ফরাসি সরকারের পতনে উদ্বেগে ইউক্রেন

অনাস্থা ভোটে ফ্রান্স সরকারের পতন রাজনৈতিক সংকট ঘনীভূত

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক :

০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১৭ এএম | আপডেট: ০৬ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:১৭ এএম

দেশটির আইনপ্রণেতারা ব্যাপকভাবে অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন, এতে নিয়োগ পাওয়ার তিন মাসের মাথায় প্রধানমন্ত্রী ক্ষমতাচ্যুত হন। পার্লামেন্টে অনাস্থা ভোটে হেরে ক্ষমতা হারিয়েছেন ফ্রান্সের প্রধানমন্ত্রী মিশেল বার্নিয়ে, এতে তার সরকারেরও পতন হয়েছে। বুধবার দেশটির আইনপ্রণেতারা ব্যাপকভাবে অনাস্থা প্রস্তাবের পক্ষে ভোট দেন, এতে প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল মাখোঁ নিয়োগ দেওয়ার তিন মাসের মাথায় বার্নিয়ে ক্ষমতাচ্যুত হন। ফলে ইউরোপীয় ইউনিয়নের (ইইউ) দ্বিতীয় বৃহত্তম অর্থনৈতিক শক্তির রাজনৈতিক সংকট আরও ঘনীভূত হয়েছে। প্রধানমন্ত্রী বার্নিয়ের বিরুদ্ধে আনা অনাস্থা প্রস্তাবে কট্টর ডানপন্থি ও বামপন্থি আইপ্রণেতারাও সমর্থন দেন, এতে প্রস্তাবটির পক্ষে ৩৩১ ভোট পড়ে। এই ভোটাভুটির পর বার্নিয়েরকে এখন তার ও তার সরকারের পদত্যাগপত্র প্রেসিডেন্ট মাখোঁর কাছে পেশ করতে হবে। এর মাধ্যমে ১৯৫৮ সাল থেকে শুরু হওয়া ফ্রান্সের পঞ্চম রিপাবলিকে সবচেয়ে স্বল্পস্থায়ী হল তার তিন মাস মেয়াদের সংখ্যালঘু সরকার। ফ্রান্সের গণমাধ্যমগুলো জানিয়েছে, বৃহস্পতিবার সকালেই বার্নিয়ে তার ও তার সরকারের পদত্যাগপত্র জমা দেবেন বলে ধারণা করা হচ্ছে। বার্নিয়ে পার্লামেন্টে কোনো চূড়ান্ত ভোট ছাড়াই অজনপ্রিয় একটি বাজেটের অংশ বিশেষ সাংবিধানিক ক্ষমতা ব্যবহার করে পাস করিয়ে নেন। পার্লামেন্টের সংখ্যাগরিষ্ঠ অংশই এর বিরুদ্ধে ছিল। প্রস্তাবিত বাজেটে ৬ হাজার কোটি ইউরো কর বাড়িয়ে এবং ব্যয় কাটছাঁট করে ফ্রান্সের বাড়তে থাকা বাজেট ঘাটতি কমানো লক্ষ্য নিয়েছিল। নভেম্বরে পরিচালিত এক জরিপে দেখা গেছে, দেশটির ৬৭ শতাংশ মানুষ এই বাজেটের বিরোধিতা করেছে। এই বাজেট পাস করাতে পার্লামেন্টে ভোটাভুটি এড়িয়ে বিশেষ সাংবিধানিক ক্ষমতা ব্যবহার করেই বার্নিয়ে অনাস্থা ভোটের মুখে পড়ার ঝুঁকি নিয়েছিলেন। অতি বাম ও কট্টর ডানরা তাকে পার্লামেন্টের ভোটাভুটি এড়ানোর শাস্তিই দিল। অনাস্থা ভোটের আগে বার্নিয়ে আইনপ্রণেতাদের বলেন, পরবর্তীতে যে সরকারই আসুক বাজেট ঘাটতি ফিরে আসবে। ফ্রান্সের রাজনৈতিক সঙ্কটের কারণে সামরিক সহায়তা পেতে সমস্যায় পড়তে পারে ইউক্রেন। ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রোঁর প্রতিশ্রুতি সত্ত্বেও বুধবার দেশটিতে সরকার পতন ও বাজেট পাসে ব্যর্থতার কারণে কিয়েভের সহায়তা প্রাপ্তি নিয়ে আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। ব্রিটিশ বার্তাসংস্থা রয়টার্স এ খবর জানিয়েছে। বুধবারের অনাস্থা ভোটের আগে লে পারিসিয়েনের সাংবাদিককে প্রতিরক্ষামন্ত্রী সেবাস্তিয়েন লেকর্নু বলেন, ইউক্রেনে সহায়তার বড় অংশটি আসে ফরাসি সেনাবাহিনীর পুরানো সরঞ্জাম স্থানান্তরের মাধ্যমে। এরপর সেনাবাহিনীর জন্য নতুন সরঞ্জাম ক্রয় করা হয়। নতুন সরঞ্জাম ক্রয়ের পরিমাণ হ্রাস পেলে ইউক্রেনে সহায়তার ক্ষেত্রে তার প্রভাব পড়বে। নভেম্বরে প্রায় দুহাজার ইউক্রেনীয়কে প্রশিক্ষণ দিয়েছে ফ্রান্স। এছাড়া, কিয়েভকে সাঁজোয়া যান, সিজার হাউইটজার কামান, অ্যান্টি-ট্যাঙ্ক মিসাইল ইউনিট, সারফেস টি এয়ার মিসাইল ও যুদ্ধক্ষেত্রের রাডার সরবরাহ করা হয়েছে। জব্দকৃত রুশ তহবিল ব্যবহার করে সম্প্রতি ইউক্রেনে নতুন ক্ষেপণাস্ত্র পাঠিয়েছিল ফ্রান্স। এছাড়া, ২০২৫ সালের প্রথম প্রান্তিকে মিরাজ যুদ্ধবিমান সরবরাহের পরিকল্পনা ছিল তাদের। এর আগে অক্টোবরে, লেকর্নু বলেছিলেন, ২০২৪ সালের জন্য প্রতিশ্রুত তিনশ কোটি ইউরো সহায়তার লক্ষ্য পূরণে ব্যর্থ হবে প্যারিস। এই সহায়তার পরিমাণ দুশ কোটি ইউরোর উপরে থাকবে বলে আশা করা হচ্ছে। এএফপি।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

