তুরস্ককে ঐক্যবদ্ধ করার কারিগর এরদোগান
০৮ মে ২০২৩, ০৮:২৪ পিএম | আপডেট: ০৯ মে ২০২৩, ১২:০৪ এএম
দুই দশক ধরে তুরস্কের শাসন ক্ষমতায় এরদোগান। আগামী ১৪ মে অনুষ্ঠিত হতে যাচ্ছে দেশটির প্রেসিডেন্ট ও পার্লামেন্ট নির্বাচন। নানা কারণে আসন্ন এ নির্বাচনে এরদোগানের জয়-পরাজয় নিয়ে হচ্ছে বিভিন্ন আলোচনা। গত ফেব্রুয়ারিতে ভূমিকম্পের কারণে প্রাণ হারিয়েছে দেশটির প্রায় ৫০ হাজার মানুষ। আর সাম্প্রতিক মূল্যস্ফীতির কারণে অনেকটা নাজেহাল পরিস্থিতির মধ্যে রয়েছে দেশটি। বিভিন্ন জরিপে দেখা গেছে, এরদোগানের প্রতিদ্বন্দ্বী কিরিচদারোগ্লু তার চেয়ে কোন অংশেই পিছিয়ে নেই। বিরোধী নেতা কিরিচদারোগ্লুর ওপর নানা প্রকার দোষারোপ করছেন রজব তাইয়েপ এরদোগান। তিনি দাবি করেন, ভূমিকম্প থেকে নানা উপায়ে সুবিধা নিচ্ছে বিরোধী কিরিচদারোগ্লুর জোট। আর একের পর এক ক্ষতিগ্রস্ত স্থান পরিদর্শন করছে তার সরকার। সেইসঙ্গে দ্রুত পুনঃনির্মাণ কর্মসূচিও শুরু করেছে। রয়টার্সের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে- তুরস্ককে ঐক্যবদ্ধ করার কারিগর এরদোগান। গত বিশ বছরে দেশের নানা উন্নয়নে কাজ করে গেছে তার সরকার। এর মাধ্যমে তুরস্ককে বিশ্ব দরবারে অন্যতম একটি শক্তিশালী দেশ হিসেবে গড়ে তুলেছেন তিনি। সন্ত্রাসবাদের বিরুদ্ধে দীর্ঘদিন লড়াই করে যাচ্ছে তুরস্কের নিরাপত্তা বাহিনী। সিরিয়ার উত্তরাঞ্চলে এবং ইরাকে অত্যন্ত দক্ষতার সঙ্গে জঙ্গিগোষ্ঠী ও সন্ত্রাসীদের মোকাবিলা করছে তুর্কি বাহিনী। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তুরস্কের মুদ্রা লিরার ব্যাপক পতন হয়েছে। দেশটিতে মুদ্রাস্ফীতি বেড়েছে ৫০ শতাংশের বেশি। এ ছাড়া দীর্ঘ দুই দশক ক্ষমতায় থাকায় এরদোগান সরকারের বিরুদ্ধে স্বৈরতান্ত্রিক শাসনের অভিযোগ আনা হয়েছে। পাশাপাশি গণমাধ্যম নিয়ন্ত্রণসহ বিরোধী মত দমনের অভিযোগও করা হচ্ছিল এরদোগান প্রশাসনের বিরুদ্ধে। পশ্চিমা গণমাধ্যমগুলো তো কাছা ছেড়ে এর বিরুদ্ধে প্রচার প্রপাগান্ডা চালিয়ে আসছে দীর্ঘদিন ধরে। রয়টার্স বলছে, নানা অভিযোগের মধ্যেই ফেব্রুয়ারির ভয়াবহ ভূমিকম্প ‘মরার ওপর খাঁড়ার ঘা’ হিসেবে আবির্ভূত হয়েছে এরদোগান সরকারের ওপর। শতাব্দীর ভয়াবহ ওই ভূমিকম্পে দেশটির ১১টি প্রদেশ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বিধ্বস্ত হয়েছে কয়েক লাখ ভবন। প্রাণ হারিয়েছেন ৫০ হাজারের বেশি মানুষ। অভিযোগ রয়েছে, সরকারের সংশ্লিষ্ট বিভাগের দুর্নীতি ও অনিয়মের কারণে ভবন তৈরিতে মানা হয়নি বিল্ডিং কোড। তাছাড়া ভূমিকম্পের পর বেশ কিছু এলাকায় সময় মতো উদ্ধার তৎপরতা শুরু করতে না পারায় এরদোগানের ওপরক্ষুব্ধ সংশ্লিষ্ট এলাকার মানুষ। অথচ এসব এলাকা ছিল ক্ষমতাসীন একে পার্টির ঘাঁটি। তুরস্কের এবারের নির্বাচনে মোট ভোটারের একটা বড় অংশ নতুন ভোটার। যারা নির্বাচনের ফল নির্ধারণে গুরুত্বপূর্ণ ফ্যাক্টর বলে মনে করা হচ্ছে। জন্মের পর থেকেই শুধু এরদোগানের শাসন দেখে আসছেন এসব ভোটার। এরদোগানের জনপ্রিয়তার আরও একটি কারণ হলো ন্যাশনাল অ্যালায়েন্সে ইসলামপন্থিদের অংশগ্রহণ। অর্থাৎ এক সময় এরদোগানের সঙ্গী এবং