ফেলনা-আপদ জলজ উদ্ভিদ ‘কচুরিপানা’ এখন সম্পদ
০১ জুলাই ২০২৩, ০৮:০৯ পিএম | আপডেট: ০২ জুলাই ২০২৩, ১২:০১ এএম
শেরপুর উত্তরে ফেলনাও এক সময়ের আপদ জলজ উদ্ভিদ কচুরিাপনা ও এখন সম্পদ। এই কচুরিপানা একটি জলজ উদ্ভিদ। কচুরিপানা মুক্তভাবে ভাসমান বহুবর্ষজীবী জলজ উদ্ভিদ। আদি নিবাস দক্ষিণ আমেরিকায়। ৭টি প্রজাতি আছে এবং এঁরা মিলে আইকরনিয়া গঠন করে। পুর”, চকচকে এবং ডিম্বাকৃতি পাতাবিশিষ্ট কচুরিপানা পানির উপরিপৃষ্ঠে ১ মিটার পর্যন্ত বাড়ে। এর কান্ড থেকে দীর্ঘ, তন্ময়, বহুধাবিভক্ত মূল বের হয়। যার রং বেগুনি-কালো। এক পু®পবৃন্ত থেকে ৮-১৫ টি আকর্ষণীয় ৬ পাঁপড়ি বিশিষ্ট ফুলের থোকা তৈরি হয়। কচুরিপানা দেখতে গাঢ় সবুজ হলেও এর ফুলগুলো সাদা পাপড়ির মধ্যে বেগুনি ছোপযুক্ত এবং মাঝখানে হলুদ ফোঁটা থাকে। সাদা এবং বেগুনি রঙের মিশেলে এক অন্যরকম আবহ তৈরি করে। সাদা পাপড়ির স্থলে কোথাও হালকা আকাশি পাপড়িও দেখা যায়। পুরোপুরি ফুল ফোটার আগে দেখতে অনেকটা নলাকার দেখায়। পাপড়িগুলোর মাঝখানে পুংকেশর দেখতে। প্রতি ফুলে ৬টি করে পাপড়ি। প্রায় সারা বছর কচুরি ফুল ফুটতে দেখা যায়। কচুরি ফুলের মুগ্ধতায় মানুষের মধ্যে প্রকৃতি প্রেম জাগ্রত হয়। পুকুরভরা কচুরি ফুল, যেন প্রদীপ জ্বলে, ময়ূরের পালকের মত দেখতে কচুরিপানা ফুল। গ্রামবাংলার অতি পরিচিত একটি জলজ উদ্ভিদ কচুরিপানা। দেশের প্রায় প্রত্যেক অঞ্চলেই নদ-নদী, পুকুর, জলাশয়, হাওড়, নি¤œাঞ্চলে সচরাচর কচুরিপানার দেখা মেলে। কচুরিপানা দক্ষিণ পাকিস্তানের সিন্ধুর প্রাদেশিক ফুল। চাঁদপুর অঞ্চলে এই উদ্ভিদকে কস্তুরি বলে। ইতিহাস থেকে জানা যায় এ ফুলের সৌন্দর্যে বিমোহিত হয়ে জর্জ মরগ্যান নামে ব্রাজিলীয়ান এক পাট ব্যবসায়ী বাংলায় নিয়ে আসেন আমাজন এলাকার এ উদ্ভিদ। কচুরিপানার অর্কিডসদৃশ ফুল দেখে সবাই মুগ্ধ হয়। কচুরিপানা দ্র”ত বংশবিস্তার করে। প্রচুর বীজ তৈরি করে যা ৩০ বছর পরও অঙ্কুরোদগম ঘটাতে পারে। রাতারাতি বংশবৃদ্ধিতে প্রায় দুসপ্তাহে দ্বিগুণ হয়। ধারণা করা হয় কচুরিপানার অর্কিড-সদৃশ ফুলের সৌন্দর্য প্রেমিক এক ব্রাজিলীয় পর্যটক ১৮শ’ শতাব্দীর শেষভাগে বাংলায় কচুরিপানা নিয়ে আসেন। তারপর তা এতো দ্র”ত বাড়তে থাকে যে ১৯২০ সালের মধ্যেই বাংলার প্রায় প্রতিটি জলাশয় কচুরিপানায় ভরে যায়। নদ-নদীতে চলাচল দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে। জলাভূমির ফসল আমন ধান পাট চাষ অসম্ভব হয়ে পড়ে। এতে অর্থনীতিতে স্থবিরতা দেখা দেয়। ব্রিটিশ ভারতে কচুরিপানাই একমাত্র উদ্ভিদ। যা দমনে কচুরিপানা নির্মূল আইন ১৯৩৬ প্রণীত হয়। কচুরিপানায় অনেক উপকারও হয়। এটি এখন প্রধানত: সার হিসেবেই অধিক ব্যবহৃত হয়। বর্ষাকালে বন্যা আক্রান্ত অঞ্চলে গবাদি পশুর খাদ্য জোগায়। হাওড়াঞ্চল সংলগ্ন এলাকায় বাঁশ দিয়ে আটকে রেখে ঢেউয়ের