যুদ্ধের শেষ হবে গাজার বিজয়ে : নাসরাল্লাহ

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক :

০৫ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ এএম

লেবাননের ইরানপন্থি সশস্ত্র গোষ্ঠী হিজবুল্লাহ প্রধান সাইয়্যেদ হাসান নাসরাল্লাহ বলেছেন, ৭ অক্টোবর হামাসের হামলা ছিল ইসরাইলে একটি ভূমিকম্প। হামাসকে ধ্বংস করার যে লক্ষ্য ইসরাইলের, সেটি বাস্তবায়ন অসম্ভব। এই যুদ্ধের শেষ হবে গাজার বিজয়ে, শত্রুর পরাজয়ে। শুক্রবার গাজায় ইসরাইলি আগ্রাসন শুরুর পর প্রথমবার দেওয়া ভাষণে তিনি এসব কথা বলেছেন। কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল-জাজিরা এ খবর জানিয়েছে। ইসরাইলে হামাসের হামলায় হিজবুল্লাহর জড়িত না থাকার দাবি করে নাসরাল্লাহ বলেছেন, এই অভিযান ছিল শতভাগ ফিলিস্তিনি। শুধু ফিলিস্তিনিদের দ্বারা পরিচালিত অভিযান ছিল সম্পূর্ণ গোপনীয়। এমনকি ইসরাইলবিরোধী বিভিন্ন গোষ্ঠীর কাছেও তা প্রকাশ করা হয়নি। সম্ভবত সউদী আরবের সঙ্গে ইসরাইলের সম্পর্ক স্বাভাবিক করার চুক্তি নিয়ে আলোচনাকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেছেন, এই সংঘাত শুধু ফিলিস্তিনি জনগণের সঙ্গে সম্পর্কিত, কোনও আঞ্চলিক ইস্যুর সঙ্গে নয়। হামাসের নেতৃত্বাধীন হামলাকে একটি ‘ভূমিকম্প’ অভিহিত করে নাসরাল্লাহ ইসরাইল সম্পর্কে তার পুরোনো বর্ণনা তুলে ধরেছেন। তিনি বলেছেন, ইসরাইল ‘মাকড়সার জালের চেয়েও ভঙ্গুর’। ইসরাইল বলছে, ৭ অক্টোবর ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের হাতে প্রায় এক হাজার বেসামরিক লোক নিহত হয়েছে। নাসরাল্লাহ দাবি করেছেন, ইসরাইলি বাহিনী বেসামরিক নাগরিকদের ‘গণহারে হত্যা’ করেছে। তিনি বলেছেন, হামাসকে পুরোপুরি নিশ্চিহ্ন করার ইসরাইলি উদ্দেশ্য অসম্ভব। মস্তিষ্ক মাথায় থাকা কেউ এমন লক্ষ্য নির্ধারণ করবে? নাসরাল্লাহ বর্তমান সংঘাতকে লেবাননের বিরুদ্ধে ২০০৬ সালের ইসরাইলের যুদ্ধের সঙ্গে তুলনা করেছেন। ওই সময় ইসরাইলিরা আলোচনার পরিবর্তে একটি সামরিক সমাধান চেয়েছিল এবং তারা হিজবুল্লাহর সঙ্গে যুদ্ধে জড়ায়। যা অচলাবস্থায় শেষ হয়েছিল। তিনি বলেছেন, এই যুদ্ধের শেষ হবে গাজার বিজয়ে এবং শত্রুর পরাজয়ে। নাসরাল্লাহ মানুষকে সতর্ক করেছেন দুটি স্বল্পমেয়াদি লক্ষ্যের প্রতি মনোযোগ না হারাতে। এগুলো হলো- গাজায় যুদ্ধের অবসান এবং হামাসসহ গাজার প্রতিরোধ গোষ্ঠীর বিজয়। তিনি বলেন, এই ধরনের বিজয় হবে মিসর, জর্ডান, সিরিয়ার জনগণসহ সব মানুষের জন্য। সবার ঊর্ধ্বে হলো এটি লেবাননের জন্য একটি জাতীয় দেশাত্মবোধের স্বার্থ। তিনি আরও বলেন, আরব ও মুসলিম রাষ্ট্রগুলোর যুদ্ধ অবসানের উদ্যোগ নিতে কোনও ছাড় দেওয়া উচিত হবে না। তাদের উচিত ইসরাইলে তেল ও খাদ্য রফতানি বন্ধ করা। ৮ অক্টোবর চলমান সংঘাতে হিজবুল্লাহ জড়িয়েছে বলে দাবি করেছেন নাসরাল্লাহ। তিনি বলেছেন, ইসরাইলি সেনাদের সঙ্গে লেবানন সীমান্তে প্রতিদিন গুলিবিনিময় তেমন কিছু মনে না হলেও খুব গুরুত্বপূর্ণ। যা ১৯৪৮ সালের পর বিরল ঘটনা। এটিই শেষ নয়। এখন পর্যন্ত ৫৭ জন হিজবুল্লাহ যোদ্ধা নিহত হয়েছেন বলেও দাবি করেছেন তিনি। নাসরাল্লাহ আরও দাবি করেছেন, হিজবুল্লাহ দিন দিন তাদের কার্যক্রম বাড়িয়ে চলেছে এবং ইসরাইলকে গাজা বা অধিকৃত পশ্চিম তীরের পরিবর্তে লেবানন সীমান্তের কাছে সেনা মোতায়েন রাখতে বাধ্য করছে। গাজায় যুদ্ধের অবসান এবং ইসরাইলের বিরুদ্ধে হামাসের বিজয় নিশ্চিত করা হিজবুল্লাহ গোষ্ঠীর প্রধান লক্ষ্য। ইসরাইলকে হুঁশিয়ারি দিয়ে তিনি বলেছেন, আমি ইসরাইলিদের বলছি, আপনারা যদি লেবাননের বিরুদ্ধে একটি আগাম আক্রমণ করার কথা ভেবে থাকেন, তবে তা হবে আপনাদের সবচেয়ে বড় বোকামিপূর্ণ ভুল। অপর এক খবরে বলা হয়, লেবাননের যোদ্ধাগোষ্ঠী হিজবুল্লাহকে আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থা দেয়ার পরিকল্পনা করছে রাশিয়ার ভাড়াটে গ্রুপ ওয়াগনার। এ বিষয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কাছে গোয়েন্দা তথ্য আছে বলে রিপোর্ট করেছে ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল। আল-জাজিরা, ওয়াল স্ট্রিট জার্নাল।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

গাজা পুনর্গঠনে কার হাতে থাকবে প্রশাসনিক দায়িত্ব ?
মুক্ত তিন ইসরাইলি জিম্মিকে যে ‘উপহারের ব্যাগ’ দিলো হামাস
গাজার ধ্বংসস্তূপে নতুন স্বপ্ন বুনছেন যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষ
গাজা চুক্তিকে যেকারণে ‘হামাসের জয়’ বলছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম
গাজায় ব্যাংক সেবা পুনরায় চালুর প্রস্তুতি শুরু ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের
আরও

আরও পড়ুন

‘জুলাই বিপ্লবের’ মাধ্যমে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার সুযোগ এসেছে : সিইসি

‘জুলাই বিপ্লবের’ মাধ্যমে ভোটের অধিকার প্রতিষ্ঠার সুযোগ এসেছে : সিইসি

ছাগলনাইয়া উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির কমিটি গঠন

ছাগলনাইয়া উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির কমিটি গঠন

বাগেরহাটে এ্যাথলেটিক প্রতিযোগীতা ও গ্রামীন খেলা অনুষ্ঠিত

বাগেরহাটে এ্যাথলেটিক প্রতিযোগীতা ও গ্রামীন খেলা অনুষ্ঠিত

গাজা পুনর্গঠনে কার হাতে থাকবে প্রশাসনিক দায়িত্ব ?

গাজা পুনর্গঠনে কার হাতে থাকবে প্রশাসনিক দায়িত্ব ?

রামগড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ৫টি ইটভাটায় জরিমানা

রামগড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ৫টি ইটভাটায় জরিমানা

এখনো দেশে সাড়ে ৩৩ হাজার অবৈধ বিদেশি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এখনো দেশে সাড়ে ৩৩ হাজার অবৈধ বিদেশি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

কম মূল্যে জমি বিক্রি না করায় দাউদকান্দিতে ছাত্রদলের নেতার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদ

কম মূল্যে জমি বিক্রি না করায় দাউদকান্দিতে ছাত্রদলের নেতার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদ

মুক্ত তিন ইসরাইলি জিম্মিকে যে ‘উপহারের ব্যাগ’ দিলো হামাস

মুক্ত তিন ইসরাইলি জিম্মিকে যে ‘উপহারের ব্যাগ’ দিলো হামাস

জেরায় অবশেষে দোষ স্বীকার সাইফের হামলাকারীর

জেরায় অবশেষে দোষ স্বীকার সাইফের হামলাকারীর

ঈশ্বরগঞ্জে ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ বিষয়ক কর্মশালা

ঈশ্বরগঞ্জে ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ বিষয়ক কর্মশালা

বনানীতে সড়কে সিএনজি চালকদের বিক্ষোভ, রাস্তা বন্ধ

বনানীতে সড়কে সিএনজি চালকদের বিক্ষোভ, রাস্তা বন্ধ

বগুড়া সেনানিবাসে সাঁজোয়া কোরের ৪৪তম বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলনে যোগ দিলেন সেনা প্রধান

বগুড়া সেনানিবাসে সাঁজোয়া কোরের ৪৪তম বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলনে যোগ দিলেন সেনা প্রধান

গাজীপুরে এ্যাপারেলস্ কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে আহত ১২

গাজীপুরে এ্যাপারেলস্ কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে আহত ১২

ব্যবহারকারীদের আশ্বাস ট্রাম্পের, যুক্তরাষ্ট্রে ফের চালু টিকটক

ব্যবহারকারীদের আশ্বাস ট্রাম্পের, যুক্তরাষ্ট্রে ফের চালু টিকটক

পদ্মায় ধরা পড়লো ৪২ কেজির মহা বিপন্ন বাঘাইড় মাছ

পদ্মায় ধরা পড়লো ৪২ কেজির মহা বিপন্ন বাঘাইড় মাছ

আরও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রিয়ালের প্রেসিডেন্ট পেরেজ

আরও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রিয়ালের প্রেসিডেন্ট পেরেজ

সিলেটে প্রখ্যাত আলেম ইসহাক আল মাদানির ইন্তেকাল!

সিলেটে প্রখ্যাত আলেম ইসহাক আল মাদানির ইন্তেকাল!

গাজার ধ্বংসস্তূপে নতুন স্বপ্ন বুনছেন যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষ

গাজার ধ্বংসস্তূপে নতুন স্বপ্ন বুনছেন যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষ

গাজা চুক্তিকে যেকারণে ‘হামাসের জয়’ বলছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম

গাজা চুক্তিকে যেকারণে ‘হামাসের জয়’ বলছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম

সত্যিকারের সুখী হওয়া অনেক কঠিনঃ মিশা

সত্যিকারের সুখী হওয়া অনেক কঠিনঃ মিশা