সন্ধ্যা হলেই ঘুটঘুটে অন্ধকার
১৭ মার্চ ২০২৫, ১২:১১ এএম | আপডেট: ১৭ মার্চ ২০২৫, ১২:১১ এএম

সন্ধ্যা নামলেই ঘুটঘুটে অন্ধকার নেমে আসে। লাকসাম পৌরবাসীদের চলাচলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ঘটছে চুরি-ছিনতাইও। প্রথম শ্রেণির পৌরসভা লাকসাম। তবে এই শহরের অধিকাংশ এলাকায় প্রয়োজনীয় সংখ্যক সড়কবাতি নেই। অনেক জায়গায় সড়কবাতি স্থাপনের জন্য ল্যাম্পপোস্ট থাকলেও সেগুলোতে স্থাপিত বাতিগুলো দীর্ঘদিন ধরে নষ্ট হয়ে আছে। পৌরসভার হিসাব মতেই অর্ধেকের কাছাকাছি সড়কবাতি নষ্ট হয়ে আছে।
সড়কবাতি না থাকায় শহরবাসীকে বাজারের রাস্তাঘাট ও প্রধান সড়কে চলাচল করতে হয় সড়কের পাশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের আলোতে। সবচেয়ে খারাপ অবস্থা পাড়া-মহল্লার রাস্তাগুলোর। সড়কবাতি না থাকায় পাড়া-মহল্লার অনেক এলাকায় সন্ধ্যা নামলেই ঘুটঘুটে অন্ধকার নেমে আসে। বাসিন্দাদের চলাচলে সমস্যায় পড়তে হচ্ছে। ঘটছে চুরি-ছিনতাইও। এরপরও এ বিষয়ে নজর নেই পৌর কর্তৃপক্ষের।
সরেজমিনে গত শুক্রবার ও শনিবার পৌরসভার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, অধিকাংশ সড়কেই অনেক দূর পরপর দু’একটা লাইট জ্বলে। তারপর আবার অন্ধকার। সড়কের পাশে ল্যাম্পপোস্ট থাকলেও সেগুলোর বাতি নষ্ট থাকায় আলো জ্বলছে না। বর্তমানে সড়কগুলোতে যে পরিমাণ সড়কবাতি জ্বলছে, তা প্রয়োজনের তুলনায় অপ্রতুল। মূল শহর, বাণিজ্যিক এলাকা ও আবাসিক এলাকাগুলোতে সড়কবাতি কিছুটা দেখা গেলেও বর্ধিত পৌরসভার পাড়া ও মহল্লার অধিকাংশ সড়কে সড়কবাতি নেই।
পৌরসভার ৯ নম্বর ওয়ার্ডের কাদ্রা এলাকার বাসিন্দা আরিফুল ইসলাম ও জিল্লুর রহমান বলেন, তাঁদের এলাকায় ছয়-সাত বছর আগে সড়কের পাশে কিছু দূর পরপর কিছু ল্যাম্পপোস্ট স্থাপন করা হয়। ল্যাম্পপোস্টে বাতি লাগানোর এক-দেড় বছর পর প্রায় সব বাতি নষ্ট হয়ে যায়। সড়কবাতি না থাকায় সন্ধ্যার পর আতঙ্ক নিয়ে চলাচল করতে হয়। অথচ প্রথম শ্রেণির পৌরসভা হিসেবে শহরের অন্য বাসিন্দাদের মতো তাঁদেরকেও কর ঠিকই দিতে হচ্ছে।
পৌরসভার ২ নম্বর ওয়ার্ডের বাসিন্দা আবু বকর জাহিদ বলেন, এক বছরের বেশি সময় ধরে তাঁদের মহল্লার গলি রাস্তাগুলোয় সড়কবাতি জ্বলে না। সন্ধ্যা নামলেই ঘুটঘুটে অন্ধকার নেমে আসে। সড়কবাতি না থাকার কারণে এলাকায় চুরি-ছিনতাইয়ের ঘটনা বেড়ে গেছে।
লাকসাম পৌরসভার বাজার এলাকা হিসেবে পরিচিত কাপড়পট্টি, পূর্ব বাইপাস (চৌদ্দগ্রাম রোড), মনোহরগঞ্জ সিএনজি স্টেশন, এতিমখানা রোড, মুচিপট্টি এলাকায় প্রায় দুই হাজার বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান আছে। পথচারীদের চলাচলে গভীর রাত পর্যন্ত এসব এলাকা সরগরম থাকে। গত শনিবার বাজার এলাকা ঘুরে দেখা যায়, বাজার এলাকার অধিকাংশ সড়কেই বাতি জ্বলে না। পথচারীদের চলাচল হচ্ছে সড়কের পাশের বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠানের আলোতে।
