ঢাকা   শুক্রবার, ২০ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৫ আশ্বিন ১৪৩১

নির্বাচন সম্পন্ন ফলাফলের অপেক্ষায় তুরস্কের জনগণ

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক :

১৪ মে ২০২৩, ১১:১৮ পিএম | আপডেট: ১৫ মে ২০২৩, ১২:০০ এএম

তুরস্কের জনগণ দেশটির আধুনিক ইতিহাসের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ এক নির্বাচনে ভোট দিয়েছেন গতকাল যাতে নির্ধারিত হতে যাচ্ছে বিশ বছর ধরে ক্ষমতায় থাকা প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়্যেপ এরদোগানের ভবিষ্যৎ। নির্বাচনে তার প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী কেমাল কুলুচদারুলু, যিনি নির্বাচিত হলে প্রেসিডেন্টের হাতে এরদোগান যে ক্ষমতা দিয়েছেন, তা বাতিল করার প্রতিশ্রুতি দিচ্ছেন। ২০১৬ সালে এক ব্যর্থ সামরিক অভ্যুত্থানের পর এরদোগান প্রেসিডেন্ট পদের নির্বাহী ক্ষমতা অনেক বৃদ্ধি করেন।

কুলুচদারুলু এক বৃহত্তর বিরোধী জোটের প্রার্থী এবং তার নির্বাচনে জেতার সত্যিকারের সম্ভাবনা দেখতে পাচ্ছেন অনেকে। কিন্তু এই নির্বাচনী প্রতিদ্বন্দ্বিতা এতটাই তীব্র এবং এর ওপর তুরস্কের এত কিছু নির্ভর করছে যে, প্রার্থীরা একেবারে শেষ মূহুর্ত পর্যন্ত নির্বাচনী প্রচারণা চালিয়ে গেছেন। প্রেসিডেন্ট এরদোগান নির্বাচনী বিধির পরোয়া না করে শনিবার সন্ধ্যায় ইস্তাম্বুলে একটি মসজিদে নামাজ পড়তে আসা লোকজনের সামনে বক্তৃতা দিয়েছেন।

নির্বাচনে জিততে হলে একজন প্রার্থীকে মোট প্রদত্ত ভোটের অন্তত ৫০ শতাংশ পেতে হবে। নতুবা দুই সপ্তাহের মধ্যে দ্বিতীয় দফা ভোট নেয়া হবে। তুরস্কের স্থানীয় সময় সকাল আটটায় ভোট গ্রহণ শুরু হওয়ার অনেক আগে থেকেই ভোট কেন্দ্র গুলোর সামনে ভোটাররা লাইন দিয়েছেন বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। তুরস্কের ভোটাররা এমন এক সময়ে এই নির্বাচনে ভোট দিচ্ছেন যখন তাদের কঠিন অর্থনৈতিক অবস্থার মোকাবেলা করতে হচ্ছে। েেদশটিতে মূল্যস্ফীতি এখন লাগামছাড়া। সরকারি হিসেবেই মূল্যস্ফীতির হার ৪৪ শতাংশ। কিন্তু অনেক মানুষের ধারণা এটি আসলে অনেক বেশি হবে। অন্যদিকে তুরস্কের ১১ টি প্রদেশ সম্প্রতি দুই দফা ভূমিকম্পের ধাক্কা সামলাতে হিমসিম খাচ্ছে। এই ভূমিকম্পে ৫০ হাজারের বেশি মানুষ মারা গেছে।

নির্বাচনে তার মতো প্রথমবার ভোট দিয়েছেন যে ৫০ লাখ ভোটার, তারাই এবারের নির্বাচনের ফল নির্ধারণে বড় ভূমিকা রাখবেন বলে মনে করা হচ্ছে। গতকাল স্থানীয় সময় বিকাল পাঁচটা পর্যন্ত ভোট গ্রহণ করা হয়, যদিও জার্মানি, ফ্রান্স এবং অন্যান্য দেশে থাকেন যে প্রায় ১৭ লাখ প্রবাসী তুর্কী ভোটার, তারা আগেই ভোট দিয়ে ফেলেছেন। সেখানে ভোট দানের হার ছিল ৫৩ শতাংশ। তুরস্কের শহরগুলো এখন প্রতিদ্বন্দ্বী দলগুলোর রঙিন পতাকা আর শ্লোগানে ছেয়ে আছে। ভোটের দিন ঘনিয়ে আসার সাথে সাথে উত্তেজনাও বেড়েছে। বিরোধী দলগুলো প্রায় ১ লাখ ৯২ হাজার ব্যালট বাক্সের ভোট গণনা তদারকি করতে তাদের স্বেচ্ছাসেবক পাঠিয়েছে, যাতে সেখানে কোন জালিয়াতি হতে না পারে।

