সাবেক প্রধানমন্ত্রী ইমরান খানের দল পাকিস্তান তেহরিকে ইনসাফ (পিটিআই) দেশের রাজনীতিতে হস্তক্ষেপ করতে সেনাবাহিনীর প্রতি আহ্বান জানিয়েছে। এর প্রেক্ষিতে সেনাবাহিনী সাফ জানিয়ে দিয়েছে তারা কোনো দল বা আদর্শের প্রতি অনুগত নয়। পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ইন্টার-সার্ভিসেস পাবলিক রিলেশন্সের (আইএসপিআর) মহাপরিচালকের পদে আসীন হওয়ার পর মঙ্গলবার সংবাদ সম্মেলনে এ কথা জানিয়ে দিয়েছেন মেজর জেনারেল আহমেদ শরীফ চৌধুরী। এর মধ্য দিয়ে তিনি পাকিস্তান সেনাবাহিনীর অবস্থান পুনর্ব্যক্ত করলেন। এ খবর দিয়েছে অনলাইন জিও টিভি। রাওয়ালপিন্ডিতে সেনাবাহিনীর সদর দফতরে ভাষণ দেন তিনি। বলেন, পাকিস্তান সেনাবাহিনী একটি জাতীয় সেনাবাহিনী। সব রাজনৈতিক দল আমাদের কাছে সম্মানের। আমরা কোনো বিশেষ দল বা আদর্শের প্রতি অনুগত নই। যদি ভারত কোনো ‘এডভেঞ্চার’ পরিকল্পনা করে, তাহলে তার কঠোর জবাব দেবে পাকিস্তানের সেনাবাহিনী। উল্লেখ্য, পাকিস্তানের রাজনৈতিক দলগুলো একে অন্যের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাঁড় করে আসছে। তারা বলছে, প্রতিপক্ষকে সমর্থন দিচ্ছে এস্টাবলিশমেন্ট। এমন অভিযোগ সরাসরি প্রত্যাখ্যান করেন সেনাবাহিনীর এই মুখপাত্র। তিনি বলেন, বিশ্বের কোথাও যদি কোনো বিশেষ রাজনৈতিক আদর্শের পক্ষে সেনাবাহিনী ব্যবহার করা হয়ে থাকে, তাহলো নৈরাজ্য। তিনি আরও বলেন, সরকার এবং সেনাবাহিনী সাংবিধানিক প্রতিষ্ঠান। তাদের মধ্যে অরাজনৈতিক সম্পর্ক। এর পক্ষে দীর্ঘ অবস্থান সেনাদের। এই অরাজনৈতিক সম্পর্ককে রাজনৈতিক রঙ দেয়া উচিত নয়। সেনাবাহিনীর বেশ কিছু অবসরপ্রাপ্ত সদস্য ইমরান খানের পিটিআইকে সমর্থন করছেন। এ ইস্যুতে আইএসপিআরের মহাপরিচালক বলেন, এসব বর্ষীয়ানদের সংগঠনগুলো রাজনৈতিক হওয়া উচিত নয়। এসব সংগঠনের উচিত বর্ষীয়ানদের কল্যাণ সাধন করা এবং তাদের বিভিন্ন ইস্যুকে জোরালোভাবে তুলে ধরা। সংবাদ সম্মেলনে মেজর জেনারেল চৌধুরী বলেন, পাকিস্তানের বিরুদ্ধে ভারতের প্রচারণা অব্যাহত আছে। প্রতিবেশী ভারতের বিরুদ্ধে এ সময় তিনি অস্ত্রবিরতি লংঘনের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, এ বছর নিয়ন্ত্রণ রেখা বরাবর বেশ কয়েকবার অস্ত্রবিরতি লংঘন করেছে ভারত। এ সময়ে ভারতের ৬টি গোয়েন্দা কোয়াডকপ্টার গুলি করে ভূপাতিত করেছে পাকিস্তান। তিনি আরও বলেন, নিয়ন্ত্রণ রেখায় বেশ কয়েকবার জাতিসংঘের পর্যবেক্ষকদের নিয়ে গিয়েছে পাকিস্তান। কিন্তু ভারত তা মোটেও করেনি। তার ভাষায়, ভারতের আগ্রাসী এবং ভিত্তিহীন অভিযোগ ইতিহাস বদলে দিতে পারবে না। কাশ্মীরের ঐতিহাসিক মর্যাদা বদলে দিতে পারবে না ভারত। যদি ভারত কোনো ‘এডভেঞ্চার’ পরিকল্পনা করে, তাহলে তার কঠোর জবাব দেবে পাকিস্তানের বাহিনী। জিও টিভি।