বেছে বেছে বিলকিসের ধর্ষকদেরই মুক্তি কেন?
১৮ আগস্ট ২০২৩, ০৮:৫৮ পিএম | আপডেট: ১৯ আগস্ট ২০২৩, ১২:০১ এএম
ভারতের সুপ্রিম কোর্টের প্রশ্নের মুখে রীতিমতো চাপে গুজরাট প্রশাসন। শীর্ষ আদালতের প্রশ্ন, বিলকিস বানো গণধর্ষণের ঘটনায় দোষী সাব্যস্ত হওয়া ১১ জনকে বাছাই করেই কেন রেহাই দেয়া হয়েছে জেল থেকে?
২০০২ সালের গোধরাকা- ও তার পরবর্তী সময়ের গুজরাট সহিংসতায় গণধর্ষণের স্বীকার হন বিলকিস বানো। পাঁচ মাসের অন্তঃসত্ত্বা বিলকিসের গর্ভের সন্তানটিও নষ্ট হয়ে যায়। বিলকিসের চোখের সামনেই তার তিন বছরের মেয়েকে পাথরে আছড়ে মারে হামলাকারীরা। তার পরিবারের আরও কয়েকজন সদস্যকে হত্যা করা হয়। এই অপরাধকে ‘বিরল থেকে বিরলতম’ আখ্যা দিয়ে মুম্বাইয়ের সিবিআই আদালতে অপরাধীদের কঠোর সাজার দাবি জানিয়েছিল কেন্দ্রীয় তদন্তকারী সংস্থা। ২০০৮ সালের ২১ জানুয়ারি মোট ১২ জনের বিরুদ্ধে যাবজ্জীবন কারাদ-ের রায় দেয় বিশেষ আদালত। মামলা চলাকালীন এক জনের মৃত্যু হয়। গত বছর ১৫ আগস্ট ওই ১১ জনকে মুক্তি দেয়া হয়। সেই প্রসঙ্গেই এদিন প্রশ্ন তুলেছে শীর্ষ আদালত।
সুপ্রিম কোর্টে বিচারপতি বিভি নাগরতœ ও বিচারপতি উজ্জ্বল ভুয়ানের বেঞ্চ এদিন প্রশ্ন তোলে, ‘ওই মামলায় তিন অভিযুক্তের মৃত্যুদ- লাঘব করে যাবজ্জীবন কারাদ-ের নির্দেশ দেয়া হয়। তাদের কী করে ১৪ বছর সাজা কাটানোর পর মুক্তি দেয়া হয়? তেমনই যদি হয়, তা হলে অন্য আসামিদের কেন রেহাই দেয়া হল না? কেন বাছাই করে এই দোষীদেরই নির্দিষ্ট এই আইনের সুবিধা দেয়া হল?’
গত বছর বিলকিস বানোর ধর্ষণকারীদের মুক্তি দেয়া ঘিরে গোটা ভারতেই প্রবল বিতর্ক তৈরি হয়। বিলকিস ও তার পরিবার কেন অভিযুক্তদের রেহাই দেয়া হল এই মর্মে ফের বিচার চেয়ে আদালতের দ্বারস্থ হন। সেই প্রসঙ্গে শীর্ষ আদালত বলেছে, ‘১৪ বছর পর দোষীদের রেহাই দেয়ার ক্ষেত্রে আইন যে যুক্তি দেখিয়েছে তাতে অপরাধীদের সুযোগ দেয়া হয় নিজেদের শুধরে নেয়ার। যাতে তারা অপরাধ থেকে শিক্ষা নিয়ে স্বাভাবিক জীবনে ফিরতে পারেন। সেই সুযোগ দেয়া হলে তা সকলের প্রাপ্য হওয়া উচিত। কিন্তু দাগি অপরাধীদের ক্ষেত্রে তা কতটা কার্যকর হতে পারে?’ গুজরাট দাঙ্গার পরপরই মামলাগুলিকে গুজরাট থেকে মহারাষ্ট্রে স্থানান্তরিত করা হয় যাতে সুবিচার ও নিরপেক্ষ রায় নিশ্চিত করা যায়। যে বিচারক অভিযুক্তদের দ-াদেশ দেন, তিনিও আসামিদের মুক্তির বিষয়টি নিয়ে প্রশ্ন তুলেছেন।