এদিনের ভোটে তুরস্কের মানুষ ছয়শো এমপি নির্বাচনের জন্যও রায় দিয়েছেন। যদিও প্রেসিডেন্ট এরদোগান পার্লামেন্টের ক্ষমতা খর্ব করে প্রেসিডেন্টের নির্বাহী ক্ষমতা অনেক বাড়িয়েছেন, তারপরও নতুন আইন প্রণয়নে পার্লামেন্ট এখনো মুখ্য ভূমিকা রাখে। তুরস্কের নির্বাচনে আনুপাতিক প্রতিনিধিত্বের নিয়ম অনুযায়ী কোন দলকে পার্লামেন্টে আসন পেতে হলে অন্তত ৭ শতাংশ ভোট পেতে হয়। তাই রাজনৈতিক দলগুলো আসন পাওয়া নিশ্চিত করতে নির্বাচনী জোট বাঁধে। প্রেসিডেন্ট এরদোগানের একে পার্টি, যেটির সঙ্গে ইসলামপন্থীদের সম্পর্ক আছে, তারা পিপলস এলায়েন্স জোটের অংশ। এই জোটে আরও আছে কট্টর জাতীয়তাবাদী এমএইচপি এবং অন্য দুটি দল। অন্যদিকে মি. কুলুচদারুলুর মধ্য বামপন্থী দল রিপাবলিকান পিপলস পার্টি জোট বেঁধেছে ন্যাশনালিস্ট গুড পার্টি এবং অন্য চারটি ছোট দলের সঙ্গে। কুর্দীপন্থী দল এইচডিপি হচ্ছে তুরস্কের দ্বিতীয় বৃহত্তম বিরোধী দল, তারা আরেকটি জোটের অংশ। তারা প্রচারণা চালাচ্ছে গ্রীন লেফট জোটের ব্যানারে। সূত্র : বিবিসি নিউজ।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালিদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাবিতে সমাবেশ

পার্বত্য চট্টগ্রামে বাঙালিদের ওপর হামলার প্রতিবাদে ঢাবিতে সমাবেশ

বিগত ৫৩ বছরের জঞ্জাল দূর করে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সময়ের দাবি

বিগত ৫৩ বছরের জঞ্জাল দূর করে একটি কল্যাণ রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠা সময়ের দাবি

তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আটক ছয়জনের পাঁচজনই ছাত্রলীগের

তোফাজ্জল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় আটক ছয়জনের পাঁচজনই ছাত্রলীগের

রাঙামাটিতে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষে নিহত ১, থমথমে পরিস্থিতিতে ১৪৪ ধারা জারি, ৭২ ঘন্টার অবরোধের ডাক

রাঙামাটিতে পাহাড়ি-বাঙালি সংঘর্ষে নিহত ১, থমথমে পরিস্থিতিতে ১৪৪ ধারা জারি, ৭২ ঘন্টার অবরোধের ডাক

বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয় : তারেক রহমান

বাংলাদেশের গণতন্ত্র এখনো বিপদমুক্ত নয় : তারেক রহমান

নিরাপদ ও নির্ভয়ে উদযাপন হবে শারদীয় দূর্গোদসব এবং দূর্গাপূজা- এসএমপি কমিশনার রেজাউল করিম

নিরাপদ ও নির্ভয়ে উদযাপন হবে শারদীয় দূর্গোদসব এবং দূর্গাপূজা- এসএমপি কমিশনার রেজাউল করিম

মব কিলিং সরকার সমর্থন করে না: উপদেষ্টা নাহিদ

মব কিলিং সরকার সমর্থন করে না: উপদেষ্টা নাহিদ

চট্টগ্রামে রাতের আঁধারে বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর

চট্টগ্রামে রাতের আঁধারে বিএনপির কার্যালয় ভাঙচুর

বলিউডে কারিনা কাপুরের ২৫ বছর

বলিউডে কারিনা কাপুরের ২৫ বছর

মব জাস্টিসের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে ঢাবি কর্তৃপক্ষ

মব জাস্টিসের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেবে ঢাবি কর্তৃপক্ষ

রাজশাহীতে ট্রেনে বরযাত্রীদের ওপর হামলা

রাজশাহীতে ট্রেনে বরযাত্রীদের ওপর হামলা

চিহ্নিত গোষ্ঠী আবার দখলদারি ও চাঁদাবাজি শুরু করেছে : সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম চরমোনাই

চিহ্নিত গোষ্ঠী আবার দখলদারি ও চাঁদাবাজি শুরু করেছে : সৈয়দ মুহাম্মদ ফয়জুল করীম চরমোনাই

গায়িকা রুকসানার রহস্যজনক মৃত্যু!

গায়িকা রুকসানার রহস্যজনক মৃত্যু!

যে কোনো মূল্যে লাহোর কর্মসূচি সফল করুন: ইমরান খান

যে কোনো মূল্যে লাহোর কর্মসূচি সফল করুন: ইমরান খান

চৌদ্দগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় সিএনজি চালকসহ নিহত ২

চৌদ্দগ্রামে সড়ক দুর্ঘটনায় সিএনজি চালকসহ নিহত ২

যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত ভবনে বিচারককে গুলি করে হত্যা

যুক্তরাষ্ট্রের একটি আদালত ভবনে বিচারককে গুলি করে হত্যা

ডিবির সাবেক ডিসি ৭ দিনের রিমান্ডে দলীয় বিবেচনায় শুদ্ধাচার পুরস্কার পান মশিউর

ডিবির সাবেক ডিসি ৭ দিনের রিমান্ডে দলীয় বিবেচনায় শুদ্ধাচার পুরস্কার পান মশিউর

খাগড়াছড়ি-রাঙামাটিতে সংঘর্ষ: তিন জেলার মানুষকে শান্ত থাকার আহ্বান সরকারের

খাগড়াছড়ি-রাঙামাটিতে সংঘর্ষ: তিন জেলার মানুষকে শান্ত থাকার আহ্বান সরকারের

গরমে যেন শেষ সিলেট !

গরমে যেন শেষ সিলেট !

গল টেস্টে ঘুরে দাঁড়িয়েছে শ্রীলঙ্কা

গল টেস্টে ঘুরে দাঁড়িয়েছে শ্রীলঙ্কা