কথা হয় মুচিপট্টি মোড়ে প্রেস মালিক কাজী মাসুদুর রহমানের সঙ্গে। তিনি বলেন, দোকানপাট বন্ধ হয়ে গেলে পুরো এলাকা অন্ধকার হয়ে যায়। কিছু কিছু দোকানদার নিরাপত্তার জন্য দোকানের সামনে আলো জ্বালিয়ে রেখে যান।
লাকসাম প্রেসক্লাবের সদস্যসচিব ফারুক আল শারাহ জানান- ডাকাতিয়া নদী বিধৌত পীর মাশায়েখ গাজী সাহেব ও সাধক পুরুষ ঘোষাইয়ের পূন্যভূমি ইতিহাস খ্যাত নারী শিক্ষার অগ্রদূত নওয়াব ফয়জুন্নেছা চৌধুরানী স্মৃতি বিজড়িত লাখো লোকের আবাসস্থল লাকসাম উপজেলা।
দীর্ঘদিন থেকে দেশের একটি গুরুত্বপূর্ণ বাণিজ্যিক শহর হিসাবে প্রতিষ্ঠা লাভ করছে। দেশের বৃহত্তর রেলওয়ে জংশন এখানে অবস্থিত।
একসময় জনমনে প্রবাদ ছিল ‘কত লাকসাম কত বাতি’ কালের বিবর্তনে ১৯৮৪ইং সালে লাকসাম পৌরসভা হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করে। বর্তমানে ৯টি ওয়ার্ডে ১৯.৪২কিঃমিঃ এলাকায় নিয়ে ইহা বৃহত্তম কুমিল্লা জেলার একটি প্রথম শ্রেণির পৌরসভা। এখানে প্রায় লক্ষাধিক নাগরিকের বসবাস। এখানে অনেক ফ্লাওয়ার মিল, তৈলের মিল, সিগারেট ফ্যাক্টরিসহ বিভিন্ন ধরনেরক্ষুদ্র ও মাঝারী শিল্প প্রতিষ্ঠান বিদ্যমান। তাই পৌর এলাকায় নষ্ট হওয়া সকল ল্যাম্পপোস্ট ও লাইটগুলো দ্রুত সংস্কার করে সচল করার দাবি জানাচ্ছি।
লাকসাম পৌরসভার সহকারী প্রকৌশল (অতিরিক্ত দায়িত্বপ্রাপ্ত) বিভাগের বিদ্যুৎ শাখা থেকে জানা যায়, পৌরসভায় বিভিন্ন সময় মোট ৪ হাজার ৪৫টি ল্যাম্পপোস্ট স্থাপন করা হয়। এসব ল্যাম্পপোস্টের মধ্যে বর্তমানে মাত্র ২ হাজার ৮৬৯টিতে আলো জ্বলছে। বাকি ল্যাম্পপোস্টেই আলো জ্বলছে না। তিনি বলেন- গত কয়েক মাস থেকে লাইট সাপ্লাই ছিল না, অল্প কয়দিন আগে লাইট এসেছে। আশা করছি ঈদের আগেই সবগুলো লাইট সচল করা সম্ভব।
পৌরসভার নির্বাহী প্রকৌশলী জাকের হোসেন বলেন, প্রাকৃতিক দুর্যোগের কারণে কিংবা শর্টসার্কিট বা ট্রান্সফরমারে বিস্ফোরণ ঘটলে অনেক সময় বাতি নষ্ট হয়ে যায়। আবার অনেক সময় বাতিগুলো ইট ছুড়ে নষ্ট করে দেয়া হয়, চুরি করে নিয়ে যায়। পৌরসভায় ৪ হাজার ৪৫টি লাইটপোস্ট আছে। লাইটপোস্টে বাতি নষ্ট হয়ে গেলে সেগুলো সংস্কার করা একটি ধারাবাহিক প্রক্রিয়া।
লাকসাম উপজেলা নির্বাহী অফিসার ও লাকসাম পৌরসভার প্রশাসক কাউছার হামিদও সড়কবাতিগুলো না থাকায় সমস্যা হওয়ার কথা স্বীকার করেছেন। তিনি বলেন, শুধু সড়কবাতি নয়, পৌরসভায় অনেক ধরনের সমস্যাই রয়েছে। প্রশাসক হিসেবে দায়িত্ব নেওয়ার পর থেকেই পৌরসভার ফুটপাত দখলমুক্ত করাসহ বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের চেষ্টা করা হচ্ছে। পৌরসভার সড়কগুলোতে সড়কবাতি সমস্যা সমাধানের জন্য ইতোমধ্যে কিছু উদ্যোগ নেয়া হয়েছে।
বিভাগ : অভ্যন্তরীণ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

