ঢাকা   বুধবার, ৩০ অক্টোবর ২০২৪ | ১৫ কার্তিক ১৪৩১

ভারতে ধনীদের ওপর সম্পদ করারোপ প্রস্তাব

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

২৭ মে ২০২৪, ১২:০৪ এএম | আপডেট: ২৭ মে ২০২৪, ১২:০৪ এএম

বিশ্বজুড়ে দিন দিন বেড়েই চলেছে ধনী-গরিব অসমতা। বর্তমান পুঁজিবাদী বিশ্বে ধনী আরও ধনী হচ্ছে। আর গরীব নিমজ্জিত হচ্ছে অর্থনৈতিক সংকটে। এমতাবস্থায় বৈষম্য কমাতে এশিয়ার সবচেয়ে বেশি জনসংখ্যার দেশ ভারতে অতি ধনীদের ওপর সম্পদ করারোপের কথা বলেছেন ফরাসি অর্থনীতিবিদ টমাস পিকেটিসহ আরও কয়েকজন অর্থনীতিবিদ। এক গবেষণাপত্রে অর্থনীতিবিদেরা বলেন, ১০ কোটি রুপির বেশি নিট সম্পদে বাড়তি ২ শতাংশ সম্পদকর এবং উত্তরাধিকার সূত্রে এই অঙ্কের বেশি অর্থ প্রাপ্তির ক্ষেত্রে ৩৩ শতাংশ করারোপ করা হোক। এই প্রক্রিয়ায় জিডিপির প্রায় ২ দশমিক ৭৩ শতাংশ সমপরিমাণ রাজস্ব বাড়তে পারে, যা ব্যবহৃত হতে পারে সামাজিক কল্যাণে। একই সঙ্গে তাদের মত, এই করারোপের কারণে ৯৯ দশমিক ৯৬ শতাংশ প্রাপ্তবয়স্কের জীবনে আলাদা প্রভাব পড়বে না। ওয়ার্ল্ড ইনইকুয়ালিটি ল্যাবের সদস্য ও হার্ভার্ড কেনেডি স্কুলের অর্থনীতিবিদ লুকাস স্যঁসেল, নিউইয়র্ক ইউনিভার্সিটির নীতীন কুমার ভারতী ও প্যারিস স্কুল অব ইকোনমিকসের আনমোল সোমাঞ্চির সঙ্গে যৌথভাবে এই গবেষণাপত্র তৈরি করেছেন প্যারিস স্কুল অব ইকোনমিকসের অধ্যাপক পিকেটি। এই ‘প্রপোজালস ফর আ ওয়েলথ ট্যাক্স প্যাকেজ টু ট্যাকল এক্সট্রিম ইনইকুয়ালিটিজ ইন ইন্ডিয়া’ বা ‘ভারতের চরম অসমতা মোকাবিলায় সম্পদকরের প্রস্তাব’ শীর্ষক গবেষণাপত্রে ভারতের ক্রমবর্ধমান অসমতার বিষয়টি আমলে নেওয়া হয়েছে। প্রতিবেদনে গবেষকেরা বলেছেন, ২০০০-এর প্রথম দশক থেকে ভারতে অসমতার মাত্রা ছাড়িয়ে যেতে শুরু করে। তখন থেকেই দেশটির শীর্ষ ১ শতাংশ ধনীর আয় ও সম্পদ বাড়ছে। বাস্তবতা হচ্ছে, ২০২২-২৩ অর্থবছরে ভারতের এই শীর্ষ ১ শতাংশ ধনীর হাতে মোট জাতীয় আয়ের ২২ দশমিক ৬ শতাংশ ও সম্পদের ৪০ দশমিক ১ শতাংশ কেন্দ্রীভূত হয়েছে। গবেষণাপত্রে আরও বলা হয়েছে, শীর্ষ ধনীদের হাতে সম্পদ কেন্দ্রীভূত হওয়ার হার ২০১৪-১৫ অর্থবছর থেকে আরও বেড়েছে। ভারতে শীর্ষ ১ শতাংশ ধনীর হাতে সম্পদ কেন্দ্রীভূত হওয়ার হার বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় বেশি; যুক্তরাষ্ট্র, ব্রাজিল ও দক্ষিণ আফ্রিকার মতো দেশগুলোর তুলনায় বেশি। গবেষণায় বলা হয়েছে, শুধু অতি ধনীদের ওপরে করারোপ করলেই হবে না; বৈষম্য দূর করতে হলে এর সঙ্গে দরিদ্র, মধ্যবিত্ত ও পিছিয়ে পড়া শ্রেণির মানুষকে সহায়তা করার প্রয়োজনীয় নীতি থাকা প্রয়োজন। অর্থাৎ সেই করের অর্থ ব্যবহারের নীতি। উদাহরণ হিসেবে বলা হয়েছে, গত ১৫ বছরে ভারতের শিক্ষা খাতে জিডিপির মাত্র ২ দশমিক ৯ শতাংশ অর্থ ব্যয়ের কথা বলা হয়েছে। যদিও ২০২০ সালের জাতীয় শিক্ষানীতিতে জিডিপির ৬ শতাংশ ব্যয়ের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছিল। এছাড়া ধনীদের ওপর করারোপের প্রস্তাব নিয়ে বিস্তারিত আলোচনা জরুরি বলেও মনে করেন এই তিন অর্থনীতিবিদ। তাদের মত, সম্পদ পুনর্বণ্টন ও কর–ন্যায্যতা নিশ্চিত করতে গণতান্ত্রিক পরিসরে আলাপ-আলোচনা দরকার। কারণ হিসেবে তারা বলেন, বৈষম্য ও তার সঙ্গে সামাজিক অবিচারের সম্পর্ক এখন আর উপেক্ষা করার জায়গায় নেই। দ্য ইকোনমিক টাইমস, টাইমস অব ইন্ডিয়া।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ব্যালন ডি’অর হয়তো ভিনিরই জেতা উচিত ছিল: গার্দিওলা

