দ্বিতীয় নাকবা শুরু হয়ে গেছে
১৫ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৫ এএম
ফিলিস্তিনে দ্বিতীয় নাকবা শুরু হয়ে গেছে। গাজা পুনর্দখল এবং ফিলিস্তিনের কেবল একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করা এই অঞ্চলের কৌশলগত বাস্তবতাকে বদলে দেবে না। এবং গাজা দখল করতে ৩ লাখ ৬০ হাজার সেনার প্রয়োজনও নেই। অথচ এই রেকর্ড সংখ্যক রিজার্ভ ফোর্সকে সম্পৃক্ত করেছে ইসরাইল। মূলত গাজা থেকে ফিলিস্তিনিদের সরানোই এখানে উদ্দেশ্য। বৃহস্পতিবারের নির্দেশনা সেদিকেই ইঙ্গিত করে। অর্থাৎ দ্বিতীয় নাকবা শুরু হয়ে গেছে। হামাসের আকস্মিক হামলার পরপর ইসরাইলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু এমন একটি প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন যা অনেকের মনোযোগ এড়িয়ে গেছে। দক্ষিণ ইসরাইলের শহরগুলোর মেয়রদের উদ্দেশ্যে তিনি বলেন, ইসরাইলের প্রতিক্রিয়া মধ্যপ্রাচ্যকে বদলে দেবে। জাতির উদ্দেশে দেওয়া ভাষণেও নেতানিয়াহু একই কথা উল্লেখ করেন। সাথে যোগ করেন, আগামী দিনে আমরা শত্রুদের সাথে যা করব তা তাদের প্রজন্মের পর প্রজন্মে প্রতিধ্বনিত হবে। এই কথার অর্থ কি? আমরা জানি যে, বহুদিন ধরেই ইরানের পারমাণবিক স্থাপনায় হামলা করতে চায় ইসরাইল। ২০১০ সালে প্রথম ব্যর্থ প্রচেষ্টার তিন বছর পর নেতানিয়াহু সিবিএসকে বলেছিলেন, বেশি দেরি হওয়া পর্যন্ত আমি অপেক্ষা করব না। আমরাও জানি, তিনি হিজবুল্লাহ এবং হামাসকে নির্মূল করতে চান। যাদেরকে নেতানিয়াহু ইরানের ‘বিমানবাহী বাহক’ বলে মনে করেন। শনিবার ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের হামলার পর থেকে তিনি এমন শব্দ ব্যবহার করছেন, যা টুইন টাওয়ারে হামলার পর মার্কিন প্রেসিডেন্ট জর্জ ডব্লিউ বুশের প্রতিক্রিয়াকে প্রতিফলিত করে। তাহলে কি অনেক আন্তর্জাতিক সম্প্রদায়ের সমর্থন পাওয়া নেতানিয়াহু বুশের মতোই গাজায় বড় কিছু ঘটানোর চেষ্টা করছেন? ইসরাইলি বিরোধী দলীয় নেতা বেনি গ্যান্টসের কথাতেও একই সুর লক্ষ্য করা গেছে। তিনি বলেন, আমরা জিতব এবং এই অঞ্চলের নিরাপত্তা ও কৌশলগত বাস্তবতা বদলে দেব। গাজা পুনর্দখল এবং ফিলিস্তিনের কেবল একটি সশস্ত্র গোষ্ঠীকে নিশ্চিহ্ন করা এই অঞ্চলের কৌশলগত বাস্তবতাকে বদলে দেবে না। এবং গাজা দখল করতে ৩ লাখ ৬০ হাজার সেনার প্রয়োজনও নেই। অথচ এই রেকর্ড সংখ্যক রিজার্ভ ফোর্সকে সম্পৃক্ত করেছে ইসরাইল। হামাসের সর্বোচ্চ ৬০ হাজার সশস্ত্র সদস্য আছে। অন্যান্যদের যোগ করেও তা ইসরাইলের এক-তৃতীয়াংশের সমান হবে না। ইসরাইল ও যুক্তরাষ্ট্রের সাবেক কর্মকর্তাদের মুখে এর আগেও মধ্যপ্রাচ্যের পরিস্থিতির বদলে দেওয়ার গর্জন শুনা গেছে। তবে সেগুলো পরে ফাঁপা বুলি হিসেবে প্রমাণিত হয়েছে। কিন্তু এবার যদি আসলেই বড় কিছুর পরিকল্পনা হয়? তাহলে পরিণতি কি হবে? এই অঞ্চল কি ধরনের ঝুঁকির মধ্যে