গাজায় ত্রাণ নিয়ে যাবেন ১ হাজার স্বেচ্ছাসেবী
২২ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ২২ এপ্রিল ২০২৪, ১২:০৩ এএম
চিকিৎসক, আইনজীবী এবং শিক্ষাবিদসহ বিশ্বের বিভিন্ন দেশের প্রায় ১ হাজার সেচ্ছাসেবী শীঘ্রই অবরুদ্ধ গাজায় ত্রাণ নিয়ে যাওয়ার জন্য একত্রিত হচ্ছেন। তারা ‘গাজা ফ্রিডম ফ্লোটিলা’ নামে একটি ত্রাণবাহী জাহাজের বহর নিয়ে ইস্তাম্বুল থেকে গাজার উদ্দেশ্যে রওনা দেবেন।
‘গাজা ফ্রিডম ফ্লোটিলা নিরস্ত্র বেসামরিক লোকদের নিয়ে গঠিত যারা গাজার ইসরাইলি অবরোধকে চ্যালেঞ্জ জানাতে এবং আন্তর্জাতিক বিচার আদালতের অনুরোধ অনুযায়ী মানবিক সহায়তা প্রদানের জন্য একটি শান্তিপূর্ণ মিশনে রয়েছে,’ অবসরপ্রাপ্ত মার্কিন সেনা কর্নেল এবং সাবেক কূটনীতিক অ্যান রাইট ব্যাখ্যা করেছেন। রাইট ‘১২টি দেশের মানুষের সমন্বয়ে গঠিত ফ্রিডম ফ্লোটিলা কোয়ালিশনের স্টিয়ারিং কমিটিরও একজন সদস্য যারা গাজার ইসরাইলি নৌবাহিনী অবৈধ অবরোধকে চ্যালেঞ্জ করছে’।
জার্মানি, মালয়েশিয়া, ফিলিস্তিন, নরওয়ে, আর্জেন্টিনা, স্পেন, কানাডা এবং দক্ষিণ আফ্রিকা সহ বিভিন্ন দেশের কর্মীরা, সাংবাদিকদের সাথে, গাজায় পৌঁছানোর ইচ্ছা পোষণকারী চারটি জাহাজের বহরে অংশ নেবে বলে জানা গেছে। দুটি জাহাজ অ্যাক্টিভিস্টদের জন্য বরাদ্দ করা হয়েছে, একটি তৃতীয়টি মানবিক সহায়তা বহন করার উদ্দেশ্যে এবং একটি চতুর্থ জাহাজ ইতালি থেকে যোগ দেবে বলে আশা করা হচ্ছে। এর আগে ২০১০ সালেও ৩০টিরও বেশি দেশ থেকে ৬০০ জনেরও বেশি সেচ্ছাসেবী একইভাবে ত্রাণবাহী জাহাজ নিয়ে গাজার উদ্দেশ্যে রওনা দিয়েছিলেন। তবে দখলদার ইসরাইলি সেনাবাহিনী সমস্ত নিয়ম উপেক্ষা করে আন্তর্জাতিক জলসীমায় থাকা অবস্থাতেই ‘তুর্কি মাভি মারমারা’ নামের ওই জাহাজে হামলা চালায়, যার ফলে ১০ জন সেচ্ছাসেবী নিহত হয়েছিলেন।
পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় ১৪ ফিলিস্তিনি নিহত : ফিলিস্তিনের পশ্চিম তীরে ইসরাইলি বাহিনীর হামলায় ১৪ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। একই সময় ইহুদি বসতিস্থাপনকারীদের পৃথক হামলায় এক ফিলিস্তিনি অ্যাম্বুলেন্স চালকও নিহত হয়। শুক্রবার ভোররাত থেকে পশ্চিম তীরের তুলকার্ম শহরের নিকটবর্তী নুর শামস এলাকায় ইসরাইলি বাহিনী বিস্তৃত এক অভিযান শুরু করে। সেখানে সশস্ত্র ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের সঙ্গে তাদের শুরু হওয়া লড়াই শনিবার পর্যন্ত অব্যাহত ছিল।
