ঢাকা   শুক্রবার, ২২ নভেম্বর ২০২৪ | ৮ অগ্রহায়ণ ১৪৩১
শেরপুরে ভয়াবহ বন্যায় ৭০০ কিলোমিটার সড়ক, শতাধিক সেতু-কালভার্ট ও ৪ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত

ক্ষতবিক্ষত সড়ক সেতু-কালভার্টসহ ৪ হাজার বাড়িঘর

Daily Inqilab এস. কে. সাত্তার, গারো পাহাড় সীমান্তাঞ্চল থেকে

১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ১৯ অক্টোবর ২০২৪, ১২:০৪ এএম

শেরপুরে স্মরণকালের ভয়াবহ বন্যায় প্রায় ৭০০ কিলোমিটার সড়ক, শতাধিক সেতু-কালভার্ট এবং কমপক্ষে ৪ হাজার বাড়িঘর ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ক্ষয়-ক্ষতি নিরূপণে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ প্রাথমিকভাবে এমন তথ্যই পেয়েছেন। চূড়ান্ত তথ্য সংগ্রহ শেষ হলে ক্ষয়ক্ষতির সঠিক পরিমাণ আরো বাড়তে পারে। বন্যায় সবচে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে সীমান্তবর্তী ঝিনাইগাতী, নালিতাবাড়ী, শ্রীবরদী ও নকলা উপজেলা। এ ছাড়া শেরপুর সদর উপজেলার ৫টি ইউনিয়নও ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
শেরপুর এলজিইডি’র নির্বাহী প্রকৌশলী মোস্তাফিজুর রহমান জানান, বন্যায় শুধু এলজিইডিরই প্রায় ৪৫০ কিলোমিটার সড়ক সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। সড়ক বিভাগের ও অনেক সড়ক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। ছোট বড় ২৮টি সেতু, ৫০-এর বেশি কালভার্ট পাহাড়ি ঢল ও বন্যায় বিধ্বস্ত হয়েছে। নালিতাবাড়ী উপজেলার ৫৫টি সড়কের ২২৩ কিলোমিটার। ঝিনাইগাতী উপজেলার ৩৭টি সড়কের ৭৫ কিলোমিটার। শ্রীবরদীর ১০টি সড়কের ৮০ কিলোমিটার। নকলার ৮টি সড়কের ২২ কিলোমিটার এবং সদর উপজেলার ১২টি সড়কের ৮০ কিলোমিটার নতুন করে নির্মাণ করতে হবে। নতুন করে সড়ক, সেতু মেরামত ও নির্মাণে প্রায় ১৫০ কোটি টাকা ব্যয় হবে। কালভার্টগুলো মেরামতে খরচ হবে প্রায় ২০ কোটি টাকা।
