নতুন বিশ্ব-ব্যবস্থায় বিদেশি হস্তক্ষেপ আর গ্রহণযোগ্য হবে না: সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট

Daily Inqilab ইনকিলাব ডেস্ক

২০ মে ২০২৩, ০২:১১ পিএম | আপডেট: ২০ মে ২০২৩, ০২:১১ পিএম

সিরিয়ার প্রেসিডেন্ট বাশার আল-আসাদ বাশার ১২ বছরেরও বেশি সময় পর আরব লীগের শীর্ষ সম্মেলনে তার প্রথম ভাষণে বিদেশি হস্তক্ষেপ ছাড়াই মধ্যপ্রাচ্যের সমস্যা সমাধানের একটি ঐতিহাসিক সুযোগ তৈরি হওয়ার কথা বলেছেন৷

দু’হাজার এগারো সালের পর প্রথমবারের মতো আসাদ তার আরব প্রতিবেশীদের সাথে এক কাতারে বসেন। তার বিরোধীদের, বিশেষ করে পশ্চিমা বিশ্বের প্রতি একটি স্পষ্ট বার্তা জানাতে আসাদ তার সংক্ষিপ্ত বক্তৃতায় বলেন, একটি নতুন বিশ্ব-ব্যবস্থা চালু হচ্ছে যেখানে বিদেশি হস্তক্ষেপ আর গ্রহণযোগ্য হবে না। সিরিয়ার নেতা এর আগে এই শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক দেশ সউদী যুবরাজ মোহাম্মদ বিন সালমানের সাথে আলিঙ্গন করেন।

যুবরাজ মোহাম্মদ আশা প্রকাশ করেন যে, এ শীর্ষ সম্মেলনে প্রেসিডেন্ট আসাদের উপস্থিতি আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা বৃদ্ধিতে সহায়ক হবে। বিবিসি সংবাদদাতা সেবাস্টিয়ান আশার জানাচ্ছেন, জেদ্দায় সদ্য শুরু হওয়া এই সম্মেলনে আরব রাষ্ট্র-নেতাদের পাশে আসাদকে খুবই স্বচ্ছন্দ দেখাচ্ছিল। তিনি তাদের সাথে গ্রুপ ছবির জন্য পোজ দেন এবং সউদী রাষ্ট্রীয় টিভিতে দেখানো হয় যে মিশরের প্রেসিডেন্ট আবদুল ফাত্তাহ আল-সিসির মতো নেতার সাথে তার বন্ধুত্বপূর্ণ আলোচনা চলছে।

আরব লীগে আশার আল আসাদের ফিরে আসার রাজনৈতিক হিসেব যাই হোক না কেন, অনেক বিক্ষুব্ধ সিরিয়ানের জন্য তাকে মনে নেয়া কঠিন হবে। সিরিয়ার নৃশংস গৃহযুদ্ধের জন্য সামান্য বা কোন ধরনের জবাবদিহিতার আশা তারা করলেও এখন সেটা দুরাশা বলে মনে হচ্ছে। বারো বছরেরও বেশি সময় পর এই আঞ্চলিক সম্মেলনে এটাই আসাদের প্রথম উপস্থিতি। গণতন্ত্রপন্থী বিক্ষোভের নৃশংস দমন এবং দীর্ঘস্থায়ী গৃহযুদ্ধ, যেখানে কয়েক হাজার মানুষ নিহত হয়েছে বলে মনে করা হয়, তার প্রতিক্রিয়া হিসাবে সিরিয়াকে আরব লীগ থেকে বহিষ্কার করা হয়েছিল।

আরব বিশ্বের এই মঞ্চে বাশার আল আসাদের প্রত্যাবর্তন সম্ভব হয়েছে এই শীর্ষ সম্মেলনের আয়োজক দেশ সউদী আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের হস্তক্ষেপে। কিন্তু অন্য দেশগুলো এব্যাপারে হতাশা প্রকাশ করেছে। গত ফেব্রুয়ারিতে তুরস্ক এবং উত্তর-পশ্চিম সিরিয়ায় আঘাত হানা বিধ্বংসী ভূমিকম্পের পর আরব প্রতিবেশীদের সাথে সিরিয়ার সম্পর্ক ত্বরান্বিত হয়। সে সময় একসময়ের শত্রুভাবাপন্ন দেশগুলো সিরিয়ার সরকার-নিয়ন্ত্রিত এলাকায় মানবিক সাহায্য পাঠানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছিল।

ওদিকে, চীন গত মার্চ মাসে এক শান্তিচুক্তিতে মধ্যস্থতা করে যাতে সউদী আরব তার দীর্ঘদিনের আঞ্চলিক প্রতিদ্বন্দ্বী ইরানের সাথে কূটনৈতিক সম্পর্ক পুনস্থাপন করে। অন্যদিকে ইরান রাশিয়ার সাথে মিলে আসাদের বাহিনীকে সিরিয়ার বৃহত্তম শহরগুলির নিয়ন্ত্রণ পুনরুদ্ধার করতে সহায়তা করে।

 

তবে সিরিয়ার একটি বড় অংশ এখনও তুর্কি-সমর্থিত বিদ্রোহী, জিহাদি এবং মার্কিন যুক্তরাষ্ট্র সমর্থিত কুর্দি-নেতৃত্বাধীন মিলিশিয়া যোদ্ধাদের দখলে রয়েছে।

গৃহযুদ্ধ শুরু হওয়ার আগে সিরিয়ার জনসংখ্যা ছিল দুই কোটি ২২ লক্ষ। সংঘাত শুরু হওয়ার পর এর অর্ধেক তাদের বাড়িঘর ছেড়ে পালিয়ে যেতে বাধ্য হয়। প্রায় ৬৮ লক্ষ মানুষ অভ্যন্তরীণভাবে বাস্তুচ্যুত হয়েছেন, এবং আরও ৬০ লক্ষ মানুষ শরণার্থী বা বিদেশে আশ্রয়প্রার্থী হয়েছেন। সূত্র: বিবিসি।

 


বিভাগ : আন্তর্জাতিক


মন্তব্য করুন

HTML Comment Box is loading comments...

