গদিতে বসেই অনুপ্রবেশকারী খেদানো শুরু করবেন ট্রাম্প
১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ১৪ ডিসেম্বর ২০২৪, ১২:০৩ এএম
আগামী ২০ জানুয়ারি দ্বিতীয়বারের জন্য মার্কিন প্রেসিডেন্টের তখতে বসতে চলেছেন ডোনাল্ড ট্রাম্প। তিনি যে দায়িত্ব গ্রহণ করেই অনুপ্রবেশকারী এবং বেআইনিভাবে মার্কিন যুক্তরাষ্ট্রে বসবাসকারীদের দেশ থেকে তাড়াবেন, সেই বার্তা আগেই স্পষ্ট ভাষায় দিয়ে রেখেছেন। ট্রাম্প তার এই ‘কথা রাখতে’ যে কতটা ‘বদ্ধপরিকর’, তার ইঙ্গিত ইতিমধ্যেই মিলতে শুরু করেছে বলে দাবি করা হচ্ছে।
আন্তর্জাতিক বিভিন্ন সংবাদমাধ্যমে যেসমস্ত খবর সামনে আসছে, তা মার্কিন মুলুকে বসবাসকারী অনুপ্রবেশকারীদের জন্য যথেষ্ট উদ্বেগের। সূত্রের দাবি, আমেরিকার ইতিহাসে সবথেকে বড় সংখ্যায় অনুপ্রবেশকারীদের বিতাড়িত করার তোড়জোড় শুরু হয়ে গিয়েছে। তথ্য বলছে, ইউএস ইমিগ্রেশন অ্যান্ড কাস্টমস এনফোর্সমেন্ট (আইসিই) প্রায় ১৫ লক্ষ ব্যক্তিকে চিহ্নিত করে তাঁদের নামের তালিকা তৈরি করেছে। শোনা যাচ্ছে, ট্রাম্প ফের একবার গদিতে বসলেই ওই ১৫ লাখ ব্যক্তিকে পত্রপাঠ আমেরিকা থেকে বিদায় করা হবে।
আরো লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, এই ১৫ লাখের মধ্যে প্রায় ১৮ হাজার হলেন ভারতীয় বংশোদ্ভূত। যাঁরা কোনও বৈধ নথি ছাড়াই আমেরিকায় থাকছেন। মনে করা হচ্ছে, এই ১৮ হাজার ভারতীয় বংশোদ্ভূতকে শিগগিরই ভারতে ফেরত পাঠানো হবে।
গত নভেম্বর মাসে আইসিই যে তথ্য প্রকাশ করেছে, সেই অনুসারে - প্রায় ১৫ লাখ বেআইনি বাসিন্দার মধ্যে ভারতীয় বংশোদ্ভূতের নির্দিষ্ট সংখ্যা হল, ১৭ হাজার ৯৪০। যাঁদের আমেরিকা থেকে উৎখাত করার বিষয়ে সরকারি স্তরে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়ে গিয়েছে।
এখনও পর্যন্ত যে তথ্যাবলী সামনে এসেছে, সেই অনুসারে - আমেরিকায় এই মুহূর্তে প্রায় ৭,২৫,০০০ ভারতীয় বেআইনিভাবে বসবাস করছেন! সেই হিসাবে আমেরিকায় বসবাসরত অনুপ্রবেশকারীদের তালিকায় সংখ্য়ার নিরিখে ভারতীয় বংশোদ্ভূতদের স্থান তৃতীয়। এই তালিকায় থাকা প্রথম দু›টি দেশ হল - মেক্সিকো এবং এল স্যালভাডর। পিউ রিসার্চ সেন্টারের তথ্যে অন্তত এমনটাই দাবি করা হচ্ছে।
এর আগে গত অক্টোবর মাসে, সংশ্লিষ্ট তথ্যাবলী প্রকাশ্যে আসার আগেই, আমেরিকার প্রশাসন একটি চাটার্ড বিমানের মাধ্যমে ভারতীয় বংশোদ্ভূত অনুপ্রবেশকারীদের ভারতে ফেরত পাঠিয়েছিল।
আমেরিকার ডিপার্টমেন্ট অফ হোমল্যান্ড সিকিউরিটি-র পক্ষ থেকে দাবি করা হয়েছিল, ভারত সরকারের যৌথ সহযোগিতাতেই এই ব্যবস্থা করা হয়েছিল।
