বৈশ্বিক পুঁজিবাজারে অনিশ্চয়তার মাঝে এশিয়ায় ঊর্ধ্বমুখী গতি
০৮ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৫ এএম | আপডেট: ০৮ আগস্ট ২০২৪, ১২:০৫ এএম
অনিশ্চয়তার পূর্বাভাস থাকলেও সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ (ইন্ট্রাডে) শেয়ারদরের নিরিখে জাপানি পুঁজিবাজারে ২০০৮ সালের অক্টোবরের পর সবচেয়ে বড় ঊর্ধ্বগতি দেখা গেছে। এর আগের দিন সোমবার বিশ্বব্যাপী শেয়ার বিক্রির চড়া প্রবণতা দেখা যায়, এতে পুঁজিবাজারের সূচকে বড় ধরনের পতন ঘটে। এর একদিন পরই অনিশ্চয়তার বিপরীতে এশিয়ার পুঁজিবাজার উচ্চ গতি নিয়ে নেতৃত্ব দিয়েছে। খবর এফটি। লেনদেন শুরুর আগে সতর্কতা হিসেবে বড় ধরনের পতনের আভাস দিয়েছিলেন ট্রেডাররা। এদিন বিনিয়োগকারীরা কম দামে স্টক কেনার কারণে টপিক্স সূচক ১০ শতাংশের বেশি উঠেছে। এছাড়া সাম্প্রতিক সময়ে ডলারের বিপরীতে ইয়েনের বিনিময় হার দ্রুতগতিতে বাড়লেও এদিন স্থিতিশীল ছিল। মঙ্গলবার ১ ডলারের বিপরীতে প্রায় ১৪৪ দশমিক ৬০৭ ইয়েন বিনিময় হয়েছে। টপিক্স সূচক ও প্রযুক্তিকেন্দ্রিক নিক্কেই ২২৫ গড় উভয়ই উল্লেখযোগ্য পুনরুদ্ধার দেখেছে এদিন। টপিক্স রিবাউন্ডিং ও নিক্কেই সূচক ৯ শতাংশ বেড়েছে। একই দিন মার্কিন বাজারগুলোয় রাতারাতি সূচকে তীব্র পতন দেখা যায়। এর মধ্যে এসঅ্যান্ডপি ৫০০-এর সূচকে পতন ঘটেছে ৩ শতাংশ। মার্কিন অর্থনীতিতে শ্লথগতির লক্ষণ দেখা গেলেও মোকাবেলায় ফেডারেল রিজার্ভ যথেষ্ট ব্যবস্থা নেয়নি বলে সম্প্রতি উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন বিনিয়াগকারীরা। তারা বলছেন, দ্রুত সুদহার কমানো প্রয়োজন। কিন্তু সর্বশেষ বৈঠকে মার্কিন কেন্দ্রীয় ব্যাংকের চেয়ারম্যান জেরোমে পাওয়েল জানান, সেপ্টেম্বর নাগাদ প্রথম দফা কাটছাঁট আসতে পারে। এছাড়া অর্থনৈতিক শ্লথগতির প্রভাবক হিসেবে কাজ করছে মার্কিন শ্রমবাজারের সর্বশেষ মাসের স্থবিরতা ও বৈশ্বিক শিল্পোৎপাদনের শ্লথগতি। এ কারণে মন্দা আশঙ্কা চাঙ্গা হয়ে উঠেছে, যা বিনিয়োগকারীদের বড় ধরনের শেয়ার ছেড়ে দিতে উৎসাহ দিচ্ছে। বিনিয়োগকারীদের এ উদ্যোগ যুক্তরাষ্ট্রের পাশাপাশি সারা বিশ্বের পুঁজিবাজারকে প্রভাবিত করেছে। এর মধ্যে জাপানের শেয়ারবাজারে সবচেয়ে বেশি সূচকের পতন ঘটে, সোমবার তা ছিল ১২ শতাংশ বেশি। অপ্রত্যাশিতভাবে ব্যাংক অব জাপানের সুদহার বাড়ানোর মাত্র কয়েকদিন পর এ প্রবণতা দেখা যায়। তবে পরদিনই চোখে পড়ার মতো গতি ফেরে পুঁজিবাজারে। এদিন এক পর্যায়ে নিক্কেই ২২৫ গড় ৩ হাজার ৪৫৩ পয়েন্ট পর্যন্ত ওঠে, যা সর্বনিম্ন ও সর্বোচ্চ শেয়ারদরের ব্যবধানের মধ্যে নতুন রেকর্ড গড়ে। জাপানি শেয়ার কেনার ঊর্ধ্বগতি এতটাই শক্তিশালী ছিল যে মঙ্গলবার সকালে নিক্কেই ও টপিক্স ফিউচারে লেনদেন স্বয়ংক্রিয়ভাবে বন্ধ হয়ে যায়। এ বিষয়ে পুঁজিবাজার ও বিনিয়োগবিষয়ক সংস্থার সিএলএসএর এক্সিকিউশন সার্ভিসের প্রধান তাকেও কামাই জানান, বাজার বড় ধরনের পতনের পর বড় ধরনের ঊর্ধ্বগতি দেখেছে। বাজারের এমন পাগলাটে অবস্থা আগে তিনি দেখেননি। তবে এ অবস্থার মাঝে অনিশ্চয়তা রয়েছে বলে উল্লেখ করেন তাকেও কামাই। তিনি বলেন, ‘যদিও বাজার অনেকটা পুনরুজ্জীবিত হয়েছে, তবে বড় পরিসরে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে। ব্যাংক অব জাপান চলতি বছরে সুদহার আবার বাড়াবে কিনা এবং ফেড সুদহার কমাতে পারে কিনা এর ওপর অনেক কিছু নির্ভর করছে।’ প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে, ব্যবসায়ীরা ‘ইয়েন ক্যারি ট্রেড’ নামে একটি কৌশল গ্রহণ করায় বাজারের পতন আরো খারাপের দিকে গেছে। এ কৌশলে ঋণের মাধ্যম হিসাবে ইয়েনকে ব্যবহার করা হয়। জাপানে সুদহার কম হওয়ায় ঝুঁকিপূর্ণ সম্পদে বিনিয়োগ করার জন্য ইয়েনকে বেছে নেন ব্যবসায়ীরা। কিন্তু এর সঙ্গে বাজারের পতন যুক্ত। এখানে বাজারের পতন বলতে বাজারজুড়ে স্টক ও সম্পদের মূল্যের সামগ্রিক হ্রাস বোঝায়। বাজারের পতন মানে অনেক বিনিয়োগের মূল্য কমে যাওয়া। বিষয়টি উল্লেখ করে বিনিয়োগ সংস্থা আবর্ডনের দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার মাল্টি-অ্যাসেট ইনভেস্টমেন্ট সলিউশনস প্রধান রয় শর্মা-ওং জানান, পুঁজিবাজারে ঊর্ধ্বগতিতে জাপানি অর্থনীতির জন্য উল্লেখযোগ্য কিছুই পরিবর্তন হয়নি। কারণ ক্যারি ট্রেডের অনিশ্চয়তা অনেক বিনিয়োগকারীকে শেয়ার বিক্রিতে বাধ্য করছে। যেসব ব্যবসায়ী উচ্চ ঝুঁকির সম্পদে বিনিয়োগ করার জন্য ইয়েনে ঋণ নিয়েছিলেন, তারা শেয়ার বিক্রি শুরু করলে দামে পতন ঘটে। তবে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিএনপি পরিবাসের বাজার কৌশলবিদ জেসন লুই বলেন, ‘অবশেষে মুদ্রাবাজারে কিছুটা স্থিতিশীলতা দেখতে পাচ্ছি আমরা। যেখানে ১ ডলারের বিনিময়ে ১৪৫ ইয়েন পাওয়া যাচ্ছে।’ পুঁজিবাজারের এ ঊর্ধ্বগতি এশিয়ার অন্য বাজারগুলোয়ও দেখা যাচ্ছে। মঙ্গলবার সকালের লেনদেনে দক্ষিণ কোরিয়ার কসপি সূচক ৩ শতাংশ পর্যন্ত ওঠে। সোমবার সাম্প্রতিক সময়ের মধ্যে বাজে একটি দিন পার করার পর তাইওয়ানিস স্টক সূচক বাড়ে ১ শতাংশ। এফটি।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
জনগণের সেবক হয়ে কাজ করতে চাই- ফখরুল ইসলাম সিআইপি
মীরসরাইয়ে অবৈধ বেহুন্দি ও মশারি জাল জব্দ
গণঅভ্যুত্থানে সংবাদমাধ্যমের চিত্র প্রদর্শনী করছে তরুণ কলাম লেখক ফোরাম
মারা গেলেন আসামি ধরতে গিয়ে আগুনে দগ্ধ এসআই মেহেদী
নালিতাবাড়ীতে অবৈধভাবে বালু উত্তোলনের অভিযোগে ৭ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে কারাদন্ড
ফ্যাসিস্ট হাসিনার দোসর ১৩ হত্যার নির্দেশদাতা নাসিমের খুঁটির জোর কোথায়?
মানিকগঞ্জে এলজিইডির উদ্যোগে শীতার্তদের মাঝে কম্বল বিতরণ
বাংলাদেশে কখনো স্বৈরাচারের শাসন জনগণ মেনে নিবেনা: আমিনুল হক
প্রতিনিয়ত মোশাররফ করিমের থেকে শিখি: মম
অবৈধ ৭টি কয়লা তৈরির চুল্লি গুড়িয়ে দিয়েছে বরগুনার জেলা প্রশাসন
ময়মনসিংহে হেরিং বোন বন্ড (এইচবিবি) করণ প্রকল্পের লটারি অনুষ্ঠিত
পাঠ্যবইয়ে শহীদ আবু সাঈদের মৃত্যুর ভুল তারিখ সংশোধন, জড়িতদের শোকজ
টাঙ্গাইল হাসপাতালে চোর সন্দেহে এক ব্যক্তিকে গণপিটুনি দিয়ে হত্যা
স্থানীয় খেলোয়াড়দের পারফরমেন্স এবারের বিপিএলকে জাঁকজমক করেছে: আশরাফুল
কুয়েট ১ম বর্ষ ভর্তি পরীক্ষার ফল প্রকাশ
বিরলে বিরল প্রজাতির লক্ষীপেঁচা উদ্ধার
সাগর-রুনি হত্যা: সাবেক সেনা কর্মকর্তা জিয়াউলকে ২ ঘণ্টা জিজ্ঞাসাবাদ
অবিশ্বাস্য নতুন চুক্তিতে প্রতি মিনিটে রোনালদোর আয় ৪৩ হাজার টাকা!
মতলবের মেঘনা -ধনাগোদা নদীতে বিশেষ কম্বিং অভিযানে জাগ উচ্ছেদ ও জাল জব্দ
ঘোষণাপত্র নিয়ে সব রাজনৈতিক দল ঐকমত্য: জাতীয় নাগরিক কমিটির আহ্বায়ক