সালাউদ্দিন স্বপ্ন দেখাচ্ছেন সুজনদের
২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১৩ এএম | আপডেট: ২৭ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১৩ এএম
ফ্যাসিস্ট শেখ হাসিনার পতন ও ভারতে পালিয়ে যাওয়ার মধ্য দিয়ে পাওয়া নতুন বাংলাদেকে নেতৃত্ব দিচ্ছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। পতিত আওয়ামী সরকারের আমলে দেশের ক্রিকেটেও ছিলেন একজন অন্তর্বর্তীকালীন কোচ- খালেদ মাহমুদ সুজন। যদিও তার দায়িত্বকে আপৎকালীন বললেই বেশি মানানসই হয়। কেননা যখনই কোনো কোচ কিংবা ম্যানেজারের শূন্যতা তৈরী হয় সেখানেই অটোফিট হয়ে যান সাবেক এই অধিনায়ক। সেই প্রেক্ষাপটে বহুবার জাতীয় দলের কোচিংয়ে স্বপ্নও দেখা সেই খালেদ মাহমুদ এবার বিপিএলে ঢাকা ক্যাপিটালসের হেড কোচ। তিনি না পারলেও মোহাম্মদ সালাউদ্দিনকে জাতীয় দলের কোচিং প্যানেলে দেখে দেশের অন্যান্য কোচদের নিয়েও এখন আশাবাদী এই সাবেক অলরাউন্ডার। সাবেক অন্তর্বর্তীকালীন প্রধান কোচের মতে, পর্যাপ্ত সময় পেলে স্থানীয় কোচরাও দেশের ক্রিকেটে ভালো অবদান রাখতে পারবেন।
সবশেষ ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফর দিয়ে সিনিয়র সহকারী কোচ হিসেবে জাতীয় দলে নতুন অধ্যায় শুরু করেছেন সালাউদ্দিন। এর আগে ২০০৬ থেকে ২০১০ পর্যন্ত সময়ে ফিল্ডিং কোচ ও সহকারী কোচ হিসেবে কাজ করেছিলেন তিনি। প্রায় ১৪ বছর পর এবার আরেকটু বড় দায়িত্ব নিয়ে প্রথম সফরেই সাফল্যের দেখা পেয়েছেন সালাউদ্দিন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের মাঠে প্রথম টেস্ট জয় ও প্রথমবার টি-টোয়েন্টিতে তাদের হোয়াইটওয়াশ করে দেশে ফিরেছে বাংলাদেশ। সফর শেষে ক্রিকেটারদের পারফরম্যান্সে সালাউদ্দিনের ইতিবাচক প্রভাবের কথা বলেছেন টি-টোয়েন্টি অধিনায়ক লিটন কুমার দাস, শেখ মেহেদি হাসানসহ আরও অনেকে। অথচ তাকে দায়িত্ব দেওয়ার আগে দেশি কোচদের নিয়ে ছিল নানান অভিমত। আন্তর্জাতিক পর্যায়ে জাতীয় দলের কোচিং করানোর জন্য দেশিরা প্রস্তুত কিনা সেই প্রশ্নও উঠেছে অনেকবার। এই প্রসঙ্গে দেশের আরেক অভিজ্ঞ কোচ খালেদ মাহমুদকে পাশে পেলেন সালাউদ্দিন। মিরপুরের বিসিবি একাডেমি মাঠে গতকাল ঢাকা ক্যাপিটালসের অনুশীলন শেষে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে আলাপে বরং বিদেশি কোচদের নিয়েই পাল্টা প্রশ্ন তোলেন খালেদ মাহমুদ, ‘আমি বলব যে, বিদেশি কোচরা কতটুকু প্রস্তুত? তারা যে এই দেশে আসে, তারা কতটুকু তৈরি হয়ে আসে? একটা কোচ দেখান তো, যারা এখানে এসে বাংলাদেশের ক্রিকেটকে অনেক ওপরে নিয়ে চলে গেছে। এমন তো হয় না। পারফরম্যান্সে শুধু এদিক-ওদিক হয়।’
