ঢাকা   শনিবার, ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৪ | ৬ আশ্বিন ১৪৩১

সিরিয়াকে পুনরায় আরব লীগের সদস্য করার সিদ্ধান্তে যুক্তরাষ্ট্রের কঠোর সমালোচনা

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

০৯ মে ২০২৩, ০৪:৫৬ পিএম | আপডেট: ০৯ মে ২০২৩, ০৪:৫৬ পিএম

সিরিয়াকে পুনরায় আরব লীগের সদস্য করার সিদ্ধান্তের কঠোর সমালোচনা করেছে যুক্তরাষ্ট্র। একইসঙ্গে আরব লীগের এই সিদ্ধান্তকে ‘গুরুতর কৌশলগত ভুল’ বলেও অভিহিত করেছে দেশটি।
এমনকি সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল আসাদ দেশটিতে নৃশংস গৃহযুদ্ধের পর এ ধরনের স্বাভাবিক সম্পর্কের যোগ্যতা রাখেন না বলেও দাবি করেছে যুক্তরাষ্ট্র। বার্তাসংস্থা এএফপির বরাত দিয়ে মঙ্গলবার (৯ মে) এক প্রতিবেদনে এই তথ্য জানিয়েছে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম এনডিটিভি।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, সিরিয়াকে পুনরায় আরব লীগের সদস্য করার সিদ্ধান্তের সমালোচনা করে সোমবার যুক্তরাষ্ট্র বলেছে, দেশের নৃশংস গৃহযুদ্ধের পর প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ এই ধরনের স্বাভাবিক সম্পর্কের যোগ্য নন।
যুক্তরাষ্ট্রের স্টেট ডিপার্টমেন্টের মুখপাত্র বেদান্ত প্যাটেল সাংবাদিকদের বলেছেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি না, সিরিয়া এই সময়ে আরব লীগে আবারও যোগ দেওয়ার যোগ্যতা রাখে।’
তিনি বলেন, ‘আমরা বিশ্বাস করি, আমরা আসাদ সরকারের সাথে আমাদের সম্পর্ক স্বাভাবিক করতে পারব না এবং আমাদের মিত্র ও অংশীদাররা তেমনটা করুক সেটিও সমর্থন করি না।’
এদিকে মার্কিন কংগ্রেস সদস্যরা আরও কঠোর অবস্থান নিয়েছেন এবং আসাদের সাথে সম্পর্ক স্বাভাবিককরণ রোধ করতে যুক্তরাষ্ট্রকে তার নিষেধাজ্ঞার শক্তি ব্যবহার করার আহ্বান জানিয়েছেন।
যুক্তরাষ্ট্রের হাউস ফরেন অ্যাফেয়ার্স কমিটির রিপাবলিকান চেয়ারম্যান মাইক ম্যাককলের সঙ্গে দেওয়া প্যানেলের শীর্ষ ডেমোক্র্যাট গ্রেগরি মিক্সের এক যৌথ বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ‘আসাদকে আরব লীগে পুনরায় যোগ দিতে দেওয়া একটি গুরুতর কৌশলগত ভুল যা আসাদ, রাশিয়া ও ইরানকে বেসামরিক লোকদের হত্যা এবং মধ্যপ্রাচ্যকে অস্থিতিশীল করতে উৎসাহিত করবে।’
এতে আরও বলা হয়েছে, ‘আসাদ পরিবর্তিত হয়নি। তিনি এই নৃশংসতা চালিয়ে যাবেন। আর এটি বিশ্বব্যাপী এমন একটি নজির স্থাপন করবে যে, নির্মম স্বৈরশাসকরা তাদের অপরাধের জবাবদিহিতার বাইরে থাকতে সক্ষম হতে পারেন।’
উল্লেখ্য, বারবার মার্কিন বিবৃতি ও বিরোধিতা সত্ত্বেও মিসরের রাজধানী কায়রোতে গত রোববার আরব লীগের সদর দপ্তরে সংস্থাটির পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের রুদ্ধদ্বার বৈঠকে সিরিয়াকে পুনরায় সদস্য করার বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।
সিরিয়ায় ২০১১ সালের নভেম্বরে শান্তিপূর্ণ বিক্ষোভের ওপর সরকারের দমন-পীড়ন ও অভিযানের কারণে আরব লীগ থেকে সেসময় দামেস্ককে বহিষ্কার করা হয়েছিল। ওই বছরের প্রথম দিকে শুরু হওয়া এ বিক্ষোভ দেশটিতে পরবর্তী সময়ে গৃহযুদ্ধে রূপ নেয়। আর এ যুদ্ধে পাঁচ লাখেরও বেশি লোক নিহত এবং লাখ লাখ লোক বাস্তুচ্যুত হয়েছেন।
পরে সিরিয়ায় গৃহযুদ্ধ শুরুর প্রথম দিকে কয়েকটি আরব দেশ সিরিয়ার সাথে সম্পর্ক ছিন্ন করে। এছাড়া সউদী আরব ও কাতার সিরিয়ার বিরোধীদের সমর্থন করে। তবে পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে এখন স্বাগতিক দেশ সউদী আরবের আমন্ত্রণে আগামী ১৯ মে আরব লীগের শীর্ষ সম্মেলনে আসাদকে যোগ দিতে বলা হয়েছে।
যদিও বহিষ্কার হওয়ার আগে সিরীয় প্রেসিডেন্ট আসাদ সর্বশেষ ২০১০ সালে আরব লীগের শীর্ষ সম্মেলনে যোগ দিয়েছিলেন। দীর্ঘ গৃহযুদ্ধ, বেসামরিক প্রাণহানি ও মানবিক সংকটের পর রাজনৈতিক কোনও পরিবর্তন ছাড়াই সিরীয় প্রেসিডেন্ট আরব ব্লকে আবারও ফিরে আসায় বিশ্লেষকেরা বলছেন, এটি আসাদের কূটনৈতিক বিজয়।


