সুরমার ভাঙনে ভিটেমাটি হারানোর শঙ্কায় শত শত পরিবার
০৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৩ এএম

সুরমা নদীর অব্যাহত ভাঙনে বিলীন হওয়ার পথে সুনামগঞ্জের দোয়ারাবাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের সোনাপুর গ্রাম। ইতিমধ্যে সোনাপুর গ্রামের বিস্তীর্ণ ফসলি জমি, গাছপালা, রাস্তা, কবরস্থান, খেলার মাঠ ও শতাধিক বসতভিটা নদীতে বিলীন হয়ে গেছে। গ্রামের আরও অন্তত দুই শতাধিক বসতভিটা ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে । ভাঙন ঠেকাতে দ্র”ত ব্যবস্থা না নিলে আরও ক্ষয়ক্ষতির আশঙ্কা করছেন গ্রামবাসী।
সরেজমিন দেখা গেছে, সুরমা নদীর পানির স্রোতের সঙ্গে কয়েকটি স্থানে পাড় ভেঙে পড়ছে। নদীর তীরের বাসিন্দাদের অনেকেই নিজেদের ঘরবাড়ি ভেঙে অন্যত্র নিরাপদ স্থানে সরিয়ে নিয়েছেন। কেউ কেউ নদীতে বিলীন হওয়ার আশঙ্কায় বসতভিটার গাছপালা কেটে নিয়ে যাচ্ছেন। ইতিমধ্যে অনেক গাছপালা ভেঙে নদীর পানিতে পড়েছে। কয়েক বছর ধরেই সোনাপুর গ্রামে চলছে ঘরবাড়ি সরিয়ে নেওয়ার কর্মযজ্ঞ। ভাঙন আবার অনেকের বসতভিটা পর্যন্ত চলে এসেছে। উপজেলায় সুরমা নদীর একাধিক সাইটে পানি উন্নয়ন বোর্ডের শত কোটি টাকার নদী ভাঙন প্রতিরোধ প্রকল্প বাস্তবায়ন হলেও সবচেয়ে ভাঙন কবলিত সোনাপুর গ্রাম প্রকল্পের আওতাভুক্ত হয়নি। ফলে ভাঙনের ঝুঁকিতে রয়েছে সোনাপুর গ্রামের বাসিন্দারা।
সোনাপুর গ্রামের বয়োবৃদ্ধা ছয়দুন নেছার (৭০) বসতঘর ভাঙনকবলিত স্থান থেকে মাত্র কয়েক ফুট দূরে। এখন কী করবেন, জানেন না তিনি। ভাঙনের আশঙ্কা নিয়ে নদীর দিকে তাকিয়ে তীরে বসে আছেন তিনি। চোখেমুখে স্পষ্ট চিন্তার ছাপ। নিজের বসতঘরটি ভেঙে গেলে আর যাওয়ার জায়গা নেই বলে জানান তিনি।
কৃষক আনোয়ার আলী ও নূর ইসলামের মতে, পানি কমার সঙ্গে সঙ্গে তীব্র ভাঙন শুর” হয়। গত দশ বছরে প্রায় শতাধিক বসতবাড়ি চোখের সামনে নদীতে চলে গেছে।
চার সন্তানের জননী খালেদা আক্তার নদী ভাঙনে ভিটেমাটি হারিয়ে এখন পরিবার পরিজন নিয়ে থাকেন অন্যের জমিতে। নদীর দিকে তাকিয়ে দীর্ঘশ্বাস ফেলে তিনি জানান, একসময় বসতঘর, ফসলি জমি সবই ছিলো। চোখের সামনেই সবকিছু গিলে খেয়েছে সুরমা নদী। কিছুই করতে পারেননি তিনি। একইভাবে পাঁচ সন্তানের জননী নাজমিন আক্তারও আক্ষেপ নিয়ে জানান, আমাদের খোঁজ খবর কেউ রাখেনা। জমিজমা, বসতবাড়ি হারিয়ে এখন সামান্য মাথাগুজার ঠাঁইটুকু নিয়েও দুশ্চিন্তায় থাকি সারাক্ষণ। কখন জানি এইটুকুও বিলীন হয়ে যায় সুরমা নদীতে!
আফতাব উদ্দিন জানান, পৈতৃক সূত্রে পাওয়া তিন কেয়ার জমি ছিলো তাঁর। ভেঙে নদীতে বিলীন হয়ে এখন কেবলমাত্র তাঁর আধ কেয়ার ভিটেজমি অবশিষ্ট আছে। গ্রামের প্রবীণ মুর”ব্বী মোঃ জমশেদ আলী জানান, গ্রামের বসতবাড়ি, ফসলিজমি, খেলার মাঠ, সামাজিক কবরস্থান সবকিছুই সুরমা নদী গর্ভে বিলীন হয়েগেছে। প্রায় চারশো বছরের পুরনো এই সোনাপুর গ্রামটি এখনই রক্ষার কোনো উদ্যোগ না নিলে একসময় পুরো গ্রাম নদীগর্ভে হারিয়ে যাবে। গ্রামবাসীরা উদ্ধাস্তু হয়ে পড়বে। সরকারিভাবে চলমান নদী ভাঙন প্রতিরোধ প্রকল্পে সোনাপুর গ্রামকে অগ্রাধিকারের ভিত্তিতে অন্তর্ভূক্ত করার দাবি জানান তিনি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের দোয়ারাবাজার পওর উপ-বিভাগের উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী (অঃ দাঃ) মোঃ শমশের আলী দৈনিক ইনকিলাবকে জানান, ‘সুরমা নদী ভাঙন প্রতিরোধে ইতোমধ্যে দোয়ারাবাজার উপজেলায় প্রায় শতকোটি টাকার প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হয়েছে। বর্তমানে সুরমা নদীর একাধিক সাইটে আরো কিছু প্রকল্পের কাজ চলমান রয়েছে। সোনাপুর গ্রামসহ দোয়ারাবাজারের আরো কয়েকটি ভাঙন কবলিত এলাকা আমাদের নজরে আছে। আগামীতে নতুন প্রকল্পে এসব এলাকাকে অগ্রাধিকার দিয়ে প্রকল্প বাস্তবায়ন করা হবে।’
বিভাগ : অভ্যন্তরীণ
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন

মেহেরপুরে হারানো ১০৭টি মোবাইল ও টাকা উদ্ধার করে মালিককে তুলে দিল জেলা পুলিশ

দৈনিক ইনকিলাবের সিংগাইর উপজেলা সংবাদদাতার মায়ের ইন্তেকাল

জার্মানিতে গঠিত হচ্ছে নতুন জোট সরকার

হাজীগঞ্জ পৌরসভার বেশীরভাগ খুঁটিতে জ্বলছে না সড়কবাতি, বেড়েছে মাদক সেবীদের আড্ডা

২০২৮ অলিম্পিকস ক্রিকেটে হবে ৬ দলের লড়াই

ফরিদপুরের শ্রেষ্ঠ ওসি আশরাফ হোসেন

চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবি ও ভারতের ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে সীমান্ত সংশ্লিষ্ট দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ

সিলেটে লালগালিচা দেখে যেভাবে বিরক্তি প্রকাশ করলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

রাজবাড়ীতে ৩ ফসলী জমি থেকে মাটি বিক্রির অভিযোগ

বিমানবাহিনী ঘাঁটির নাম পরিবর্তন

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব হলেন মফিদুর রহমান

লৌহজংয়ে ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন

ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে রাজধানীতে বিএনপির র্যালি

আট দফা দবিতে রাঙ্গামাটি কৃষি ইনস্টিউটের একাডেমিক ভবনে তালা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা

উখিয়ায় প্রবেশপত্র না পাওয়ায় ১৩ এসএসসি পরিক্ষার্থী, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারায় বিদ্যালয়ে হামলা, ভাংচুর ও সড়ক অবরোধ

ভুরুঙ্গামারীতে ভুয়া কাজির দৌরাত্ম্য, বাড়ছে বাল্যবিবাহ

সুন্দরবনের ডাকাতের কবল থেকে উদ্ধার ৬ নারীসহ ৩৩ জেলে

মৃত বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিলেন ছেলে

শার্শায় ছাত্রীদের শোবার ঘরে সিসি ক্যামেরা, মাদ্রাসা শিক্ষকের কক্ষে মনিটর

সেই জুলহাসকে ফের আর্থিক সহায়তা তারেক রহমানের