প্রথম সিরিজেই ভালো ফল পাওয়ায় সালাউদ্দিনকে নিয়ে হয়তো এখন আর নেতিবাচক চিন্তা করবে না কেউ। তবে পরের সিরিজে ফল ইতিবাচক না হলেই তাকে নিয়ে সমালোচনার পক্ষে নন খালেদ মাহমুদ। দীর্ঘমেয়াদে সুফল পেতে বিদেশি কোচদের মতো দেশি কোচদেরও পর্যাপ্ত সময় দেওয়ার দাবি জানালেন ঢাকা ক্যাপিটালসের প্রধান কোচ, ‘সালাউদ্দিন যদি ৩ বছর বাংলাদেশ জাতীয় দলে কাজ করে, পারফরম্যান্সে ওঠা-নামা থাকতেই পারে। কিন্তু একটা সিরিজে খারাপ করলেই যদি বাদ দিয়ে দেন তাহলে তো স্থিতিশীলতা আসবে না। আপনি তো বিদেশি কোচের ক্ষেত্রে এটা করেন না। চুক্তির অনেক বিষয় থাকে, তিন মাসের বেতন দিয়ে বাদ দিতে হবে। ফিল সিমন্স যখন (দক্ষিণ আফ্রিকার বিপক্ষে হোয়াইটওয়াশড হয়ে) শুরু করল, বাংলাদেশের কোনো কোচ হলে তো আপনি তাকে আর বিসিবিতেই ঢুকতে দিতেন না। তো আপনাকে (দেশি কোচদেরও) সময় দিতে হবে। বাংলাদেশের কোচরা প্রস্তুত নয়, এই কথা ভুল।’
এসময় জাতীয় দলের কোচিংয়ের ক্ষেত্রে দেশি ও বিদেশিদের নিয়ে করা চিরায়ত ভেদাভেদের কথা তুলে ধরেন বাংলাদেশের সাবেক অধিনায়ক, ‘কোচিংয়ের ভাষা সবখানেই এক। ওরা বিদেশি ভাষায় বলে, আমরা দেশি ভাষায় বলি। পার্থক্য শুধু এটুকুই। সাচিন টেন্ডুলকার অথবা ডব্লিউ জি গ্রেসের ক্ষেত্রে স্কয়ার কাট কি আলাদা? একই টেকনিকের খেলা। তাই এটা কোনো সমস্যা নয়। আমাদের সমস্যা হলো, যেটা অনেক আগে থেকেই বলছি, যখন বিসিবিতে চাকরি শুরু করলাম, সিনা ইবনে জামালি স্যার প্রেসিডেন্ট ছিলেন। তাকে আমি বলেছিলাম, রঙের ব্যবধান কমান, চামড়ার ব্যবধানটা কমান। সাদা চামড়া হলেই, বিদেশি কথা বলে দেখেই ভালো কোচ হতে হবে, এমন হয়।’
খালেদ মাহমুদের বিশ্বাস, অদূর ভবিষ্যতে ফিল্ডিং কোচ বা ফাস্ট বোলিং কোচও আর দেশের বাইরে থেকে আনতে হবে না, ‘সালাউদ্দিনসহ বাংলাদেশে অনেক কোচ আছে যারা অভিজ্ঞ। সালাউদ্দিনকে দিয়ে শুরু হয়েছে এটা ভালো একটা দিক। সালাউদ্দিন কিছুটা হলেও ছাপ রাখতে পেরেছে প্রথম সফরে। দীর্ঘ মেয়াদে কাজ করতে পারলে আরও বেশি প্রভাব রাখতে পারবে। আরও বেশি দেশি কোচকে জাতীয় দলের সঙ্গে কাজ করতে দেখতে পারব। ফাস্ট বোলিং বা ফিল্ডিংয়ে আমাদের অনেক কোচ তৈরি হয়ে গেছে। তাদের ব্যাপারেও ভাবতে পারে বিসিবি। আমি বিশ্বাস করি না যে, ফিল্ডিং কোচ আমাদের বাইরে থেকে আনতে হবে।’
খালেদ মাহমুদ নিজেও দীর্ঘ দিন ধরে কোচিং পেশায় নিয়োজিত। ২০১৮ সালে ভারপ্রাপ্ত দায়িত্বে জাতীয় দলের প্রধান কোচও ছিলেন তিনি। তাই তার কাছে জানতে চাওয়া হয়, আবার জাতীয় দলের কোচিং প্যানেলে আসতে চান কিনা? উত্তরে নিজের আগ্রহের কথা জানিয়ে রাখেন তিনি, ‘প্রেসিডেন্ট স্যারকে আমিই বলে এসেছিলাম, যেহেতু কোচিং করাই, তাদের যদি মনে হয় আমি সামর্থ্যবান, তাহলে দায়িত্ব দেওয়া হলে জাতীয় দলের সঙ্গে কাজ করতে তৈরি আছি। এখন জানি না কী অবস্থা। কারণ দেশ পরিবর্তনের মধ্য দিয়ে যাচ্ছে।... হ্যাঁ, যেহেতু আমার পেশা কোচিং, যদি সেরকম সুযোগ থাকে, আমি অবশ্যই বাংলাদেশ ক্রিকেটের জন্য কাজ করতে আগ্রহী।’
৩০ ডিসেম্বর শুরু হবে বিপিএল। মিরপুরের হোম অব ক্রিকেটে উদ্বোধনী দিন সন্ধ্যা ৭টার ম্যাচে রংপুর রাইডার্সের মুখোমুখি হয়ে বিপিএল অভিযান শুরু করবে খালেদ মাহমুদের ঢাকা।
বিভাগ : খেলাধুলা
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ইসরাইলের বিমানবন্দরে পাল্টা ক্ষেপণাস্ত্র হামলা হুতিদের
ভর শীতে ও গারো পাহাড় সীমান্তাঞ্চলের বিলে-ঝিলে দেখা মিলছে না অতিথি পাখির!
এ বছর আর হচ্ছে না বিজিবি-বিএসএফের বৈঠক
দীর্ঘদিন শরীর সুস্থ রাখার উপায়
গফরগাঁওয়ে ভয়াবহ ব্রহ্মপুত্র ট্রেন দুর্ঘটনা: গুরুতর আহত ১
বাসের ধাক্কায় দুমড়েমুচড়ে গেল প্রাইভেটকার, নিহত ৫
যুক্তরাষ্ট্রে প্রথম গুরুতর বার্ড ফ্লু সংক্রমণে মিউটেশন, শনাক্ত একজন
বাংলাদেশ-চীন সম্পর্ক নতুন উচ্চতায় পৌঁছেছে: পররাষ্ট্র উপদেষ্টা
সূর্যের নিকটতম যাত্রা, নিরাপদে ফিরে এলো নাসার পার্কার সোলার প্রোব
দোয়ারাবাজার পল্লীতে যুবক খুন
স্পেনগামী সমুদ্রপথে ২০২৪ সালে অভিবাসীদের রেকর্ড সংখ্যক মৃত্যু
অভিনয়ের জন্য গোসল করতেন না অনিল কাপুর
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ২০২৫ সালে রাশিয়া সফর করবেন
শেষ বিকেলে দ্রুত উইকেট হারিয়ে চাপে ভারত
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী টাইম ওয়ার্নারের প্রাক্তন সিইও রিচার্ড ডি. পারসন্সের মৃত্যু
নারীকে যৌন নিপীড়ন: খোদ মহারাষ্ট্রে ইসকন সন্ন্যাসী জুতাপেটা
অনূর্ধ্ব-১৯ নারী টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের দল ঘোষণা
আফগানিস্তানকে পেয়ে আবারও জ্বলে উঠলেন উইলিয়ামস
অস্ট্রিয়ার তিরোলে তুষারধসে বাবা-ছেলের মৃত্যু
বিয়ে-বাচ্চা সব মানুষ হওয়ায় দিছে: জেফার