ডোনাল্ড ট্রাম্পের মামলার শুনানিতে যা কিছু হয়েছে
০৫ এপ্রিল ২০২৩, ০১:০২ পিএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৫০ পিএম
যুক্তরাষ্ট্রের স্থানীয় সময় দুপুর আড়াইটার দিকে ম্যানহাটনে আদালত কক্ষে একজন অভিযুক্ত হিসাবে প্রবেশ করেন সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প। তার চারপাশে ঘিরে ছিল সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যরা। সেই সময় তার পরনে ছিল চিরপরিচিত নীল স্যুট আর লাল টাই।
আদালত কক্ষের সামনের দিকে তার জন্য নির্ধারিত জায়গার দিকে যখন হেঁটে যাচ্ছিলেন, যেখানে তার আইনজীবীরা অপেক্ষা করছিলেন, তখন তার চেহারা ছিল বিষণ্ন আর পদক্ষেপ ছিল ভারী। এর আগে তিনি ম্যানহাটনের আদালতে হাজির হলে প্রক্রিয়ামাফিক আঙ্গুলের ছাপ ও ছবি নেয়া হয়। যার মাধ্যমে তাকে আনুষ্ঠানিক গ্রেপ্তার দেখানো হয়।
সংবাদ মাধ্যমের সঙ্গে কখনোই কোন কথা বলেননি ডোনাল্ড ট্রাম্প। এমনকি অভিব্যক্তি বা শারীরিক ভাষার মাধ্যমেও কিছু প্রকাশ করেননি। তিনি হচ্ছেন প্রথম কোন মার্কিন প্রেসিডেন্ট যার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিকভাবে কোন ফৌজদারি অভিযোগ আনা হলো। বিচারক মার্চিন জানিয়েছেন, সামনের বছর জানুয়ারি মাস নাগাদ ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিচার কার্যক্রম শুরু হতে পারে।
এর অর্থ হচ্ছে, সামনের বছর যখন প্রেসিডেন্ট নির্বাচনের জন্য লড়বেন ডোনাল্ড ট্রাম্প, তখন তাকে আবার আদালতেও হাজিরা দিতে হবে। তার বিরুদ্ধে ৩৪টি অপরাধমূলক অভিযোগ আনা হয়েছে। এসব অভিযোগের মধ্যে রয়েছে, ২০১৬ সালের নির্বাচনের সময় ক্ষতি হতে পারে, এমন তথ্য লুকাতে তিনি নকল কাগজপত্র তৈরি করেছেন। তার বিরুদ্ধে অভিযোগ তিনি ২০১৬ সালের নির্বাচনের আগে এক পর্ন তারকার মুখ বন্ধ করার জন্য তাকে অর্থ ঘুষ দিয়েছিলেন। পর্ন ছবির ওই তারকা স্টর্মি ড্যানিয়েলস্ জানিয়েছিলেন মি. ট্রাম্পের সঙ্গে তার যৌন সম্পর্ক ছিল। ডোনাল্ড ট্রাম্প অবশ্য এ অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।
আদালত থেকে ফ্লোরিডায় ফিরে যাওয়ার পর মার-এ লাগোর বাড়িতে ফিরে গিয়ে অভিযোগ করেন, এসব মামলার মানে হচ্ছে পুরো জাতিকে অপমান করা। তবে আদালতে ডোনাল্ড ট্রাম্প ছিলেন অনেকটা শান্ত। বিবিসির সংবাদদাতা কাইলা ইপস্টেইন বলছেন, প্রাক্তন রাষ্ট্রপতির আসনের সরাসরি পাঁচ সারি পেছনে একদল সাংবাদিকের সাথে আমি বসেছিলাম। পুলিশের একটি দল সেখানে নজরদারি করছিল। আদালতে আমাদের ফোন বা ল্যাপটপ ব্যবহার করতেও নিষেধ করা হয়েছিল।
যখন বিচারক জুয়ান মার্চান আদালতে আসেন, তখন ট্রাম্পসহ সবাই উঠে দাঁড়ান। বহুতল এই আদালত ভবনের ১৫ তলা নীচে গণমাধ্যম এবং রাজনৈতিক হল্লা চললেও বিচারক মার্চান ঠাণ্ডা একরকম সুরেই আদালত পরিচালনা করছিলেন। এমনকি তিনি আওয়াজও বৃদ্ধি করেননি। শুনানির সময় বেশিরভাগ সময় জুড়ে আইনজীবীদের সময়সীমা এবং আদালতের পরবর্তী তারিখ নির্ধারণের প্রক্রিয়া নিয়েই আলোচনা হয়েছে। কিন্তু এই মামলার তাৎপর্য আদালত কক্ষে উপস্থিত কারও বুঝতে ভুল হয়নি।
যখন ডোনাল্ড ট্রাম্পের বিরুদ্ধে আনা ৩৪ ধরনের অভিযোগ পড়ে শোনান বিচারক, ট্রাম্প বলেন ‘নট গিল্টি’। এরপর একপর্যায়ে বিচারক মার্চান সরাসরি ডোনাল্ড ট্রাম্পকে উদ্দেশ্য করে বলেন, আদালতের সকল প্রক্রিয়ায় উপস্থিত থাকার অধিকার আছে, তিনি সেটা বুঝতে পারছেন কিনা? ডোনাল্ড ট্রাম্প বলেন, ‘হ্যা’।
