পাকিস্তান-চীন ভাই ভাইয়ে মিশেছিল আমের রস
১৬ মে ২০২৩, ০১:৫০ পিএম | আপডেট: ১৬ মে ২০২৩, ০১:৫০ পিএম
আমের কূটনৈতিক দৌত্যের দিকটি প্রথম আবিষ্কার করেছিলেন ভারতের প্রথম প্রধানমন্ত্রী জওহরলাল নেহরু। কিন্তু আমের দৌত্য যে সর্বদা লক্ষ্যভেদ করেছে এমন নয়। আমের স্বাদ সময়বিশেষে খুবই তিক্ত! সম্প্রতি ভারতের পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয় চীন সংক্রান্ত একটি গোপন ফাইলকে জনসমক্ষে আনার পর এমন তথ্যই উঠে আসছে।
দক্ষিণ চীনের সামান্য কিছু অঞ্চলকে বাদ দিলে ১৯৬০ সাল পর্যন্ত আম কী জিনিস, জানতেন না চীনারা। বিষয়টি আঁচ করে ‘আমোদিত’ বন্ধুত্ব তৈরিতে অগ্রণী হয়েছিলেন নেহরু গত শতকের পঞ্চাশের দশকে। রিপোর্ট বলছে, সেই প্রথম চীন কোনও বাইরের রাষ্ট্রের কাছ থেকে আম উপহার পায়। শুধু ফলই নয়, ধারাবাহিক ভাবে বস্তা বস্তা আম গাছের চারাও পাঠানো হয়েছিল বেইজিংকে। কিন্তু শেষ যে বছর (১৯৬১ সাল) তা ভারত থেকে বন্ধুত্বের বার্তা নিয়ে যায়, তার পরের বছরই ভারত-চীনের যুদ্ধ সেই আমের স্বাদ প্রায় চিরকালের মতো তেতো করে দেয়! সম্পর্কের দশা এমনই হয় যে, পরের আম-উপহার পাঠাতে প্রায় পঞ্চাশ বছর অপেক্ষা করতে হয় ভারতকে। ২০০৩-এ তৎকালীন প্রধানমন্ত্রী অটলবিহারী বাজপেয়ীর চীন সফরের পর দু’দেশের মধ্যে বিশ্ব বাণিজ্য সংস্থার অধীনে দ্বিপাক্ষিক চুক্তি হয়। এর পরের বছর ভারত থেকে চীনে আম যায় দীর্ঘ ব্যবধানের পর। কিন্তু সেই দৌত্য স্থায়ী বা নিয়মিত থাকেনি। আপাতত যা পরিস্থিতি তাতে আম কেন, সার্বিক দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ককেই ‘অস্বাভাবিক’ বলে বারবার মন্তব্য করছেন পররাষ্ট্রমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর। প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা সংলগ্ন পূর্ব লাদাখে থাবা গেড়ে বসে রয়েছে চীনা সেনা। পরিস্থিতি সংঘাতপূর্ণ। আমের মিষ্টত্ব সেখানে বেমানান।
কিন্তু এমন ছিল না দেশের স্বাধীনতার দশ বছর পরেও। পররাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ের প্রকাশিত নথি বলছে, ১৯৫৫ সাল থেকে ভারত আমগাছের চারা পাঠাতে শুরু করে চীনকে। ১৯৫৪ সালের নভেম্বরে চীনের প্রধানমন্ত্রী চৌ এন লাই নয়াদিল্লি সফরে এসেছিলেন। তিনি উপহার হিসাবে এনেছিলেন এক জোড়া বলগা হরিণ, ১০০টি গোল্ডফিশ, বিভিন্ন বিরল পাখি। ফলে প্রতি-উপহার হিসাবে ভারত তখন সিদ্ধান্ত নেয়, আম