লড়াই করেই হারল আফগানিস্তান
১১ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৮ এএম | আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৮ এএম
দারুণ বোলিংয়ে গুরুত্বপূর্ণ সময়ে উইকেট তুলে নিলেন মোহাম্মদ নবি, রশিদ খানরা। তবে ভাঙতে পারলেন না রাসি ফন ডার ডুসেনের প্রতিরোধ। এই টপ অর্ডারের ব্যাটে ভর করে জয় দিয়ে লিগ পর্ব শেষ করেছে দক্ষিণ আফ্রিকা। এবারের বিশ্বকাপে অবিশ্বাস্য পথচলায় শেষটা হার দিয়ে হলেও লড়াই করেই মাঠ ছেড়েছে আফগানিস্তান।
আইসিসি ওয়ানডে বিশ্বকাপের ত্রয়োদশ আসরের ৪২তম ম্যাচে শুক্রবার দক্ষিণ আফ্রিকা জিতেছে ৫ উইকেটে। শক্তিশালী ব্যাটিং লাইনআপ নিয়েও ২৪৫ রানের লক্ষ্যে প্রটিয়াদের খেলতে হয়েছে ৪৭.৩ ওভার পর্যন্ত।
ব্যক্তিগত ১২ রানে রানআউটের হাত থেকে বেঁচে যাওয়া ডুসেন খেলেন ৯৫ বলে ৭৬ রানের ম্যাচজয়ী ইনিংস। ম্যাচসেরাও তিনিই। তার সাথে ৩৭ বলে ৩৯ রানে অপরাজিত থেকে মাঠ ছাড়েন আন্দিলে ফেলুকুওয়াও। দলটির হয়ে দ্বিতীয় সর্বোচ্চ ৪১ রান করেন ওপেনার কুইন্টন ডি কক।
আগেই সেমিফাইনাল নিশ্চিত হওয়ায় দক্ষিণ আফ্রিকার জন্য ম্যাচটি ছিল অনেকটা নিয়ম রক্ষার। আফগানদের জন্যও অনেকটা তেমনই। কেবল ৪৩৫ রানের অবিশ্বাস্য ব্যবধানে জিতলেই শেষ চারে ওঠার সম্ভাবনা থাকত তাদের।
তবু বিশ্বকাপে তাদের সেরা পারফরম্যান্স এটাই। ৯ ম্যাচে চারটিতে জয় আফগানদের। রূপকথার ভেলায় চড়ে তারা হারায় বর্তমান চ্যাম্পিয়ন ইংল্যান্ড, সাবেক চ্যাম্পিয়ন পাকিস্তান ও শ্রীলঙ্কাকে। খুব কাছে গিয়েও রেকর্ড পাঁচবারের চ্যাম্পিয়ন অস্ট্রেলিয়াকে হারাতে পারেনি তারা। গ্লেন ম্যাক্সওয়েলের মহাকাব্যিক ২০১* রানের সেই ইনিংসে হেরে যায় আফগানরা।
মামুলি পুঁজি নিয়েও শেষ ম্যাচে দারুণ লড়াই করে হাশমতউল্লাহ শাহিদির দল। ১৩৯ রানে চতুর্থ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে দক্ষিণ আফ্রিকা। এরপর ডেভিড মিলারকে নিয়ে ৪৩ ও ফেলুকুওয়াওকে নিয়ে অবিচ্ছিন্ন ৬৫ রানের জুটিতে দলের জয় নিশ্চিত করেন ডুসেন।
টসজয়ী আফগানিস্তান নির্ধারিত ৫০ ওভারে পায় ২৪৪ রানের সংগ্রহ। ১০৭ বলে ৭ চার ও ৩ ছক্কায় ক্যারিয়ার সেরা অপরাজিত ৯৭ রান করেন আজমতউল্লাহ ওমরজাই।
দক্ষিণ আফ্রিকার হয়ে ৪৪ রানে ৪ উইকেট নেন জেরাল্ড কোয়েৎজি। দেশটির হয়ে বিশ্বকাপের এক আসরে সর্বোচ্চ উইকেট এখন এই পেসারের (১৮টি)।
