মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে ভোটগ্রহণ শুরু
০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম
বাংলাদেশের স্থানীয় সময় অনুযায়ী গতকাল মঙ্গলবার বিকেল ৫টা থেকে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ করা শুরু হয়েছে। দেশটির ইতিহাসে এবারই সবচেয়ে প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ নির্বাচন হতে যাচ্ছে। এতে কে জয়ী হচ্ছেন, তা জানতে কয়েক দিন পর্যন্ত লেগে যেতে পারে বলে সতর্ক করে দিয়েছেন কর্মকর্তারা। নির্বাচনে জয় পেতে মোট ৫৩৮টি ইলেকটোরাল ভোটের মধ্যে অন্তত ২৭০টি নিশ্চিত করতে হবে।
ভোট দেয়ার যোগ্য নাগরিকের সংখ্যা প্রায় ২৪ কোটি, তারমধ্যে ১৬ কোটির মত ভোটার এবার ভোট দিতে নিবন্ধন করেছেন। আগাম ভোট দিয়ে ফেলেছেন ৮ কোটি ২০ লাখের বেশি ভোটার। যুক্তরাষ্ট্রের কংগ্রেসের নিম্নকক্ষ প্রতিনিধি পরিষদের ৪৩৫টি আসনের সবগুলো এবং উচ্চকক্ষ সেনেটের ১০০ আসনের ৩৪টিতেও একইসঙ্গে ভোট হচ্ছে। রেওয়াজ অনুযায়ী মঙ্গলবার প্রথম প্রহরেই ভোট দিয়েছেন যুক্তরাষ্ট্র-কানাডা সীমান্ত সংলগ্ন নিউ হ্যাম্পশায়ার রাজ্যের ছোট শহর ডিক্সভেল নচের ভোটাররা। আর এর মধ্য দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের ভোটগ্রহণ শুরু হয়। ডিক্সভেল নচের হেমলেট এলাকার সাবেক বালসামস হোটেলের হেল হাউসে স্থানীয় ভোটাররা তাদের রায় জানান। তাৎক্ষণিকভাবে ফলাফলও ঘোষণা করা হয়। ওই কেন্দ্রে পড়া ৬টি ভোট ভাগ হয়ে গেছে দুই শিবিরে। ডেমোক্রেট প্রার্থী কমলা হ্যারিস এবং রিপাবলিকান ডোনাল্ড ট্রাম্প দুজনই পেয়েছেন তিনটি করে ভোট।
বেশিরভাগ ভোট কেন্দ্রগুলো রাজ্য ও কাউন্টির ওপর নির্ভর করে মঙ্গলবার প্রথম ভোট গ্রহণ শেষ হচ্ছে ‘ইস্টার্ন টাইম’ সন্ধ্যা ছয়টায় এবং শেষ ভোট বুধবার দিবাগত রাত ১ টায় শেষ হবে। সাধারণ নিয়ম হলো, যতো পশ্চিমে যাওয়া হবে, সময় অঞ্চলের পার্থক্যের কারণে দেরীতে ভোট বন্ধ হবে। সময়ের ব্যবধানের কারণে এমনও হতে দেখা যায়, পূর্বাঞ্চলীয় অঙ্গরাজ্যে ভোট গণনা শুরু হয়ে গেলেও আলাস্কা ও হাওয়াইয়ের মতো অঙ্গরাজ্যের ভোটাররা তখনও ভোট দিচ্ছেন। ভোট শেষ হওয়ার পরে স্থানীয় সময় সন্ধ্যা ৭টা থেকে গণনা শুরু হবে। নির্বাচনের সম্ভাব্য বিজয়ী কে, তা জানতে হয়তো কয়েকদিন অপেক্ষায় থাকতে হবে।
