সচেতন কোন কর্ম নয়। তবে এর মধ্য দিয়েও আত্মবিশ্বাসের অভাবই কী স্পষ্ট হয়ে ওঠে? তা নাহলে পকেটে হাত না রাখলে ফাঁকা ফাঁকা লাগবে কেন-
আজ পকেটে হাত ঢুকিয়েই সচেতন হয়ে হাত বের করে নিলাম। তবে স্বাভাবিকভাবে হাঁটতে পারছি না। পা ফেলছি ফুটপাতে আর মনে হচ্ছে হাওয়ার উপর দিয়ে অবিশ্বাস্য ভঙ্গিতে হাঁটছি। যেন একটু জোরে পা ফেললে হাওয়ার প্রাকৃতিক বিন্যাস ভেঙ্গেচুরে খানখান হয়ে যাবে। উজবুক ভঙ্গিতে হাঁটতে গিয়ে চারপাশে তাকাচ্ছি, কেউ দেখে ফেলল কিনা! না, কেউ দেখছে না, একজনও না। আশ্চর্য কেউ দেখছে না কেন, আমি একটা জলজ্যান্ত মানুষ দিব্যি অসম ভঙ্গিতে হেঁটে যাচ্ছি-আমি কি তাহলে নেই, নাকি আজকাল কেউ কাউকে দেখে না, কিছু দেখে না-শুধু ঊর্ধাশ্বাসে দৌড়ায়? গতি মানুষের দেখবার, চিন্তা করবার সুযোগও কেড়ে নিয়েছে-
বায়তুল মোকাররমের দোতলায় উঠলাম সিঁড়ি ভেঙে নয়, যেন উড়ে উড়ে। পরিচিত দোকান তিলেত্তমা-গহনার দোকান। পরিচিত বললে পুরোটা বলা হয় না-আমার এক বন্ধুর দোকান। খুব ভারী বা বেশি পরিমাণ গহনা কেনার কথা নাজনীন কখনও ভাবে না। নাকফুল, কানের দুল-বড়জোর চেইন এইসব-তাও বছরে, দু’বছরেও এক-দু’বার। তাই বলে এ দোকানে খাতির কিছু কম করে না ওরা। কোল্ড ড্রিংকস, পয়লা বৈশাখের দাওয়াতপত্র, মিষ্টি, গিফট-কোনকিছুই এমনভাবে নয়, যাতে মনে হতে পারে নিতান্ত সাধারণ খদ্দের। মাঝে-মধ্যে এসে বন্ধুটির সঙ্গে আড্ডা, দু’তিনবার চা-চানাচুর। সমাদরে কোন কৃপণতা নেই। মালিকের বন্ধু হিসেবে কর্মচারীরাও যথেষ্ট সমীহ করে। বন্ধুটি ভেতরে থাকলে ওরা সানন্দে বলে, যান স্যার, ভেতরে স্যার আছেন। তিলোত্তমার সঙ্গে অন্তরঙ্গতা এমনই যে, আমার কিংবা নাজনীনের কোন রকম হীনমন্যতায় আক্রান্ত হওয়ার সুযোগই ছিল না।
বাসায় ফিরে অবশ্য আত্মমর্যাদা সচেতন নাজনীন বলত, তিলোত্তমা থেকে বেরিয়ে নিজেদের বড় খাটো মনে হয়-ওরা এত সমীহ-সমাদর করে আর আমরা কীইবা কিনি?
আজ এই তিলোত্তমায় ঢুকেই খটকা লাগল। সেলস্ম্যানরা সব উঠে দাঁড়িয়েছে আমার সেবায় নিয়োজিত হবার জন্য। ওদের চোখে-মুখে সেলস্ম্যানসুলভ হাসি-হাসি ভাব, যেরকম হাসিতে ওরা ক্রেতাদের বিক্রয়-সেবা দেয়। ওদের চোখে বিকশিত সেই ভাষা, স্যার আপনার জন্য কি করতে পারি?
তাজ্জব কান্ড! ওরাতো কখনও আমাকে নিছক কোন খদ্দের ঠাওরায় না। আমি কী এখন ওদের নিছক খদ্দের হয়ে যাব, এটা-ওটা নেড়েচেড়ে দেখব, ওজন কত, কত পড়বে, দেশি না বিদেশি, মজুরিটা একটু কমান যায় না-এরকম দরদাম বা কষাকষিতে লিপ্ত হব?
মেয়ে এষাকে নিয়ে ক’দিন আগে কানের দুল কিনতে এসেছিলাম। ও একটা খুব হালকা দুল চাইছিল। মার বড় দুলটা পড়ে ক্লাসে যেতে অস্বস্তি বোধ করে-এ কথা বলার পর নাজনীন কাঁচাবাজার কমিয়ে কিছু টাকা বাঁচায়। চা-সিগ্রেটের রাশ টেনে ধরায় আমার ম্যানিব্যাগেও কিছু কিছু করে টাকা জমা হচ্ছিল।
দু’মাস পর ওই টাকা নাজনীনের হাতে তুলে দিতেই অবাক কণ্ঠে বলল, অ্যাই-তুমি টাকা পেলে কোথায়?
যতটা প্রশ্ন, তারচেয়ে বেশি ওর কণ্ঠে বিস্ময়, যেন আমি বাড়তি টাকা পেতেই পারি না-
সবচেয়ে পুরনো সেলস্ম্যান সুশান্ত সেদিন নাজনীনকে বলেছে, ম্যাডাম, মেয়ে বড় হচ্ছে, এখন গহনা গড়াতে হবে।
আমার বন্ধুর ভাগ্নে চন্দন বলেছে, মামী এক কাজ করেন, চার মাস-ছয়মাস পর পর একটা করে সলিড চুড়ি নিয়ে রাখেন, পরে ভেঙে গহনা গড়ান যাবে আর ফোর্স সেভিংটাও হবে।
নাজনীন ভারী খুশি হয়েছে। বাসায় ফিরে, রাতে-চন্দনের পরামর্শ কতটা আন্তরিক আর ইতিবাচক এর ব্যাখ্যায় অনেক সময় ব্যয় করেছে। এখনো মাঝে-মধ্যেই বলে, জানো, চন্দন ছেলেটা খুব পজেটিভ, ও উন্নতি করবে-
যত পজেটিভই হোক চন্দনের পরামর্শমত আমরা এখনও এষার জন্য একটা সলিড চুড়িও এনে রাখতে পারিনি।
সেলসম্যানরা যে রকম আগ্রহ নিয়ে কাউন্টারে দাঁড়িয়ে অপেক্ষা করছে, তাতে একটা সলিড চুড়ি কেনা আজকে এই মুহূর্তে আমার জন্য কিছু নয়। একটা কেন কয়েকটাই কিনে নিতে পারি। ওরাও কী আমার স্ফীতসামর্থের এই খবর জেনে গেছে? তা না হলে সবাই এমন সটান দাঁড়িয়ে যাবে কেন? ওরা তো আমাকে কখনও খদ্দের হিসেবে দেখে না। আমাকে কী আগে যে রকম দেখাতো, তেমনটা দেখাচ্ছে না এবং ওরা ভাল খরিদদার ভেবে নিয়েছে? আমার বন্ধু বলেন, সেলসম্যানরা দোকানে ঢুকতে দেখেই বুঝতে পারে, কে কী পছন্দ করবে, কার কতটা সামর্থ। বন্ধুটি কী ভেতরে আছে? ওরা এখনও তেমন কিছু বলছে না কেন!
না বলুক কিছু-আমি চুড়ির শো-কেসের সামনে দাঁড়িয়ে গভীর মনোযোগে খুঁটিয়ে দেখতে লাগলাম। সুশান্ত বেশ ভারী ক’গাছি সলিড চুড়ি বের করে আমার হাতে ধরিয়ে দিল। চন্দন সলিড চুড়ির গুণাগুণ বর্ণনা করছে-খাদ কম, যেকোন সময় ভেঙে যেকোন গহনা গড়ান যায় এবং সবশেষে জরুরি খবরটি দিয়েছে, গহনার মধ্যে রি-সেল ভ্যালু সবচে ভাল-
ক’টা চুড়ি নেব? চুড়ির হিসাব জোড়া জোড়া। দু’ জোড়া, না তিন জোড়া-ছ’টায়ও সেট হয় আবার বিত্তবানদের বেলায় বারটায়ও হয়। বেশি ভাবনা-চিন্তায় না গিয়ে দু’জোড়া আলাদা করে রাখলাম। তারপর আবার একজোড়া রাখলাম। সামর্থ্যরে বিবেচনা তো আছেই, আমার মত মানুষের সাহস নিয়েও প্রশ্ন আছে, আজ বুঝতে পারলাম। ওরা চুড়ি ওজন করে ভেলভেট বাক্সে সাজিয়ে আমাকে দেখাল-রক্তলাল ভেলভেট, তার উপর পাশাপাশি তিনজোড়া চুড়ি কাঞ্চনবর্ণ আগুন ছড়াচ্ছে-দৃশ্যটা যেন ড্রাগনের অগ্নিউদ্গীরণের মত। ড্রাগনের কথাটাই যে কেন মনে পড়ল! ড্রাগন তার অগ্নিউদ্গীরণে সব জ্বালিয়ে ছাই করে দেয়। সোনাও কী ছাই হয়-বিশ্বে সর্বকালের আকর্ষণীয় উজ্জ্বলতা-
ডান পকেটটা আগে খালি করা দরকার। রুমাল বের করতে অসুবিধা হয়। পাঁচশ’ টাকার একটা বান্ডিল বের করলাম। উপরের নোটটা হাসছে-কার্টুনের মত গাল-মুখ কিম্ভুতকিমাকার করে একটু বেশিই হাসছে। চোখ বাঁকা করে অস্বাভাবিক লম্বা জিহ্বা দাঁতে পেঁচিয়ে হাসছে। আগুনমুখো ড্রাগনের জিহ্বার আগ্রাসী থাবা বসাচ্ছে-সেই ভীতিকর ছোবল, এতকাল যা দাবড়ে বেড়াত-আজ কি তা আমলে নিতে চাইছি না!
সোনার দোকান মানেই আয়না-চারদিকে আয়না। সামনে-পিছনে, ডানে-বামে কোন দৃশ্যই আড়াল করা যায় না। অকস্মাৎ সেই আয়নায় চোখ পড়তে আমার আঁতকে ওঠার অবস্থা। আয়না থেকে চোখ ফিরিয়ে নিজের বুক বরাবর নিচের দিকে তাকালাম-সব ঠিকঠাক আছে। প্রিয় স্ট্রাইপড প্যান্ট-যত দিন যাচ্ছে, উজ্জ্বল হচ্ছে তত। প্যান্ট পিসটা এনেছিল নাজনীনের ছোটভাই নিয়ামত প্যারিস থেকে। সাদার ওপর চিকন বেগুনি স্ট্রাইপ ফুলশার্ট-দুই ভাঁজ করে উলটানো হাতা-সবই যথারীতি আছে। কিন্তু প্যান্ট-শার্টের ভেতর সেই ক্লিনসেভ উজ্জ্বল শ্যামলা ত্বকসমেত মুখ এবং মেদবর্জিত শরীরটা কোথায়? এ কার মুখ-কার শরীর চেনা এবং অচেনার মাঝখানে কুয়াশার আড়ালে কাত হয়ে আছে, ঠিক ঠাহর করতে পারলাম না।
আশ্চর্য কেন চিনতে পারছি না, হঠাৎ চমকে উঠলাম, আরে এ মুখ তো মাহমুদুর রহমানের-পারচেজের ডিডি-তুখোড় অফিসার। যে কোন প্রোবলেম সামলাতে, বাজে কাজ সারতে সারা ডিপার্টমেন্টে তার ডাক পড়ে। একই সময়ে চাকরিতে ঢুকলেও সে মোড়ের কাছে পার্সোনাল কার থেকে নেমে এটুকু কষ্ট করে হেঁটে অফিসে ঢোকে বেশ অনেকক্ষণ হাঁসফাঁস করে। স্টাফ কোয়ার্টার ছেড়ে মিরপুরে নিজের বাড়িতে উঠেছে বছরদুয়েক আগে। ছেলেটাকে লন্ডনে সিএ পড়তে পাঠাবে, মেয়ের জামাইকে ইতালি পাঠিয়েছে-ওর ভাষায়, আজকাল আর তেমন খরচ কোথায়-পনের লাখেই সব হয়ে গেল।
মাহমুদ বলে, আমার ভাগ্নে শুভ্র এমবিএ করার সাথে সাথে চল্লিশ হাজারে শুরু করেছে-বছরে গড়ে বাড়ছে দশ হাজার করে। আর যদি কোম্পানি বদলাবার সুযোগ এসে যায়, তাহলে তো একলাফে দেড়গুণ বাড়বে। আমরা চাকরি করি আর ওরা করে জব। ওর যে বছর জন্ম, আমি সে বছর ম্যানেজমেন্টে এমকম করি-তখনকার ম্যানেজমেন্ট আর আজকের এমবিএ-বুঝতেই পারছ, এক জিনিস। আমি শুরু করেছি চারশ’ টাকায়-সে তো তুমিও করেছ। এত বছর পরও আমরা বিশ হাজার ছাড়াতে পারছি কী? তুমিই বল, নীতি-নৈতিকতা নিয়ে এত বাড়াবাড়ি করব কেন, কোন যুক্তিতে? আর কথায়ই তো আছে, কোনকিছুতেই বেশি বাড়াবাড়ি ভাল নয়। জানো আহসান, আবেগ নয়, যুক্তির গতিই বেশি-আমরা আজান্তেই একটা দৌঁড়ে আছি, যেখানে গতি ছাড়া বাকি সব বর্জনীয়-
আয়না থেকে ত্বরিত দৃষ্টি ফিরিয়ে নিলাম। ভেলভেটের বাক্স আর কিছু খুচরা টাকাসমেত ক্যাশমেমো বেগুনি কাগজের মোড়কে ঢুকিয়ে আমার হাতে দিয়ে সাথে সাথে এল ওদের একটা ছেলে। সিএনজি স্কুটারে উঠে ছেলেটার হাতে বিশ টাকার একটা নোট ধরিয়ে দেয়ার পর প্রশ্নটা আরও জটিল হয়ে উঠল, ওরা কেউই আমাকে চিনতে পারল না, কিন্তু কেন? সারাপথে অনেক জবাব-মাছের বাজারে হৈ-হট্টগোলের মত কানের উপর লেপ্টে থাকল। স্পষ্ট কিছুই শুনতে পারলাম না। মনে পড়ল শুধু-রথযাত্রা লোকারণ্য মহা ধুমধাম...।
বাড়ির সামনে নেমে সিগ্রেট কিনতে গিয়ে আরেকবার খটকায় পড়লাম। দোকানদার ছেলেটি প্রতিদিন সালাম দেয়-কথাবার্তায় তার চমৎকার সমীহভাব। আমার ফেরার সময়টাও তার জানা-দেরি হলে জিজ্ঞেস করে, আংকেল আইজকা অফিসের গাড়ি পান নাই বুঝি? আজ সে নির্বিকার-ভাবলেশহীন তার মুখমন্ডল। একটু আগে যে লোক দু’টা পান মুখে পুরে রাস্তায় দলাদলা পিক ফেলে গার্মেন্টসের দিকে চলে গেল, ওর কাছে তার সঙ্গে আমার যেন কোনই তফাৎ নেই! এসব ছোটখাটো আচরণ বেশ খচখচ করে বিঁধে-আমার তো বলতে গেলে আর কিছুই নেই-
অন্যদিন সালাম দিয়ে তিনটা সিগ্রেট প্যাকেটে ভরে বলে, অ্যাংকেল নেন।
আজ না তাকিয়েই জিজ্ঞেস করল, কী দেব?
এরকম কিছু জিজ্ঞেস করা তো ওর অভ্যাস নয়, হোঁচট খাওয়া অনাকাক্সিক্ষত ভাব চেপে বললাম, বেনসন তিনটা।
আরেকজন খদ্দেরের দিকে তাকিয়ে ছেলেটা প্যাকেট ছাড়া তিনটা সিগ্রেট আমার হাতে তুলে দিল।
আমার ওই আত্মীয়ের মেয়ের জামাইটির মত-তিলোত্তমার সেলসম্যানদের মত এই দোকানদারও আমাকে চিনতে পারল না। কী আশ্চর্য! আমি কী আর আমি নেই! এটা কেমন কথা-এই কথা আদৌ বিশ্বাসযোগ্য হবে কারও কাছে? অবিশ্বাস্য এক রহস্যের ঘোরে আমার চিন্তা করার শক্তিই যেন লোপ পাচ্ছে।
কল্যাণপুর স্টাফ কোয়ার্টার- বেশ আলো-হাওয়া খেলার মত ফাঁকা জায়গা আছে। ওরকম একটা ফাঁকা অন্ধকার জায়গায় কতক্ষণ দাঁড়িয়ে থাকতাম, জানি না। পাশের ফ্লাটের মাজহার সাহেবের ছেলেকে হেঁটে যেতে দেখে সম্বিত ফিরে পেলাম। আত্মীয়ের মেয়ের জামাই-সোনার দোকান তিলোত্তমার সেলসম্যানরা-পান দোকানদার ছোকরা আমাকে একটা ভিন্ন রকম অচেনা জায়গায় ছুঁড়ে দিয়েছে-অদ্ভুত অচেনা প্রকৃতির মাঝখানে যেন পরিবেশ-সমাজহীন এক কিম্ভূতকিমাকার জীবের মত আমার এই বাড়ি ফেরা! এটা কেন হবে-যত ভাবছি, তত অস্থির হয়ে পড়ছি। কোনভাবেই স্থিত হতে পারছি না-কিছুতেই না-
আমার মেয়ে-একমাত্র সন্তান এষা ফ্লাটের দরজা খুলেই দু’পা পিছিয়ে জিজ্ঞেস করল, কাকে চান?
তার চোখের ভাষা এবং কণ্ঠের দৃঢ়তায় বুঝলাম, আমার বিস্মিত হওয়ার আরও বাকি ছিল। কাকে চান-কাকে চান-এই প্রশ্নের বিশাল হা-এর সামনে কয়েক মিনিট নির্বাক তাকিয়ে থাকতে থাকতে দেখলাম-এষা ধীরগতিতে মিশে গেল সাদা দেয়ালে- যেখানে কাফন-সাদা অসম্ভব শূন্যতা উড়ছে-অথৈ সেই শূন্যতার মাঝখানে হঠাৎ ভেলভেটের বাক্সটা খড়কুটার মত ভেসে উঠল। লাল ভেলভেটের ওই বাক্স ত্বরিৎ গতিতে এষার হাতে তুলে দিয়ে চোখ বন্ধ করলাম। সেই স্বেচ্ছা-আঁধারে চারটা স্থির চিত্র সশব্দে ফেটে পড়ল-সামনে দিয়ে আত্মীয়ের মেয়ের জামাইয়ের নির্বিকার চলে যাওয়া-তিলোত্তমার সেলসম্যানদের ক্রেতা-সেবা, পান দোকানদারের অচেনা আচরণ-ঘরের দরজায় একমাত্র মেয়ের বিস্ময়ভরা প্রশ্ন-
আগের তিনটি চিত্রের সব বিন্যাস ছাপিয়ে উঠল এবার এষার কণ্ঠের বিস্ময়, আপনি কে-কাকে চান-কী এগুলো?