ব্যালন ডি’অর হয়তো ভিনিরই জেতা উচিত ছিল: গার্দিওলা

ভিনিসিয়ুসের ব্যালন ডি'অর না পাওয়ার কারণ জানাল ফ্রান্স ফুটবল

ভিনিসিয়ুসের ব্যালন ডি'অর না পাওয়ার কারণ জানাল ফ্রান্স ফুটবল

উত্তরা থেকে সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ গ্রেপ্তার

উত্তরা থেকে সাবেক কৃষিমন্ত্রী আব্দুস শহীদ গ্রেপ্তার

ক্রাইম ধারার ফিল্মে মূল চরিত্রে রবার্ট প্যাটিনসন

ক্রাইম ধারার ফিল্মে মূল চরিত্রে রবার্ট প্যাটিনসন

ট্রোলিং মোকাবিলায় যা করেন অনন্যা

ট্রোলিং মোকাবিলায় যা করেন অনন্যা

অ্যানিমেটর মাহেদী হাসানের কার্টুন সিরিজ

অ্যানিমেটর মাহেদী হাসানের কার্টুন সিরিজ

চুড়ান্ত ভর্তি শেষে ইবিতে আসন ফাঁকা ১০৩ টি

চুড়ান্ত ভর্তি শেষে ইবিতে আসন ফাঁকা ১০৩ টি

আবার শুরু হচ্ছে হা-শো

আবার শুরু হচ্ছে হা-শো

সাদিয়া আয়মান ও রনির প্রেমের গুঞ্জণ

সাদিয়া আয়মান ও রনির প্রেমের গুঞ্জণ

জানুয়ারিতে হবে ফোক ফেস্ট

জানুয়ারিতে হবে ফোক ফেস্ট

ভারতীয় বন্যহাতি প্রতিহত করেই আমাদের বাঁচতে হবে

ভারতীয় বন্যহাতি প্রতিহত করেই আমাদের বাঁচতে হবে

শিক্ষার্থীদের মামলা প্রত্যাহার ও শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি

শিক্ষার্থীদের মামলা প্রত্যাহার ও শিক্ষকের পদত্যাগ দাবি

বরগুনায় স্কুলছাত্রীর হত্যাকারী বিচার দাবি

বরগুনায় স্কুলছাত্রীর হত্যাকারী বিচার দাবি

কয়লাখনির পাশের ক্ষতিগ্রস্ত ১২ গ্রামবাসীর ক্ষতিপূরণ দাবি

কয়লাখনির পাশের ক্ষতিগ্রস্ত ১২ গ্রামবাসীর ক্ষতিপূরণ দাবি

উপকূলীয় জনপদে শোভা পাচ্ছে কাশফুলের শুভ্রতা

উপকূলীয় জনপদে শোভা পাচ্ছে কাশফুলের শুভ্রতা

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস খুলে সমকামীদের প্রমোট করার আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিলে জনগণ রুখে দিবে

ঢাকায় জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস খুলে সমকামীদের প্রমোট করার আত্মঘাতী সিদ্ধান্ত নিলে জনগণ রুখে দিবে

শেখ হাসিনার প্রত্যেক্ষ হুকুমে সংঘটিত দেশব্যাপী সেই নারকীয় হত্যাকাণ্ড!

শেখ হাসিনার প্রত্যেক্ষ হুকুমে সংঘটিত দেশব্যাপী সেই নারকীয় হত্যাকাণ্ড!

ব্যবসা নয়, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কাজ হচ্ছে হাজীদের সেবা করা : ধর্ম উপদেষ্টা

ব্যবসা নয়, ধর্ম মন্ত্রণালয়ের কাজ হচ্ছে হাজীদের সেবা করা : ধর্ম উপদেষ্টা

গফরগাওয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বিচার দাবি ও শহীদদের স্মরণে দোয়া মাহফিল

গফরগাওয়ে আওয়ামী সন্ত্রাসীদের বিচার দাবি ও শহীদদের স্মরণে দোয়া মাহফিল

ক্যাম্পাসকে র‌্যাগিং ও মাদকমুক্ত ঘোষণা নতুন ভিসির

ক্যাম্পাসকে র‌্যাগিং ও মাদকমুক্ত ঘোষণা নতুন ভিসির