তথ্য বলছে, আমেরিকায় বসবাসকারী হাজার-হাজার ভারতীয় বংশোদ্ভূত সেখানে থেকে যাওয়ার সরকারি ছাড়পত্র পেতে বছরের পর বছর ধরে অপেক্ষা করছেন। কিন্তু, আইসিই এখনও পর্যন্ত তাঁদের মধ্য়ে অনেককেই সেই অনুমোদন দেয়নি। লক্ষ্যণীয় বিষয় হল, শুধুমাত্র গত তিনটি আর্থিক বছরেই বেআইনিভাবে সীমান্ত পেরিয়ে আমেরিকায় ঢুকতে গিয়ে ধরা পড়েছেন গড়ে ৯০ হাজার ভারতীয় বংশোদ্ভূত। নবনির্বাচিত মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প তার আসন্ন মেয়াদে অবৈধ অভিবাসীদের বিতাড়নে সেনাবাহিনী ব্যবহারের অঙ্গীকার করেছেন। টাইম ম্যাগাজিনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেন, দেশের আইনের সর্বোচ্চ সীমা পর্যন্ত তিনি সেনাবাহিনীকে কাজে লাগাবেন। বৃহস্পতিবার প্রকাশিত সাক্ষাৎকারটিতে ট্রাম্পকে ‘পারসন অব দ্য ইয়ার’ হিসেবে মনোনীত করা হয়। এ তথ্য জানিয়েছে ব্রিটিশ বার্তা সংস্থা রয়টার্স।
যুক্তরাষ্ট্রের আইনে অভ্যন্তরীণ আইন প্রয়োগে সেনাবাহিনীর ব্যবহার সীমিত। এ প্রসঙ্গে ট্রাম্প বলেন, অবৈধ অভিবাসনকে তিনি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে আক্রমণ বলে মনে করেন। তাই তিনি ন্যাশনাল গার্ড ব্যবহার করবেন এবং আইন অনুযায়ী সর্বোচ্চ ব্যবস্থা নেবেন। তবে অভিবাসীদের গ্রেপ্তারের দায়িত্বে থাকবেন অভিবাসন কর্মকর্তারা।
ট্রাম্পের এ অবস্থান নতুন নয়। তার মতে, অবৈধ অভিবাসীদের দীর্ঘমেয়াদে শিবিরে আটকে না রেখে দ্রুত বিতাড়ন করা উচিত। সংশ্লিষ্ট দেশগুলোর উচিত তাদের নাগরিকদের ফিরিয়ে নেওয়া। ট্রাম্প বলেন, যুক্তরাষ্ট্রে অবৈধ অভিবাসন বন্ধে তিনি দৃঢ়প্রতিজ্ঞ এবং জাতীয় নিরাপত্তার স্বার্থে প্রয়োজনীয় সব পদক্ষেপ নেবেন।
হোমল্যান্ড সিকিউরিটির প্রতিবেদন অনুযায়ী, যুক্তরাষ্ট্রে ১ কোটি ১০ লাখের বেশি অবৈধ অভিবাসী রয়েছে। সাম্প্রতিক বছরগুলোতে এ সংখ্যা বেড়েছে। ট্রাম্প তার চার বছরের মেয়াদে এই অভিবাসীদের বিতাড়নের পরিকল্পনা করছেন।
নির্বাচনী প্রচারণায় ট্রাম্প অভিবাসীদের অপরাধী হিসেবে আখ্যা দিয়ে বৈধ-অবৈধ সব অভিবাসীর বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা নেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। জাতীয় জরুরি অবস্থা ঘোষণা করে তিনি বিতাড়ন কর্মসূচির জন্য তহবিল ও ফেডারেল সরকারের সম্পদ ব্যবহারের পরিকল্পনা করছেন।
