প্রচণ্ড গোলাগুলিতে অবরুদ্ধ গিনির রাজধানী কোনাক্রি

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক :

০৫ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৩, ১২:০৪ এএম

পশ্চিম আফ্রিকার দেশ গিনির রাজধানী কোনাক্রির কেন্দ্রস্থলে শনিবার প্রচণ্ড গোলাগুলির ঘটনা ঘটেছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে এএফপি জানিয়েছে। গোলাগুলির কারণে নিরাপত্তা বাহিনী এলাকাটি বন্ধ করে রেখেছে। ১১ বছরের বেসামরিক শাসনের পর ২০২১ সালের সেপ্টেম্বরে একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতা গ্রহণকারী কর্নেল মামাদি ডুমবুইয়ার নেতৃত্বে থাকা পশ্চিম আফ্রিকার দেশটিতে গোলাগুলির কারণ অস্পষ্ট। নাম প্রকাশ না করার শর্তে এলাকার একজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, সমুদ্রতীরবর্তী শহরের রাজনৈতিক ও প্রশাসনিক কেন্দ্রস্থল কালুমে স্বয়ংক্রিয় ও যুদ্ধের অস্ত্র থেকে গুলি চলছে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে একজন দোকানদার বলেন, ‘শহরের কেন্দ্রস্থল ভোর থেকে সিল করে দেওয়া হয়েছে, আমরা প্রবেশ করতে পারছি না, বের হতেও পারছি না। আমি বন্দর এলাকায় যেতে চেয়েছিলাম। সেখানে আমি কাজ করি। কিন্তু (কালুম) যেতে বাধা দেওয়া হয়। সেখানে সাঁজোয়া যান মোতায়েন করা হয়েছে।’ এ ছাড়া বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী জানিয়েছেন, রাস্তা ফাঁকা এবং বেশ কয়েকটি পয়েন্টে সাঁজোয়া যান অবস্থান করছে। কালুম একটি উপদ্বীপে অবস্থিত। সেখানে প্রেসিডেন্টের কার্যালয়, বেশ কয়েকটি শীর্ষ সরকারি ও প্রশাসনিক কার্যালয়ের পাশাপাশি সামরিক সদর দপ্তর এবং প্রধান কারাগার রয়েছে। বেশ কয়েকজন প্রত্যক্ষদর্শী বলেছেন, জেলের কাছে এবং ৮ নভেম্বর সেতুতে গুলি চালানো হয়েছে, যা শহরের কেন্দ্রস্থলে যাওয়ার একমাত্র প্রবেশপথ। অন্যদিকে বিমানবন্দরের একটি সূত্র জানিয়েছে, শনিবার সকালে কোনো ফ্লাইট কোনাক্রির আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে যাত্রা করেনি। কারণ এয়ার ট্রাফিকের কর্মীরা কালুম থেকে বিমানবন্দরে যেতে পারেননি। ২০২০ সাল থেকে মালি, বুর্কিনা ফাসো এবং এই বছর নাইজার, গ্যাবন, গিনিসহ এমন কয়েকটি দেশ রয়েছে, যারা অভ্যুত্থান দেখেছে। গত বছরের সেপ্টেম্বরে শুনানি শুরু হওয়ার পর থেকে গিনির সাবেক স্বৈরশাসক মুসা দাদিস কামারার বিচার শুরুর সময় কোনাক্রিতে অস্থিরতার সর্বশেষ উত্থান ঘটে। তৎকালীন জান্তা নেতার অনুগত নিরাপত্তা বাহিনীর করা ২০০৯ সালের একটি গণহত্যার জন্য কামারা ও অন্য ১০ জন সাবেক সামরিক ও সরকারি কর্মকর্তা অভিযুক্ত। জাতিসংঘের নির্দেশিত তদন্ত অনুসারে, ১৫৬ জনকে হত্যা এবং কমপক্ষে ১০৯ জন নারীকে ধর্ষণের ঘটনা শুরু হয়েছিল ২০০৯ সালের ২৮ সেপ্টেম্বর কোনাক্রি স্টেডিয়ামে একটি রাজনৈতিক সমাবেশে এবং পরবর্তী দিনগুলোতে তা অব্যাহত ছিল। কামারা নিজেও ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে একটি অভ্যুত্থানের মাধ্যমে ক্ষমতায় এসেছিলেন। তার সঙ্গের আসামিদের বিরুদ্ধে হত্যা, যৌন সহিংসতা, নির্যাতন এবং অপহরণের অভিযোগ রয়েছে। দোষী প্রমাণিত হলে তাদের যাবজ্জীবন কারাদণ্ডের সম্মুখীন হতে হবে। ১৯৫৮ সালে গিনি ফ্রান্সের কাছ থেকে স্বাধীনতা অর্জন করে। সেকাউ তোরে গিনির স্বাধীনতা-পরবর্তী প্রথম প্রেসিডেন্ট হন। এরপর তিনি একটি স্বৈরাচারী শাসন প্রতিষ্ঠা করেন এবং ১৯৮৪ সালে তার মৃত্যুর আগ পর্যন্ত শাসন করেন। তারপর জেনারেল লানসানা কন্টে একটি অভ্যুত্থান ঘটিয়ে সরকার দখল করেন। তিনিও একটি কর্তৃত্ববাদী শাসন প্রতিষ্ঠা করেন এবং ২০০৮ সালের ডিসেম্বরে তার মৃত্যু পর্যন্ত প্রেসিডেন্ট পদ ধরে রাখেন। শেষে কামারা একটি অভ্যুত্থানে ক্ষমতা দখল করেন।২০০৯ সালের ডিসেম্বরের শুরুতে কামারা একটি গুপ্তহত্যার চেষ্টায় আহত হন এবং বুরকিনা ফাসোতে নির্বাসিত হন। যথাক্রমে ২০১০ এবং ২০১৩ সালে গিনিতে প্রথম অবাধ ও সুষ্ঠু প্রেসিডেন্ট নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। সেই নির্বাচনে আলফা কন্ডে জিতেছিলেন। এএফপি।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

গাজা পুনর্গঠনে কার হাতে থাকবে প্রশাসনিক দায়িত্ব ?
মুক্ত তিন ইসরাইলি জিম্মিকে যে ‘উপহারের ব্যাগ’ দিলো হামাস
গাজার ধ্বংসস্তূপে নতুন স্বপ্ন বুনছেন যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষ
গাজা চুক্তিকে যেকারণে ‘হামাসের জয়’ বলছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম
গাজায় ব্যাংক সেবা পুনরায় চালুর প্রস্তুতি শুরু ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের
আরও

আরও পড়ুন

ছাগলনাইয়া উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির কমিটি গঠন

ছাগলনাইয়া উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির কমিটি গঠন

বাগেরহাটে এ্যাথলেটিক প্রতিযোগীতা ও গ্রামীন খেলা অনুষ্ঠিত

বাগেরহাটে এ্যাথলেটিক প্রতিযোগীতা ও গ্রামীন খেলা অনুষ্ঠিত

গাজা পুনর্গঠনে কার হাতে থাকবে প্রশাসনিক দায়িত্ব ?

গাজা পুনর্গঠনে কার হাতে থাকবে প্রশাসনিক দায়িত্ব ?

রামগড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ৫টি ইটভাটায় জরিমানা

রামগড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ৫টি ইটভাটায় জরিমানা

এখনো দেশে সাড়ে ৩৩ হাজার অবৈধ বিদেশি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

এখনো দেশে সাড়ে ৩৩ হাজার অবৈধ বিদেশি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

কম মূল্যে জমি বিক্রি না করায় দাউদকান্দিতে ছাত্রদলের নেতার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদ

কম মূল্যে জমি বিক্রি না করায় দাউদকান্দিতে ছাত্রদলের নেতার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদ

মুক্ত তিন ইসরাইলি জিম্মিকে যে ‘উপহারের ব্যাগ’ দিলো হামাস

মুক্ত তিন ইসরাইলি জিম্মিকে যে ‘উপহারের ব্যাগ’ দিলো হামাস

জেরায় অবশেষে দোষ স্বীকার সাইফের হামলাকারীর

জেরায় অবশেষে দোষ স্বীকার সাইফের হামলাকারীর

ঈশ্বরগঞ্জে ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ বিষয়ক কর্মশালা

ঈশ্বরগঞ্জে ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ বিষয়ক কর্মশালা

বনানীতে সড়কে সিএনজি চালকদের বিক্ষোভ, রাস্তা বন্ধ

বনানীতে সড়কে সিএনজি চালকদের বিক্ষোভ, রাস্তা বন্ধ

বগুড়া সেনানিবাসে সাঁজোয়া কোরের ৪৪তম বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলনে যোগ দিলেন সেনা প্রধান

বগুড়া সেনানিবাসে সাঁজোয়া কোরের ৪৪তম বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলনে যোগ দিলেন সেনা প্রধান

গাজীপুরে এ্যাপারেলস্ কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে আহত ১২

গাজীপুরে এ্যাপারেলস্ কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে আহত ১২

ব্যবহারকারীদের আশ্বাস ট্রাম্পের, যুক্তরাষ্ট্রে ফের চালু টিকটক

ব্যবহারকারীদের আশ্বাস ট্রাম্পের, যুক্তরাষ্ট্রে ফের চালু টিকটক

পদ্মায় ধরা পড়লো ৪২ কেজির মহা বিপন্ন বাঘাইড় মাছ

পদ্মায় ধরা পড়লো ৪২ কেজির মহা বিপন্ন বাঘাইড় মাছ

আরও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রিয়ালের প্রেসিডেন্ট পেরেজ

আরও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রিয়ালের প্রেসিডেন্ট পেরেজ

সিলেটে প্রখ্যাত আলেম ইসহাক আল মাদানির ইন্তেকাল!

সিলেটে প্রখ্যাত আলেম ইসহাক আল মাদানির ইন্তেকাল!

গাজার ধ্বংসস্তূপে নতুন স্বপ্ন বুনছেন যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষ

গাজার ধ্বংসস্তূপে নতুন স্বপ্ন বুনছেন যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষ

গাজা চুক্তিকে যেকারণে ‘হামাসের জয়’ বলছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম

গাজা চুক্তিকে যেকারণে ‘হামাসের জয়’ বলছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম

সত্যিকারের সুখী হওয়া অনেক কঠিনঃ মিশা

সত্যিকারের সুখী হওয়া অনেক কঠিনঃ মিশা

গাজায় ব্যাংক সেবা পুনরায় চালুর প্রস্তুতি শুরু ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের

গাজায় ব্যাংক সেবা পুনরায় চালুর প্রস্তুতি শুরু ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের