চীনের ক্রমবর্ধমান আধিপত্যে নেপালের অর্থনীতি ও বৈশ্বিক সম্পর্ক ঝুঁকিতে
২৮ এপ্রিল ২০২৩, ০১:১৪ এএম | আপডেট: ৩০ এপ্রিল ২০২৩, ১১:১৬ পিএম
বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় অর্থনৈতিক পরাশক্তি হয়ে ওঠার লক্ষ্য নিয়ে চীন বিভিন্ন দেশে তার পরিকল্পনা ও প্রভাব বিস্তার করে চলছে। চীনের আধিপত্য শুধু এশিয়াতেই সীমাবদ্ধ নয়, বাণিজ্যের মাধ্যমে আফ্রিকা ও পশ্চিমা কিছু দেশেও এর উল্লেখযোগ্য প্রভাব রয়েছে। নেপালি সংবাদমাধ্যম পারদাফস ডটকমের বরাতে এই খবর দিয়েছে ভারতীয় সংবাদ সংস্থা এএনআই।
পারদাফস ডটকমের এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেপালে চীনের সম্পৃক্ততা দ্রুত বৃদ্ধি পাচ্ছে এবং বিভিন্ন সেক্টরে নিজেদের উপস্থিতি জানান দিচ্ছে চীন। এক দশক আগেও নেপালের অভ্যন্তরীণ রাজনীতিতে জড়ানোর ব্যাপারে আগ্রহী ছিল না চীন। কিন্তু এখন দেশটির ক্ষমতার লড়াইয়ে সচেতনভাবেই নিজেদের ভূমিকা বাড়াচ্ছে চীন। নেপালের সাম্প্রতিক হাউস অব রিপ্রেজেন্টেটিভস নির্বাচনে কমিউনিস্ট পার্টির একত্রীকরণ বা জোটের জন্য চীনা কর্মকর্তাদের আগ্রহ বেশ চোখে পড়ার মতোই ছিল।
কয়েক বছর আগে নেপালের দুই জনপ্রিয় রাজনৈতিক দল ইউনিফাইড মার্কসিস্ট লেনিনিস্ট (ইউএমএল) এবং মাওইস্ট সেন্টারকে একত্রিত করে কমিউনিস্ট পার্টি অব নেপাল (সিপিএন) গঠনে সহায়ক ভূমিকাও পালন করেছিল চীন।
এদিকে চীনের সম্পৃক্ততা শুধু রাজনীতিতেই নয়, উন্নয়ন প্রকল্প, পর্যটন, বাণিজ্য ও ডিজিটাল অপরাধসহ অন্যান্য ক্ষেত্রেও দেশটির আধিপত্য বিস্তার দেখা যায়। প্রতিটি ক্ষেত্রে চীনের তৎপরতা ও হস্তক্ষেপ যেমন বাড়ছে, তেমনি ভবিষ্যতে নেপালের সার্বভৌমত্ব হুমকির মুখে পড়ার শঙ্কা রয়েছে। বিশেষ করে যখন নেপালের মতো একটি স্থলবেষ্টিত দেশকে তার সমস্ত প্রতিবেশীর সঙ্গে ভারসাম্যপূর্ণ ভূমিকা পালন করতে হয়, তখন চীনাদের ক্রমবর্ধমান কর্মকাণ্ড অন্যান্য দেশকে উসকানি দেওয়ার সম্ভাবনা বাড়িয়ে দিয়েছে।
চীন ও নেপাল সরকারের মধ্যে একটি চুক্তি চীনা কোম্পানিগুলোকে নেপালের অবকাঠামো প্রকল্পে উল্লেখযোগ্য অংশগ্রহণ নিশ্চিত করেছে। সাম্প্রতিক সময়ে, এই কোম্পানিগুলো অন্যান্য ঠিকাদারদের তুলনায় কম দর জমা দেওয়ার পরও বড় প্রকল্পগুলির দরপত্র পেয়েছে। এসব সত্ত্বেও চীনা কোম্পানিগুলোর কাজের মান মিশ্র। আর কিছু প্রকল্প সময়মতো শেষ হলেও, কিছু আবার বেশ দেরি হয়েছে।