১০ ওভারে স্রেফ ২৫ রানে ২ উইকেট নেন কেশভ মহারাজ। উইকেটকিপার কুইন্টন ডি কক একাই নেন রেকর্ড ছয়টি ক্যাচ।
ডি ককের আগে ম্যাচে ৬টি ক্যাচ নিয়েছেন দুজন কিপার। ২০০৩ সালে নামিবিয়ার বিপক্ষে অ্যাডাম গিলক্রিস্ট, ২০১৫ সালে দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে সারফারাজ আহমেদ উইকেটের পেছনে নেন ৬ ক্যাচ।
বিশ্বকাপ ছাড়া ওয়ানডেতেও এক ম্যাচে ৬ ক্যাচই সর্বোচ্চ। সবচেয়ে বেশি ছয়বার এই কীর্তি গড়েন গিলক্রিস্ট। ডি কক এর আগে ২০১৪ সালে নিউ জিল্যান্ডের বিপক্ষে এক ম্যাচে নেন ৬টি ক্যাচ।
আহমেদাবাদে আফগানিস্তানের শুরুটা ছিল দারুণ। কিন্তু ৪১ রানের ওপেনিং জুটির পর ৪ রানের ব্যবধানে ৩ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে তারা।
বোলিংয়ে এসেই রহমানউল্লাহ গুরবাজকে (২২ বলে ২৫) স্লিপে ক্যাচ বানিয়ে ওপেনিং জুটি ভাঙেন মহারাজ। নিজের পরের ওভারে অধিনায়ক হাশমতউল্লাহ শাহিদিকে (২) কটবিহাইন্ড করেন এই স্পিনার। মাঝের ওভারে ইব্রাহিম জাদরানকে (৩০ বলে ১৫) উইকেটের পিছনে ক্যাচ বানান কোয়েৎজি।
রহমত শাহ ও আজমতউল্লার ৪৯ রানের জুটিতে চাপ সামাল দিয়ে না উঠতেই আবারও ধ্বসের কবলে পড়ে আফগানিস্তান। ২২ রানের মধ্যে তারা আবার হারায় ৩ উইকেট।
এনগিদির বলে প্রায় পাঁচ বারের প্রচেষ্টায় পয়েন্টে রহমতের (৪৬ বলে ২৬) ক্যাচ নেন ডেভিড মিলার। ইকরাম আলিখিলকে (১৪ বলে ১২) কোয়েৎজি ও মোহাম্মদ নবিকে এনগিদি কট বিহাইন্ডের ফাঁদে ফেলেন।
এবার রশিদ খানকে নিয়ে ৪৪ রানের জুটি গড়েন ওমরজাই। রশিদও কট বিহাইন্ডের শিকার হন একাদশে ফেরা আন্দিলে ফেলুকুওয়াওর বলে। এরপর নূর আহমেদকে নিয়ে লড়াই চালিয়ে যান আজমতউল্লাহ। আবারও উপহার দেন ৪৪ রানের জুটি। নূর (৩২ বলে ২৬) কোয়েৎজির শিকার হয়ে ফিরলেও হার মানেননি আজমতউল্লাহ।
তার সামনে দারুণ সুযোগ ছিল তিন অঙ্ক স্পর্শ করার। কিন্তু শেষ ওভারে ৪ বল খেলে আজমত নিতে পারেন কেবল ১ রান।
ইতোমধ্যে বিশ্বকাপ সেমিফাইনালে জায়গা করে নিয়েছে ভারত, দক্ষিণ আফ্রিকা ও অস্ট্রেলিয়া। বাকী একটি জায়গার জন্য লড়াইয়ে আছে নিউজিল্যান্ড ও পাকিস্তান। বৃহস্পতিবার লিগ পর্বে নিজেদের শেষ ম্যাচে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে জয়ের পর নিউজিল্যান্ডের পয়েন্ট এখন ১০। শ্রীলঙ্কাকে বড় ব্যবধানে হারানোয় সেমিফাইনাল কার্যত নিশ্চিত করে ফেলেছে নিউজিল্যান্ড। শনিবার ইংল্যান্ডকে ২৮৭ রানের ব্যবধানে হারাতে পারলেই কেবল শেষ চারে উঠতে পারবে পাকিস্তান।