জেলা সড়ক বিভাগের তথ্যমতে, পাহাড়ি ঢলে সীমান্তের ৩ উপজেলা শ্রীবরদী, ঝিনাইগাতী ও নালিতাবাড়ীতে প্রায় ২০০ কিলোমিটার সড়ক নষ্ট হয়েছে। বনগাঁও-নন্নী হাতিপাগার সড়কের ৭৫ মিটারের অবশিষ্ট নেই। প্রবল স্রোতে ধুয়ে গেছে।
সড়ক বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী শাকিরুল ইসলাম ইনকিলাবকে বলেন, সড়কগুলো মেরামত করতে তাদের কমপক্ষে ১৩৫-১৩৬ কোটি টাকা খরচ হবে। ১৯৮৮ সালের পর সবচেয়ে ভয়াবহ বন্যায় দরিদ্র মানুষ মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। শত শত মাটির ঘর, টিনশেড ও আধাপাকা ঘর ঢলের পানিতে ভেসে গেছে। মানুষ ধ্বংসপ্রাপ্ত বাড়ি ফিরেছেন। কিন্তু শুধু ভাঙাচোরা বসতভিটে ছাড়া আর কিছুই পাননি। অনেইে হারিয়েছেন বসতবাড়ি।
নালিতাবাড়ী উপজেলা প্রশাসনের তথ্য মতে, ১২টি ইউনিয়নের বিভিন্ন গ্রামের ৪ হাজার বাড়িঘর বিধ্বস্ত হয়েছে। বানভাসী মানুষের ঘরবাড়ি ভেঙে যাওয়ায় রাত কাটছে অন্যের বাড়িতে কিংবা অস্থায়ী ছাউনিতে। আন্ধারুপাড়া গ্রামের দরিদ্র কৃষক শহিদুল ইসলাম। তাঁর বাড়ির তিনটি মাটির ঘর ঢলে ভেসে গেছে। অন্যের বাড়িতে আশ্রয় নিয়েছেন তিনি।
ফকিরপাড়া গ্রামের বৃদ্ধ আছিয়া বেগম বলেন- গাঙ্গে (নদীতে) আমার ঘরবাড়ি ভাইঙ্গা নিছে গা। খুব কষ্ট কইরা থাকতাছি। একটা ঘর পাইলে কষ্টডা একটু কমতো।
ইউএনও মাসুদ রানা জানান, ক্ষতিগ্রস্তদের পুনর্বাসনের কাজ চলমান। তার উপজেলায় কাঁচা ঘরবাড়ি নষ্ট হয়েছে ৩ হাজার ৫২টি, আধাপাকা ৪০টি।
ঝিনাইগাতী, শ্রীবরদী ও নকলা উপজেলায় ক্ষয়ক্ষতি নিরূপণে তালিকা তৈরির কাজ চলমান। প্রাথমিক হিসেবে ওই তিন উপজেলায় কমপক্ষে ৮ শতাধিক কাঁচা-আধাপাকা বাড়িঘর নষ্ট হয়েছে।
শেরপুর জেলা প্রশাসক তরফদার মাহমুদুর রহমান দৈনিক ইনকিলাবকে বলেন, বিভিন্ন বিভাগে আলাদা আলাদা তালিকা প্রস্তুতের কাজ চলমান রয়েছে। প্রকৃত ক্ষতিগ্রস্ত সবাইকেই সব ধরণের সহযোগিতা করা হবে।


