মুজিব ঝড় সামলে বড় জয়ে ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে পাকিস্তান
২৬ আগস্ট ২০২৩, ১১:৫২ পিএম | আপডেট: ২৭ আগস্ট ২০২৩, ১২:২৩ এএম
স্কোরবোর্ডে একশ রান যোগ হওয়ার আগেই নেই ৭ উইকেট! অনেকটা নিশ্চিত পরাজয়ের মুখে দাঁড়িয়ে পাল্টা আক্রমণ শুরু করলেন মুজিব উর রহমান। ঝড়ো ব্যাটিংয়ে গড়লেন দেশের হয়ে দ্রুততম ফিফটির রেকর্ড। কিন্তু তাতে পরাজয়ের ব্যবধানই কেবল কমল, হার এড়ানো গেল না। সিরিজের শেষ ম্যাচেও আফগানিস্তানেক হারিয়ে আইসিসি ওয়ানডে র্যাঙ্কিংয়ের শীর্ষে উঠে গেল পাকিস্তান।
তিন ম্যাচ সিরিজের শেষ ওয়ানডেতে শনিবার কলম্বোর প্রেমাদাসা স্টেডিয়ামে টস জিতে ৮ উইকেটে ২৬৮ রান তোলে পাকিস্তান। জবাবে ৮ বল বাকি থাকতে ২০৯ রানে গুটিয়ে যায় আফগানরা। ৫৯ রানের জয় দিয়ে অস্ট্রেলিয়াকে টপকে আইসিসি ওয়ানডে র্যাঙ্কিয়ের শীর্ষে উঠা উদযাপন করল বাবর আজমের দল। তিন ম্যাচের সিরিজে আফগানদের হোয়াইটওয়াশ করল দলটি।
আড়াইশোর্ধো সংগ্রহ পাওয়া ম্যাচে এই মাঠে কখনও হারেনি পাকিস্তান। ব্যাট হাতে রেকর্ডটি গুড়িয়ে দেওয়ার মতো চ্যালেঞ্জ জানাতে পারেনি আফগানিস্তান। ৯৭ রানেই তারা ৭ উইকেট হারিয়ে ম্যাচ থেকে ছিটকে যায়। পরাজয়ের ব্যবধান কমিয়েছে মুজিবের ৩৭ বলে ৫টি করে ছক্কা-চারে গড়া ৬৪ রানের ক্যারিয়ার সেরা ইনিংস। তার ঝড়ো ইনিংসটি থামে নাটকীয় হিট উইকেট আউটে।
পাকিস্তানের বিপক্ষে ৯ নম্বরে বা এর নিচে নেমে কোনো ব্যাটসম্যানদের সর্বোচ্চ স্কোর এটিই। ১৯৮৩ বিশ্বকাপে শ্রীলঙ্কার কিপার-ব্যাটসম্যান গাই ডি আলউইসের অপরাজিত ৫৯ ছিল আগের সেরা।
মুজিব ফিফটি করেন এ দিন স্রেফ ২৬ বলে, আফগানিস্তানের হয়ে এই সংস্করণে যা দ্রুততম। ২০২১ সালে আবু ধাবিতে আয়ারল্যান্ডের বিপক্ষে রাশিদ খানের ২৭ বলে ফিফটি ছিল আগের রেকর্ড।
পাকিস্তানের সেরা বোলার শাদব খান ৪২ রানে নেন ৩ উইকেট। দুটি নেন শাহিন শাহ আফ্রিদি। দুটি করে উইকেট পান সিরিজে প্রথম সুযোগ পাওয়া ফাহিম আশরাফ ও মোহাম্মাদ নেওয়াজও।
আফগানদের হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৩৭ রান করেন শাহিদুল্লাহ। শাহিদুল্লাহ-মুজিবের অষ্টম উইকেট জুটি থেকে আসে তাদের সর্বোচ্চ ৫৭ রান। ২০ ওভার শেষে দলটির স্কোর ছিল ২ উইকেটে ৬০।
এর আগে বাবর আজম ও মোহাম্মাদ রিজওয়ানের ফিফটিতে লড়াইয়ের পুঁজি পায় পাকিস্তান। তবে তার আগে আফগান বোলারদের সামনে কঠিন পরীক্ষা দিতে হয়েছে পাকদের।