আমি এতটাই হতভম্ব, ওর কোন প্রশ্নেরই জবাব খুঁজে পেলাম না। ছাইরঙ শূন্যতার হাহাকার আমাকে কুঁকড়ে দলামোচড়া অবস্থায় ওয়েস্টপেপার বাস্কেটে ঠাসাঠাসি বাতিল কাগজের মধ্যে কাত করে শুইয়ে দিচ্ছে-
আমার ঘরে-আমারই একমাত্র সন্তানের বিস্মিত প্রশ্ন, আপনি কে-কাকে চান-এর ভার কে বইতে পারবে, আমি জানি না-
সন্তানের কণ্ঠে এই বিব্রতকর জিজ্ঞাসার কী কোন জবাব হয়, নাকি জবাব দেয়া যায়! আগের তিন-তিনটি মোকাবিলায় অবাক হয়েছি, বিস্ময়ের ধাক্কা সামলেছি-এবার জ্ঞান লোপ পাবার অবস্থায় পৌঁছে নিথর দাঁড়িয়ে থাকলাম দরজায়-
এষা দৌড়ে গেল ভেতরের ঘরে। ভাবলাম, নাজনীন এলে এই চরম বিব্রত অবস্থা থেকে উদ্ধার পাব।
নাজনীন এষাকে জোরে কঠোর ধমক লাগাবে, ছি- চোখের মাথা খেয়েছিস, নিজের আব্বুকে চিনতে পারছিস না-
ভেতরে গিয়ে এষা ওর মাকে বলছে, মা-মা দেখ, একটা লোক না, একটা ভেলভেটের বক্স নিয়ে এসেছে-এই যে বক্সটা ভারি সুন্দর-মনে হয়, গহনা-টহনা কিছু-।
-কে আপনি-কাকে চান-বলতে বলতে নাজনীন দ্রুত এগিয়ে এল। তার আঁচলে মুখ লুকিয়ে এষা। যেন দীর্ঘদিন জেলখাটা আসামি ছাড়া পেয়ে বাড়ি ফিরে এসেছে, তার ছোট্ট মেয়েটি এখন কিশোরী এবং তীব্র আগ্রহ নিয়ে দেখেও বাবাকে ঠাহর করতে না পেরে বিস্মিত। বিস্ময়ের পশ্চাতে তার কচি মনে আরও কিছু কৌতূহল এবং প্রশ্ন জট পাকিয়ে আছে, যা ছাড়াবার সামর্থ বাবাদের থাকে না।
নাজনীনও বিস্মিত দৃষ্টিতে আমাকে জরিপ করতে করতে আরেকটু এগিয়ে এল। ওর সিঁথির দু’পাশ থেকে ক’গাছি চুল কপাল ঢেকে মুখের উপর লুটিয়ে পড়েছে। এই দৃশ্যটি আমার একান্ত আমার চেতনার মহার্ঘ বস্তু-মাঝেমধ্যে দেখি-মুক্ত বাতাসের মত নিঃশ্বাস নিই-
ত্রস্তে চুড়ির বাক্সটা এষার হাত থেকে ছিনিয়ে নিয়ে পেছনে লুকিয়ে ফেললাম।
নাজনীন যেন ভিন্ন কোন গ্রহের আজব জীবের ওপর তীক্ষ্ণ দৃষ্টি ফেলল-আকাশের ওপারে আকাশ-তার ওপারে আকাশ পার হয়ে শেষ পর্যন্ত চরম বিস্ময়ে শনাক্ত করল, ওমা তুমি-তুমি-
তারপরই তীক্ষ্ণ স্বরে ফেটে পড়ল, তোমার হাতে ওটা কী?
আমি বিব্রত, কিছু না-
নাজনীনের স্বর আরেক কাঠি চড়ল, বললেই হল কিছু না-কোনো বস্তু অত সহজে নাই-করে ফেলা যায়-গেলে তোমার মেয়ে তোমাকে চিনতে পারবে না কেন?