সরকারের অংশ ছিলেন- এমন অনেক নেতাও নতুন দল গঠন করে ছয় দলীয় জোটে যোগ দিয়েছেন। ফলে সিএইচপির ইসলাম বিরোধিতার যে ঐতিহ্য, দলটি সেখান থেকে সরে এসেছে বলে মনে করছেন সাধারণ মুসলমানরা। অপরদিকে কিলিকদারোগ্লু গোঁড়া অর্থনৈতিক নীতি এবং সংসদীয় শাসনব্যবস্থায় ফিরে আসার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন। এ ছাড়া বিচার বিভাগের স্বাধীনতা, ভিন্নমত দমন না করা, মুক্ত গণমাধ্যমের প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন তিনি। পাশাপাশি পশ্চিমাদের সঙ্গে ক্ষয়িষ্ণু সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চেষ্টা করছে বিরোধী জোট। এ নিয়ে খোদ প্রেসিডেন্ট এরদোগান সমালোচনা করে বলেছেন, ‘তাদের নাটাই সাম্রাজ্যবাদীদের হাতে’। ডেইলি সাবাহ সূত্রে জানা যায়, সম্প্রতি এক নির্বাচনি সমাবেশে তুর্কি নেতা বলেছেন, তারা (বিরোধীরা) তাদের প্রভুদের সঙ্গে হাত মিলিয়ে তুরস্ককে এমন একটি গর্তে ফেলতে যাচ্ছে, যেখান থেকে আগামী ৫০ বছরে দেশকে বের করে আনা সম্ভব হবে না। তুরস্ক তথা তার সরকারের বিরুদ্ধে নেতিবাচক সংবাদ প্রচার ও প্রকাশ করায় পশ্চিমা গণমাধ্যমের তীব্র সমালোচনাও করেছেন এরদোগান। রয়টার্স, ডেইলি সাবাহ।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
খুবিতে ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার শীর্ষক সেমিনার
জাতিসংঘে যাওয়ার আগে হুঙ্কার দিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান
ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো বিচারবিভাগের গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছেন: অ্যাটর্নি জেনারেল
গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্প থেকে ভারতীয়দের অপসারণের দাবি গণঅধিকার পরিষদের
পঞ্চগড়ে তীব্র তাপদাহে হাঁসফাঁস বিপর্যস্ত জনজীবন
দীর্ঘ ১৭ বছর পর প্রকাশ্যে তালতলীতে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন
আমরা ১৫ বছর কথা বলতে পারিনি - মুশফিকুর রহমান
ফিরলেন জাকির, এসেই শান্তর ছক্কা
মাগুরায় গৃহবধূকে বিষপানে হত্যার অভিযোগ
কেপিএম আবাসিক থেকে অজগর উদ্ধার কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্কে অবমুক্ত
চার্টার্ড নয়, বাণিজ্যিক ফ্লাইটে নিউইয়র্ক যাবেন প্রধান উপদেষ্টা
শাল্লায় কালনী নদীতে যুবক নিখোঁজ
ভিসি নিয়োগের দাবিতে ইবিতে মহাসড়ক অবরোধ
রেকর্ড রান তাড়ায় বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসী শুরু
সালথায় সেতুর রেলিং-পাটাতন ভেঙে বেহাল দশা : জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে ১০ গ্রামের মানুষ
তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা, ঢাবির ৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেও সুস্থ নন খালেদা জিয়া : মির্জা ফখরুল
আত্মহত্যা না কি খুন? ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শুরু
বিচার বিভাগে পৃথক সচিবালয় ছাড়া আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় : প্রধান বিচারপতি
বিভিন্ন সময়ে যেসব বিতর্কিত অভিযান চালিয়েছে মোসাদ