৩০ ওভার শেষে দলটির সংগ্রহ ছিল ২ উইকেটে ১০৩ রান। এরপর রানের গতি বাড়ায় বাবর-রিজওয়ান জুটি। এই জুটি থেকে ১৪৫ বলে আসে ১১০ রান। রশিদ খানের বলে উইকেটের পিছনে ধরা পড়ে ফেরেন বাবর। ৮৬ বলে ৪টি চার ও এক ছক্কায় তার ব্যাট থেকে আসে ৬০ রান।
দুই বাউন্ডারিতে দারুণ শুরু করেন সিরিজে প্রথম সুযোগ পাওয়া সউদ শাকিল। কিন্তু নিজের ভুলে ফেরেন রান আউট হয়ে। খানিক বাদেই লেগ বিফোর হয়ে যান রিজওয়ান। রিভিউ নিয়েও বাঁচতে পারেননি আম্পায়ার্স কল হওয়ায়। ৭৯ বলে ৬টি চার ও এক ছক্কায় এই কিপার-ব্যাটার করেন সর্বোচ্চ ৬৭ রান। এই ইনিংসের সুবাদে ম্যাচসেরাও হন তিনি।
গত ম্যাচের নায়ক শাদব বোল্ড হয়ে যান মুজিব উর রহমানের বলে। সপ্তম উইকেটে আগা সালমান ও মোহাম্মাদ নেওয়াজের ৪৭ বলে ৬১ রানের জুটিতে আড়াইশোর্ধো সংগ্রহ পায় পাকরা। নেওয়াজ ২৫ বলে ৩০ রান করে বাউন্ডারিতে ধরা পড়লেও ৩১ বলে ৩৮ রানে অপরাজিত থাকেন সালমান।
এই সংস্করণে পাকিস্তানের বিপক্ষে প্রথম জয়ের লক্ষ্যে দিনের শুরুটা ভালোই করে আফগানরা। নিজের প্রথম ওভারেই আফগানদের সফলতা এনে দেন সিরিজে প্রথম সুযোগ পাওয়া গুলবাদিন নবি। বড় শট নিতে গিয়ে আকাশে তুলে দেন ফখর। এক্সট্রা কাভার থেকে দারুণ ক্যাচ নেন রিয়াজ হাসান। ৩৩ বলে ২৭ করে ফেরেন এই পাক ওপেনার। ৩৬ রানে প্রথম উইকেট হারায় পাকিস্তান।
দারুণ লাইন-লেন্থের পসরা সাজিয়ে দ্বিতীয় উইকেটও দ্রুতই পেয়ে যান গুলবাদিন। ডান-হাতি এই মিডিয়াম পেসার ইমাম-উল হককে উইকেটের পিছনে ক্যাচ বানান। আগের ম্যাচে ৯ রানের জন্য শতক হাতছাড়া করা ওপেনার এবার ৩০ বলে করেন ১৩ রান। ব্যক্তিগত ৫ রানে মুজিবের বলে পয়েন্টে জীবন পেয়েও সুযোগ কাজে লাগাতে পারেননি ইমাম। অবশ্য তিন ম্যাচে সর্বোচ্চ ১৬৫ রান করে সিরিজ সেরা তিনিই।
আফগানদের হয়ে দুটি করে উইকেট নেন গুলবাদিন ও ফরিদ আহমেদ।
হাম্বানতোতায় সিরিজের প্রথম ম্যাচে পাকিস্তানকে ২০১ রানে গুটিয়ে জয়ের দারুণ সম্ভাবনা তৈরি করে আফগানিস্তান। কিন্তু ব্যাটিং ব্যর্থতায় তারা গুটিয়ে যায় স্রেফ ৫৯ রানে। একই মাঠে দুই দিন আগে দ্বিতীয় ম্যাচে তাদের ব্যাটসম্যানরা ঘুরে দাঁড়ায় দারুণভাবে। তোলে ৫ উইকেটে ৩০০ রান। পাকদের বিপক্ষে যা তাদের সর্বোচ্চ। ওপেনার রহমানউল্লাহ গুরবাজ খেলেন ক্যারিয়ার সেরা ১৫১ রানের ইনিংস। এরপরও রুদ্ধশ্বাস লড়াইয়ে শেষ ওভারের নাটকীয়তায় ১ বল বাকি থাকতে ১ উইকেটে হেরে যায় আফগানিস্তান।
আগেই সিরিজ নিশ্চিত হয়ে যাওয়া এবং এশিয়া কাপের আগে অন্যদের একটু ঝালিয়ে নেওয়ার আশায় দলে চারটি পরিবর্তন নিয়ে মাঠে নামে পাকিস্তান।
