বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের সরিয়ে নেয়ার হিড়িক

ইসরাইলে নিত্যপণ্যের ঘাটতি কেনায় বিধিনিষেধ আরোপ

বিভিন্ন দেশের নাগরিকদের সরিয়ে নেয়ার হিড়িক

ইনকিলাব ডেস্ক :

১২ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ১২ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৫ এএম

ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের সঙ্গে সংঘাতের কারণে বিভিন্ন দেশ ইসরাইল থেকে তাদের নাগরিকদের সরিয়ে নিচ্ছে। ইতোমধ্যেই পোল্যান্ড, আর্জেন্টিনা, ব্রাজিল, কানাডা, নাইজেরিয়া, নরওয়ে, সুইজারল্যান্ড, স্পেন এবং দক্ষিণ কোরিয়াসহ বেশ কিছু দেশ তাদের নাগরিকদের ইসরাইল থেকে সরিয়ে নিতে শুরু করেছে। গত কয়েকদিন ধরেই হামাস এবং ইসরাইলি বাহিনীর মধ্যে সংঘাত চলছে। দুপক্ষের সংঘাতে এখন পর্যন্ত দুই হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে। গাজা উপত্যকায় ইসরাইলি বিমান হামলায় ৯ শতাধিক মানুষ নিহত হয়েছে। অপরদিকে ইসরাইলে নিহতের সংখ্যা ১২০০। গাজা উপত্যকার স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, সেখানে কমপক্ষে ৯৫০ জন নিহত হয়েছে। শনিবার থেকেই বিমান হামলা চালিয়ে যাচ্ছে ইসরাইল। এক বিবৃতিতে ইসরাইলি বাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে যে, মঙ্গলবার রাতে তারা গাজায় ২০০ টার্গেটে হামলা চালিয়েছে। গত শনিবার ইসরাইলে আকস্মিক হামলা চালায় ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস। তারপর থেকেই দুপক্ষের লড়াই অব্যাহত রয়েছে। ইসরাইলি বিমান হামলায় গাজায় হামাসের রাজনৈতিক ব্যুরোর দুই শীর্ষ কর্মকর্তা নিহত হয়েছেন বলে খবর পাওয়া গেছে। হামাসের পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়েছে। এদিকে গাজা উপত্যকার ওপর সর্বাত্মক অবরোধ আরোপ করাকে যুদ্ধাপরাধ ও আন্তর্জাতিক আইনের লঙ্ঘন বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছে জাতিসংঘ। সংস্থাটির মানবাধিকার বিষয়ক হাই কমিশনার ভল্কার তুর্ক মঙ্গলবার এক বিবৃতিতে এই হুঁশিয়ারি দেন। তিনি বলেছেন, গাজা উপত্যকার মানবিক পরিস্থিতি এমনিতেই খারাপ ছিল। ফলে সর্বাত্মক অবরোধ আরোপে সেখানকার পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে পড়বে। এক বিবৃতিতে তিনি বলেন, গাজায় ইসরাইলি হামলায় প্রতি মুহূর্তে হতাহত মানুষের সংখ্যা বাড়তে থাকায় আহতদের চিকিৎসা সেবা দেওয়া কঠিন হয়ে পড়েছে। ভল্কার তুর্ক বলেন, গাজা উপত্যকার সঙ্গে বহির্বিশ্বের যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করার ফলে সেখানকার মানুষের পক্ষে খাদ্যসহ নিত্যপ্রয়োজনীয় সামগ্রী সংগ্রহ করা সম্ভব হবে না। এ ধরনের পরিস্থিত সৃষ্টি করা আন্তর্জাতিক আইনে নিষিদ্ধ বলে তিনি মন্তব্য করেন। ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাস ও ইসরাইলি বাহিনীর মধ্যে যুদ্ধ চতুর্থ দিনে গড়িয়েছে। এই যুদ্ধ দীর্ঘ হওয়ার ইঙ্গিত পাওয়া যাচ্ছে। এমন পরিস্থিতিতে খাদ্য মজুত শুরু করেছে ইসরাইলিরা। কিছু পণ্যের সংকট দেখা দিয়েছে। তাই পণ্য কেনার ক্ষেত্রে বিধিনিষেধ আরোপের ঘোষণা দিয়েছে ইসরাইলের সবচেয়ে বড় সুপারমার্কেট চেইন শুফারসাল। বলা হয়েছে, ক্রেতারা শুফারসাল স্টোরগুলো থেকে দেড় লিটার পানির বোতলের ছয় প্যাকের দুটি, ৩০টি ডিমের একটি র‌্যাক বা ১২টি ডিমের দুই কার্টন ও মূল্য-নিয়ন্ত্রিত দুধের তিনটি ইউনিট এবং দুটি রুটি কিনতে পারবে। এর আগে দেশটির হোম ফ্রন্ট কমান্ড কমপক্ষে তিনদিনের পানি, খাদ্য ও অন্যান্য সরবরাহ মজুত রাখার সুপারিশ করে। এরপর সুপারমার্কেটগুলোতে ব্যাপক ভিড় দেখা যায়। এরই মধ্যে সুপার মার্কেটগুলোর তাক খালি হয়ে গেছে। শুফারসালের প্রধান নির্বাহী কর্মকর্তা উরি ওয়াটারম্যান বলেন, গ্রাহকদের প্রতি দায়বব্ধতা, ব্যাপক চাহিদা, সরবরাহ সমস্যা ও পণ্যের ঘাটতির কারণে আমরা পণ্য কেনার ক্ষেত্রে সীমাবদ্ধতা আরোপ করেছি। বিশেষ করে পানি, ডিম, রুটি ও দুধে। তবে সমস্যার সমাধানে দ্রুত কাজ করা হচ্ছে বলেও জানান তিনি। হামাস ইসরাইলের সঙ্গে দীর্ঘমেয়াদি যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত। তাছাড়া ফিলিস্তিনের স্বাধীনতাকামী এ সশস্ত্র গোষ্ঠী ইসরাইলসহ বিদেশে আটক ফিলিস্তিনিদের মুক্তির জন্য গাজায় জিম্মি করে রাখা ব্যক্তিদের ব্যবহার করবে। আসোসিয়েট প্রেসের (এপি) সঙ্গে কথা বলার সময় হামাসের নির্বাসিত নেতা আলী বারাকেহ এমন দাবি করেন। গাজায় হামাসের হাতে বন্দি ১০০ জনেরও বেশি ব্যক্তির ভাগ্য নিয়ে উদ্বেগ সৃষ্টি হওয়ার মুহূর্তেই এমন মন্তব্য করলেন বারাকেহ। তিনি আরও বলেন, হামাসের কাছে বিপুল পরিমাণ রকেটের সংগ্রহ রয়েছে, যা দিয়ে লম্বা সময়ের জন্য যুদ্ধ চালানো যাবে। আমরা এই যুদ্ধের জন্য ও যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবিলার জন্য ভালোভাবে প্রস্তুত। রয়টার্স, এএফপি, এপি।

বিভাগ : আন্তর্জাতিক