উন্মুক্ত স্থানে বর্জ্য পোড়ালে কঠোর আইনানুগ ব্যবস্থা : পরিবেশ উপদেষ্টা

আদালতে মডেল মেঘনা আলম, প্রতারণার মামলা

মোদিকে মমতার সতর্কতা : শাহকে নিয়ন্ত্রণ করুন

নতুন আয়নাঘরের সন্ধান, উঠে এলো ভয়াবহ চিত্র

গৌরীপুর সাব-রেজিষ্ট্রি অফিসে ঘুষ-অতিরিক্ত অর্থ আদায়ের প্রমাণ পেয়েছে দুদক

পাঁচবিবি প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক আবু হাসানের মৃত্যু

বরিশালে ১৮ লাখটন বোরো চাল ঘরে তুলতে শতভাগ আবাদ সম্পন্ন

অপতথ্য নিয়ে কাজ করা সংস্থা বন্ধ করলো ট্রাম্প প্রশাসন

হাসপাতালে ভর্তি অভিনেতা ইলিয়াস জাভেদ

মানবেন্দ্র ঘোষের বাড়িতে হামলাকারীদের বিচার করতে হবে : দেলাওয়ার

‘মিশন কমপ্লিট’ লিখে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতার স্ট্যাটাস

আলোর মুখ দেখেনি যেসব ঢাকাই সিনেমা

হার্ভার্ড বামপন্থীদের আখড়া, শিক্ষার জন্য উপযুক্ত নয় : ট্রাম্প

ইইউর ‘নিরাপদ’ দেশের তালিকায় বাংলাদেশ, কঠিন হবে আশ্রয় পাওয়া

কর্তাব্যক্তির ইশারায় চলে উখিয়া সাব-রেজিস্ট্রি অফিসের দুর্নীতি-দূদক

ওয়াকফ আইন’ বাতিলের বিষয়ে সিদ্ধান্ত আজ

জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের সঙ্গে বিএনপির বৈঠক আজ

যুক্তরাজ্যে মুসলিমদের কবরস্থান ভাঙচুর, ৮৫টি কবর ভাঙচুর

ইলিয়াস আলী নিখোঁজের ১৩ বছর আজ, সিলেটে বিএনপির নানা কর্মসূচি

বাংলাদেশকে ৭২৪ কোটি টাকার সহায়তা দেবে জার্মানি