এদিকে ডোনাল্ড ট্রাম্পের সামনে এখন নতুন ইতিহাস গড়ার হাতছানি। প্রায় ১৩২ বছর পর ট্রাম্পই প্রথম প্রাক্তন প্রেসিডেন্ট যিনি পরাজিত হওয়ার পর আবার প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে অংশ নিয়েছেন। তিনি যদি জেতেন তবে তিনিই হবেন দু’বারের প্রেসিডেন্ট। বিশ্লেষকেরা জানাচ্ছেন এবারের নির্বাচনে কমলা হ্যারিসকে হারাতে পারলে ইতিহাসের পাতায় গ্রোভার ক্লিভল্যান্ডের পাশে যুক্ত হবে ট্রাম্পের নাম। ইতিমধ্যেই প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে ট্রাম্প কি তৃতীয় দফায় জনগণের আস্থা অর্জন করে আবার প্রেসিডেন্ট হিসেবে নির্বাচিত হবেন? ১৩২ বছরের ইতিহাসের পুনরাবৃত্তি করতে পারবেন? উল্লেখ্য, এর আগে গ্রোভার ক্লিভল্যান্ডই একবার হেরে যাওয়ার পর আবারো নির্বাচন করে জয়ী হন। ১৩২ বছর আগে মার্কিন রাজনীতির ইতিহাসে শুধুমাত্র গ্রোভার ক্লিভল্যান্ডের ঝুলিতেই এমন অর্জন আছে। ক্লিভল্যান্ড ১৮৮৪ সালে আমেরিকার প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হন। এর আগে ১৮৮৮ সালে মার্কিন প্রেসিডেন্ট হিসেবে ডেমোক্রেটদের পক্ষ থেকে নির্বাচনে অংশ নেন তিনি। ক্লিভল্যান্ড সে নির্বাচনে রিপাবলিকান প্রার্থী বেঞ্জামিন হ্যারিসনের কাছে হেরে যান। পরবর্তীতে ১৮৯২ সালে আবার নির্বাচনে অংশ নেন। হ্যারিসনকে হারিয়ে আবারও হোয়াইট হাউজের ক্ষমতায় বসেন ক্লিভল্যান্ড। তিনি আমেরিকার ২২তম ও ২৪তম প্রেসিডেন্ট ছিলেন।
মঙ্গলবার নির্বাচন শুরুর আগে সোমবার ট্রাম্প এবং হ্যারিস দুই প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থীই প্রচার চালালেন গুরুত্বপূর্ণ সুইং স্টেট পেনসিলভানিয়ায়। এই একটি রাজ্য থেকে ১৯টি ইলেকটোরাল ভোট পেতে পারেন দুই প্রার্থীই। মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচিত হওয়ার জন্য প্রয়োজন ২৭০টি ইলেকটোরাল ভোট। ভোট পূর্ববর্তী বিশ্লেষণ এবং জনমত সমীক্ষা বলছে, হাড্ডাহাড্ডি লড়াই হচ্ছে দুই প্রার্থীর মধ্যে। জনমত প্রায় সমানভাবে বিভাজিত দুই প্রেসিডেন্ট প্রার্থীর মধ্যে। গোড়া থেকেই এবার নাটকীয় মোড় নিয়েছে মার্কিন প্রেসিডেন্ট নির্বাচন। একাধিক মামলায় জর্জরিত সাবেক প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প শেষ পর্যন্ত রিপাবলিকান প্রার্থী হতে পারবেন কি না, তা নিয়ে সংশয় ছিল। বর্তমান প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনকে নিয়েও বহু নাটক হয়েছে। প্রাথমিকভাবে তিনিই এবার রিপাবলিকান প্রার্থী হিসেবে প্রচার শুরু করেছিলেন। জনমত সমীক্ষায় ক্রমশ পিছিয়ে পড়ছিলেন তিনি। এই পরিস্থিতিতে আচমকাই ডেমোক্রেট নেতৃত্ব তার জায়গায় প্রার্থী হিসেবে সামনে নিয়ে আসেন কমলা হ্যারিসের নাম। কার্যত প্রচারের মধ্য পর্ব থেকে প্রেসিডেন্ট পদপ্রার্থী হিসেবে আসরে নামেন বর্তমান ভাইস প্রেসিডেন্ট। তিনি প্রচারে নামার পর ট্রাম্পের দিক থেকে হাওয়া অনেকটাই ঘুরে যায়।