রয়টার্স জানায়, ১৯৪৮ সালে ইসরাইল রাষ্ট্র প্রতিষ্ঠার সময় সংঘটিত যুদ্ধে ঘরবাড়ি হারিয়ে উদ্বাস্তু হয়ে পড়া ফিলিস্তিনিরা নুর শামস এলাকায় আশ্রয় নিয়েছিল, তাদের বংশধররাও এখন এলাকাটিতে বসবাস করছে। এখানে ইসরাইলের সামরিক যানগুলো জড়ো হওয়ার পরপরই ব্যাপক গোলাগুলির শব্দ শোনা যায়। এ সময় নুর শামস এলাকায় অন্তত তিনটি ড্রোন উড়তে দেখা যায়। বিভিন্ন ফিলিস্তিনি উপদলীয় বাহিনী নিয়ে গঠিত তুলকার্ম ব্রিগেডস জানিয়েছে, শনিবার তাদের যোদ্ধারা ইসরাইলি বাহিনীর সঙ্গে গুলি বিনিময় করেছে। ১৯৬৭ সালের আরব-ইসরাইল যুদ্ধের সময় ইসরাইলি বাহিনী ১০০ কিলোমিটার লম্বা ও ৫০ কিলোমিটার প্রশস্ত কিডনি আকৃতির এলাকা পশ্চিম তীর দখল করে নেয়। তারপর থেকে এলাকাটি ইসরাইলি-ফিলিস্তিনি সংঘাতের কেন্দ্র হয়ে আছে।
খান ইউনিসে গণকবরে সন্ধান, মিলল ৫০ জনের লাশ : ফিলিস্তিনি জরুরি পরিষেবা কর্মীরা শনিবার অবরুদ্ধ গাজার খান ইউনিসের নাসের মেডিকেল কমপ্লেক্সে একটি গণকবর উন্মোচন করেছে, যাতে ৫০ জনের মৃতদেহ পাওয়া যায়। জরুরি পরিষেবা কর্মীরা জানান, উদ্ধারকারী দলগুলো আরও শহীদদের অনুসন্ধান এবং পুনরুদ্ধার অভিযান অব্যাহত রাখবে। কেননা, এখনো শহরের অসংখ্য মানুষ নিখোঁজ রয়েছে।
৭ এপ্রিল গাজার দক্ষিণাঞ্চলীয় এ শহর থেকে ইসরাইল তাদের সেনাদের প্রত্যাহার করে নেয়। এরপর এ গণকবরের সন্ধান পাওয়া গেল। ইসরাইলি বাহিনী বিগত কয়েক মাস ধরে খান ইউনিস শহরে বিমান থেকে নির্বিচার বোমাবর্ষণ চালায়। একইসঙ্গে স্থল বাহিনীর অভিযানে কামানের গোলায় শহরের বেশিরভাগ এলাকা ধ্বংসস্তূপে পরিণত হয়েছে। এদিকে গাজা উপত্যকার সর্বদক্ষিণের শহর রাফার একটি বাড়িতে ইসরাইলি বাহিনীর বিমান হামলায় অন্তত ১০ জন নিহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে স্থানীয় হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ। নিহত ব্যক্তিদের মধ্যে ছয়টিই শিশু। গত শুক্রবার রাতে রাফার পশ্চিমে তাল আস-সুলতান এলাকায় ওই হামলা চালানো হয়। ওই ঘটনায় নিহত ব্যক্তিদের দাফন গতকাল শনিবার সম্পন্ন হয়েছে। গাজার সিভিল ডিফেন্স কর্তৃপক্ষ এ তথ্য জানায়। রাফা থেকে আল–জাজিরার সংবাদদাতা হানি মাহমুদ জানান, দাফনের আগে মরদেহগুলো আল-নাজ্জার হাসপাতাল থেকে হস্তান্তর করা হয়। তিনি বলেন, ‘নিহত ব্যক্তিদের বেশির ভাগই ছিল শিশু। মরদেহগুলো ছিল রক্তে ভেজা সাদা চাদরে মোড়ানো। আমরা হাসপাতালটির একজন চিকিৎসকের সঙ্গে কথা বলেছি। চিকিৎসক জানিয়েছেন, এই শিশুরা মারাত্মকভাবে আহত হয়েছিল। দেহগুলো ছিল রক্তাক্ত।’
হামাস প্রধানের সঙ্গে সাক্ষাত, ফিলিস্তিনিদের ঐক্যের আহ্বান এরদোগানের : গাজায় দখলদার ইসরাইলের নৃশংস হামলা মোকাবিলায় ফিলিস্তিনিদের ঐক্যের বিষয়ে গুরুত্বারোপ করেছেন তুরস্কের প্রেসিডেন্ট রজব তাইয়েপ এরদোগান। তুরস্ক সফররত ফিলিস্তিনি স্বাধীনতাকামী সংগঠন হামাসের প্রধান ইসমাইল হানিয়ার সঙ্গে কয়েক ঘণ্টার বৈঠক শেষে তিনি এ আহ্বান জানান।
স্থানীয় সময় শনিবার ইস্তাম্বুলে এরদোগান ও হানিয়ার মধ্যে কয়েক ঘণ্টার বৈঠক হয়েছে বলে তুরস্কের প্রেসিডেন্টের দপ্তর জানিয়েছে। এরদোগান বলেন, ইসরাইলের প্রতি সবচেয়ে শক্তিশালী প্রতিক্রিয়া দেখানো এবং সম্ভাব্য বিজয়ের পথ শুধুমাত্র ঐক্য ও অখণ্ডতার মাধ্যমে অর্জিত হতে পারে। গাজায় চলমান ইসরাইলি আগ্রাসনের মধ্যে ফিলিস্তিনিদের ঐক্যবদ্ধ হওয়ার আহ্বান জানান এরদোগান। গত ৭ অক্টোবর যুদ্ধ শুরুর পর থেকে তুরস্ক সরকার বারবার এর নিন্দা জানিয়েছে। গাজার শাসকগোষ্ঠী হামাসের রাজনৈতিক শাখার প্রধান হানিয়া। তুরস্ক সফরে তার সঙ্গে হামাসের একটি প্রতিনিধিদল রয়েছে। ইরানে ইসরাইলের হামলার পর মধ্যপ্রাচ্য উত্তেজনা এখন তুঙ্গে। এদিকে গাজায় নতুন করে ইসরাইলি হামলার আশঙ্কাও করা হচ্ছে। সূত্র : ডেইলি সাবাহ, রয়টার্স, আল-জাজিরা।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
বেনাপোলে গৃহবধূকে বালিশ চাপায় শ্বাসরোধ করে হত্যা, আটক -৪
এত সংস্কারের কথা হচ্ছে, কিন্তু গরিব মানুষের কথা ভাবছি না: দেবপ্রিয় ভট্টাচার্য
সিটি ব্যাংক এর এজেন্ট ব্যাংকিং পয়েন্টে দেয়া যাবে মেটলাইফের প্রিমিয়াম
বাজার পরিদর্শনে উপদেষ্টা আসিফ
জুলাই বিপ্লবে শহীদদের স্মরণে আলোচনা সভা
সুন্দরগঞ্জে গৃহবধূর একসঙ্গে তিন ছেলের জন্ম, দর্শকের উপচে পড়া ভীর
গৌরনদীতে শিক্ষকের চড়থাপ্পরে পরীক্ষাথীর্র কানের পর্দা ফেটে গুরুতর আহত
প্রেসিডেন্টের অপসারণ ইস্যুতে সিদ্ধান্ত জানায়নি বিএনপি
নোয়াখালীতে গাছের ঢাল কাটতে গিয়ে বিদ্যুৎস্পৃষ্ট হয়ে কিশোরের মৃত্যু
প্রেসিডেন্ট অপসারণ: ‘পরিস্থিতি বুঝে সিদ্ধান্ত’
ডিএমপিতে যুক্ত হচ্ছে ভারতের মাহিন্দ্রা গাড়ি
অন্তর্বর্তী সরকারকে ‘বিপ্লবী সরকার’ ঘোষণার নির্দেশনা চেয়ে হাইকোর্টে রিট
গাজী ছিলেন একজন আপোষহীন সাংবাদিক নেতা - সিকৃবি ভিসি ড. মো. আলিমুল ইসলাম
মারাত্মক শব্দদূষণ
তারেক রহমানের ঐতিহাসিক দায়
দলে গণতন্ত্র চর্চা অপরিহার্য
বিএনপি এখন সংশোধিত -জামালপুর জেলা বিএনপির সভাপতি
রফতানির বিপুল সম্ভাবনা কাজে লাগাতে হবে
আঞ্চলিক যুদ্ধের আশঙ্কা
মাওবাদীদের আত্মসমর্পণে আল্টিমেটাম দিলো মোদি সরকার