আঘাত থেকে ভিটেমাটি রক্ষায় ব্যবহৃত হয়। এ ছাড়া পানিতে স্তূপীকৃত পচা কচুরিপানার ওপরে ভাসমান নানা শাক-সবজিও ফলানো যায়। ফলে চাষিরা পানিতে ভাসমান কচুরিপানার স্তূপগুলোকে কৃষিকাজে ব্যবহার করে। কচুরিপানাকে শুঁকিয়ে প্রক্রিয়াজাত করে নিত্যপ্রয়োজনীয় দ্রব্যও তৈরি করা হয়। কচুরিপানা থেকে তৈরি হচ্ছে টব, ফুলদানি,পাটি, ট্রে, ফলঝুড়ি, ডিম রাখার পাত্র, পাপোশ, মোড়া, টুপি, আয়নার ফ্রেম, ডাইনিং টেবিলের ম্যাটসহ প্রায় ২০ ধরনের পণ্য। ’কচুরিপানা প্রকৃতি ও মানুষের জীবনে কিছু নেতিবাচক প্রভাব ফেললেও অসাধারণ অনেক কিছু কাজে ব্যবহার করা হচ্ছে। এর ব্যবহার যত বাড়বে দেশের অথনীতি তত উন্নত হবে বলে মন্তব্য করেছেন ঝিনাইগাতীর শতবর্ষী ডাঃ অব্দুল বারী ও আলহাজ্ব শরীফ উদ্দিন সরকার।’ ’ঝিনাইগাতী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ( ইউএনও ) মোঃ ফার”ক আল মাসুদ দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, যে কচুরিপানাকে আগে জলজ জঞ্জাল বা আপদ মনে করা হতো। কিন্ত তা বর্তমানে কৃষি কাজে সম্পদে পরিনত হয়েছে। বিঞ্জানের চরম উৎকর্ষের যুগের কল্যাণে এর উত্তরোত্তর ব্যবহার বাড়ছে এবং আরো বেড়ে যাবে বলে মনে করেন ওই কর্মকর্তা।’
বিভাগ : অভ্যন্তরীণ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
দিয়াসের হ্যাটট্রিকে লিভারপুলের জয়যাত্রা অব্যাহত
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আর্জেন্টিনা দলে ফিরলেন মার্টিনেজ
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্টকে বরখাস্ত করলেন নেতানিয়াহু
শমী কায়সার গ্রেপ্তার
শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজের ৫৬তম প্রতিষ্ঠঅ বাষির্কী উপলক্ষে মিলনমেলা ২০ নভেম্বর
বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজের স্পন্সর ওয়ালটন
সাভারে অভিযানের পর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ভেজাল শিশু খাদ্য তৈরী কারখানা
সম্মান বজায় রেখে কাজ করুক সেনাবাহিনী প্রত্যাশা সাধারন মানুষের
যশোরবাসীর দুর্ভোগ আর প্রতারণার নাম পদ্মাসেতু রেলপ্রকল্প!
আপনার প্রেমিকা খুব দামি গিফট চান! তাঁকে কী ভাবে সামলে নেবেন?
টেকনাফে ৫০হাজার ইয়াবাসহ মিয়ানমারের নাগরিক আটক।
ফ্যাসিবাদের বিচার এবং পাচারকৃত টাকা ফিরিয়ে আনতে হবে
কোনো পরাশক্তি নয়, জনগণের ঐক্যই বাংলাদেশের মূল শক্তি
হৃদয়ে তাঁর নাম লেখা হয়ে আছে
শিল্প প্রতিষ্ঠান চালু রাখার পদক্ষেপ নিতে হবে
প্রত্যেক বন্দীর জন্য মিলিয়ন ডলার দিতে প্রস্তুত নেতানিয়াহু
অন্তর্বাস পরে হাঁটা সেই ইরানি তরুণী মানসিকভাবে অসুস্থ
মৃত প্রতিদ্বন্দ্বীর বিরুদ্ধে লড়েছিলেন প্রেসিডেন্ট
মণিপুরে এবার নাগাদের সাথে সংঘাত মৈতৈদের
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে এবার বাংলা ব্যালট পেপার সংযুক্ত