আদালতে গুজরাট সরকারের পক্ষ থেকে অতর্কিত সলিসিটর জেনারেল এস ভি রাজু বলেন, এ বিষয়ে সামগ্রিকভাবে কোনও মন্তব্য করা বা জবাব দেয়া ঠিক হবে না। রাজ্যের তরফে সুপ্রিম কোর্টকে বিস্তারিত ত জানানো হবে। যদিও সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা দাবি করেছেন, তাদের নিয়ম মেনেই মুক্তি দেয়া হয়েছে।
উল্লেখ্য, ভারতের ১৯৯২ সালের আইন অনুযায়ী যাবজ্জীবন সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা ন্যূনতম ১৪ বছর তার বেশি সময় সাজা কাটানোর পর তাদের আচরণের ভিত্তিতে মুক্তি পেতে পারেন। কিন্তু অপরাধের গুরুত্ব বিচার করে সেই রেহাইয়ের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেয় কোর্ট। বিলকিস বানোর আইনজীবী শোভা গুপ্ত ফের দাবি করেন অন্যায়ভাবে আইনের সুবিধা নিয়ে রেহাই দেয়া হয়েছে ওই দোষীদের। যদিও গুজরাট সরকারের তরফে গঠিত প্যানেল আগেই এ বিষয়ে মন্তব্য করেছিল ‘সংস্কারি ব্রাহ্মণ, যারা ইতিমধ্যেই ১৪ বছর সাজা ভোগ করেছে এবং জেলে যাদের আচরণ ভাল ছিল তাদের মুক্তি দেয়া যায়।’ এরই পালটা সুপ্রিম কোর্টের দ্বারস্থ হন বিলকিস, পরবর্তী শুনানি ২৪ আগস্ট। সূত্র: হিন্দুস্থান টাইমস।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
টেলর সুইফটের পর কমলাকে বিখ্যাত বিজ্ঞান ম্যাগাজিনের সমর্থন নিয়ে বিতর্ক
ফিরেই গোলের দেখা পেলেন রোনালদো,নাসেরের সহজ জয়
কোহলি রিভিউ না নেওয়ার যে কারণ জানালেন সঞ্জয় মাঞ্জরেকার
মাঠের বাইরে নতুন পরিচয়ে মেসি
দেশের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র ঐক্যবদ্ধভাবে প্রতিহত করার আহ্বান উপদেষ্টা নাহিদের
মালয়েশিয়া আন্তর্জাতিক হালাল শোকেসের ২০তম আসরে বাংলাদেশের অংশগ্রহণ
ইসলামী আন্দোলন বাংলাদেশের জেলা প্রতিনিধি সম্মেলন অনুষ্ঠিত দেশকে অস্থিতিশীল করতে মরিয়া হয়ে উঠেছে পরাজিত শক্তি
শ্রীলঙ্কায় প্রেসিডেন্ট নির্বাচন কাল
‘মব জাস্টিস’ বন্ধের আহ্বান বাংলাদেশ তরুণ কলাম লেখক ফোরামের
সাত দফা দাবিতে মানববন্ধন ও সমাবেশ
গৌরনদীর দই, একবার খাইলেও আর একবার খাই
নোয়াখালীতে জীবাশ্ম জ্বালানিতে বিনিয়োগ বন্ধের দাবি
স্বর্ণের দাম বেড়ে রেকর্ড ২,৬০৯ ডলার ছাড়িয়েছে
বিচারবহির্ভূত হত্যাকাণ্ড বন্ধ ও বিচার দাবিতে খুলনায় মানববন্ধন
গাজায় অব্যাহত ইসরাইলি গণহত্যা ওআইসির নেতারা চেয়ে চেয়ে দেখছেন
চাঁদপুর শহরে সড়ক সংস্কার কাজে নিম্নমানের সামগ্রী ব্যবহারের অভিযোগ
সেনা কর্মকর্তাদের ম্যাজিস্ট্রেসি ক্ষমতা দেয়া প্রসঙ্গে
নোয়াখালীতে ৪৪ দিন পর লাশ উত্তোলন
ভারতের দোসর ও হাসিনামিডিয়ার প্রশ্নবিদ্ধ ভূমিকা
আশাশুনিতে হাজরাখালির নেটপাটায় পানিবন্দি ২শ’ পরিবার