হাড্ডাহাড্ডি নির্বাচনে সুইং স্টেটগুলির অপরিসীম। সুইং স্টেট অর্থাৎ, যে রাজ্যগুলির ভোট যে কোনো দিকে যেতে পারে। বর্তমান পরিস্থিতিতে সুইং স্টেটের ভোট যেদিকে ঘুরবে, প্রেসিডেন্টও তিনি নির্বাচিত হবেন। এবছর সুইং স্টেট হিসেবে দেখা হচ্ছে পেনসিলভানিয়া, অ্যারিজোনা, জর্জিয়া, মিশিগান, নেভাদা, নর্থ ক্যারোলাইনা এবং উইসকনসিন রাজ্যকে। এ পরিস্থিতিতে নির্বাচনের আগের দিন ট্রাম্প এবং হ্যারিস দুইজনই শেষ মুহূর্তের প্রচার চালিয়েছেন পেনসিলভেনিয়ায়। মিশিগান থেকে পেনসিলভানিয়ায় পৌঁছে হ্যারিস বলেছেন, জেতার ব্যাপারে তিনি আশাবাদী। পেনসিলভানিয়ায় একাধিক মিছিলে অংশ নিয়েছেন তিনি। সেখানে উপস্থিত ছিলেন গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিত্বরা। অন্যদিকে ট্রাম্পও এদিন পেনসিলভানিয়ায় প্রচার করেছেন। তার আগে তিনি ছিলেন নর্থ ক্যারোলাইনায়। সেখানে মেক্সিকো এবং শরণার্থী সমস্যা নিয়ে ফের বিতর্কিত মন্তব্য করেছেন তিনি। পাশাপাশি জানিয়েছেন, বিরোধী প্রার্থীকে তিনি ‹অযোগ্য’ বলে মনে করেন। আজ বুধবার থেকেই ক্রমশ স্পষ্ট হবে, শেষ পর্যন্ত কে হতে চলেছেন পরবর্তী মার্কিন প্রেসিডেন্ট। ট্রাম্প জয়ী হলে দ্বিতীয়বারের জন্য তিনি প্রেসিডেন্টের আসনে বসবেন। অন্যদিকে হ্যারিস জিতলে আমেরিকার ইতিহাসে তিনি হবেন প্রথম নারী প্রেসিডেন্ট। সূত্র : রয়টার্স, এপি।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
তিন অঙ্গরাজ্যের ফল প্রকাশ,এগিয়ে ট্রাম্প
ঘরের মাঠে ফের লজ্জার হার রিয়ালের
লিসবনে বিধ্বস্ত ম্যানচেস্টার সিটি
দিয়াসের হ্যাটট্রিকে লিভারপুলের জয়যাত্রা অব্যাহত
নিষেধাজ্ঞা কাটিয়ে আর্জেন্টিনা দলে ফিরলেন মার্টিনেজ
ইসরায়েলি প্রতিরক্ষামন্ত্রী গ্যালান্টকে বরখাস্ত করলেন নেতানিয়াহু
শমী কায়সার গ্রেপ্তার
শের এ বাংলা মেডিকেল কলেজের ৫৬তম প্রতিষ্ঠঅ বাষির্কী উপলক্ষে মিলনমেলা ২০ নভেম্বর
বাংলাদেশ-আফগানিস্তান সিরিজের স্পন্সর ওয়ালটন
সাভারে অভিযানের পর বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে ভেজাল শিশু খাদ্য তৈরী কারখানা
সম্মান বজায় রেখে কাজ করুক সেনাবাহিনী প্রত্যাশা সাধারন মানুষের
যশোরবাসীর দুর্ভোগ আর প্রতারণার নাম পদ্মাসেতু রেলপ্রকল্প!
আপনার প্রেমিকা খুব দামি গিফট চান! তাঁকে কী ভাবে সামলে নেবেন?
টেকনাফে ৫০হাজার ইয়াবাসহ মিয়ানমারের নাগরিক আটক।
ফ্যাসিবাদের বিচার এবং পাচারকৃত টাকা ফিরিয়ে আনতে হবে
কোনো পরাশক্তি নয়, জনগণের ঐক্যই বাংলাদেশের মূল শক্তি
হৃদয়ে তাঁর নাম লেখা হয়ে আছে
শিল্প প্রতিষ্ঠান চালু রাখার পদক্ষেপ নিতে হবে
প্রত্যেক বন্দীর জন্য মিলিয়ন ডলার দিতে প্রস্তুত নেতানিয়াহু
অন্তর্বাস পরে হাঁটা সেই ইরানি তরুণী মানসিকভাবে অসুস্থ