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

আরও পড়ুন

ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো বিচারবিভাগের গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছেন: অ্যাটর্নি জেনারেল

ফ্যাসিবাদের দোসররা এখনো বিচারবিভাগের গুরুত্বপূর্ণ গুরুত্বপূর্ণ জায়গায় রয়েছেন: অ্যাটর্নি জেনারেল

গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্প থেকে ভারতীয়দের অপসারণের দাবি গণঅধিকার পরিষদের

গার্মেন্টস ও অন্যান্য শিল্প থেকে ভারতীয়দের অপসারণের দাবি গণঅধিকার পরিষদের

পঞ্চগড়ে তীব্র তাপদাহে হাঁসফাঁস বিপর্যস্ত জনজীবন

পঞ্চগড়ে তীব্র তাপদাহে হাঁসফাঁস বিপর্যস্ত জনজীবন

দীর্ঘ ১৭ বছর পর প্রকাশ্যে তালতলীতে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন

দীর্ঘ ১৭ বছর পর প্রকাশ্যে তালতলীতে জামায়াতে ইসলামীর কর্মী সম্মেলন

আমরা ১৫ বছর কথা বলতে পারিনি   - মুশফিকুর রহমান

আমরা ১৫ বছর কথা বলতে পারিনি - মুশফিকুর রহমান

ফিরলেন জাকির, এসেই শান্তর ছক্কা

ফিরলেন জাকির, এসেই শান্তর ছক্কা

মাগুরায় গৃহবধূকে বিষপানে হত্যার অভিযোগ

মাগুরায় গৃহবধূকে বিষপানে হত্যার অভিযোগ

কেপিএম আবাসিক থেকে অজগর উদ্ধার কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্কে অবমুক্ত

কেপিএম আবাসিক থেকে অজগর উদ্ধার কাপ্তাই ন্যাশনাল পার্কে অবমুক্ত

চার্টার্ড নয়, বাণিজ্যিক ফ্লাইটে নিউইয়র্ক যাবেন প্রধান উপদেষ্টা

চার্টার্ড নয়, বাণিজ্যিক ফ্লাইটে নিউইয়র্ক যাবেন প্রধান উপদেষ্টা

শাল্লায় কালনী নদীতে যুবক নিখোঁজ

শাল্লায় কালনী নদীতে যুবক নিখোঁজ

ভিসি নিয়োগের দাবিতে ইবিতে মহাসড়ক অবরোধ

ভিসি নিয়োগের দাবিতে ইবিতে মহাসড়ক অবরোধ

রেকর্ড রান তাড়ায় বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসী শুরু

রেকর্ড রান তাড়ায় বাংলাদেশের আত্মবিশ্বাসী শুরু

সালথায় সেতুর রেলিং-পাটাতন ভেঙে বেহাল দশা : জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে ১০ গ্রামের মানুষ

সালথায় সেতুর রেলিং-পাটাতন ভেঙে বেহাল দশা : জীবনের ঝুঁকি নিয়ে চলছে ১০ গ্রামের মানুষ

তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা, ঢাবির ৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা, ঢাবির ৮ শিক্ষার্থী বহিষ্কার

হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেও সুস্থ নন খালেদা জিয়া : মির্জা ফখরুল

হাসপাতাল থেকে বাসায় ফিরলেও সুস্থ নন খালেদা জিয়া : মির্জা ফখরুল

আত্মহত্যা না কি খুন? ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শুরু

আত্মহত্যা না কি খুন? ওয়াশিংটনে ভারতীয় দূতাবাসের কর্মীর মৃত্যুর ঘটনায় তদন্ত শুরু

বিচার বিভাগে পৃথক সচিবালয় ছাড়া আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় : প্রধান বিচারপতি

বিচার বিভাগে পৃথক সচিবালয় ছাড়া আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা সম্ভব নয় : প্রধান বিচারপতি

বিভিন্ন সময়ে যেসব বিতর্কিত অভিযান চালিয়েছে মোসাদ

বিভিন্ন সময়ে যেসব বিতর্কিত অভিযান চালিয়েছে মোসাদ

শেরপুর বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে চা দোকানীর মৃত্যু

শেরপুর বিদ্যুৎ স্পৃষ্ট হয়ে চা দোকানীর মৃত্যু

শরীয়তপুর পৌরসভার বেশীর ভাগ সড়কেরই বেহাল দশা, ভোগান্তি চরমে

শরীয়তপুর পৌরসভার বেশীর ভাগ সড়কেরই বেহাল দশা, ভোগান্তি চরমে