রোহিঙ্গাদের ওপর নতুন করে নৃশংসতা রাখাইনে
২৭ মে ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ২৭ মে ২০২৪, ১২:০৪ এএম
মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের রাখাইন রাজ্যে, প্রধানত মুসলিম রোহিঙ্গা জনগোষ্ঠীর বিরুদ্ধে দেশটির সেনাবাহিনী পরিচালিত নতুন সহিংস ও ধ্বংসাত্মক অভিযান চলছে। এই অভিযানে ব্যাপক হারে অপরাধ সংঘটিত হয়েছে বলে খবর পাওয়া যাচ্ছে। জাতিসংঘের মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের মুখপাত্র লিজ থ্রোসেল জেনেভায় এক ব্রিফং-এ সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা মিয়ানমারের উত্তরাঞ্চলের রাখাইন রাজ্য থেকে বেসামরিক জীবন ও সম্পদের ওপর সংঘাতের প্রভাব সম্পর্কিত ভীতিকর এবং অস্বস্তিকর সংবাদ পাচ্ছি।’ তিনি বলেন, ‘সবচেয়ে গুরুতর কিছু অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, রোহিঙ্গা বেসামরিক নাগরিকদের শিরোচ্ছেদ করে হত্যা এবং তাদের সম্পত্তি পোড়ানোর ঘটনা।’ তিনি আরো জানান, ‘আর সাম্প্রতিক দিনগুলোতে বুথিডং ও মংডু শহর থেকে যুদ্ধের কারণে হাজার হাজার বেসামরিক মানুষ বাস্তুচ্যুত হয়েছে।’ লিজ থ্রোসেল জানান, ‘গত সপ্তাহে ভুক্তভোগীদের জবানি, প্রত্যক্ষদর্শীদের বক্তব্য, স্যাটেলাইট ইমেজ এবং অনলাইন ভিডিও ফুটেজ ও ছবি থেকে সংগ্রহ করা তথ্য ইঙ্গিত দেয় যে বুথিডং শহর কার্যত পুড়িয়ে ফেলা হয়েছে।’ তিনি আরো বলেন, ‘এমন তথ্য পাওয়া গেছে, যা ইঙ্গিত করে যে শহর থেকে সামরিক বাহিনী পিছু হটার এবং আরাকান আর্মি পূর্ণ নিয়ন্ত্রণ নেয়ার দাবি করার দুই দিন পর, ১৭ মে আগুন লাগানোর ঘটনা শুরু হয়।’ মানবাধিকার বিষয়ক হাইকমিশনারের দফতরের মিয়ানমার টিমের প্রধান, জেমস রোডহেভার ব্যাংককে বলেন, তার দল ঘটনাস্থলে অনেক সূত্রের সাথে কথা বলেছে এবং অসংখ্য উপকরণ পর্যালোচনা করেছে। জেমস রোডহেভার আরো বলেন, ‘যার মধ্যে অনেকগুলো বিশ্বাসযোগ্য তথ্য বলে মনে হয়েছে।’ জেমস রোডহেভার জানান, একজন ভুক্তভোগী শহর থেকে পালিয়ে যাওয়ার সময় কয়েক ডজন লাশ দেখেছেন বলে জানিয়েছেন। অন্য একজন ভুক্তভোগী বলেন, তিনি হাজার হাজার বাস্তুচ্যুত ব্যক্তিদের মধ্যে একজন। এরা সকলেই নিরাপদে শহরের বাইরে যাওয়ার চেষ্টা করেন। কিন্তু, আরাকান আর্মি তাদের বাধা দেয়। এই ভুক্তভোগী ব্যক্তি আরো বলেন, আরাকান আর্মির সদস্যরা জীবিত ব্যক্তিদের ওপর নির্যাতন করে এবং শহর ছেড়ে পালিয়ে যাওয়ার সময় তাদের কাছ থেকে চাঁদা আদায় করে। আরাকান আর্মি হলো একটি সশস্ত্র জাতিগত গোষ্ঠী, যারা মিয়ানমার সেনাবাহিনীর বিরুদ্ধে একটি জোটের অংশ হিসেবে লড়াই করছে। রোডহেভার বলেন, ‘বুথিডং পুড়িয়ে দেয়ার কয়েক সপ্তাহের মধ্যে জাতিসংঘ মানবাধিকার দফতরের মিয়ানমার বিষয়ক দল আরাকান আর্মি এবং উত্তরাঞ্চলের রাখাইন রাজ্যে নিয়োজিত সেনাবাহিনীর দ্বারা রোহিঙ্গা বেসামরিক নাগরিকদের ওপর চালানো বিমান হামলা, ড্রোন আক্রমণ এবং নতুন আরো হামলার তথ্য নথিভুক্ত করেছে।’ তিনি বলেন, তার দফতর পলায়নরত নিরস্ত্র গ্রামবাসীর ওপর গুলি চালানো, একাধিক গুমের ঘটনা এবং বসতবাড়ি পুড়িয়ে দেয়ার তথ্য পেয়েছে এবং চারটি শিরশ্ছেদের ঘটনা নিশ্চিত করেছে। রোডহেভার জানান, ‘মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী কয়েক বছর ধরে সক্রিয়ভাবে রোহিঙ্গাদের লক্ষ্যবস্তু করে আসছে। আর, কঠোর এবং বৈষম্যমূলক বিধিনিষেধ প্রয়োগ করেছে, যা রোহিঙ্গাদের জীবনের সমস্ত দিক প্রভাবিত করে।’ বর্তমানে, রাখাইন রাজ্যে আনুমানিক ছয় লাখ রোহিঙ্গা বসবাস করছেন। যদিও তারা কয়েক প্রজন্ম ধরে মিয়ানমারে বসবাস করছে। তার পরও দেশটির সরকার তাদেরকে বাংলাদেশ থেকে আসা অবৈধ অভিবাসী হিসেবে বিবেচনা করে এবং তাদের নাগরিকত্ব দিতে অস্বীকার করে। মিয়ানমারের সামরিক সরকার কয়েক দশক ধরে নিজ দেশের জনগণের বিপক্ষে যুদ্ধ করছে। সাম্প্রতিক কালে তারা বেশ কিছু পরাজয়ের সম্মুখীন হয়েছে। এ দিকে, বিভিন্ন প্রতিশ্রুতি দিয়ে রোহিঙ্গা যুবকদের তারা যুদ্ধের জন্য নিয়োগ করছে। এর মধ্যে রয়েছে, পরিবারের জন্য আরো খাদ্যের জোগান এবং নাগরিকত্ব দেয়ার প্রতিশ্রুতি। এটাকে মিয়ানমারের সামরিক নেতাদের একটি প্রতারণামূলক চাল বলে অভিহিত করেন রোডহেভার। তিনি বলেন, ‘তারা জানে যে এই যুবকদের বেশিভাগই কখনো কোনো ধরনের যুদ্ধের বা আত্মরক্ষার প্রশিক্ষণ পায়নি। সুতরাং, তাদের বেশিভাগকেই যুদ্ধক্ষেত্রে পাঠানো হচ্ছে মানব ঢাল হিসেবে বা কামানের গোলার খাদ্য হিসাবে। মিয়ারমার সামরিক বাহিনী এটি খুব ভালো করেই জানে।’ ভিওএ।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
ব্যালন ডি’অর হয়তো ভিনিরই জেতা উচিত ছিল: গার্দিওলা
ভিনিসিয়ুসের ব্যালন ডি'অর না পাওয়ার কারণ জানাল ফ্রান্স ফুটবল
উত্তরা থেকে সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ গ্রেপ্তার
ক্রাইম ধারার ফিল্মে মূল চরিত্রে রবার্ট প্যাটিনসন
ট্রোলিং মোকাবিলায় যা করেন অনন্যা
অ্যানিমেটর মাহেদী হাসানের কার্টুন সিরিজ
চুড়ান্ত ভর্তি শেষে ইবিতে আসন ফাঁকা ১০৩ টি
আবার শুরু হচ্ছে হা-শো
সাদিয়া আয়মান ও রনির প্রেমের গুঞ্জণ
জানুয়ারিতে হবে ফোক ফেস্ট
ভারতীয় বন্যহাতি প্রতিহত করেই আমাদের বাঁচতে হবে
শিক্ষার্থীদের মামলা প্রত্যাহার ও শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি
বরগুনায় স্কুলছাত্রীর হত্যাকারী বিচার দাবি
কয়লাখনির পাশের ক্ষতিগ্রস্ত ১২ গ্রামবাসীর ক্ষতিপূরণ দাবি
উপকূলীয় জনপদে শোভা পাচ্ছে কাশফুলের শুভ্রতা
ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস খুলে সমকামীদের প্রমোট করার আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিলে জনগণ রুখে দিবে
শেখ হাসিনার প্রত্যেক্ষ হুকুমে সংঘটিত দেশব্যাপী সেই নারকীয় হত্যাকাণ্ড!
ব্যবসা নয়, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কাজ হচ্ছে হাজীদের সেবা করা : ধর্ম উপদেষ্টা
গফরগাওয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বিচার দাবি ও শহীদদের স্মরণে দোয়া মাহফিল
ক্যাম্পাসকে র্যাগিং ও মাদকমুক্ত ঘোষণা নতুন ভিসির