ট্রাম্পের শুল্কারোপ ১০০ বছরে বিশ্ববাণিজ্যে বৃহত্তম পরিবর্তন

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক :

০৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৩ এএম | আপডেট: ০৬ এপ্রিল ২০২৫, ১২:০৩ এএম

মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বিভিন্ন দেশের পণ্যের ওপর নতুন করে শুল্ক আরোপ করেছেন। এর প্রভাব বিশ্ব অর্থনীতিতে ব্যাপক হবে। এটি প্রতিফলিত হবে মার্কিন শুল্ক আয়ের গ্রাফের রেখায়, যা এক শতাব্দীতে দেখা যায়নি—এমনকি বিংশ শতাব্দীর ত্রিশের দশকের উচ্চমাত্রার রক্ষণশীল বাণিজ্যনীতির সময়ও না। এটি প্রকাশ পাবে রাতারাতি শেয়ারবাজারের পতনে, বিশেষ করে এশিয়ায়। তবে এই পরিবর্তনের প্রকৃত মূল্যায়ন করা যাবে দীর্ঘদিনের বৈশ্বিক বাণিজ্য প্রবাহে উল্লেখযোগ্য পরিবর্তনের মাধ্যমে। মূলত এটি একটি সর্বজনীন শুল্ক, যা শুক্রবার রাতে কার্যকর হতে যাওয়া সব আমদানির ওপর ১০ শতাংশ হারে প্রযোজ্য। এর পাশাপাশি ‘সবচেয়ে খারাপ অপরাধীদের’ জন্য তাদের বাণিজ্য উদ্বৃত্তের ভিত্তিতে পাল্টা শুল্ক ধার্য করা হবে। এ ছাড়া এশীয় দেশগুলোর ওপর শুল্কের প্রভাব হবে অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ। এটি হাজারো প্রতিষ্ঠান, কারখানা ও সম্ভবত দেশগুলোর পুরো ব্যাবসায়িক মডেল ভেঙে দেবে। বিশ্বের বৃহত্তম কম্পানিগুলোর তৈরি সরবরাহ শৃংখল কিছুক্ষণের মধ্যেই বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বে। এর অনিবার্য প্রভাব হবে উৎপাদন কার্যক্রম চীনের দিকে সরিয়ে নেওয়া। তাহলে কি এটি শুধুই একটি বড় কৌশলগত দর-কষাকষি? মার্কিন প্রশাসন তাদের পরিকল্পিত কর হ্রাসের জন্য এই শুল্ক রাজস্ব ব্যবহার করতে চাচ্ছে বলে মনে হচ্ছে। দ্রুত কোনো পরিবর্তনের সম্ভাবনা খুব কম। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা স্পষ্ট করে বলেছেন, ‘এটি কোনো দর-কষাকষি নয়, এটি একটি জাতীয় জরুরি অবস্থা।’ যুক্তরাষ্ট্রের তথাকথিত ‘পাল্টা শুল্ক’ কাঠামো মূলত যেকোনো দেশকে শাস্তিমূলক শুল্ক আরোপের মাধ্যমে দ-িত করছে, যদি সেই দেশ যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে বাণিজ্যে উদ্বৃত্ত রাখে, অর্থাৎ আমদানির তুলনায় বেশি পণ্য রপ্তানি করে। এমনকি কোনো উদ্বৃত্ত না থাকলেও ১০ শতাংশ সর্বজনীন শুল্ক আরোপ করা হবে। এই সিদ্ধান্ত দুটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় প্রকাশ করে। প্রথমত, মার্কিন নীতির লক্ষ্য হলো তাদের বাণিজ্য ঘাটতি শূন্যে নামিয়ে আনা। এটি বিশ্ববাণিজ্যের প্রবাহকে সম্পূর্ণ নতুন পথে প্রবাহিত করবে এবং এশিয়াকে বিশেষভাবে শাস্তিমূলক অবস্থানে ফেলবে। দ্বিতীয়ত, দ্বিপক্ষীয় আলোচনার মাধ্যমে কোনো পরিবর্তন সম্ভব হয়নি বা কার্যকর হয়নি। একটি সুস্থ বাণিজ্য ব্যবস্থায় ঘাটতি ও উদ্বৃত্ত সাধারণ বিষয়, যেখানে দেশগুলো নিজেদের উৎপাদন দক্ষতা অনুযায়ী বিশেষায়িত হয়ে থাকে। কিন্তু যুক্তরাষ্ট্র এখন এই বাণিজ্যিক ভারসাম্যের মৌলিক যুক্তি সম্পূর্ণ উল্টে দিয়েছে। কিন্তু কারখানা স্থানান্তর করতে অনেক বছর লাগবে। এশিয়ার ওপর আরোপিত ৩০-৪০ শতাংশ শুল্কের ফলে পোশাক, খেলনা ও ইলেকট্রনিকসের দাম খুব দ্রুত বৃদ্ধি পাবে। কিছু ইউরোপীয় ভোক্তা পোশাক ও ইলেকট্রনিকসের বিকল্প সরবরাহ ব্যবস্থার মাধ্যমে সুবিধা পেতে পারে। তবে যখন বিশ্বের বৃহত্তম অর্থনীতি নিজেকে বিচ্ছিন্ন করছে, তখন অন্য বৃহৎ অর্থনীতিগুলো পারস্পরিক বাণিজ্যিক সম্পর্ক আরো দৃঢ় করতে পারে। বিবিসি।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