সংক্ষিপ্ত স্কোর:
আফগানিস্তান : ৫০ ওভারে ২৪৪ (রহমানউল্লাহ ২৫, ইব্রাহিম ১৫, রহমত ২৬, শাহিদি ২, আজমতউল্লাহ ৯৭*, ইকরাম ১২, নবি ২, রশিদ ১৪, নূর ২৬, মুজিব ৮, নাভিন ২; অতিরিক্ত ১৫; রাবাদা ১০-০-৪০-০, এনগিদি ৮.৩-০-৬৯-২, মার্করাম ৪.৩-০-২৫-০, কোয়েৎজি ১০-১-৪৪-৪, মহারাজ ১০-১-২৫-২, ফেলুকুওয়াও ৭-০-৩৬-১)।
দক্ষিণ আফ্রিকা: ৪৭.৩ ওভারে ২৪৭/৫ (ডি কক ৪১, বাভুমা ২৩, ডুসেন ৭৬*, মার্করাম ২৫, ক্লাসেন ১০, মিলার ২৪, ফেলুকুওয়াও ৩৯*; অতিরিক্ত ৯; মুজিব ১০-০-৫১-১, নাভিন ৬.৩-০-৫২-০, নবি ১০-১-৩৫-২, আজমত ১-০-৮-০, রশিদ ১০-১-৩৭-২, নূর ৯-০-৪৯-০, রহমত ১-০-১২-০)।
ফল: দক্ষিণ আফ্রিকা ৫ উইকেটে জয়ী।
ম্যান অব দা ম্যাচ: রাসি ফন ডার ডুসেন।
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
যুদ্ধবিরতিতে সম্মত হওয়ার পরও গাজায় হামলা ইসরাইলের, নিহত অন্তত ৩০
জুলাই ঘোষণা : কারা যাচ্ছেন আজকের বৈঠকে
গাজায় যুদ্ধবিরতি চুক্তিতে সম্মত হামাস-ইসরাইল
যে সব শর্তে গাজায় যুদ্ধবিরতি
এনসিটিবির সামনে হামলার ঘটনায় গ্রেপ্তার ২
নোয়াখালীর সদর উপজেলার ইউপি চেয়ারম্যান বাবলু আটক
বগুড়ায় কলেজ শিক্ষার্থী হত্যা মামলায় গ্রেফতার ৪
মতিঝিলে শিক্ষার্থীদের দুই গ্রুপের সংঘর্ষে আহত ১৫
সাভারে ডিবি পুলিশ পরিচয়ে ২৫ লাখ টাকার তেলসহ পিকআপ ছিনতাই
ডাকসু নিয়ে ৩৭৭ সংস্কার প্রস্তাব ঢাবি ছাত্রদলের
গাজীপুরে থানায় ব্যবসায়ীকে আটক করে ২ লাখ টাকা ঘুষ নিলো ওসি
রূপপুর পারমানবিক বিদ্যুৎ কেন্দ্র অফিস অবরোধের ঘোষণা চাকরি বঞ্চিতদের
শামীম ওসমান-নানক পরিবারের বিরুদ্ধে দুই মামলা
বায়ু দূষণে আবারও শীর্ষে ঢাকা
এক মাসের মধ্যে সংস্কারের রোডম্যাপ দিবে সরকার: পরিবেশ উপদেষ্টা
দেশে ফিরেই ছিনতাইয়ের শিকার মালয়েশিয়া প্রবাসী ডালিম
বিপিএল শেষ কর্নওয়ালের
ওয়াটসাপ, টেলিগ্রাম বা বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে মেসেজ দিয়ে দেওয়া সালামের জওয়াব দেওয়া প্রসঙ্গে?
আরচ্যারী ফেডারেশনের তারুণ্যের উৎসব কর্মসূচি শুরু
বেনাপোলে আড়াই বছর পর কবর থেকে তোলা হলো বিএনপি নেতা আলিমের লাশ