ভারত কেন তিস্তা নদীতে আরও দুটি খাল খনন করছে?
২২ মার্চ ২০২৩, ০৩:০৫ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১০:৪৬ পিএম
চলতি মাসের শুরুর দিকে ভারতের পশ্চিমবঙ্গ সরকারের তিস্তা প্রকল্পের অধীনে আরো দুটি সেচ খাল খননের কথা জানা যায়। জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসনের পক্ষ থেকে এক হাজার একর জমির মালিকানা পশ্চিমবঙ্গের সেচ বিভাগকে হস্তান্তর করা হয় বলে স্থানীয় গণমাধ্যমে জানানো হয়।
প্রকাশিত খবরে বলা হয়, এই দুটি খাল খনন করা হলে ভারতের জলপাইগুড়ি ও কুচবিহার জেলার কৃষকরা উপকৃত হবে। কিন্তু তা বাংলাদেশের জন্য মাথাব্যথার কারণ হতে পারে। কারণ, এর ফলে তিস্তার বাংলাদেশ অংশে পানির প্রবাহ আরো কমে যাবে। পশ্চিমবঙ্গের মূখ্যমন্ত্রী মমতা ব্যানার্জির আপত্তির কারণে এক দশকেরও বেশি সময় ধরে ভারতের সাথে বাংলাদেশের তিস্তা পানি বন্টন চুক্তি আটকে আছে। বরাবরই পানি না পাওয়ার বিষয়ে অভিযোগ তোলা হয় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে।
পশ্চিমবঙ্গের নর্থবেঙ্গল ইউনিভার্সিটির ভূগোল বিভাগের সাবেক প্রধান অধ্যাপক সুবীর সরকার বলেন, তিস্তা প্রকল্পের অধীনে যে খাল খনন করার কথা বলা হচ্ছে সেটি আসলে নতুন কিছু নয়। বরং তিস্তা বাঁধ নির্মাণ মূল প্রকল্পেরই অংশ। তার মতে, প্রায় ২০ বছর আগে বাঁধ ও মূল খাল নির্মাণ শেষ হলেও এর পানি বন্টন করার খালগুলো এখনো তৈরি হয়নি। এই খালগুলো তৈরি না হওয়ায় পানি সেচের জন্য ব্যবহার করা যাচ্ছে না এবং অপচয় হচ্ছে। যে জায়গা দিয়ে এই খালগুলো নির্মাণ করা হবে এতোদিন সেগুলো অধিগ্রহণ করা যায়নি বলে খালের নির্মানকাজ আটকে ছিল। চলতি মাসের গোড়ার দিকে ভূমির মালিকানা পাওয়ার কারণে এখন এটি খননের কাজ শুরু হচ্ছে।
ভারতীয় সংবাদ মাধ্যম দ্য টেলিগ্রাফ পশ্চিমবঙ্গের সেচ বিষয়ক মন্ত্রী ভৌমিকের উদ্ধৃতি দিয়ে জানায়, “২০০৯ সালে কেন্দ্রীয় সরকার একে জাতীয় প্রকল্প ঘোষণা করলেও কোন তহবিল দেয়নি। এখন যদি আমরা তহবিল নাও পাই, আমরা কাজ(খাল খনন) শেষ করার চেষ্টা করবো।” তিস্তা বিষয়ক বিশেষজ্ঞ সুবীর সরকার বলেন, তিস্তা নদীর বাম তীরে এই খাল খননের কথা বলা হচ্ছে। ওই তীরে এখনো কোন স্থাপনা তৈরি করা হয়নি এবং সেটাই এখন করা হচ্ছে।
সত্তন দশকের শেষের দিকে এই প্রকল্প পশ্চিমবঙ্গ সরকার হাতে নেয়ার পর থেকে কারিগরি ও আর্থিক সক্ষমতার অভাব এবং নির্মাণ পর্যায়ে অনেক ত্রুটির কারণে এখন পর্যন্ত এই প্রকল্পের ৫০ শতাংশ কাজ সম্পন্ন হয়েছে বলে জানান তিনি। এই প্রকল্পটি শেষ হতে আরো ১০-১৫ বছর লাগবে উল্লেখ করে মি. সরকার বলেন, পুরো প্রকল্পের নির্মাণ কাজ শেষ হওয়ার পর এই বাঁধটি তার মূল ধারণ ক্ষমতার এক চতুর্থাংশের বেশি পরিমাণ পানি ধারণ করতে পারবে না। ফলে এই প্রকল্পটি কখনোই সফল হবে না বলে মনে করেন তিনি।
