থাইল্যান্ডের নির্বাচনে ঝড় তুলতে পারেন নির্বাসিত প্রধানমন্ত্রীর কন্যা
০৮ মে ২০২৩, ১১:১৩ পিএম | আপডেট: ০৯ মে ২০২৩, ১২:০৪ এএম
থাইল্যান্ডের নির্বাচনে এবার গুরুত্বপূর্ণ মুখ হয়ে উঠেছেন সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার মেয়ে পেতংটার্ন সিনাওয়াত্রা। থাইল্যান্ডের রাজনীতিতে তাদের পরিবারের রয়েছে ব্যাপক জনসমর্থন। অতীতে নির্বাচনে বিপুল ভোটে তাদের দল ক্ষমতায় এসেছে। পরিবার ও দলের জনপ্রিয়তাকে কাজে লাগিয়ে আসন্ন নির্বাচনে জিততে চান তিনি ও তার দল। শ্রমজীবী মানুষের ভোটে আবার আসতে চান থাইল্যান্ডের ক্ষমতার মসনদে। তাকে ঘিরেই এখন আবর্তিত হচ্ছে ফিউ থাই দলের রাজনীতি।
কিছুদিন আগেই মা হয়েছেন ৩৬ বছর বয়সী পেতংটার্ন। সে কারণে নির্বাচনী প্রচারণার চূড়ান্ত পর্যায়ে ভ্রমণ করতে পারেননি তিনি। পরিবর্তে, একটি লাল জ্যাকেটে, তার ফেউ থাই পার্টির ট্রেডমার্ক রঙ, তিনি ব্যাংককের একটি হাসপাতাল থেকে উত্তরে চিয়াং মাইতে তার সমর্থকদের ভিডিও কল করেছিলেন। ‘আমি আনন্দিত যে, আমি আপনার সাথে কথা বলার সুযোগ পেয়েছি, চিয়াং মাইবাসী,গ্ধ তিনি গত মাসে বলেছিলেন, ‘এটা খুব খারাপ যে আমি সেখানে ব্যক্তিগতভাবে থাকতে পারিনি।’
চিয়াং মাই হল পেতংটার্নের পিতা, সাবেক প্রধানমন্ত্রী থাকসিন সিনাওয়াত্রার জন্মস্থান - দেশের সবচেয়ে জনপ্রিয় রাজনীতিবিদ এবং সবচেয়ে মেরুকরণকারী। ব্যাপক অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি সত্ত্বেও ২০০৬ সালে সেনা অভ্যুত্থানে থাকসিন ও ২০১৪ সালে তার বোন ইংলাক ক্ষমতাচ্যুত হন। কারাদ- এড়াতে দুজনই দেশের বাইরে স্বেচ্ছানির্বাসনে রয়েছেন। তাদের মিত্ররা বলছেন, রাজনীতি থেকে দূরে রাখতে তাদের মিথ্যা অভিযোগে দোষী সাব্যস্ত করা হয়েছে।
থাকসিন, ইংলাক ঘুরে দলের দায়িত্ব এখন থাকসিনের ছোট মেয়ে পেতংতার্নের ঘাড়ে। জনগণকে বাবা-ফুফুর সেই পুরোনো প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাচ্ছেন তিনি। ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধি, গ্যাস-বিদ্যুৎ-পানিতে ভর্তুকি, দীর্ঘপ্রতিশ্রুত উচ্চগতির রেলব্যবস্থা এবং বন্যা ও খরা মোকাবিলায় অবকাঠামো নির্মাণের মতো ইস্যুকে তিনিও কাজে লাগাতে চাচ্ছেন। ‘শুধু চিয়াং মাই শব্দটি ইতিমধ্যেই আমার হৃদয়কে উষ্ণ করার জন্য যথেষ্ট,’ পেতংটার্নের কণ্ঠ একটি স্পিকার থেকে প্রতিধ্বনিত হয়েছিল, ‘আমার বাবা এবং আমার ফুফু সেখানে জন্মগ্রহণ করেছিলেন এবং আমি তাদের মিস করি।’ এ সময় তার শ্রোতারা, যাদের মধ্যে অনেকেই তার বাবার মতোই বয়সী, হাততালি দিয়ে উল্লাস করেছিলেন।
পেতংটার্ন তখন বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী ছিলেন যখন একটি রাজনৈতিক সঙ্কট তার বাবার প্রধানমন্ত্রীত্বকে গ্রাস করেছিল এবং দেশকে বিভক্ত করেছিল। উত্তর ও উত্তর-পূর্বের গ্রামীণ ভোটারদের কাছে, ২০০১ সালে প্রথম ক্ষমতায় আসা থাকসিন ছিলেন একজন নায়ক। তিনিই প্রথম রাজনীতিবিদ যিনি ভোটার হিসাবে তাদের গুরুত্ব স্বীকার করেছিলেন এবং সর্বজনীন স্বাস্থ্য কভারেজের মতো নীতিগুলি অফার করেছিলেন যা তাদের জীবনে সত্যিকারের পরিবর্তন এনেছিল। বর্তমানে সিনাওয়াত্রা পরিবারের রাজনৈতিক দল ফিউ থাইয়ের শক্তিশালী ঘাঁটি গ্রামীণ এলাকায় ক্লান্তিহীন প্রচার চালিয়ে যাচ্ছেন পেতংটার্ন। আশা করছেন, বাবা থাকসিন ও ফুফু ইংলাক যেভাবে অভূতপূর্ব জনসমর্থন নিয়ে নির্বাচনে বিজয়ী হয়েছিলেন, তাকে জনগণ সেভাবে গ্রহণ করবে।