আগামী বুধবার নেপালের বিপক্ষে ম্যাচ দিয়ে ঘরের মাঠে এশিয়া কাপের অভিযান শুরু করবে বাবর আজমের দল।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
পাকিস্তান: ৫০ ওভারে ২৬৮/৮ (ফখর ২৭, ইমাম ১৩, বাবর ৬০, রিজওয়ান ৬৭, সউদ ৯, সালমান ৩৮*, শাদব ৩, নেওয়াজ ৩০, ফাহিম ২, আফ্রিদি ২*; ফারুকি ৭-০-৪৫-১, মুজিব ১০-২-৫০-১, গুলবাদিন ৯-১-৩৬-২, রশিদ ১০-১-৪২-১, ফরিদ ১০-০-৭০-২, নবি ৪-০-১৮-০)।
আফগানিস্তান: ৪৮.৪ ওভারে ২০৯ (গুরবাজ ৫, রিয়াজ ৩৪, ইব্রাহিম ০, শাহিদি ১৩, শাহিদুল্লাহ ৩৭, গুলবাদিন ০, নবি ৩, রশিদ ১৬, মুজিব ৬৪, ফরিদ ১৭, ফারুকি ৬*; আফ্রিদি ৯.৪-০-৩১-২, ফাহিম ৮-১-৪৩-২, ওয়াসিম ১০-০-৩৫-০, শাদব ১০-১-৪২-৩, সালমান ২-০-৩-১, নেওয়াজ ৯-০-৪৫-২)।
ফল: পাকিস্তান ৫৯ রানে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: মোহাম্মাদ রিজওয়ান (পাকিস্তান)।
সিরিজ: তিন ম্যাচ সিরিজে পাকিস্তান ৩-০ ব্যবধানে জয়ী।
ম্যান অব দা সিরিজ: ইমাম-উল হক (পাকিস্তান)।
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
প্রোটিয়াদের হোয়াইট ওয়াশ করে পাকিস্তানের ইতিহাস
৯ গোলের উৎসবে লিভারপুলের বড় জয়
বড়দিনের ছুটির আগে রিয়ালের বড় জয়
ঘরের মাঠেই বিধ্বস্ত ইউনাইটেড
গোলশূন্য ড্রয়ে থামল চেলসির জয়রথ
এনার্জিপ্যাকের বার্ষিক সাধারণ সভায় ব্যবসায়িক প্রবৃদ্ধির সম্ভাবনার ওপর গুরুত্বারোপ
আমার খাবার কি ফর্টিফায়েড?
হাসিনা পরিবারের নামে ১৩ বিশ্ববিদ্যালয়, ইউজিসি তাকিয়ে আছে সরকারের দিকে
ব্র্যাক ব্যাংকের রেমিটেন্স অ্যাওয়ার্ড অর্জন
দিনাজপুর জেলা শিক্ষা অফিসারের বিদায়ী সংবর্ধনা
নরসিংদীর শিবপুরে প্লাস্টিক কারখানা আগুনে পুড়ে ছাই
ডিসেম্বরে রেমিট্যান্স শূন্য যে ১০ ব্যাংকে
বিএনপি নির্বাচন ছাড়া ক্ষমতায় আসতে চায় না: আব্দুস সালাম
সরকারের আশ্বাসে শাহবাগ থেকে সরে গেলেন বিএসএমএমইউ ট্রেইনি চিকিৎসকরা
সাকাকে হারিয়ে চিন্তিত আর্সেনাল কোচ
৩১ ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন ব্যবস্থা সংস্কারের প্রস্তাব জমা হবে : বদিউল আলম মজুমদার
সিনিয়র সচিব ড. নাসিমুল গনিকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের বদলী
মানিকগঞ্জের ঘিওরে ছাত্রদল নেতা লাভলু হত্যাকারীদের ফাঁসির দাবিতে মানববন্ধন
বঙ্গবাজার পুড়ে যাওয়া মামলায় একজন গ্রেফতার
জনগণের প্রত্যাশা পূরণে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ধীর গতিতে চলছে: আমিনুল হক