পড়বে। তাহলে প্রথম উত্তরই হবে দ্বিতীয় নাকবা। অর্থাৎ গাজার ২৩ লাখ মানুষের বড় অংশই বাস্তুহারা, ভূমিহারা হবে। মঙ্গলবার বিদেশি সাংবাদিকদের সঙ্গে আলাপকালে ইসরাইলি ল্যাফটেনেন্ট কর্নেল রিচার্ড হেচ বলেন, আমি ফিলিস্তিনিদের পরামর্শ দেব রাফাহ সীমান্ত পাড়ি দিয়ে মিশরে চলে যেতে। পরে তার কার্যালয় জানায়, সেই সীমান্ত বন্ধ আছে জেনেই এই মন্তব্য করেছেন তিনি। মির হয়তো এক পর্যায়ে বিপুল সংখ্যক শরণার্থীকে জায়গা দিতে বাধ্য হবে। ১৯৪৮ এবং ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধে যেমনটা ঘটেছে। গাজা থেকে ১০ লাখ লোকের সিনাই-তে যাত্রা ইতিমধ্যে অর্থনৈতিক সংকটে পড়া মিশেরের পরিস্থিতিকে আরো খারাপ করবে। অনেক মিশরীয় তাদের ভাগ্য পরিবর্তনে নৌপথে বিদেশে পাড়ি দিচ্ছেন। জর্ডানে-যে ইসরাইল সীমান্ত এখন পর্যন্ত সবচেয়ে শান্ত আছে- ফিলিস্তিনিদের শরণার্থী হিসেবে ঢোকার প্রভাবও হতে পারে নেতিবাচক। দ্বিতীয় নাকবা অস্তিত্বের সংকটের মুখে ইসরাইলকে স্বীকৃতি দেওয়ার জন্য দুই আরব দেশকে চাপের মুখে ফেলবে। এতে নিজের ভূমিতে নিজেদের কর্তৃত্ব রক্ষার বিষয়টিও হুমকির মুখে ফেলবে। এনবিসি নিউজ।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা, ঢাবির ৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার
হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেও সুস্থ নন খালেদা জিয়া : মির্জা ফখরুল
আত্মহত্যা না কি খুন? ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শুরু
বিচার বিভাগে পৃথক সচিবালয় ছাড়া আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় : প্রধান বিচারপতি
বিভিন্ন সময়ে যেসব বিতর্কিত অভিযান চালিয়েছে মোসাদ
শেরপুর বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে চা দোকানীর মৃত্যু
শরীয়তপুর পৌরসভার বেশীর ভাগ সড়কেরই বেহাল দশা, ভোগান্তি চরমে
এবার বম্বে হাইকোর্টে জোর ধাক্কা মোদি সরকারের, বাতিল ফ্যাক্ট চেক ইউনিট
যুবদল নেতাকে কুপিয়ে জখম
কাশ্মীরে ভোটের ডিউটিতে যাওয়ার পথে বাস উল্টে নিহত ৪ সীমান্তরক্ষী নিহত
লেবাননে পেজার বিস্ফোরণে ভারত যোগ, ঘটনার পরেই উধাও ভারতীয় যুবক
ঈশ্বরগঞ্জে জামিয়াতুল মোদার্রেছীনের মতবিনিময় সভা অনুষ্ঠিত
বাংলাদেশকে বিশাল লক্ষ্য ছুড়ে দিল ভারত
বিষ প্রয়োগ ও শিল্প দূষণ বন্ধ করে পশুর নদী ও সুন্দরবন বাঁচাতে হবে
রাশিয়ায় হামলার উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভে পাঠাবে না জার্মানি
ইসলামের বিধি-বিধান নিয়ে কটুক্তিকারী ড. সৈয়দ জামিল আহমেদকে অপসারণ করতে হবে
সাইবারট্রাক ‘অচল’ করে দেয়ার জন্য মাস্ককে দুষলেন কাদিরভ
ফিরেই পান্তের সেঞ্চুরি, তিন অঙ্কে গিলও
মুখে সুন্নী বললে সুন্নী হওয়া যায়না, আমলের মাধ্যমে সুন্নী হতে হয় -ছারছীনার পীর ছাহেব
রাঙামাটি পৌঁছেছে তিন উপদেষ্টাসহ সরকারের প্রতিনিধি দল