ঢাকা   শুক্রবার, ১৭ জানুয়ারি ২০২৫ | ৩ মাঘ ১৪৩১

দ্বিতীয় নাকবা শুরু হয়ে গেছে

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

১৫ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৫ এএম

ফিলিস্তিনে দ্বিতীয় নাকবা শুরু হয়ে গেছে। গাজা পুনর্দখল এবং ফিলিস্তিনের কেবল একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করা এই অঞ্চলের কৌশলগত বাস্তবতাকে বদলে দেবে না। এবং গাজা দখল করতে ৩ লাখ ৬০ হাজার সেনার প্রয়োজনও নেই। অথচ এই রেকর্ড সংখ্যক রিজার্ভ ফোর্সকে সম্পৃক্ত করেছে ইসরাইল। মূলত গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরানোই এখানে উদ্দেশ্য। বৃহস্পতিবারের নির্দেশনা সেদিকেই ইঙ্গিত করে। অর্থাৎ দ্বিতীয় নাকবা শুরু হয়ে গেছে। হামাসের আকস্মিক হামলার পরপর ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এমন একটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যা অনেকের মনোযোগ এড়িয়ে গেছে। দক্ষিণ ইসরাইলের শহরগুলোর মেয়রদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ইসরাইলের প্রতিক্রিয়া মধ্যপ্রাচ্যকে বদলে দেবে। জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণেও নেতানিয়াহু একই কথা উল্লেখ করেন। সাথে যোগ করেন, আগামী দিনে আমরা শত্রুদের সাথে যা করব তা তাদের প্রজন্মের পর প্রজন্মে প্রতিধ্বনিত হবে। এই কথার অর্থ কি? আমরা জানি যে, বহুদিন ধরেই ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করতে চায় ইসরাইল। ২০১০ সালে প্রথম ব্যর্থ প্রচেষ্টার তিন বছর পর নেতানিয়াহু সিবিএসকে বলেছিলেন, বেশি দেরি হওয়া পর্যন্ত আমি অপেক্ষা করব না। আমরাও জানি, তিনি হিজবুল্লাহ এবং হামাসকে নির্মূল করতে চান। যাদেরকে নেতানিয়াহু ইরানের ‘বিমানবাহী বাহক’ বলে মনে করেন। শনিবার ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের হামলার পর থেকে তিনি এমন শব্দ ব্যবহার করছেন, যা টুইন টাওয়ারে হামলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের প্রতিক্রিয়াকে প্রতিফলিত করে। তাহলে কি অনেক আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন পাওয়া নেতানিয়াহু বুশের মতোই গাজায় বড় কিছু ঘটানোর চেষ্টা করছেন? ইসরাইলি বিরোধী দলীয় নেতা বেনি গ্যান্টসের কথাতেও একই সুর লক্ষ্য করা গেছে। তিনি বলেন, আমরা জিতব এবং এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও কৌশলগত বাস্তবতা বদলে দেব। গাজা পুনর্দখল এবং ফিলিস্তিনের কেবল একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করা এই অঞ্চলের কৌশলগত বাস্তবতাকে বদলে দেবে না। এবং গাজা দখল করতে ৩ লাখ ৬০ হাজার সেনার প্রয়োজনও নেই। অথচ এই রেকর্ড সংখ্যক রিজার্ভ ফোর্সকে সম্পৃক্ত করেছে ইসরাইল। হামাসের সর্বোচ্চ ৬০ হাজার সশস্ত্র সদস্য আছে। অন্যান্যদের যোগ করেও তা ইসরাইলের এক-তৃতীয়াংশের সমান হবে না। ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কর্মকর্তাদের মুখে এর আগেও মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতির বদলে দেওয়ার গর্জন শুনা গেছে। তবে সেগুলো পরে ফাঁপা বুলি হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু এবার যদি আসলেই বড় কিছুর পরিকল্পনা হয়? তাহলে পরিণতি কি হবে? এই অঞ্চল কি ধরনের ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। তাহলে প্রথম উত্তরই হবে দ্বিতীয় নাকবা। অর্থাৎ গাজার ২৩ লাখ মানুষের বড় অংশই বাস্তুহারা, ভূমিহারা হবে। মঙ্গলবার বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইসরাইলি ল্যাফটেনেন্ট কর্নেল রিচার্ড হেচ বলেন, আমি ফিলিস্তিনিদের পরামর্শ দেব রাফাহ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে মিশরে চলে যেতে। পরে তার কার্যালয় জানায়, সেই সীমান্ত বন্ধ আছে জেনেই এই মন্তব্য করেছেন তিনি। মির হয়তো এক পর্যায়ে বিপুল সংখ্যক শরণার্থীকে জায়গা দিতে বাধ্য হবে। ১৯৪৮ এবং ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধে যেমনটা ঘটেছে। গাজা থেকে ১০ লাখ লোকের সিনাই-তে যাত্রা ইতিমধ্যে অর্থনৈতিক সংকটে পড়া মিশেরের পরিস্থিতিকে আরো খারাপ করবে। অনেক মিশরীয় তাদের ভাগ্য পরিবর্তনে নৌপথে বিদেশে পাড়ি দিচ্ছেন। জর্ডানে-যে ইসরাইল সীমান্ত এখন পর্যন্ত সবচেয়ে শান্ত আছে- ফিলিস্তিনিদের শরণার্থী হিসেবে ঢোকার প্রভাবও হতে পারে নেতিবাচক। দ্বিতীয় নাকবা অস্তিত্বের সংকটের মুখে ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য দুই আরব দেশকে চাপের মুখে ফেলবে। এতে নিজের ভূমিতে নিজেদের কর্তৃত্ব রক্ষার বিষয়টিও হুমকির মুখে ফেলবে। এনবিসি নিউজ।

 


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

৯ বছর পর দেশে ফিরে স্ত্রীকে পেলেন ঝুলন্ত অবস্থায়

৯ বছর পর দেশে ফিরে স্ত্রীকে পেলেন ঝুলন্ত অবস্থায়

চীনে জন্মহার হ্রাস, অর্থনীতিতে বিপর্যয়ের শঙ্কা

চীনে জন্মহার হ্রাস, অর্থনীতিতে বিপর্যয়ের শঙ্কা

বিএনপিকে ধুয়ে দিলেন সাংবাদিক মাসুদ কামাল

বিএনপিকে ধুয়ে দিলেন সাংবাদিক মাসুদ কামাল

যুক্তরাজ্য-ইউক্রেন ১০০ বছরের ‘যুগান্তকারী’ চুক্তি

যুক্তরাজ্য-ইউক্রেন ১০০ বছরের ‘যুগান্তকারী’ চুক্তি

লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানল নিয়ন্ত্রণে আসছে, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে বাংলাদেশিরাও

লস অ্যাঞ্জেলেসে দাবানল নিয়ন্ত্রণে আসছে, ক্ষতিগ্রস্তদের পাশে বাংলাদেশিরাও

কেন চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি ফারিয়া?

কেন চোখের পানি ধরে রাখতে পারেনি ফারিয়া?

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাড়ির ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী ৩ বন্ধুর মৃত্যু

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে গাড়ির ধাক্কায় মোটরসাইকেল আরোহী ৩ বন্ধুর মৃত্যু

তাপমাত্রা কমে বাড়বে শীত

তাপমাত্রা কমে বাড়বে শীত

এলএন-এর বিরুদ্ধে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ, কলম্বিয়ায় শান্তি আলোচনা বাধাগ্রস্ত

এলএন-এর বিরুদ্ধে হত্যার ষড়যন্ত্রের অভিযোগ, কলম্বিয়ায় শান্তি আলোচনা বাধাগ্রস্ত

ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি হলেন ইউসুফ হোসেন

ফরিদপুর মহানগর যুবদলের সভাপতি হলেন ইউসুফ হোসেন

ভাঙ্গায় এক্সপ্রেসওয়েতে পড়েছিল মোটরসাইকেল আরোহীর চূর্ণ-বিচূর্ণ লাশ

ভাঙ্গায় এক্সপ্রেসওয়েতে পড়েছিল মোটরসাইকেল আরোহীর চূর্ণ-বিচূর্ণ লাশ

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদরাই আজকের বাংলাদেশ- কক্সবাজারে শিল্প উপদেষ্টা

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের শহীদরাই আজকের বাংলাদেশ- কক্সবাজারে শিল্প উপদেষ্টা

অতিরিক্ত সময়ে এন্দ্রিকের জোড়া গোলে জিতে শেষ আটে রিয়াল

অতিরিক্ত সময়ে এন্দ্রিকের জোড়া গোলে জিতে শেষ আটে রিয়াল

গ্রিক সাইপ্রিয়ট প্রশাসনকে অস্ত্র বিক্রয়ের মার্কিন সিদ্ধান্তে টিআরএনসি-এর ক্ষোভ ও উদ্বেগ

গ্রিক সাইপ্রিয়ট প্রশাসনকে অস্ত্র বিক্রয়ের মার্কিন সিদ্ধান্তে টিআরএনসি-এর ক্ষোভ ও উদ্বেগ

নরসিংদীতে বাস-ট্রাকের ত্রিমুখী সংঘর্ষ, আহত ৮

নরসিংদীতে বাস-ট্রাকের ত্রিমুখী সংঘর্ষ, আহত ৮

পাবনায় জনজীবনে ভয়াবহ হচ্ছে ভার্চুয়াল আসক্তি

পাবনায় জনজীবনে ভয়াবহ হচ্ছে ভার্চুয়াল আসক্তি

মাঝ আকাশে ভেঙে টুকরো ইলন মাস্কের ‘স্টারশিপ’

মাঝ আকাশে ভেঙে টুকরো ইলন মাস্কের ‘স্টারশিপ’

বাংলাদেশ-ভারতকে অতীত কবর দিয়ে নতুন করে শুরু করতে হবে: সুনন্দা কে দত্ত রায়

বাংলাদেশ-ভারতকে অতীত কবর দিয়ে নতুন করে শুরু করতে হবে: সুনন্দা কে দত্ত রায়

সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন

সুপ্রিম কোর্টের বিচারক নিয়োগ অধ্যাদেশের খসড়া অনুমোদন

সাইফ ইস্যুতে কেজরিওয়ালের বিস্ফোরক মন্তব্য, পাল্টা প্রতিক্রিয়া বিজেপি নেতার

সাইফ ইস্যুতে কেজরিওয়ালের বিস্ফোরক মন্তব্য, পাল্টা প্রতিক্রিয়া বিজেপি নেতার