জার্মানিতে গঠিত হচ্ছে নতুন জোট সরকার
প্যালেস্টাইনে গণহত্যায় ভারতের প্রতিক্রিয়া নিয়ে তীব্র সমালোচনা করলেন পিনাকী ভট্টাচার্য
পানামা খাল চীনের নিয়ন্ত্রণে থাকতে পারে না : যুক্তরাষ্ট্র
এবার বিচারকদের ক্ষমতা সীমিত করতে যাচ্ছেন ট্রাম্প
চীন ও ভারত থেকে পাঁচ বিমানে আইফোন স্থানান্তর, যেভাবে শুল্ক থেকে বাঁচল অ্যাপল
আরও
X

আরও পড়ুন

মেহেরপুরে হারানো ১০৭টি মোবাইল ও টাকা উদ্ধার করে মালিককে তুলে দিল জেলা পুলিশ

মেহেরপুরে হারানো ১০৭টি মোবাইল ও টাকা উদ্ধার করে মালিককে তুলে দিল জেলা পুলিশ

দৈনিক ইনকিলাবের সিংগাইর উপজেলা সংবাদদাতার মায়ের ইন্তেকাল

দৈনিক ইনকিলাবের সিংগাইর উপজেলা সংবাদদাতার মায়ের ইন্তেকাল

জার্মানিতে গঠিত হচ্ছে নতুন জোট সরকার

জার্মানিতে গঠিত হচ্ছে নতুন জোট সরকার

হাজীগঞ্জ পৌরসভার বেশীরভাগ খুঁটিতে জ্বলছে না সড়কবাতি, বেড়েছে মাদক সেবীদের আড্ডা

হাজীগঞ্জ পৌরসভার বেশীরভাগ খুঁটিতে জ্বলছে না সড়কবাতি, বেড়েছে মাদক সেবীদের আড্ডা

২০২৮ অলিম্পিকস ক্রিকেটে হবে ৬ দলের লড়াই

২০২৮ অলিম্পিকস ক্রিকেটে হবে ৬ দলের লড়াই

ফরিদপুরের শ্রেষ্ঠ ওসি আশরাফ হোসেন

ফরিদপুরের শ্রেষ্ঠ ওসি আশরাফ হোসেন

চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবি ও ভারতের  ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে সীমান্ত সংশ্লিষ্ট দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ

চুয়াডাঙ্গা ৬ বিজিবি ও ভারতের  ৫৬ বিএসএফ ব্যাটালিয়ন কমান্ডার পর্যায়ে সীমান্ত সংশ্লিষ্ট দ্বিপাক্ষিক বিষয়ে সৌজন্য সাক্ষাৎ

সিলেটে  লালগালিচা দেখে যেভাবে  বিরক্তি প্রকাশ করলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

সিলেটে  লালগালিচা দেখে যেভাবে  বিরক্তি প্রকাশ করলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

রাজবাড়ীতে ৩ ফসলী জমি থেকে মাটি বিক্রির অভিযোগ

রাজবাড়ীতে ৩ ফসলী জমি থেকে মাটি বিক্রির অভিযোগ

বিমানবাহিনী ঘাঁটির নাম পরিবর্তন

বিমানবাহিনী ঘাঁটির নাম পরিবর্তন

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব হলেন মফিদুর রহমান

সংস্কৃতি বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সচিব হলেন মফিদুর রহমান

লৌহজংয়ে ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন

লৌহজংয়ে ফিলিস্তিনে গণহত্যার প্রতিবাদে মানববন্ধন

ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে রাজধানীতে বিএনপির র‌্যালি

ইসরায়েলি গণহত্যার প্রতিবাদে রাজধানীতে বিএনপির র‌্যালি

আট দফা দবিতে রাঙ্গামাটি কৃষি ইনস্টিউটের একাডেমিক ভবনে তালা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা

আট দফা দবিতে রাঙ্গামাটি কৃষি ইনস্টিউটের একাডেমিক ভবনে তালা দিয়েছে শিক্ষার্থীরা

উখিয়ায় প্রবেশপত্র না পাওয়ায় ১৩ এসএসসি পরিক্ষার্থী, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারায় বিদ্যালয়ে হামলা, ভাংচুর ও সড়ক অবরোধ

উখিয়ায় প্রবেশপত্র না পাওয়ায় ১৩ এসএসসি পরিক্ষার্থী, পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে না পারায় বিদ্যালয়ে হামলা, ভাংচুর ও সড়ক অবরোধ

ভুরুঙ্গামারীতে ভুয়া কাজির দৌরাত্ম্য, বাড়ছে বাল্যবিবাহ

ভুরুঙ্গামারীতে ভুয়া কাজির দৌরাত্ম্য, বাড়ছে বাল্যবিবাহ

সুন্দরবনের ডাকাতের কবল থেকে উদ্ধার ৬ নারীসহ ৩৩ জেলে

সুন্দরবনের ডাকাতের কবল থেকে উদ্ধার ৬ নারীসহ ৩৩ জেলে

মৃত বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিলেন ছেলে

মৃত বাবার লাশ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা দিলেন ছেলে

শার্শায় ছাত্রীদের শোবার ঘরে সিসি ক্যামেরা, মাদ্রাসা শিক্ষকের কক্ষে মনিটর

শার্শায় ছাত্রীদের শোবার ঘরে সিসি ক্যামেরা, মাদ্রাসা শিক্ষকের কক্ষে মনিটর

সেই জুলহাসকে ফের আর্থিক সহায়তা তারেক রহমানের

সেই জুলহাসকে ফের আর্থিক সহায়তা তারেক রহমানের