রাজনীতিতে নবাগত পেতংটার্ন প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন, ২০০১ সাল থেকে তিন দফায় থাইল্যান্ডের রাষ্ট্রক্ষমতায় এসে ফিউ থাই যেসব কাজ শেষ করতে পারেনি, এবার তিনি সেগুলো শেষ করতে চান। ওই তিনবারই থাইল্যান্ডের রক্ষণশীল প্রভাবিত আদালতের রুলিং এবং সেনাবাহিনীর অভ্যুত্থানে ক্ষমতাচ্যুত হয় থাকসিনের দল। চলতি মে মাসে থাইল্যান্ডের জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠিত হতে পারে বলে আশা করা হচ্ছে।
ফিউ থাই দলের সেøাগান হচ্ছে, ‘বড় চিন্তা, দক্ষ কাজ’। ২০১৪ সালের প্রধানমন্ত্রী প্রাউত চান-ওচার সরকার ক্ষমতা দখলের পর দেশের যে অবস্থা, সেখান থেকে সংস্কারের কথা বলছে দলটি। পেতংটার্ন বলেন, ‘ভাবনার এই চিত্র বড় করতে হবে। আমাদের অবশ্যই দীর্ঘদিনের সমস্যাগুলো চিহ্নিত করতে হবে। এসব সমস্যার ভালোভাবে সমাধান করতে হবে।’
পেতংটার্ন এবং তার দল নির্বাচনী প্রচারনায় ভাল পারফর্ম করেছে এবং গত সপ্তাহে, সন্তান জন্ম দেয়ার কয়েকদিন পর আয়োজিত একটি সংবাদ সম্মেলনে তিনি বলেছিলেন যে, তিনি ভূমিধস বিজয়ের বিষয়ে আত্মবিশ্বাসী। তিনি সিনাওয়াত্রার নাম দ্বারা উৎসাহিত হয়েছেন, যা ব্যালট বাক্সে অপরাজেয় প্রমাণিত হয়েছে এবং ন্যূনতম মজুরি বৃদ্ধির মতো নীতি প্রস্তাব করেছেন। তবে তিনি রাজনৈতিকভাবে দেশ পরিচালনার জন্য যথেষ্ট অভিজ্ঞ কিনা তা নিয়ে প্রশ্নের সম্মুখীন হচ্ছেন। সূত্র : দ্য গার্ডিয়ান।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্প থেকে ভারতীয়দের অপসারণের দাবি গণঅধিকার পরিষদের
পঞ্চগড়ে তীব্র তাপদাহে হাঁসফাঁস বিপর্যস্ত জনজীবন
দীর্ঘ ১৭ বছর পর প্রকাশ্যে তালতলীতে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন
আমরা ১৫ বছর কথা বলতে পারিনি - মুশফিকুর রহমান
ফিরলেন জাকির, এসেই শান্তর ছক্কা
মাগুরায় গৃহবধূকে বিষপানে হত্যার অভিযোগ
কেপিএম আবাসিক থেকে অজগর উদ্ধার কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্কে অবমুক্ত
চার্টার্ড নয়, বাণিজ্যিক ফ্লাইটে নিউইয়র্ক যাবেন প্রধান উপদেষ্টা
শাল্লায় কালনী নদীতে যুবক নিখোঁজ
ভিসি নিয়োগের দাবিতে ইবিতে মহাসড়ক অবরোধ
রেকর্ড রান তাড়ায় বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসী শুরু
সালথায় সেতুর রেলিং-পাটাতন ভেঙে বেহাল দশা : জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে ১০ গ্রামের মানুষ
তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা, ঢাবির ৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেও সুস্থ নন খালেদা জিয়া : মির্জা ফখরুল
আত্মহত্যা না কি খুন? ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শুরু
বিচার বিভাগে পৃথক সচিবালয় ছাড়া আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় : প্রধান বিচারপতি
বিভিন্ন সময়ে যেসব বিতর্কিত অভিযান চালিয়েছে মোসাদ
শেরপুর বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে চা দোকানীর মৃত্যু
শরীয়তপুর পৌরসভার বেশীর ভাগ সড়কেরই বেহাল দশা, ভোগান্তি চরমে
এবার বম্বে হাইকোর্টে জোর ধাক্কা মোদি সরকারের, বাতিল ফ্যাক্ট চেক ইউনিট