"তালেবান নারীদের মানুষ মনে করে না" : মালালা

"তালেবান নারীদের মানুষ মনে করে না" : মালালা

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৩ কিলোমিটার যানজট

ঢাকা-চট্টগ্রাম মহাসড়কে ১৩ কিলোমিটার যানজট

মোবাইল ইন্টারনেটে সুখবর ‘শর্ত শিথিল’, থাকছে ১ ঘণ্টার প্যাকেজও

মোবাইল ইন্টারনেটে সুখবর ‘শর্ত শিথিল’, থাকছে ১ ঘণ্টার প্যাকেজও

গভীর রাতে গরিব অসহায় শীতার্ত  মাঝে ইউএনও'র কম্বল বিতরন

গভীর রাতে গরিব অসহায় শীতার্ত মাঝে ইউএনও'র কম্বল বিতরন

বরিশালে ক্যান্সার চিকিৎসা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ে আছে

বরিশালে ক্যান্সার চিকিৎসা ব্যবস্থা মুখ থুবড়ে পড়ে আছে

সেবা বঞ্চিত হলে অভিযোগ করা যাবে ইসির বিরুদ্ধে

সেবা বঞ্চিত হলে অভিযোগ করা যাবে ইসির বিরুদ্ধে

এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরও ৩ হাজার শিক্ষক

এমপিওভুক্ত হচ্ছেন আরও ৩ হাজার শিক্ষক

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের নবনিযুক্ত সচিব ছাগলনাইয়ার সন্তান সামছু উদ্দিন

চট্টগ্রাম শিক্ষা বোর্ডের নবনিযুক্ত সচিব ছাগলনাইয়ার সন্তান সামছু উদ্দিন

বাংলাদেশে শনাক্ত হলো 'রিওভাইরাস’, রোগটি সম্পর্কে যা জানা যায়

বাংলাদেশে শনাক্ত হলো 'রিওভাইরাস’, রোগটি সম্পর্কে যা জানা যায়

আন্দোলনের মুখে পাঠ্যবই থেকে বাদ পড়লো ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত গ্রাফিতি

আন্দোলনের মুখে পাঠ্যবই থেকে বাদ পড়লো ‘আদিবাসী’ শব্দযুক্ত গ্রাফিতি

মাসের শেষে আবারো আসছে শৈত্যপ্রবাহ

মাসের শেষে আবারো আসছে শৈত্যপ্রবাহ

বর্ষসেরা ফটোগ্রাফার হিসাবে পুরস্কার পেলেন, আলোকচিত্রী ও সাংবাদিক মুগনিউর রহমান মনি

বর্ষসেরা ফটোগ্রাফার হিসাবে পুরস্কার পেলেন, আলোকচিত্রী ও সাংবাদিক মুগনিউর রহমান মনি

রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ

রাজশাহীর সঙ্গে সারাদেশের রেল যোগাযোগ বন্ধ

বেড়া কৈটোলা নির্মাণ বিভাগের অফিসিয়াল ও উন্নয়ন কাজে স্থবিরতা

বেড়া কৈটোলা নির্মাণ বিভাগের অফিসিয়াল ও উন্নয়ন কাজে স্থবিরতা

গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বাইডেন-নেতানিয়াহুর ফোনালাপ

গাজায় যুদ্ধবিরতির প্রয়োজনীয়তা নিয়ে বাইডেন-নেতানিয়াহুর ফোনালাপ

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয় কমপ্লিট শাটডাউন ঘোষণা

না ফেরার দেশে নির্মাতা রায়হান রাফির বাবা

না ফেরার দেশে নির্মাতা রায়হান রাফির বাবা

এলিফ্যান্ট রোডে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা, গ্রেপ্তার ২

এলিফ্যান্ট রোডে ব্যবসায়ীকে কুপিয়ে হত্যা চেষ্টা, গ্রেপ্তার ২

ছাগলনাইয়ায় খালে ভাসছিল নারীর অর্ধগলিত লাশ

ছাগলনাইয়ায় খালে ভাসছিল নারীর অর্ধগলিত লাশ

ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতায় ৫ দিনে গাজায় নিহত ৭০ শিশু

ইসরায়েলি বাহিনীর বর্বরতায় ৫ দিনে গাজায় নিহত ৭০ শিশু