এ প্রশ্নের কোন জবাব নেই আমার কাছে-জবাব আমাকে দিতেও হল না-
আমার পিয়ন আক্কাস দরজায় দাঁড়াল, স্যার স্টাফবাস তো গেছে, যাইবেন ক্যামনে-
আমি চোখ খুললাম। দুই পকেটে চারটা পাঁচশ’ টাকার বান্ডিলে হাত রেখে অনেকক্ষণ চোখ বন্ধ করে ছিলাম। ওই অচেনা সময়টুকুতে আজগুবি সব দৃশ্য চারপাশ থেকে ঘিরে রেখেছিল-খোলা মাঠের মাঝখানে অচেনা এক অদ্ভুত জীবের মত উপুড় হয়ে পড়ে ছিলাম আমি-
ওই চার বান্ডিল টাকা ঢাউস খামে ঢুকিয়ে আলমিরার ড্রয়ারে রেখে তালা লাগিয়ে আমি ঝাড়া হাত-পা’য় প্রতিদিনের চেনা ভঙ্গিতে বেরিয়ে এলাম। চাকরিজীবনে সরি বলার মত কাজ কালেভদ্রে করেছি- সে-ও শুরুর দিকে। আগামিকাল সকালে সরি বলে ঢাউস খামটা ফেরত দেব-
এখন ঠেলাঠেলি করে বাস ধরতে হবে-তারপরও খোলা আকাশের নিচে জন- ¯্রােতে মিশে লম্বা করে শ্বাস নেয়া কত সহজ-কত নির্মল।
বিভাগ : বিশেষ সংখ্যা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
না.গঞ্জে ডেঙ্গু পরীক্ষার টেস্ট কিট সংকট কে কেন্দ্র করে টেস্ট বাণিজ্যের অভিযোগ
ইমরান খানের মুক্তির দাবিতে বড় ধরনের বিক্ষোভের প্রস্তুতি
‘পতনের’ মুখে ইউক্রেনের ফ্রন্টলাইন
বিশ্বব্যাংক আয়োজিত জুলাই-আগস্ট গণঅভ্যুত্থানের গ্রাফিতির প্রদর্শনী
আগামীকাল রোববার নারায়ণগঞ্জের যেসব এলাকায় ১০ ঘণ্টা গ্যাস থাকবে না
সিলেট সীমান্তে দেড় কোটি টাকার ভারতীয় পণ্য জব্দ
২ মার্চকে জাতীয় পতাকা দিবস হিসেবে স্বীকৃতির আহ্বান জানালেন মঈন খান
সরাসরি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের প্রস্তাব নিয়ে যা বললেন বদিউল আলম
সিংগাইরে সাংবাদিক মামুনের বাবার ইন্তেকাল
বিরামপুরে ধান-ক্ষেত থেকে হাত বাধা আদিবাসী দিনমজুর মহিলার লাশ উদ্ধার!
আওয়ামী শুধু ফ্যাসিস্ট নয়, তাদের আরেকটা নাম দিয়েছি স্যাডিস্ট: মিয়া গোলাম পরওয়ার
খুবিকে ইমপ্যাক্টফুল বিশ্ববিদ্যালয় হিসেবে গড়ে তুলতে সকলের সহযোগিতা কামনা
লাল পাহাড়ের দেশকে বিদায় জানিয়ে না ফেরার দেশে চলে গেলেন অরুণ চক্রবর্তী
বিদেশি প্রভুদের নিয়ে বিতাড়িত স্বৈরাচার ষড়যন্ত্র করেই যাচ্ছে: তারেক রহমান
আগামী রোববার-সোমবারও বন্ধ থাকবে ঢাকা সিটি কলেজ
অত্যাধুনিক সব ক্ষেপণাস্ত্রের পরীক্ষা চালাব ইউক্রেনে: পুতিন
নির্বাচনে যত দেরি ষড়যন্ত্র তত বাড়বে: তারেক রহমান
‘ফিফা ছিল খুবই দুর্বল, আমিই একে বিশাল প্রতিষ্ঠানে রূপান্তর করেছি’
ফ্যাসিস্ট হাসিনা কাউকে রেহাই দেয়নি, জাতির ভবিষ্যৎ ধ্বংস করে পালিয়ে গেছেন: রিজভী
স্বৈরাচার সরকারের দোষররা এখনো মাথাচাড়া দেওয়ার চেষ্টা করছে: রফিকুল ইসলাম খান