বিভাগ : অভ্যন্তরীণ


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

নীলফামারীর মা ও শিশুকল্যাণ কেন্দ্রের ২ চিকিৎসক দেড় বছর অনুপস্থিত
আলফাডাঙ্গায় হেলিপ্যাডের জমিতে নির্মিত হচ্ছে বিনোদনকেন্দ্র
ঈশ্বরদীতে বিষাক্ত পোকাড় কামড়ে শিশুর মৃত্যু
৫ মাস বেতন না পেয়ে কাশিয়ানীর ৩৭ স্বাস্থ্যকর্মীর মানবেতর জীবন
নওগাঁয় রোপা আমন ধান কাটা শুরু
আরও

আরও পড়ুন

কপ২৯-এর এনসিকিউজি টেক্সট হতাশাজনক : সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

কপ২৯-এর এনসিকিউজি টেক্সট হতাশাজনক : সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান

বল হাতে বাংলাদেশের ভালো শুরু

বল হাতে বাংলাদেশের ভালো শুরু

বেনাপোল দিয়ে যাত্রী পারাপার কমেছে অর্ধেক, রাজস্ব আয় ও ব্যবসা বাণিজ্যে ধস

বেনাপোল দিয়ে যাত্রী পারাপার কমেছে অর্ধেক, রাজস্ব আয় ও ব্যবসা বাণিজ্যে ধস

'জুলাই অনির্বাণ’ এ রক্তপিপাসু হাসিনার নির্মমতা দেখে কাঁদছেন নেটিজেনরা

'জুলাই অনির্বাণ’ এ রক্তপিপাসু হাসিনার নির্মমতা দেখে কাঁদছেন নেটিজেনরা

অবশেষে ২৬ মামলার আসামি কুমিল্লার শীর্ষ সন্ত্রাসী আল-আমিন গ্রেফতার

অবশেষে ২৬ মামলার আসামি কুমিল্লার শীর্ষ সন্ত্রাসী আল-আমিন গ্রেফতার

তারেক রহমানের আর্থিক সহায়তা নিয়ে সিয়ামের বাড়িতে মীর হেলাল

তারেক রহমানের আর্থিক সহায়তা নিয়ে সিয়ামের বাড়িতে মীর হেলাল

মানবপাচারকারীদের প্ররোচনায় : স্বপ্ন পূরণে হাতছানি!

মানবপাচারকারীদের প্ররোচনায় : স্বপ্ন পূরণে হাতছানি!

অবিলম্বে ফারাবিসহ সকল মাজলুম আলেমদের মুক্তি দিন, বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ

অবিলম্বে ফারাবিসহ সকল মাজলুম আলেমদের মুক্তি দিন, বিক্ষোভ সমাবেশে নেতৃবৃন্দ

জগন্নাথের সহকারী প্রক্টরকে গুলি করে হত্যার হুমকির অভিযোগ

জগন্নাথের সহকারী প্রক্টরকে গুলি করে হত্যার হুমকির অভিযোগ

আপনারা এখন কোথায়: আ.লীগকে জামায়াত নেতা

আপনারা এখন কোথায়: আ.লীগকে জামায়াত নেতা

আনন্দে গুলি ছুড়তে গিয়ে নিজেই গুলিবিদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যু ভারতীয় শিক্ষার্থীর

আনন্দে গুলি ছুড়তে গিয়ে নিজেই গুলিবিদ্ধ, যুক্তরাষ্ট্রে মৃত্যু ভারতীয় শিক্ষার্থীর

বিশ্বস্ত পাম বন্ডিকে অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে বেছে নিলেন ট্রাম্প

বিশ্বস্ত পাম বন্ডিকে অ্যাটর্নি জেনারেল হিসেবে বেছে নিলেন ট্রাম্প

জনসমর্থন হারাচ্ছে জার্মানির ক্ষমতাসীন দল

জনসমর্থন হারাচ্ছে জার্মানির ক্ষমতাসীন দল

ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে আহত, নিহত ও কারা নির্যাতিত নেতাকর্মীদের পাশে বিএনপি'র সব সময় থাকবে!

ফ্যাসিস্ট হাসিনা সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন সংগ্রামে আহত, নিহত ও কারা নির্যাতিত নেতাকর্মীদের পাশে বিএনপি'র সব সময় থাকবে!

বিপ্লবী সরকারের উপদেষ্টা হবেন বিপ্লবী, তাদের চেতনা থাকবে গতিশীল: রিজভী

বিপ্লবী সরকারের উপদেষ্টা হবেন বিপ্লবী, তাদের চেতনা থাকবে গতিশীল: রিজভী

আয়ারল্যান্ড নারী ক্রিকেট দল এখন ঢাকায়

আয়ারল্যান্ড নারী ক্রিকেট দল এখন ঢাকায়

‘আন্তর্জাতিক আদালতের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাবে কানাডা’

‘আন্তর্জাতিক আদালতের সিদ্ধান্তকে সম্মান জানাবে কানাডা’

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানাকে আধুনিকায়ন করা হবে- রেলপথ উপদেষ্টা

সৈয়দপুর রেলওয়ে কারখানাকে আধুনিকায়ন করা হবে- রেলপথ উপদেষ্টা

দেড় যুগ পর গোলাপগঞ্জে প্রকাশ্যে জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে জনতার ঢল

দেড় যুগ পর গোলাপগঞ্জে প্রকাশ্যে জামায়াতের কর্মী সম্মেলনে জনতার ঢল

উইন্ডিজকে ব্যাটিংয়ে পাঠাল বাংলাদেশ

উইন্ডিজকে ব্যাটিংয়ে পাঠাল বাংলাদেশ