যেভাবে ‘মিনি আর্মি’ গড়েছে হামাস
১৬ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ১৬ অক্টোবর ২০২৩, ১২:০৫ এএম
ইসরাইলের সাথে লড়তে গোপনে মিনি আর্মি গড়েছে হামাস। গাজায় হামাস সংশ্লিষ্ট এক সূত্র জানায়, হামাস ‘ছোট আর্মির’ মতো। তিনি বলেন, সাইবার নিরাপত্তার জন্য প্রশিক্ষণকেন্দ্রসহ হামাসের পৃথক মিলিটারি একাডেমি আছে। সামরিক শাখার ৪০ হাজার সদস্যের মধ্যে হামাস পৃথক নৌ বিভাগও দাঁড় করিয়েছে। হামাসকে নিশ্চিহ্ন করার অভিপ্রায়ে গাজায় স্থল অভিযানের প্রস্তুতি নিচ্ছে ইসরাইল। এত বড় সেনাবাহিনী নিয়ে এখনো জোর আক্রমণ শুরু না করার কারণ হলো তারা দীর্ঘদিন ধরে প্রশিক্ষিত এবং অনেকটাই উন্নত সমরাস্ত্রে সজ্জিত একটি গোষ্ঠীর মুখোমুখি হচ্ছে। ৭ অক্টোবরের সুকৌশলী ও অত্যন্ত পরিকল্পিত হামলাকে হামাসের সামরিক পারদর্শিতার প্রদর্শন বলে মনে করা হচ্ছে। সিনিয়র হামাস কর্মকর্তা আলি বারাকা বলেন, প্রয়োজনই উদ্ভাবনের জন্ম দেয়। তিনি জানান, দীর্ঘ সময় ধরে ইরান ও লেবাননের হিজবুল্লাহর অর্থ ও সামরিক সহায়তার পাশাপাশি হামাস নিজেদের অস্ত্র তৈরিতেও মনোযোগ দিয়েছে। লেবাননে থেকে নিজের দায়িত্ব পালন করা বারাকা বলেন, অস্ত্র আমদানিতে বিভিন্ন সমস্যার মুখোমুখি হওয়ায় আমরা নিজেদের সক্ষমতা বাড়িয়েছি এবং সদস্যদের প্রশিক্ষিত করেছি। ২০০৮ সালে গাজা যুদ্ধে হামাসের ব্যবহৃত রকেটগুলোর সর্বোচ্চ পরিসীমা ছিল ৪০ কিলোমিটার। আর ২০২১ সালের সংঘাতে তা বেড়ে হয়েছিল ২৩০ কিলোমিটার। হামাসের সক্ষমতার ধারণা পেতে আঞ্চলিক নিরাপত্তা কর্মকর্তা ও সামরিক বিশেষজ্ঞের সাথে কথা বলেছে রয়টার্স। তাদের অনেকে মনে করেন, অনেকটাই গোপনে কার্যক্রম চালানো বিস্তৃত সংগঠনটির অনেক কিছুই এখনো ফিলিস্তিনিদের কাছেও অজানা। গাজায় হামাস সংশ্লিষ্ট নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক সূত্র জানায়, হামাস ‹ছোট আর্মির› মতো। তিনি বলেন, সাইবার নিরাপত্তার জন্য প্রশিক্ষণকেন্দ্রসহ হামাসের পৃথক মিলিটারি একাডেমি আছে। সামরিক শাখার ৪০ হাজার সদস্যের মধ্যে হামাস পৃথক নৌ বিভাগও দাঁড় করিয়েছে। অথচ গ্লোবাল সিকিউরিটি ওয়েবসাইটের মতে, ১৯৯০ এর দশকে হামাসের হাতে কেবল ১০,০০০ যোদ্ধা ছিল। এক আঞ্চলিক নিরাপত্তা কর্মকর্তার মতে, বিদেশ থেকে অস্ত্র আমদানি করতে, নিজেদের অস্ত্র তৈরির কারখানা সুরক্ষিত করতে এবং প্রয়োজনে যোদ্ধাদের নিরাপদে পালিয়ে যেতে একটি বিস্তৃত টানেল নেটওয়ার্ক তৈরি করেছে হামাস। হামাস কর্মকর্তা জানান, তাদের হাতে বিপুল পরিমাণ বোমা, মর্টার শেল, ক্ষেপণাস্ত্র, অ্যান্টি-ট্যাংক, আকাশ প্রতিরক্ষা মিসাইল মজুত আছে। এই সক্ষমতা বৃদ্ধির ফলও পেয়েছে হামাস। ২০০৮ সালের সংঘাতে কেবল ৬ জন এবং ২০১৪ সালে ৬৬ জন যোদ্ধা হারায় হামাস, যা উল্লেখযোগ্যভাবে কম। ব্রিটেন রয়েল ইউনাইটে সার্ভিসেস ইন্সটিটিউটের সিনিয়র ফেলো এইচ. এ হেলয়ার বলেন, আসন্ন হামলায় হামাসকে ধ্বংস করতে সক্ষম ইসরাইল। কিন্তু প্রশ্ন সক্ষমতা নিয়ে নয়; বরং গাজায় বেসামরিকদের ওপর হামলার প্রভাবই মুখ্য। কারণ হামাস উপদ্বীপের নির্দিষ্ট একটি জায়গায় বা মরুভূমির কোনো গুহায় থাকে না। তাদের নেটওয়ার্ক বিস্তৃত। ইরানের কাছে হামাস হলো হিজবুল্লাহর মতোই ইসরাইলকে চারপাশ থেকে ঘিরে রাখার অন্যতম অস্ত্র। হামাস নেতারা কাতার ও লেবাননসহ মধ্যপ্রাচ্যজুড়ে ছড়িয়ে পড়লেও তাদের মূল ভিত হলো গাজা। সশস্ত্র গোষ্ঠীটি ইসরাইলের হামলার মুখে ফিলিস্তিনিদের তাদের মাতৃভূমি ত্যাগ না করার আহ্বান জানিয়েছে। ৭ অক্টোবরের হামলা ৫০ বছরের মধ্যে সবচেয়ে বিব্রতকর অবস্থায় ফেলেছে ইসরাইলের প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাকে। প্রায় ৩,০০০ এর বেশি রকেট একের পর এক ছুড়তে থাকে হামাস। প্যারাগ্লাইডিং করে তাদের সদস্যরা ঢুকে পড়ে দক্ষিণ ইসরাইল সীমান্তে। ইসরাইলের অত্যাধুনিক লৌহ প্রাচীরের ২৯টি পয়েন্ট দিয়ে তারা মোটরসাইকেল নিয়ে ঢোকে। এমনকি বুলডোজার দিয়েও সীমানা গুড়িয়ে দে। রয়টার্সকে সূত্র জানিয়েছে, ইরান কর্তৃক প্রশিক্ষিত হলেও ৭ অক্টোবরের হামলায় তেহরানের সরাসরি সম্পৃক্ততা বা তাদের দিকনির্দেশনার প্রমাণ এখনো পাওয়া যায়নি। আঞ্চলিক নিরাপত্তা সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়, সিদ্ধান্ত, পরিকল্পনা সবই হয়েছে হামাসের হাতে। তবে অবশ্যই প্রশিক্ষণ, প্রস্তৃতি ও সমন্বয় হয়েছে ইরানে। হামাসকে অর্থ ও প্রশিক্ষণ দেওয়ার বিষয় স্বীকার করলেও হামলায় জড়িত থাকার বিষয়টি অস্বীকার করেছে ইরান। রয়টার্স, আল-জাজিরা।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ছক্কা হাঁকানোর পরের বলেই আউট মুশফিক
ঝাড়খন্ডে কথিত বাংলাদেশি অনুপ্রবেশকারী নিয়ে বিস্ফোরক মন্তব্য অমিত শাহের
মুমিনুলকেও হারিয়ে বিপদে বাংলাদেশ
রাবির মাদার বখ্শ হলের পানির ট্যাংক থেকে উদ্ধার হলো দেশীয় অস্ত্র
জাতিসংঘের সাধারণ অধিবেশনে ড. ইউনূসের ভাষণ ২৭ সেপ্টেম্বর
ঢাবির হত্যার ঘটনায় প্রভোস্টকে অব্যাহতি
আইন-শৃঙ্খলা অবনতির চেষ্টা করলে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না: রাঙামাটিতে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
মেক্সিকোতে মাদক কারবারিদের মধ্যে সংঘর্ষে দুই সপ্তাহে নিহত ৫৩
বিদ্যুৎ সাত-আট ঘণ্টা পর্যন্ত গ্রামে থাকে না
দুর্গাপূজায় ভারতে ৩ হাজার টন ইলিশ রপ্তানির সিদ্ধান্ত
জাকিরের পর ফিরলেন সাদমানও
খুবিতে ক্যাম্পাস টু ক্যারিয়ার শীর্ষক সেমিনার
জাতিসংঘে যাওয়ার আগে হুঙ্কার দিলেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট এরদোয়ান
ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো বিচারবিভাগের গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছেন: অ্যাটর্নি জেনারেল
গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্প থেকে ভারতীয়দের অপসারণের দাবি গণঅধিকার পরিষদের
পঞ্চগড়ে তীব্র তাপদাহে হাঁসফাঁস বিপর্যস্ত জনজীবন
দীর্ঘ ১৭ বছর পর প্রকাশ্যে তালতলীতে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন
আমরা ১৫ বছর কথা বলতে পারিনি - মুশফিকুর রহমান
ফিরলেন জাকির, এসেই শান্তর ছক্কা
মাগুরায় গৃহবধূকে বিষপানে হত্যার অভিযোগ