লিবিয়ায় বন্দিশিবিরের মেঝেতে মৃত, বিবস্ত্র নারী

ইনকিলাব ডেস্ক

২৯ আগস্ট ২০২৩, ০৮:৩৫ পিএম | আপডেট: ৩০ আগস্ট ২০২৩, ১২:০১ এএম

অভিবাসন প্রত্যাশী শরণার্থীদের ভয়াবহ অবস্থা ফুটে উঠেছে লিবিয়া থেকে পাওয়া একটি ভিডিওর ফুটেজে। তাতে দেখা যাচ্ছে একজন নারী সেখানকার অভিবাসী বন্দিশিবিরের মেঝেতে মরে পড়ে আছেন। এই ক্লিপটি দুই সপ্তাহ আগে ধারণ করা হয়েছে বলে মনে করা হচ্ছে। লিবিয়া থেকে তিউনিসিয়া পৌঁছেছেন এমন একদল শরণার্থী এই ভিডিও সরবরাহ করেছে লন্ডনের অনলাইন গার্ডিয়ানকে। তাতে রাজধানী ত্রিপোলিতে আবু সালিম বন্দি শিবিরের ভিতরে পড়ে থাকতে দেখা যায় ওই নারীকে। ওই বন্দি শিবিরে গাদাগাদি করে আটকে রাখা হয়েছে কয়েক শত নারী অভিবাসীকে। একটি রুমে তারা বিছানার ওপর অবস্থান করছেন। তার ভিতর থেকে একজন নাইজেরিয়ান নারী চিৎকার করছেন এবং এই বন্দি শিবিরকে জেলখানা বলে দাবি করছেন। ৩০ সেকেন্ডের ওই ভিডিওতে দেখা যায় একজন নারী অপুষ্টিতে ভুগে কংকালসার। তিনি মরে পড়ে আছেন মাটিতে। তার শরীরে কোনো পোশাক নেই। চোখ দুটো উন্মুক্ত। নাইজেরিয়ান ওই নারী বলছেন, এই মহিলা মারা গেছেন। ভিডিওটির বিষয়ে নিশ্চয়তা দিয়েছেন মেডিসিন্স সান্স ফ্রন্টিয়ার্স (এমএসএফ) এবং জাতিসংঘের একটি সূত্র। তারা বলেছেন, এই ভিডিও ধারণ করা হয়েছে আবু সালিমে। বন্দিশিবিরগুলোতে আটকে রাখা শরণার্থী ও অভিবাসীদের বিরুদ্ধে নৃশংসতার অসংখ্য রিপোর্ট করেছে বহু এনজিও। এমএসএফের মতে, ২০২১ সালের জুনে বন্দিদের দিকে স্বয়ংক্রিয় অস্ত্র দিয়ে গুলি করা হয়েছে। তাতে বেশ কিছু মানুষ হতাহত হয়েছেন। এমএসএফ গত সপ্তাহে বলেছে, ত্রিপোলিতে এ বছরের শেষ নাগাদ তারা চিকিৎসা সেবা দেয়া বন্ধ করে দেবে। জাতিসংঘের সূত্র বলেছেন, ভিডিওতে মৃত নারী সোমালিয়ার বলে মনে হচ্ছে। তিনি যক্ষ্মায় মারা গিয়ে থাকতে পারেন। আবু সালিম বন্দিশিবিরে যাদেরকে আটকে রাখা হয়েছে তার মধ্যে কয়েক ডজন মানুষ এই রোগে আক্রান্ত। সাহায্যদাতা কর্মীরা রিপোর্ট করছেন যে, গাদাগাদি করে রাখা ওইসব রুমে শুধু ম্যাট্রেস দেয়া হয়েছে। নেই পর্যপ্ত চিকিৎসা ব্যবস্থা। সিয়েরা লিয়নের ইব্রাহিম বর্তমানে অবস্থান করছেন তিউনিসে। তিনি একসময় ত্রিপোলিতে বন্দি ছিলেন। বলেছেন, আবু সালিম থেকে ছাড়া পাওয়ার একমাত্র উপায় হলো এক হাজার ডলার পণ দেয়া। সিয়েরা লিয়নের একজন নারী বলেন, আবু সালিম থেকে বের হওয়ার কোনোই উপায় নেই। এই স্থানটি নরকের মতো। লিবিয়ার ‘রিফিউজিস’ নামের সংগঠন শরণার্থী এবং আশ্রয়প্রার্থীদের ব্যবস্থাপনার কাজ করে। তারা ওই নারী মারা যাওয়ার বিষয়ে তদন্ত করেছে। এর মুখপাত্র বলেছেন, কে এই নারী তা আমরা শনাক্ত করার কাজ করছি। লিবিয়ায় মৃত্যু এবং নির্যাতনের শিকার ব্যক্তিদের তথ্য সংগ্রহ সব সময়ই চ্যালেঞ্জ। এসবের শিকার এবং প্রত্যক্ষদর্শীরা কথা বলতে দ্বিধান্বিত। জাতিসংঘের শরণার্থী বিষয়ক এজেন্সির বিশেষ দূত ভিনসেন্ট কোচেটেল। গার্ডিয়ান।

বিভাগ : আন্তর্জাতিক