এই বিভাগের আরও

পাকিস্তান থেকে যেসব পণ্য নিয়ে এবার এলো জাহাজ
৪৩ বছর পর কুয়েতে ভারতের প্রধানমন্ত্রী
মন্ত্রিসভায় বড় রদবদল, কানাডায় কি ক্ষমতা ধরে রাখতে পারবেন ট্রুডো?
৬ বছরের মধ্যেই চীনের হাতে হাজার পরমাণু বোমা! উদ্বেগ যুক্তরাষ্ট্রের
জার্মানিতে ক্রিসমাস মার্কেটে গাড়ি হামলার ঘটনায় নিহতের সংখ্যা বেড়ে ৫
আরও

আরও পড়ুন

আমরা আল্লাহর উপরে ভরসা করি আর হাসিনার ভরসা ভারতে -দুলু

আমরা আল্লাহর উপরে ভরসা করি আর হাসিনার ভরসা ভারতে -দুলু

বাংলাদেশের গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে কমিশন

বাংলাদেশের গুমের ঘটনায় ভারতের সম্পৃক্ততা খুঁজে পেয়েছে কমিশন

২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচনের পক্ষে মত বিএনপির যুগপৎ সঙ্গীদের

২০২৫ সালের মধ্যে নির্বাচনের পক্ষে মত বিএনপির যুগপৎ সঙ্গীদের

ঢাকায় ‘হযরত ফাতিমা জাহরা (সা.আ.) বিশ্বের নারীদের আদর্শ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

ঢাকায় ‘হযরত ফাতিমা জাহরা (সা.আ.) বিশ্বের নারীদের আদর্শ’ শীর্ষক আলোচনা সভা অনুষ্ঠিত

চার ভাগে ফিরবেন ক্রিকেটাররা

চার ভাগে ফিরবেন ক্রিকেটাররা

চাঁদাবাজদের ক্ষমতায় আসতে দেবেন না: হাসনাত

চাঁদাবাজদের ক্ষমতায় আসতে দেবেন না: হাসনাত

এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের বরাদ্দ পেল বাফুফে

এমএ আজিজ স্টেডিয়ামের বরাদ্দ পেল বাফুফে

ইজতেমা মাঠকে যারা খুনের মাঠে পরিণত করেছে তারা সন্ত্রাসী

ইজতেমা মাঠকে যারা খুনের মাঠে পরিণত করেছে তারা সন্ত্রাসী

আসছে ভিভোর এক্স সিরিজের নতুন ফ্ল্যাগশিপ

আসছে ভিভোর এক্স সিরিজের নতুন ফ্ল্যাগশিপ

বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ২ ভারতীয় নাগরিককে স্বদেশে ফেরত

বেনাপোল চেকপোস্ট দিয়ে ২ ভারতীয় নাগরিককে স্বদেশে ফেরত

মুন্সীগঞ্জে বিএনপি’র দু পক্ষে সংঘর্ষ,৩ জন গুলিবিদ্ব সহ আহত ১০

মুন্সীগঞ্জে বিএনপি’র দু পক্ষে সংঘর্ষ,৩ জন গুলিবিদ্ব সহ আহত ১০

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সাকিব-তামিমকে পাওয়া যাবে: ফারুক

চ্যাম্পিয়ন্স ট্রফিতে সাকিব-তামিমকে পাওয়া যাবে: ফারুক

ইজতেমা মাঠে হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করুন

ইজতেমা মাঠে হত্যাযজ্ঞে জড়িতদের দ্রুত গ্রেফতার করুন

কলাপাড়ায় অটোরিকশা উল্টে শিশুর মৃত্যু

কলাপাড়ায় অটোরিকশা উল্টে শিশুর মৃত্যু

আগামীকাল পঞ্চগড়ে বিএনপির জনসমাবেশ

আগামীকাল পঞ্চগড়ে বিএনপির জনসমাবেশ

ব্যাক্তিস্বার্থ পরিহার করে, দেশ ও দলের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে: ইলিয়াস পাটোয়ারী

ব্যাক্তিস্বার্থ পরিহার করে, দেশ ও দলের স্বার্থে ঐক্যবদ্ধ হয়ে কাজ করতে হবে: ইলিয়াস পাটোয়ারী

সখিপুরে বিদ্যুৎষ্পৃষ্টে ডিস ব্যবসায়ীর মৃত্যু

সখিপুরে বিদ্যুৎষ্পৃষ্টে ডিস ব্যবসায়ীর মৃত্যু

যারাই সুযোগ পেয়েছে তারাই দেশের সাথে বেঈমানী করেছে: ডা. মু. তাহের

যারাই সুযোগ পেয়েছে তারাই দেশের সাথে বেঈমানী করেছে: ডা. মু. তাহের

পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো মৌমাছি ও মধু সম্মেলন

পঞ্চমবারের মতো অনুষ্ঠিত হলো মৌমাছি ও মধু সম্মেলন

শীতের দিনে ঝিরঝিরে বৃষ্টি স্থবির খুলনা শহুরে জীবন

শীতের দিনে ঝিরঝিরে বৃষ্টি স্থবির খুলনা শহুরে জীবন