এবং গাছের চারা পাঠানোর। শুধুমাত্র দায়সারা ভাবে বিমানে চড়িয়ে পাঠিয়ে দেয়াই নয়। নেহরু স্থির করেন, একটি সাংস্কৃতিক প্রতিনিধিদল নিয়ে যাবে এই আম্র-উপহার। কলকাতা থেকে মালদহের আম নিয়ে ১৯৫৫ সালের জুন মাসে সেই দল চীনের উদ্দেশে রওনা দেয় বলে লেখা হয়েছে ওই নথিতে। দশেরি, চৌসা, ল্যাংড়া, আলফান্সো গাছের চারা পাঠানো হয়েছিল এয়ার ইন্ডিয়ার ফ্লাইটে। হংকং হয়ে সেই আম-চারা পৌঁছয় বেইজিং।
১৯৬২-র যুদ্ধের পর ভারত-চীন তিক্ততার মাঝেই আম নিয়ে চীনের জঠরে প্রবেশ করে পাকিস্তান। ১৯৬৮ সালে পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী মিঞা আর্শাদ হুসেন চীনে পাঠিয়েছিলেন অঢেল আম। চেয়ারম্যান মাও জে দং অভিভূত হয়েছিলেন সেই আমে। শোনা যায়, তিনি গোটা দেশে প্রচারের অস্ত্র হিসাবে ব্যবহার করেছিলেন সেই পাকিস্তানি আম। হয়তো চীন পাকিস্তানের মধ্যে বহুল প্রচারিত ‘সব আবহাওয়ার বন্ধুত্বে ‘ সূত্রপাত হয়েছিল এই গ্রীষ্মকালীনফলটিকে ধরেই!
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
জয়সয়ালকে ফেরালেন নাহিদ
সরকারের শিক্ষা-গণমাধ্যমসহ আরও কিছু সংস্কার কমিশন করার পরিকল্পনা আছে : নাহিদ
তাসকিনের শিকার রোহিত
কারাগার থেকে পালিয়ে যাওয়া ফাঁসির আসামি গ্রেপ্তার হলো ধামরাইয়ে
দুই বিশ্ববিদ্যালয়ে দুইজনকে পিটিয়ে হত্যার বিচার দাবিতে চাটমোহরে ছাত্র-জনতার মানববন্ধন
বায়তুল মোকাররমের অপ্রীতিকর ঘটনা নিয়ে যা বললেন খতিব রুহুল আমীন
গোদাগাড়ী সরকারি ডিগ্রী কলেজের শিক্ষক, সাবেক এমপি লুৎফুন নেসা হোসেন মারা গেছেন।
দেড়শর আগেই শেষ বাংলাদেশের ইনিংস
ঝিনাইদহে ৮ মামলায় পুলিশের ৪৩ কর্মকর্তা আসামী
পাহাড়িদের ওপর হামলার প্রতিবাদে রাজধানীর শাহবাগে বিক্ষোভ
গণপিটুনিকে নরমালাইজ করা নিয়ে অভিনেত্রী মেহজাবীনের পোস্ট
গোয়ালন্দে গলায় ফাঁস নিয়ে যুবকের আত্মহত্যা
হবিগঞ্জে ৫ সাংবাদিক নাশকতার মামলায় আসামি
ঢাবিতে বর্বরোচিত গণপিটুনিতে নিহত তোফাজ্জলের জানাজা শেষে পাথরঘাটায় পারিবারিক কবরস্থানে দাফন সম্পন্ন
তারাকান্দায় প্রাইভেটকার ও সিএনজির সংঘর্ষে নিহত-২
রাঙামাটিতে পৌর এলাকায় ১৪৪ ধারা জারি
ভারতের সুপ্রিম কোর্টের ইউটিউব চ্যানেল হ্যাকড
দৌলতপুর সীমান্তে অস্ত্র ও মাদক সহ আটক-১
রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিসি পদে নিয়োগ পেলেন ড. এস এম হাসান তালুকদার
৮ উইকেট হারিয়ে চা বিরতিতে বাংলাদেশ