রিপাবলিকান ও ডেমোক্র্যাট উভয় দলই অতীতে সীমান্তে ন্যাশনাল গার্ড ব্যবহার করেছে। ট্রাম্পের সীমান্ত বিষয়ক উপদেষ্টা টম হোম্যান জানান, সেনাবাহিনী পরিবহন, অবকাঠামো, গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহে সহায়তা করবে। তবে গ্রেপ্তারের দায়িত্ব থাকবে অভিবাসন কর্মকর্তাদের ওপর।
অভিবাসন সমর্থকরা ট্রাম্পের পরিকল্পনার ব্যয় ও প্রভাব নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছে। আমেরিকান ইমিগ্রেশন কাউন্সিলের মতে, সব অবৈধ অভিবাসী বিতাড়নে এক দশকে প্রায় এক ট্রিলিয়ন ডলার খরচ হতে পারে। ট্রাম্পের আগের মেয়াদেও অনুরূপ পদক্ষেপে তিনি তেমন সফল হননি। প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন ২০২৩ সালে বেশি অভিবাসী বিতাড়ন করেছে। সূত্র : হিন্দুস্তান টাইমস, রয়টার্স।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
পরকীয়া প্রেমের ঘটনায় গৌরনদীতে উপ-সহকারী ২ কৃষি কর্মকর্তা এলাকাবাসীর হাতে আটক
‘প্রতিবন্ধীদের সংগঠন ও সম্পদ দখল করে পতিত সরকারের শিল্পমন্ত্রীর কন্যা’
আশিয়ান সিটির স্টলে বুকিং দিলেই মিলছে ল্যাপটপ
সচিবালয়ে অগ্নিকাণ্ডের ঘটনাটি পরিকল্পিত নাশকতা: ইসলামী আইনজীবী পরিষদ
গাজীপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় বিএনপি নেতাদের ভিড়
মাদ্রাসার ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামার সময় পড়ে গিয়ে শিশুর মৃত্যু
জকিগঞ্জে প্রাক্সিসের ৭ দিনব্যাপী ইংলিশ স্পিকিং চ্যালেঞ্জ কম্পিটিশনের পুরস্কার বিতরণী
লামায় ১৭টি ত্রিপুরা সম্প্রদায়ের বসতঘর পুড়ে ছাই হওয়ার ঘটনায় ৪জন গ্রেপ্তার
বিজয় দিবস টেনিস শুক্রবার শুরু
আশুলিয়ায় ভাড়াটিয়া তাড়িয়ে জোরপূর্বক জমি দখলের অভিযোগ
আজানের জবাব দেওয়া প্রসঙ্গে।
লক্ষ্মীপুরে চুরির অপবাদে নাকে খত দেওয়ার ঘটনায় মামলা
শরীয়তপুরে শ্রমিক দলের বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ
হেঁটে টেকনাফ গেলেন নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী রাসেদুল
বিদেশি অপারেটরের সঙ্গে সম্পাদিত গোপন চুক্তি বাতিল চেয়ে আইনি নোটিশ!
বাগেরহাটে জেলা একীভূত চক্ষু সেবা কর্মসূচির এডভোকেসি সভা অনুষ্ঠিত
সাতক্ষীরায় বিএনপির আহ্বায়ক কমিটি বাতিলের দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল
অল্পতেই শেষ পাকিস্তানের ইনিংস
খেপুপাড়া সরকারী মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের প্রথম পুনর্মিলনী ২৮ ডিসেম্বর
হামলা-নাশকতা প্রতিরোধে কাজ করছে সেনাবাহিনী