চীনের বেল্ট অ্যান্ড রোড ইনিশিয়েটিভের (বিআরআই) অধীনে চুক্তি বাস্তবায়নের উদ্যোগের অভাবের কারণে বড় প্রকল্প, সহায়তা এবং আমদানি-রপ্তানিতে সহজ প্রবেশাধিকারের মতো বিষয়গুলি থমকে আছে। বিআরআইয়ের অধীনে রাস্তা নির্মাণ ও সংস্কার কাজ শেষ হয়নি। এরই মধ্যে চীনা দল কেরুং-কাঠমান্ডু রেলপথের সম্ভাবনা জরিপ করতে এসেছে।
অন্যদিকে চীনের ঋণ সহায়তায় নির্মিত প্রকল্পগুলো থেকে ঋণ পরিশোধের চ্যালেঞ্জ রয়েছে। এর সর্বশেষ উদাহরণ পোখরা আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর। চীনের একটি ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে এই বিমানবন্দরটি তৈরি করা হয়েছে। বিমানবন্দরটি চালুর প্রায় ৪ মাস অতিবাহিত হলেও এখানে এখনও আন্তর্জাতিক ফ্লাইট চলাচল করেনি। সরকার ইতোমধ্যে ২ শতাংশ সুদে নেওয়া ব্যাংক ঋণ পরিশোধ শুরু করেছে।
বিশ্লেষকদের মতে, নেপালের অর্থনীতি, কূটনীতি এবং রাজনীতিতে চীনের ক্রমবর্ধমান প্রভাবে উদ্বেগ দেখা দিচ্ছে। তা সত্ত্বেও নেপালের সরকার এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব এই ইস্যুটির প্রতি উদাসী বলে মনে হচ্ছে। বিশ্বে ক্রমশ মেরুকরণ হচ্ছে, তাই ভারসাম্যপূর্ণ অবস্থান বজায় রাখা নেপালের জন্য অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
আবারও ভানুয়াতুতে দ্বীপপুঞ্জে ৬.২ মাত্রার ভূমিকম্প
হাজীগঞ্জে ভরাট মিঠানিয়া খালের মুখ, হুমকিতে ফসলি জমি
রাহাতের সুরের মুর্ছনায় বিমোহিত দর্শক, বাংলায় বললেন 'আমরা তোমাদের ভালোবাসি'
‘প্রশাসন ক্যাডার নিয়ে ষড়যন্ত্র চলছে’
যুক্তরাজ্যে ট্রাম্পের বিশেষ দূত হিসেবে মার্ক বার্নেট নিযুক্ত
ফাইনালে ভারতের কাছে বাংলাদেশের হার
ফ্রেন্ডলি ফায়ার দুর্ঘটনায় লোহিত সাগরে মার্কিন যুদ্ধবিমান ধ্বংস
ইরানে যাত্রীবাহী বাস খাদে পড়ে নিহত ১০
বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে ধনী নারী কে, জানেন?
বাংলাদেশি রোগী পেতে সীমান্ত পর্যন্ত মেট্রো চালু করবে ভারত
হাত ফসকে আইফোন পড়ে গেল মন্দিরের দানবাক্সে, ফেরত দিতে অস্বীকৃতি
কুয়াশায় ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়েতে একাধিক দুর্ঘটনা: নিহত ১, আহত ১৫
ঢাকার বায়ুমানে উন্নতির কোনো লক্ষণ নেই, বিপজ্জনকের কাছাকাছি
উগ্রবাদী সন্ত্রাসী 'সাদ' পন্থীদের কর্মকান্ডের বিরুদ্ধে সাতক্ষীরায় মানববন্ধন
বাংলাদেশ সীমান্তে অত্যাধুনিক ড্রোন মোতায়েন ভারতের
নরসিংদীতে দুর্বৃত্তের গুলিতে ছাত্রদলকর্মী নিহত
সিনেটে প্রার্থী হতে সরে দাঁড়ালেন লারা ট্রাম্প
আমাদেরকে আর স্বৈরাচার হতে দিয়েন না : পার্থ
মার্চের মধ্যে রাষ্ট্র-সংস্কার কাজ শেষ হবে : ধর্ম উপদেষ্টা
জামালপুরে দুই ইজিবাইকের চাপায় সাংবাদিক নুরুল হকের মৃত্যু