অনেকের কাছেই ‘ঈর্ষণীয়’ ছিল ট্রুডো-সোফির দাম্পত্য জীবন!
০৩ আগস্ট ২০২৩, ০৫:৩৮ পিএম | আপডেট: ০৩ আগস্ট ২০২৩, ০৫:৩৮ পিএম
বিচ্ছেদের ঘোষণা দিয়েছেন কানাডার প্রধানমন্ত্রী জাস্টিন ট্রুডো। দীর্ঘ ১৮ বছরের সংসারের ইতি টেনে আলাদা থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন ট্রুডো-সোফি দম্পত্তি। এরই মধ্যে তারা আইনি চুক্তিও সই করেছেন। বুধবার (২ আগস্ট) ট্রুডোর কার্যালয় থেকে এসব বিষয়ে নিশ্চিত করা হয়। এর মধ্য দিয়ে ট্রুডো-সোফি দম্পতির দেড় যুগের বিবাহিত জীবনের অবসান ঘটল। ২০০৫ সালের মে মাসের শেষে বিয়ে করেন জাস্টিন ট্রুডো ও সোফি। তিন সন্তান রয়েছে তাদের।
অনেকের কাছেই ‘ঈর্ষণীয়’ ছিল ট্রুডো-সোফির দাম্পত্য জীবন। এ নিয়ে আলোচনাও হয়েছে অনেক। তবে বিচ্ছেদের ঘোষণার পর তারা নতুন করে আলোচনায় আসেন। এ আলোচনায় ট্রুডো-সোফির পরিচয়, প্রেম, বিয়ের প্রসঙ্গও ঘুরেফিরে আসছে। ট্রুডো-সোফির পরিচয়, প্রেম, বিয়ে নিয়ে ২০১৯ সালে একটি প্রতিবেদন করেছিল কানাডার অনলাইন সংবাদমাধ্যম ‘নার্সিটি’।
নার্সিটির সেই প্রতিবেদন অনুযায়ী, সোফির সঙ্গে ট্রুডোর পরিচয়-প্রেম-বিয়ের গল্পটি ছিল অসাধারণ। তারা পরস্পরকে ছোটবেলা থেকেই চিনত, জানত। কারণ, সোফি ছিলেন ট্রুডোর ছোট ভাই মিশেলের সহপাঠী। এমনকি ছোটবেলায় ট্রুডোদের বাড়িতে সোফি আসা-যাওয়া করতেন, আড্ডা দিতেন। ২০০৩ সালে ট্রুডো ও সোফি একসঙ্গে একটি তহবিল সংগ্রহের অনুষ্ঠানে অংশ নেন। সে সময় তারা একে অপরের সঙ্গে ‘নতুন’ করে পরিচিত হন। তখন তাদের মধ্যে ঘনিষ্ঠ বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক গড়ে ওঠে।
কিছুদিন পর ট্রুডোকে ই-মেইল করেন সোফি। ই-মেইলে সোফি লেখেন, ট্রুডোর সঙ্গে দেখা-সাক্ষাতের ব্যাপারটি তিনি উপভোগ করেছেন। কিন্তু সোফির এই ই-মেইলের কোনো জবাব দেননি ট্রুডো। একই বছরের গ্রীষ্মের শেষ দিকে সড়কে ট্রুডো-সোফি দেখা হয়ে যায়। এ দেখায় ট্রুডোকে উপেক্ষা করতে চেয়েছিলেন সোফি। তবে এবার সোফিকে ট্রুডো তাঁর সঙ্গে ঘুরতে যাওয়ার প্রস্তাব দেন।
সোফি বলেছিলেন, ট্রুডোর যদি সত্যিই তার (সোফি) সঙ্গে বাইরে ঘুরতে যাওয়ার ইচ্ছা থাকে, তবে তিনি যেন তাঁকে (সোফি) সেই ই-মেইলে জবাব দেন। প্রথম ডেটে সোফিকে ট্রুডো বলেছিলেন, তিনি তাঁর বাকি জীবন সোফির সঙ্গে কাটাতে চান। ট্রুডো জানিয়েছিলেন, এমন ঘোষণার পর তারা দুজনই কান্নায় ভেঙে পড়েছিলেন। কারণ, তাঁরা দুজনই খুব সংবেদনশীল মনের মানুষ ছিলেন। আর প্রথম ডেটের এক বছরের বেশি সময় পর সোফিকে বিয়ের প্রস্তাব দেন ট্রুডো। ২০০৫ সালের ২৮ মে তারা গাঁটছড়া বাঁধেন।
বুধবার (২ আগস্ট) জাস্টিন ট্রুডো এবং গ্রেগোয়ার ট্রুডো, দুজনের ইনস্টাগ্রাম অ্যাকাউন্ট থেকে আলাদা আলাদাভাবে ইংরেজি এবং ফরাসি ভাষায় তাদের বিচ্ছেদের খবর ঘোষণা করা হয়। ওই পোস্টে তারা বলেছেন, "সিদ্ধান্তটি নেওয়ার আগে আমাদের মধ্যে অনেকভাবেই আলোচনা হয়েছিল। যা ছিল অর্থবহ এবং জটিল।"
এছাড়া কানাডার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে দেওয়া আলাদা বিবৃতিতে বলা হয়েছে, আগামী সপ্তাহে ট্রুডো পরিবার একসঙ্গে ছুটি কাটাতে যাবে। তারা জানায়, ট্রুডো ও সোফি দুজনেই বিচ্ছেদের জন্য আইনিভাবে চুক্তিতে স্বাক্ষর করেছেন।
কার্যালয় থেকে আরও জানানো হয়, "তারা ঘনিষ্ঠ পরিবারের মতোই থাকবে, আর সোফি এবং প্রধানমন্ত্রী তাদের সন্তানদের একটা নিরাপদ, স্নেহময় এবং বন্ধুত্বপূর্ণ পরিবেশে বড় করার দিকে মনোযোগ দিয়েছেন। সন্তানদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে বাবা-মা দুজনেরই সক্রিয় উপস্থিতি থাকবে এবং কানাডিয়ানরা প্রায়ই তাদের পুরো পরিবারকে একসঙ্গে দেখতে পাবেন।"
এদিকে এই বিচ্ছেদের খবরে ট্রুডো পরিবারের শুভানুধ্যায়ীদের অনেকেই ব্যথিত হয়ে সহানুভূতি জানিয়েছেন। অনেকে দুঃখ প্রকাশ করে বলেছেন, ব্যক্তিগত জীবনের বোঝাপড়া ট্রুডোর রাজনৈতিক জীবনেও প্রভাব ফেলতে পারে।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও