মিয়ানমারে ফের ভয়াবহ সংঘর্ষ, হাজার হাজার বাসিন্দা পালাচ্ছেন
০৭ এপ্রিল ২০২৩, ১১:১৪ এএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:৩১ পিএম
মিয়ানমারের সামরিক জান্তা বাহিনীর সঙ্গে দেশটির জাতিগত বিভিন্ন বিদ্রোহী গোষ্ঠীর সদস্যদের মাঝে নতুন করে ভয়াবহ সংঘাত ছড়িয়ে পড়েছে। এতে করে দেশটির বিপুলসংখ্যক বেসামরিক মানুষ তাদের বাড়িঘর ছেড়ে থাইল্যান্ডে পালিয়ে যাচ্ছেন। -রয়টার্স, আল জাজিরা
থাইল্যান্ডের কর্মকর্তাদের বরাত দিয়ে শুক্রবার (৭ এপ্রিল) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে কাতারভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আল জাজিরা। প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, মিয়ানমারের সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী এবং সেনাবাহিনীর মধ্যে ভয়াবহ লড়াইয়ের মধ্যে হাজার হাজার মানুষ সীমান্ত পেরিয়ে থাইল্যান্ডে পালিয়েছেন বলে থাই কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
দুই বছরেরও বেশি সময় আগে সামরিক অভ্যুত্থানে মিয়ানমারে গণতন্ত্রপন্থি নেত্রী অং সান সু চি নেতৃত্বাধীন বেসামরিক সরকারের পতনের পর থেকে দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার এই দেশটিতে অস্থিরতা চলছে। মূলত অং সান সুচির নির্বাচিত সরকারের কাছ থেকে সামরিক বাহিনী ক্ষমতা দখল করলে মিয়ানমার অশান্তিতে নিমজ্জিত হয়। আর এর ফলেই দেশটিতে ব্যাপক বিক্ষোভ এবং সশস্ত্র বিদ্রোহের সূচনা হয়। থাইল্যান্ডের কর্মকর্তারা বলছেন, মিয়ানমারের দক্ষিণাঞ্চলীয় কারেন প্রদেশের মায়াওয়াদ্দি শহরের আশপাশের অঞ্চলকে কেন্দ্র করে বর্তমানে তুমুল সংঘর্ষ চলছে। মিয়ানমারের এই অঞ্চলটি থাইল্যান্ডের তাক প্রদেশের সীমান্তবর্তী এলাকা এবং এটি কায়িন নামেও পরিচিত।
থাইল্যান্ডের তাক প্রাদেশিক কর্মকর্তারা এক বিবৃতিতে বলেছেন, ১০টি এলাকাজুড়ে ‘প্রায় ৩ হাজার ৯৯৮ জন লোক থাইল্যান্ডে অস্থায়ী আশ্রয়ে পালিয়ে এসেছে’। পরিস্থিতি নিবিড়ভাবে পর্যবেক্ষণ করা হচ্ছে বলেও কর্মকর্তারা জানিয়েছেন। এদিকে থাইল্যান্ডের ইংরেজি সংবাদপত্র খাওসোদ এবং বিবিসি বার্মিজ জানিয়েছে, জাতিগত সশস্ত্র বিদ্রোহী গোষ্ঠী কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির সশস্ত্র যোদ্ধারা মিয়ানমারের একটি সীমান্ত রক্ষী চৌকিতে হামলার পর উভয়পক্ষের মধ্যে যুদ্ধ ছড়িয়ে পড়ে।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক দাতব্য কর্মী বার্তাসংস্থা রয়টার্সকে জানিয়েছেন, ‘গতকাল থেকে অনেক লোক সীমান্ত অতিক্রম করেছেন এবং কেউ কেউ এখনও সীমান্তের মিয়ানমার অংশে অপেক্ষা করছেন।’ আশ্রয়ের খোঁজে থাকা এসব মানুষের কাছে এখন পর্যাপ্ত পানীয় জল বা কোনও টয়লেট সুবিধা নেই বলেও জানিয়েছে তিনি। আল জাজিরা বলছে, কারেন ন্যাশনাল লিবারেশন আর্মির মতো কিছু জাতিগত সশস্ত্র গোষ্ঠী কয়েক দশক ধরে সশস্ত্র বাহিনীর বিরুদ্ধে লড়াই করে আসছে। আর দুই বছর আগে অভ্যুত্থানের পর থেকে জেনারেলদের ক্ষমতা ছাড়তে বাধ্য করার জন্য অভ্যুত্থানবিরোধী গোষ্ঠীগুলোর সাথে তারাও যোগ দেয়।
মিয়ানমারের সামরিক বাহিনী তার বিরোধীদের দমন করতে তাদের বিরুদ্ধে প্রাণঘাতী শক্তি ব্যবহার করেছে বলে অভিযোগ রয়েছে। অ্যাসিসটেন্স অ্যসোসিয়েশন ফর পলিটিক্যাল প্রিজনার্স জানিয়েছে, সামরিক বাহিনী দেশটিতে প্রায় ৩ হাজার ২১২ জনকে হত্যা করেছে এবং ১৭ হাজারেরও বেশি মানুষকে কারাগারে আটকে রেখেছে। এমনকি বিরোধীদের নিশ্চিহ্ন করার জন্য মিয়ানমারের জান্তা তার বিমান বাহিনীর শক্তিতেও ব্যবহার করছে। এছাড়া বোমা হামলা ও স্থল হামলায় বেসামরিক লোকদের লক্ষ্যবস্তু করার বিষয়েও সামরিক বাহিনীকে অভিযুক্ত করেছেন পর্যবেক্ষকরা।
এমনকি গোটা গ্রাম পুড়িয়ে দেওয়ার মতো ঘটনাও ঘটেছে। গত সপ্তাহে মিয়ানমারের উত্তর-পশ্চিমাঞ্চলে একটি গ্রামে বোমা হামলায় শিশুসহ অন্তত আটজন নিহত হন। মিয়ানমারের সেনাবাহিনী দাবি করেছে, তারা ‘সন্ত্রাসীদের’ বিরুদ্ধে লড়াই করছে। একইসঙ্গে বেসামরিক মানুষকে হামলার লক্ষ্যবস্তু করার বিষয়টিও অস্বীকার করেছে তারা। জান্তার দাবি, বেসামরিক মানুষের মৃত্যুর জন্য অভ্যুত্থানবিরোধী যোদ্ধারা দায়ী।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
পরলোকে সাবেক প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং :ভারতে ৭ দিনের রাষ্ট্রীয় শোক ঘোষণা
কালীগঞ্জে রাঙ্গামাটিয়া ধর্মপল্লীর সংবাদ সম্মেলন
গ্রাম আদালত সম্পর্কে জনসচেতনতা তৈরিতে সমন্বয় সভা অনুষ্ঠিত
মিসরে প্রেসিডেন্ট সিসির বিরুদ্ধে ব্যাপক বিক্ষোভ
কুর্দি যোদ্ধাদের ভয়ঙ্কর হুঁশিয়ারি এরদোগানের
৩৫শ’ এজেন্টের অধিকাংশই গুজরাটের পাচারকারী
৫ সাংবাদিককে হত্যা করল ইসরাইল বিমান
তুষারপাতে অচল হিমাচল দুই শতাধিক রাস্তা বন্ধ
ক্রিপ্টো রিজার্ভ গড়বেন ট্রাম্প?
মোজাম্বিকে কারাদাঙ্গায় নিহত ৩৩, পলাতক ১৫০০ কয়েদি
গাজায় যুদ্ধবিরতি বিলম্বে পাল্টাপাল্টি দোষারোপ হামাস-ইসরাইলের
পাকিস্তানে সড়ক অবরোধে শতাধিক শিশুর প্রাণহানি
আফগানিস্তানে ৭১ সন্ত্রাসীকে হত্যা করেছে পাকিস্তান
শুধু নারীদের জন্য
নিথর দেহ
আত্মহননে
জকিগঞ্জে প্রাক্সিসের ৭ দিনব্যাপী ইংলিশ স্পিকিং চ্যালেঞ্জ কম্পিটিশনের পুরস্কার বিতরণী
মাদ্রাসার ছাদ থেকে পাইপ বেয়ে নামার সময় পড়ে গিয়ে শিশুর মৃত্যু
গাজীপুরে নিষিদ্ধ ছাত্রলীগ নেতাকে ছাড়িয়ে আনতে থানায় বিএনপি নেতাদের ভিড়
শুধু নামেই জিমনেসিয়াম