সামান্য বৃষ্টি হলে জমে যায় পানি
০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১৯ এএম | আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০২৪, ১২:১৯ এএম
কুমিল্লার দেবিদ্বার পৌর এলাকার ড্রেনেজ ব্যবস্থা খুব নাজুক। সামান্য বৃষ্টি হলেই জমে যায় পানি, তলিয়ে যায় বিভিন্ন অলি-গলি। এতে চরম ভোগান্তিতে পড়ছেন এসব এলাকায় বসবাস ও চলাচলকারী জনসাধারণ। রাস্তার দু’পাশে দোকানপাট ও বাসা বাড়ি উঁচু হওয়ায়, পানি নিষ্কাশনের কোন ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টি হলেই বিভিন্ন সড়কে জামে যায় পানি। পৌরসভার প্রধান প্রধান সড়ক ও বাজারে পানি জমে থাকায় ব্যবসায়ীদের ভোগান্তি যেন চরম আকার ধারণ করেছে। বর্ষাকাল আসতে না আসতেই এলাকার এ অবস্থায় নাজেহাল পৌরবাসী। দীর্ঘদিন ধরে সড়ক ও ড্রেনেজের এমন বেহাল দশা থাকলেও ব্যবস্থায় উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের, এমন অভিযোগ স্থানীয়দের।
সরেজমিনে গতকাল রোববার সকালে দেবিদ্বার পৌর শহরের বাজারসহ বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, বিভিন্ন অলিগলি সড়কগুলোতে পানি থৈ থৈ করছে। কোথাও কোথাও পানি হাঁটু সমান। পানি বের হওয়ার ড্রেনেজ ব্যবস্থা না থাকায় সামান্য বৃষ্টিতেই পানি জমে গিয়ে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। এ অবস্থায় পথযাত্রী, ব্যবসায়ী ও ক্রেতারা চরম বিপাকে পড়েছেন। ময়লা পানির ভ্যাপসা দুর্গন্ধসহ পোকামাকর সৃষ্টি হচ্ছে, বাড়ছে স্বাস্থ্যঝুঁকিও।
পানিবদ্ধতা ও সড়কে কাদাপানি সৃষ্ট হওয়ায় পৌরসভার বেশক’টি এলাকার ভুক্তভোগীরা ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া ব্যক্ত করে বলেন, আমরা পানিতে ডুবলেও তেমন কোন খোঁজ নিতে আসেন না কোনো কাউন্সিলর,এমনকি পৌর কর্তৃপক্ষ। এলাকাবাসী দীর্ঘ বছর ধরে এমন ভোগান্তি পোহালেও পৌর কর্তৃপক্ষ জমে থাকা পানি ও সড়ক সংস্কারে নিচ্ছেন না কোনো ব্যবস্থা।
বৃষ্টির পানি জমে দেবিদ্বার বাজারের প্রত্যেকটি সড়কে চলাচলের একদমই অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। এসিল্যান্ড কার্যালয় ও থানা প্রশাসনের প্রবেশদ্বার, দেবিদ্বার ইসলামিয়া ফাজিল মাদরাসা ও পাঠান বাড়ির রাস্তায়, মাদরাসাপাড়া এলাকায়, বাজারে ঢোকার প্রধান সড়ক, মাছুয়াবাদ ডোন, মোহনা আবাসিক এলাকা, বানিয়াপাড়া, হামলাবাড়ি-বলিবাড়ি রাস্তার মাথা, দাসপাড়া শান্তি রোড, চাপানগর থেকে ফতেহাবাদ মোড়, বড়আলমপুর থেকে বিনাইপার, জিন্নতআলী হাজী বাড়ি রোড থেকে এসআই সাইফুলের বাড়িসহ প্রত্যেকটা সড়কের একই অবস্থা। ড্রেনেজগুলোর বেহাল দশার কারণেই এমন পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়েছে বলে অভিযোগ ব্যবসায়ী ও পথচারীদের।
পৌর এলাকার পুরাতন বাজারের রাস্তা দিয়ে দিনের বেশির ভাগ সময়ই রোগী, পথচারী ব্যবসায়িরা যাতায়াত করে থাকেন। ড্রেনেজের এই বেহাল অবস্থার কারণে সামান্য বৃষ্টি এবং গাড়ির ঝাঁকুনিতে, রাস্তায় জমে থাকা পচা আবর্জনায় মেশানো পানিতে নষ্ট হয়ে যায় পরিধেয় কাপড়। এতে বিব্রত, অসুস্থ্য ও দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে পথচারী, ব্যবসায়ী ও এলাকাবাসী।
পৌরসভার অন্তর্গত ছোটআলমপুর মধ্যপাড়া এলাকার বাসিন্দা মো. তমিজ উদ্দিন জানান, অপরিকল্পিত, ড্রেনেজ ব্যবস্থার ফলে পৌরবাসীর নানা অসুবিধা হচ্ছে। রাস্তাঘাটের বেহালদশা ড্রেনেজ ব্যবস্থা ও পানি নিষ্কাশনের অভাবে পানি জমে গিয়ে পানিবদ্ধতার সৃষ্টি হচ্ছে। দীর্ঘদিন ধরে পানিবদ্ধতায় পৌরবাসী ভোগান্তি পোহালেও পৌর কর্তৃপক্ষ সমস্যাটির সমাধানে কোনো পদক্ষেপই নিচ্ছেন না।
বিশিষ্ট ব্যবসায়ী শ্রী সুদেব দত্ত বলেন, ড্রেনেজ ব্যবস্থার অভাবে বর্ষাকালে ব্যবসায়ী ও স্কুল, কলেজ, মাদরাসার শিক্ষার্থীরা যাতায়াত করতে পারে না। একদিন বৃষ্টি হলেই রাস্তায়, বাজারে পানি জমে যায় কিন্তু পানি সরানোর কোন ব্যবস্থা নেই। ড্রেনগুলো ভরাট হয়ে যাওয়ার ফলে ড্রেনের ময়লা আবর্জনা উপচে পড়ে সড়কে উঠে যাওয়ায় বারোমাস সড়কে পানিবদ্ধতা থাকে। এতে করে রাস্তায়ও ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে।
দেবিদ্বার ইসলামীয়া ফাজিল মাদরাসার অধ্যক্ষ মাওলানা মো. আলাউদ্দিন হুজুর বলেন, সামান্য বৃষ্টি হলেই পৌরসভার বিভিন্ন অলিগলির সড়কগুলো কাদা পানিতে চলাচলের অনুপোযোগী হয়ে পড়ে। এতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ছাত্র-ছাত্রী শিক্ষকসহ সাধারণ মানুষ। অনেক এলাকায় বাড়িঘরেও পানি উঠে মানুষের কষ্ট ও বেড়ে যায়। চরম দুর্ভোগ নিয়ে চলতে হচ্ছে পৌরবাসীকে। তাই পৌরবাসীর জন্য প্রয়োজন সড়কগুলো সংস্কার ও আধুনিক ড্রেনেজ ব্যবস্থার তৈরি করন।
দেবিদ্বার পৌরসভার ৫নং ওয়ার্ডের কাউন্সিলর মো. আবুল বাশার বলেন, পৌরসভার উন্নয়ন প্রকল্পের কাজ প্রতিনিয়ত চলছে। ইতোমধ্যেই বড় বড় ড্রেন করার উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। দুঃখজনক ব্যাপার হলো পৌরবাসীদের মধ্যে কিছু লোকজন ময়লা আবর্জনা প্রতিদিন ড্রেনে ফেলে পানি নিষ্কাশনে বাধা সৃষ্টি করছেন। আমরা পৌর কর্তৃপক্ষ এ বিষয়ে আন্তরিকভাবে ব্যাপক চেষ্টা করছি। ইতোমধ্যে অনেক পরিকল্পনা হাতে নেয়া হয়েছে। আশাকরি দ্রুত এই সমস্যার সমাধান হবে।
পৌরসভার কার্য-সহকারি মো. গিয়াস উদ্দিন দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, ‘আমাদের লোকজন প্রতিনিয়তই ড্রেন পরিষ্কারের কাজ চালিয়ে যাচ্ছে। দ্রুত সময়ের মধ্যেই পানি নিষ্কাশন হয়ে যাবে। আগের চেয়ে অনেকটা কমে গেছে। সারা দেশেই স্থানীয় সরকার কর্তৃক পৌর মেয়রদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছে।
এ প্রসঙ্গে দেবিদ্বার পৌরসভার সহকারী প্রকৌশলী মো. রফিকুল ইসলাম দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, আমি এখানে নতুন যোগদান করেছি, তারপরও পৌর বাজারসহ বিভিন্ন সড়কগুলোর খোঁজখবর নিয়েছি। তাছাড়া স্থানীয় লোকজন ময়লা-আবর্জনা ফেলে ড্রেন বন্ধ করে রাখে। আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি পানি নিষ্কাশনের। প্রকল্প আসলে প্রতিটি কাজ বাস্তবায়নের জন্য প্রয়োজনীয় উদ্যোগ নেয়া হবে।
বিভাগ : অভ্যন্তরীণ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
শেখ পরিবার একটি চোরের কারখানা’
অব্যাহতি পাওয়া এসআইদের আন্দোলনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগ নেতা মামুন
জিমি কার্টারের প্রতি ৩০ দিনের শোকাবস্থা উপেক্ষা করে ট্রাম্পের পতাকা উত্তোলন
জিয়া অরফানেজ ট্রাস্ট মামলা: খালেদা-তারেকসহ সব আসামি খালাস
টিউলিপের জায়গায় নিয়োগ পেলেন এমা রেনল্ডস
পদত্যাগপত্রে টিউলিপ সিদ্দিক যা লিখেছেন
টিউলিপের পদত্যাগ ইস্যুতে প্রেস উইংয়ের বিবৃতি
আজ বায়ুদূষণের শীর্ষে কায়রো, ঢাকার অবস্থান ৬ নম্বরে
মেয়ের বাড়ি থেকে ফেরার পথে লাশ হলো "মা"!
মীরসরাইয়ে মুন্না খুনের ঘটনায়, পৌর যুবদলের আহ্বায়ক বহিষ্কার
দক্ষিণ কোরিয়ার অভিশংসিত প্রেসিডেন্ট ইউন গ্রেফতার
আজ সারদায় ৪৮০ এসআইয়ের সমাপনী কুচকাওয়াজ
ইসরায়েলি হামলায় গাজায় নিহত আরও ৬৩ জন ফিলিস্তিনি, মানবিক সংকট চরমে
ছাগলকাণ্ডের সেই মতিউর ও তার স্ত্রী গ্রেফতার
সেন্টমার্টিনে ভয়াবহ অগ্নিকাণ্ডে তিন রিসোর্ট পুড়ে ছাই
শুল্ক রেলস্টেশন দিয়ে ভারত থেকে ২ হাজার ৪৫০ মেট্রিক টন চাল আমদানি
শুল্ক–কর বৃদ্ধির ফলে দেশের তামাক খাতে কী প্রভাব পড়বে
ব্যাংকিং সেবা খাতে এখনো ভারতীয় আধিপত্য
পরিষ্কার বার্তা চায় জনগণ
অবশেষে টিউলিপ সিদ্দিকের পদত্যাগ