সিলেটের বিশ্বনাথ উপজেলার দৌলতপুর ইউনিয়নের উত্তর দৌলতপুর গ্রামের মৃত ইমান আলীর পুত্র ও সাবেক ৬নং ওয়ার্ডের মেম্বার আনোয়ার হোসেন (ধনমিয়া)’র একাধিক সাজানো অভিযোগে মামলা ও হামলায় কোণঠাসা হয়ে পড়েছে গ্রামের লোকজন। আনোয়ার হোসেনের ভয়ে অনেকেই গ্রাম ছেড়ে চলে গেছেন জেলা শহরে, আবার কেউ কেউ দেশ ছেড়ে চলে গেছেন বিদেশে। হামলা-মামলার ভয়ে কেউ তার বিরুদ্ধে কেউ টু-শব্দ করতে সাহস পায়না। তারপরও থেমে নেই আনোয়ার হোসেন।
নির্যাতিত লিটন মিয়া জানিয়েছেন, আমিসহ ৩ জনের নামে মসজিদের একাউন্ট। ২ জনের স্বাক্ষর ছাড়া টাকা উত্তোলন করা যায় না। তারপরও মসজিদের টাকা আত্মসাতের অভিযোগ এনে আদালতে আমার বিরুদ্ধে সাজানো মামলা দায়ের করে আনোয়ার হোসেন গংরা। গত ৫ আগস্ট বিশ^নাথ থানায় হামলা, অগ্নিসংযোগ ও অস্ত্র লুট করেছে আনোয়ার হোসেন। ইতোপূর্বে থানা থেকে লুট হওয়া অস্ত্র ও গুলি থানায় জমাও দিয়েছে সে।
দিলোয়ার হোসেন জানান, গত জানুয়ারি মাসে আমার বাড়িতে মদ রেখে পুলিশকে খবর দিয়ে আমাকে মাদক মামলায় ফাঁসানোর চেষ্টা করে আনোয়ার হোসেন ও তার সহযোগী কুতুব উদ্দিন। কিন্তু পুলিশ বুঝতে পেরে সাজানো অভিযোগের মামলা থেকে আমাকে অব্যাহতি দিয়েছে। আমি তার ভয়ে সিলেট শহরে বসবাস করছি। এরপরও সে আমি ও আমার স্কুল পড়–য়া ছেলের নামে আদালতে চুরির মামলা দায়ের করে।
মাওলানা মুফতি গোলাম কিবরিয়া বলেন, আনোয়ার হোসেন ও তার সহযোগিরা গত রমজানে আমাদের জমি থেকে জোরপূর্বক মাটি কেটে নিয়ে য়ায়। আমরা বাঁধা দিলে ধারালো অস্ত্র দিয়ে কুপিয়ে আমাদের ৬জনকে গুরুত্বর জখম করে। এ হামলার মামলায় আনোয়ারসহ কয়েক জন অনেক দিন জেলও খেটেছেন।
মস্তফা মিয়া বলেন, গত ৫ আগস্টের পর আনোয়ার হোসেন তার বাহিনী নিয়ে আমাদের রেকডিয় ভূমির ওপর ক্ষমতার ধাপট দেখিয়ে জোরপূর্বক দেয়াল নির্মাণ করেন। আমরা থানায় অভিযোগ করলে এসআই মোয়াজ্জেম হোসেনসহ যৌথ বাহিনীর একটি টিম ঘটনাস্থলে গিয়ে আনোয়ার হোসেনকে দেয়াল নির্মাণের জায়গার কাগজপত্র দেখাতে না পারায় প্রশাসনের নির্দেশ মোতাবেক দেয়াল ভেঙে দেয়। এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গ্রামের ৯ জনের বিরুদ্ধে থানায় দেয়াল ভাঙা, মসজিদের দানবাক্স, ২টন রড ও একটি জেনারেটর চুরির মামলা দায়ের করেন আনোয়ার হোসেন। কিন্তু থানা পুলিশের বিষয়টি জানা থাকায় মামলাটি রেকর্ড করেনি। পরে গত ৯ সেপ্টেস্বর আনোয়ার হোসেন আইন শৃঙ্খলাবিঘœকারি অপরাধ (দ্রুতবিচার) আইন এর ৪/৫ ধারা মতে সিলেটের দ্রুতবিচার ট্রাইব্যুনালে বিশ্বনাথ সিআর মামলা নং-৫০/২০২৪ইং, দায়ের করেন। আদালত মামলাটি এফআইআর গণ্যে ওসি বিশ্বনাথকে ২দিনের মধ্যে তদন্তরিপোর্ট দাখিলের নির্দেশ প্রদান করেন। আদালতের নির্দেশে থানা পুলিশ মামলাটি রেকর্ড করে। মামলাবাজ আনোয়ার হোসেনের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিতে সিলেট রেঞ্জের ডিআইজি বরাবরে গত ১২ সেপ্টেম্বর লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন গ্রামের লোকজন। তবে, এসকল অভিযোগ মিথ্যা দাবি আনোয়ার হোসেনের।
মামলার তদন্তকারি কর্মকর্তা এসআই মোয়াজ্জেন হোসেন এক প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, দেয়াল ভাঙার নির্দেশের সময় আমি উপস্থিত ছিলাম। আর এই মামলার নিরপরাধ কাউকে হয়রানী করা হবে না।