গাজা ভূখণ্ডের বহু ফিলিস্তিনি ইসরাইলি সেনাবাহিনীর আদেশে নিজ নিজ এলাকা ছেড়ে নিরাপত্তার জন্য ওই বাহিনীর নির্দেশিত এলাকায় গিয়ে দেখতে পেয়েছে, সেখানে হাজার হাজার মানুষের থাকার মত পর্যাপ্ত জায়গা নেই। জাতিসংঘের মানবিক বিষয়ক সমন্বয় দপ্তরের প্রধান জেমা কনেল কয়েক সপ্তাহ ধরে গাজায় অবস্থান করছেন। তিনি জানিয়েছেন, ঘনবসতিপূর্ণ ছিটমহলটিতে বেসামরিক ফিলিস্তিনিদের যাওয়ার মত জায়গা বেশি নেই।

জেমা জানিয়েছেন, গাজা ভূখণ্ডের হাজার হাজার মানুষ ইতোমধ্যে অনেকবার বাস্তুচ্যুত হয়েছে, তারা আবারও নতুন এলাকার খোঁজে ছুটছে আর যেখানে যাচ্ছে তা যে নিরাপদ হবে তার কোনো নিশ্চয়তা নেই। পুরো গাজা ভূখণ্ডকে দাবার বোর্ডের সঙ্গে তুলনা করেছেন তিনি, যেখানে মানুষকে দাবার গুটির মতো এক এলাকা থেকে আরেক এলাকায় তাড়িয়ে নেয়া হচ্ছে। জেমা সোমবার গাজার মধ্যাঞ্চলীয় এলাকা দেইর-আল-বালাহ পরিদর্শন করার পর বলেছেন, লোকজন বিছানাপত্র ও তাদের সবকিছু নিয়ে ভ্যান, ট্রাক ও গাড়িতে চেপে দক্ষিণ দিকে রওনা হয়েছিল। কোথাও নিরাপদ জায়গা পাওয়া যায় কি না তার খোঁজে ছিল তারা। ‘লোকজন এক এলাকা ছেড়ে আরেক এলাকায় পালাচ্ছে। কিন্তু সেখানেও তারা নিরাপদ না।’

দেইর-আল-বালাহতে ইসরাইলের বিমান হামলায় নিহত ৯ বছর বয়সী বালক আহমদের মৃত্যু নিয়ে কথা বলেছেন জেমা। তিনি বলেন, ‘আহমদ এমন কোনো এলাকায় ছিল না যেখান থেকে সবাইকে চলে যাওয়ার নির্দেশ দেয়া হয়েছে। সে এমন এলাকায় ছিল যা নিরাপদ হওয়ার কথা ছিল। গাজায় কোনো নিরাপদ স্থান নেই।’ তিনি জানান, তিনি দেইর-আল-বালাহর আল-আকসা হাসপাতালে পরিদর্শনকালেও ওই এলাকায় নতুন করে বিমান হামলা চালানো হয় আর আহতদের হাসপাতালে নিয়ে আসার সময় প্রত্যক্ষদর্শী হিসেবে তা দেখেছেন তিনি। চলমান ইসরাইল-ফিলিস্তিন যুদ্ধে এ পর্যন্ত প্রায় ২১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। তাদের মধ্যে অন্তত ৮ হাজার ২৭৬ জন শিশু রয়েছে। এছাড়া আরো ৫৭ হাজার ৯৭৫ জন আহত ও ৭ হাজার জন নিখোঁজ রয়েছে। পশ্চিমতীরে এ পর্যন্ত ৭৬ শিশুসহ অন্তত ৩০৩ জন নিহত হয়েছে। এছাড়া আরো ৩ হাজার ৪৫০ জন আহত হয়েছে। সূত্র : আল-জাজিরা, রয়টার্স।