এরপর বিচারক বলেন, অন্য যেকোন অভিযুক্তের মতো তিনি যদি আদালতে অবাধ্য বা বিঘ্ন সৃষ্টিকারী আচরণ করেন, তাহলে তিনি বিচার প্রক্রিয়ায় উপস্থিত থাকার অধিকার হারাতে পারেন। যখন আইনজীবীরা যুক্তি উপস্থাপন করছিলেন, প্রসিকিউটররা উল্লেখ করেন, ডোনাল্ড ট্রাম্প সামাজিক মাধ্যমে হুমকিমূলক পোস্ট করেছিলেন যার মধ্যে একটিতে বলা হয়, তার বিরুদ্ধে অভিযোগ আনা হলে সম্ভাব্য ‘মৃত্যু এবং ধ্বংস’ সম্পর্কে হুমকি দেয়া হয়।
ট্রাম্পের আইনজীবীরা বলেন, তাদের মক্কেল এই মামলায় হতাশ এবং বিরক্ত ছিলেন। যা তিনি অবিচার বলে মনে করেন। তবে বিচারক বিবাদী পক্ষের আইনজীবীদের বলেন, ‘আমি আপনার দৃষ্টিভঙ্গির সঙ্গে একমত নই যে, হতাশাকে বিদ্বেষমুলক বা বাজে ভাষা ব্যবহারের যুক্তি হিসাবে ব্যবহার করা যায়।’ বিচারক মার্চান বলেন, এ ধরনের উত্তেজিন বক্তৃতা না দেয়ার ব্যাপারে তার সতর্ক করে দেয়ার বিষয়টি কোন আদেশ নয়, বরং অনুরোধ ছিল। কিন্তু ভবিষ্যতে এরকম ঘটলে তিনি বিষয়টিকে ‘ঘনিষ্ঠভাবে পর্যবেক্ষণ’ করতে বাধ্য হবেন।
প্রায় এক ঘণ্টা পর শুনানি শেষ করেন বিচারক। এরপর ট্রাম্প উঠে দাঁড়ালে সিক্রেট সার্ভিসের সদস্যরা তাকে ঘিরে ধরে। আইনজীবীদের সঙ্গে শান্তভাবে তিনি কথা বলছিলেন। তবে তার কয়েক সারি পেছনে বসে থাকা সাংবাদিকরা সেসব কিছুই শুনতে পাননি। এরপর তিনি ঘুরে আদালতের মধ্যে প্যাসেজে চলে যান এবং পেছনের দরজা দিয়ে বেরিয়ে যান। বাইরে অসংখ্য টেলিভিশন ক্যামেরা দাঁড়িয়ে থাকলেও তিনি কিছু বলেননি। তার অভিব্যক্তি ছিল বেশ গম্ভীর। যুক্তরাষ্ট্রের প্রথম কোন সাবেক প্রেসিডেন্টের বিরুদ্ধে ফৌজদারি মামলার কার্যক্রম সবে শুরু হলো। সূত্র: বিবিসি।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
পরলোকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং :ভারতে ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
কালীগঞ্জে রাঙ্গামাটিয়া ধর্মপল্লীর সংবাদ সম্মেলন
গ্রাম আদালত সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরিতে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত
মিসরে প্রেসিডেন্ট সিসির বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ
কুর্দি যোদ্ধাদের ভয়ঙ্কর হুঁশিয়ারি এরদোগানের
৩৫শ’ এজেন্টের অধিকাংশই গুজরাটের পাচারকারী
৫ সাংবাদিককে হত্যা করল ইসরাইল বিমান
তুষারপাতে অচল হিমাচল দুই শতাধিক রাস্তা বন্ধ
ক্রিপ্টো রিজার্ভ গড়বেন ট্রাম্প?
মোজাম্বিকে কারাদাঙ্গায় নিহত ৩৩, পলাতক ১৫০০ কয়েদি
গাজায় যুদ্ধবিরতি বিলম্বে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ হামাস-ইসরাইলের
পাকিস্তানে সড়ক অবরোধে শতাধিক শিশুর প্রাণহানি
আফগানিস্তানে ৭১ সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে পাকিস্তান
শুধু নারীদের জন্য
নিথর দেহ
আত্মহননে
জকিগঞ্জে প্রাক্সিসের ৭ দিনব্যাপী ইংলিশ স্পিকিং চ্যালেঞ্জ কম্পিটিশনের পুরস্কার বিতরণী
মাদ্রাসার ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামার সময় পড়ে গিয়ে শিশুর মৃত্যু
গাজীপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় বিএনপি নেতাদের ভিড়
শুধু নামেই জিমনেসিয়াম