চলতি রমজানেই বৈঠকে বসছেন সউদী-ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

২৭ মার্চ ২০২৩, ০৩:২৫ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১০:০২ পিএম

 

দীর্ঘদিন দূরে থাকার পর সম্প্রতি কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়ে সম্মত হয়েছে মধ্যপ্রাচ্যের দুই দেশ ইরান ও সউদী আরব। এর ফলে প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশের মধ্যে আবার বাণিজ্য এবং নিরাপত্তা সহযোগিতাও শুরু হবে।
এদিকে আনুষ্ঠানিকভাবে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার আগেই বৈঠকে বসছেন সউদী আরব ও ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী। চলমান রমজান মাসেই তাদের মধ্যে এই বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে।
সউদী আরবের রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থা সউদী প্রেস এজেন্সির (এসপিএ) বরাত দিয়ে সোমবার (২৭ মার্চ) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে বার্তাসংস্থা রয়টার্স।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সউদী আরবের পররাষ্ট্রমন্ত্রী প্রিন্স ফয়সাল বিন ফারহান আল সৌদ এবং ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী হোসেইন আমির-আব্দুল্লাহিয়ান চলমান পবিত্র রমজান মাসে দেখা করতে সম্মত হয়েছেন বলে সউদী বার্তাসংস্থা এসপিএ সোমবার জানিয়েছে।
উভয় দেশের কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনরুদ্ধারের চুক্তির অধীনে এই বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হবে। এছাড়া মধ্যপ্রাচ্যের প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী কয়েক দিনের মধ্যে দ্বিতীয়বার ফোনে কথা বলেছেন বলেও এসপিএ জানিয়েছে।
সউদীর এই রাষ্ট্রীয় বার্তাসংস্থাটি জানিয়েছে, ‘ফোনকলের সময় চীনে স্বাক্ষরিত ত্রিপক্ষীয় চুক্তির আলোকে বেশ কয়েকটি সাধারণ বিষয় নিয়ে আলোচনা করা হয়। এছাড়া দুই মন্ত্রী চলমান রমজান মাসে তাদের মধ্যে একটি দ্বিপাক্ষিক বৈঠক করতেও সম্মত হয়েছেন।’
রয়টার্স বলছে, আগামী ২০ এপ্রিল পবিত্র রমজান মাস শেষ হতে পারে। অর্থাৎ এর আগেই ওই বৈঠক অনুষ্ঠিত হতে পারে।
সংবাদমাধ্যম বলছে, মধ্যপ্রাচ্যের সাম্প্রতিক ইতিহাস সউদী আরব ও ইরানের মধ্যে বৈরিতার কথাই বলে। তবে এই মাসের শুরুর দিকে চীনের মধ্যস্ততায় ইরান এবং সউদী আরব সাত বছর পর আবার কূটনৈতিক সম্পর্ক স্থাপনে রাজি হয়। এর ফলে প্রতিদ্বন্দ্বী এই দুই দেশের মধ্যে আবার বাণিজ্য এবং নিরাপত্তা সহযোগিতাও শুরু হবে।
সেই সাথে দুই মাসের মধ্যে দু’দেশ পরস্পরের রাজধানীতে তাদের দূতাবাসও খুলবে। যা পশ্চিম এশিয়ার এই অঞ্চলের ভূ-রাজনীতিকে নতুন আকার দিতে পারে।
বিশ্লেষকরা বলছেন, মধ্যপ্রাচ্যে উত্তেজনা প্রশমন থেকে উভয় পক্ষই লাভবান হওয়ার সম্ভাবনা দেখছে এবং এই কারণেই মূলত তারা এই অবস্থানে এসেছে। কারণ ইরান এই অঞ্চলে তাদেরকে বিচ্ছিন্ন করার জন্য মার্কিন প্রচেষ্টাকে হ্রাস করতে চায় এবং সউদী আরবও নিজেদের অর্থনৈতিক উন্নয়নে মনোযোগ দেওয়ার চেষ্টা করছে।
২০১৬ সাল থেকে থেকে মধ্যপ্রাচ্যের এই দুই বড় দেশের মধ্যে কোনও কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। সেবছর সউদী আরব এক শিয়া নেতার মৃত্যুদণ্ড কার্যকর করার পর তেহরানের সউদী দূতাবাসে হামলা হয়েছিল। আর তারপর দুই দেশের সম্পর্কে নাটকীয় অবনতি ঘটে।
মূলত ইরানি বিক্ষোভকারীরা তেহরানে সউদী দূতাবাসে হামলার পর ২০১৬ সালের জানুয়ারিতে সউদী আরব ইরানের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে। তারপর থেকে সুন্নি এবং শিয়া-নেতৃত্বাধীন এই প্রতিবেশীদের মধ্যে উত্তেজনা প্রায়ই জারি ছিল। এই দুই দেশ একে অপরকে নিজের আঞ্চলিক আধিপত্যের জন্য হুমকি হিসাবে বিবেচনা করে থাকে।
এছাড়া সিরিয়া এবং ইয়েমেনের গৃহযুদ্ধসহ বেশ কয়েকটি আঞ্চলিক সংঘাতে ইরান ও সউদী একে অপরের বিরোধী পক্ষ হয়ে কার্যত পরোক্ষ লড়াইয়ে নিয়োজিত রয়েছে।
সৌদি আরব ২০১৯ সালে তার তেল স্থাপনায় ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলার পাশাপাশি উপসাগরীয় এলাকায় ট্যাংকাগুলোতে হামলার জন্য ইরানকে দায়ী করে এসেছে। যদিও বরাবরই ইরান এসব অভিযোগ অস্বীকার করে এসেছে।
এছাড়া ইয়েমেনের ইরান সমর্থিত হুথি বিদ্রোহীরা সউদী আরবে আন্তঃসীমান্ত ক্ষেপণাস্ত্র এবং ড্রোন হামলা চালিয়েছে। তবে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনঃপ্রতিষ্ঠার বিষয়ে উভয় দেশ এগিয়ে আসায় এখন সেই উত্তেজনা কমতে পারে বলে মনে করা হচ্ছে।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

নগরীতে নারীবান্ধব গণপরিবহণ চালু করা হবে- মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, শায়খে চরমোনাই

নগরীতে নারীবান্ধব গণপরিবহণ চালু করা হবে- মুফতী সৈয়দ মুহাম্মাদ ফয়জুল করীম, শায়খে চরমোনাই

৬ বিভাগে তরুণ সমাবেশ করবে বিএনপির তিন সংগঠন

৬ বিভাগে তরুণ সমাবেশ করবে বিএনপির তিন সংগঠন

আচরণ বিধি ভঙ্গের প্রতিযোগীতায় বরিশাল সিটি নির্বাচন

আচরণ বিধি ভঙ্গের প্রতিযোগীতায় বরিশাল সিটি নির্বাচন

প্রস্তাবিত বাজেটে সাধারণ মানুষের কোনো কল্যাণ হবে না : পীরসাহেব চরমোনাই

প্রস্তাবিত বাজেটে সাধারণ মানুষের কোনো কল্যাণ হবে না : পীরসাহেব চরমোনাই

৬ বছরের অপেক্ষা, অবশেষে চাকরি ফিরে পেলেন ইবি শিক্ষক

৬ বছরের অপেক্ষা, অবশেষে চাকরি ফিরে পেলেন ইবি শিক্ষক

চীনে গণহত্যার ৩৪ বছর! তিয়েনআনমেন স্কোয়ারে কঠোর নিরাপত্তা

চীনে গণহত্যার ৩৪ বছর! তিয়েনআনমেন স্কোয়ারে কঠোর নিরাপত্তা

আওয়ামী লীগের সামনে এখন দুটি পথ খোলা : মির্জা আব্বাস

আওয়ামী লীগের সামনে এখন দুটি পথ খোলা : মির্জা আব্বাস

নেই নিজস্ব আবাস, প্রায় ৬ কোটি টাকার ভাড়াবাড়িতে থাকেন আমাজনের মালিক!

নেই নিজস্ব আবাস, প্রায় ৬ কোটি টাকার ভাড়াবাড়িতে থাকেন আমাজনের মালিক!

সাধারণ মানুষ যাতে খুশি হয় সেভাবেই বাজেট তৈরি করা হয়েছে : কৃষিমন্ত্রী

সাধারণ মানুষ যাতে খুশি হয় সেভাবেই বাজেট তৈরি করা হয়েছে : কৃষিমন্ত্রী

‘মুসলিম লিগ ধর্মনিরপেক্ষ দল’, আমেরিকায় দাবি রাহুলের

‘মুসলিম লিগ ধর্মনিরপেক্ষ দল’, আমেরিকায় দাবি রাহুলের

শর্টগান ও দুই রাউন্ড গুলিসহ রূপসায় সন্ত্রাসী আটক

শর্টগান ও দুই রাউন্ড গুলিসহ রূপসায় সন্ত্রাসী আটক

মুদ্রাস্ফীতিতে শ্রীলঙ্কাকেও পিছনে ফেলল পাকিস্তান! বাড়ছে দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কা

মুদ্রাস্ফীতিতে শ্রীলঙ্কাকেও পিছনে ফেলল পাকিস্তান! বাড়ছে দেউলিয়া হওয়ার আশঙ্কা

মৃত্যু ছুঁয়েছে প্রায় ১০০! তবু দুঃসময় পেরিয়ে স্বাভাবিক হওয়ার পথে মণিপুর

মৃত্যু ছুঁয়েছে প্রায় ১০০! তবু দুঃসময় পেরিয়ে স্বাভাবিক হওয়ার পথে মণিপুর

আরও ৮৯ জনের করোনা শনাক্ত, ‍মৃত্যু ২

আরও ৮৯ জনের করোনা শনাক্ত, ‍মৃত্যু ২

একজনও কালো টাকা সাদা করেনি : অর্থমন্ত্রী

একজনও কালো টাকা সাদা করেনি : অর্থমন্ত্রী

সেনেগালে বিরোধী নেতার জেল, বিক্ষোভে নিহত ৯

সেনেগালে বিরোধী নেতার জেল, বিক্ষোভে নিহত ৯

খুবিতে ‘এ’ ইউনিটে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কাল, পরীক্ষার্থী ৮৮০৩

খুবিতে ‘এ’ ইউনিটে গুচ্ছ ভর্তি পরীক্ষা কাল, পরীক্ষার্থী ৮৮০৩

স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে স্বামীর বাড়ীতে কিশোরীর অনশন

স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে স্বামীর বাড়ীতে কিশোরীর অনশন

রাজশাহীর পুঠিয়ায় সড়ক দূর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহত

রাজশাহীর পুঠিয়ায় সড়ক দূর্ঘটনায় মোটরসাইকেল চালক নিহত

স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে ছাত্রলীগ নেতার বাড়িতে এক সন্তানের জননীর অনশন

স্ত্রীর স্বীকৃতি পেতে ছাত্রলীগ নেতার বাড়িতে এক সন্তানের জননীর অনশন