তিস্তা প্রকল্পটি পশ্চিমবঙ্গের কেন্দ্রীয় সরকার হাতে নিয়েছিল ১৯৭৫ সালে। তখন নয় লাখ ২২ হাজার কৃষক এই প্রকল্পের মাধ্যমে সেচ সুবিধার আওতায় আসবে বলে জানানো হয়েছিল। তিস্তার পানি খালের মাধ্যমে নদীটির দুই তীরেই সেচের জন্য সরবরাহ করার পরিকল্পনা ছিল এই প্রকল্পে। এই খালগুলোর সাথে ওই অঞ্চলে প্রবাহিত অন্য নদীগুলোর সংযোগ থাকারও কথা ছিল।
ভারতের সংবাদ মাধ্যমগুলো বলছে যে, তিস্তা প্রকল্পের আওতায় আরো দুটি খাল খনন করতে এক হাজার একর জমির মালিকানা নিয়েছে পশ্চিমবঙ্গের সেচ বিভাগ। গত ৩ মার্চ জমির এই মালিকানা সেচ বিভাগের কাছে হস্তান্তর করে জলপাইগুড়ি জেলা প্রশাসন। এসব প্রতিবেদনে বলা হচ্ছে যে, এই জমির মালিকানা পাওয়ার ফলে তিস্তার বাম তীরে দুটি খাল খনন করা হবে। এই খালের সাথে যুক্ত থাকবে জলপাইগুড়ি দিয়ে প্রবাহিত আরেকটি নদী জলঢাকা।
দুটি খালের মধ্যে একটি খালের দৈর্ঘ্য হবে ৩২ কিলোমিটার যেটি তিস্তা ও জলঢাকা- এই দুই নদীর পানিই বহন করবে যেটি কুচবিহার জেলার চেংড়াবান্ধা পর্যন্ত যাবে। আর আরেকটি খালের দৈর্ঘ্য হবে ১৫ কিলোমিটার। দুটি খালই জলপাইগুড়ির গজলডোবায় খনন করা হবে। এছাড়া জলপাইগুড়ি জেলার ধুপগুড়িতে থাকা আরেকটি খাল সংস্কার করা হবে বলেও প্রতিবেদনগুলোতে জানানো হয়। খাল দুটি খনন করা হয়ে গেলে পশ্চিমবঙ্গের প্রায় এক লাখ কৃষক সেচের সুবিধার আওতায় আসবে। তবে বাংলাদেশে অংশে এর ফলে তিস্তার পানি প্রবাহ আরো কমে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। সূত্র: বিবিসি।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
এভারটনের মাঠে হেরে প্রায় শেষ লিভারপুলের শিরোপা স্বপ্ন
ফের্নান্দেসের জোড়া গোলে জয়ের ধারায় ফিরল ইউনাইটেড
এমবাপে-দেম্বেলের জোড়া গোলে পিএসজির অনায়াস জয়
হিন্দুদের মুসলমানদের কবর জিয়ারত করা প্রসঙ্গে।
সংস্কারের পর ফিরছে বিটলস নিয়ে নির্মিত ‘লেট ইট বি’
বিয়ে না করেই সংসার করছেন মিমি চক্রবর্তী!
দর্শক টানতে টিকেটের সাথে বিরিয়ানি ফ্রি
শিল্পী সমিতির সদস্যদের ফ্রি চিকিৎসার ঘোষণা
পিকআপে রাখা বিশেষ কায়দায় ৪০ কেজি গাঁজা উদ্ধার
ইউটিউব ট্রেন্ডিংয়ে গীতিকবি আসিফ ইকবালের সর্বাধিক গান
সাংবাদিকদের ওপর হামলার ঘটনায় শিল্পী সমিতির দুঃখ প্রকাশ
রবি’র ২৮তম বার্ষিক সাধারণ সভা অনুষ্ঠিত
আত্মীয়ের জানাজা শেষে বাড়ি ফেরা হলো না মা-ছেলের, সড়কে গেল প্রাণ
শিক্ষাখাতে সর্বোচ্চ বরাদ্দ চাই
আত্রাই নদীর অস্তিত্ব সুরক্ষার ব্যবস্থা নিতে হবে
সুপারশপের বাড়তি ভ্যাট প্রত্যাহার করতে হবে
সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি রক্ষা করতে হবে
টেন মিনিট স্কুলের কোর্স ফি-তে বিকাশ পেমেন্টে ২০০ টাকা পর্যন্ত ইনস্ট্যান্ট ক্যাশব্যাক
সোনালী লাইফে প্রশাসক নিয়োগ হাইকোর্টে স্থগিত
সাসটেইনেবিলিটি এক্সিলেন্সের জন্য ‘ইকোভাডিস সিলভার মেডেল’ পেল সিগওয়ার্ক