কেন গাজার ‘লাইফলাইন’ বলা হচ্ছে রাফাহ ক্রসিংকে?
১৭ অক্টোবর ২০২৩, ০১:০৪ পিএম | আপডেট: ১৭ অক্টোবর ২০২৩, ০১:০৪ পিএম
ইসরাইলের একের পর এক বিমান হামলায় বিপর্যস্ত এখন গাজা উপত্যকা। সীমান্তেও প্রস্তুত ইসরাইলি সৈন্যরা, যেকোনো সময় শুরু হতে পারে স্থল অভিযান। এমন পরিস্থিতিতে জীবন বাঁচাতে গাজা ছেড়ে যাচ্ছেন লাখ লাখ বাসিন্দা। তাদের গন্তব্য গাজার দক্ষিণে রাফাহ সীমান্ত।
যুক্তরাষ্ট্রের গণমাধ্যমগুলোর খবরে জানানো হয়েছে যে, বিদেশি পাসপোর্টধারীদের নিরাপদে সরিয়ে নেয়া এবং মানবিক সহায়তা সামগ্রী প্রবেশের উদ্দেশ্যে অল্প সময়ের জন্য রাফাহ সীমান্ত খুলে দেয়া হতে পারে। তবে মঙ্গলবার সকালে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত রাফাহ ক্রসিং বন্ধ রয়েছে। রাফাহ- মিশরের সিনাই মরুভূমি সংলগ্ন একটি সীমান্ত পথ যেটি গাজার সর্ব দক্ষিণে অবস্থিত। গাজা থেকে বের হবার আরও দুটি সীমান্তপথ রয়েছে, যেগুলো পুরোপুরি ইসরাইলের নিয়ন্ত্রণে এবং দুটোই এখন বন্ধ। ফলে মিশরের
এই সীমান্ত পথটিই এখন গাজার উদ্বাস্তুদের একমাত্র ভরসা। তবে ইসরাইল-গাজা যুদ্ধ শুরু হবার পর সীমান্তটি বন্ধ করে দিয়েছে মিশর।
রাফাহ সীমান্ত এতো গুরুত্বপূর্ণ কেন?
গত ৭ অক্টোবর গাজার উত্তরাঞ্চলের ইরেজ সীমান্ত দিয়ে ইসরাইলে আক্রমণ করে হামাস। এ ঘটনার পর পরবর্তী নির্দেশনা না দেয়া পর্যন্ত সীমান্তটি বন্ধ ঘোষণা করে ইসরাইল। ফলে রাফাহ সীমান্তটিই এখন বেসামরিক নাগরিকদের জন্য গাজা ত্যাগ করার একমাত্র স্থলপথ। গাজায় মানবিক সহায়তা পাঠানোর ক্ষেত্রেও রাফাহ এখন গুরুত্বপূর্ণ। মিশরের পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় জানিয়েছে যে, গাজার জন্য মানবিক সহায়তা সামগ্রীপূর্ণ একটি উড়োজাহাজ উত্তর সিনাইয়ের আল-আরিশ বিমানবন্দরে ইতিমধ্যেই এসে পৌঁছেছে। রাফাহ সীমান্তের কাছে জ্বালানি ও মানবিক সহায়তা সামগ্রী বহনকারী কয়েক ডজন লরিও এখন গাজায় প্রবেশের অপেক্ষায় রয়েছে।
রাফাহ সীমান্তে এখন কি হচ্ছে?
ইসরাইল-গাজা যুদ্ধ শুরুর পর থেকেই রাফাহ সীমান্তের পরিস্থিতি নিয়ে পরস্পরবিরোধী নানান খবর ছড়ানো হয়েছে। সীমান্তটির নিয়ন্ত্রণ নিয়ে হামাস ও মিশরের মধ্যে যেমন রেষারেষি চলছে, তেমনি ইসরাইলও বোমাবর্ষণ করে সীমান্তে চলাচল বন্ধ করতে সক্ষম। মিশরের স্থানীয় গণমাধ্যমগুলো বলেছে, ইসরাইল গত ৯ এবং ১০ই অক্টোবর রাফাহ সীমান্তে অন্তত তিনবার হামলা চালায়, যাতে মিশরের বেশ কিছু নাগরিক আহতও হয়েছে। এরপর ১২ অক্টোবর মিশরের সরকার ইসরাইলকে রাফাহ সীমান্তের কাছে বিমান হামলা বন্ধ করার আহ্বান জানায়, যেন সীমান্তটি গাজার জনগণের জন্য ‘লাইফলাইন’ হিসাবে কাজ করতে পারে। তখন এ বিষয়টিও স্পষ্ট করা হয় যে, সীমান্তে নিরাপত্তা নিশ্চিত না হওয়া পর্যন্ত দরজা খোলা হবেনা।
এ অবস্থায় পশ্চিমা দেশগুলো গাজায় আটকে পড়া বিদেশি নাগরিক এবং মানবিক সহায়তার কথা বিবেচনা করে রাফাহ সীমান্তের নিরাপত্তা নিশ্চিত করার চেষ্টায় যুক্ত হয়েছে। যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী জেমস ক্লেভারলি এবং মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টনি ব্লিঙ্কেন- উভয়েই সম্প্রতি জানিয়েছেন যে, তারা রাফাহ সীমান্ত পুনরায় খুলে দিতে ইসরাইল, মিশর এবং "অন্যান্য নেতৃস্থানীয় রাজনৈতিক নেতাদের" সাথে কাজ করছেন। গত সপ্তাহে মার্কিন পররাষ্ট্র দফতরের একজন মুখপাত্রের পক্ষ থেকে গাজায় আটকে পড়া যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের রাফাহ অভিমুখে যেতে বলা হয়েছে। কারণ সীমান্তটি “খুব কম সময়ের নোটিশ” খোলা হতে পারে, যেটি আবার অল্প সময়ের মধ্যেই বন্ধ করে দেয়া হবে বলেও জানানো হয়েছে। অল্প সময়ের জন্য যুদ্ধবিরতি দিয়ে সীমান্তটি খুলে দেয়া হতে পারে- এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে গত সোমবার রাফাহ সীমান্তে বিপুল সংখ্যক গাজাবাসী এসে জড়ো হন।
রাফাহ সীমান্ত বন্ধ কেন?
রাফাহ সীমান্ত বন্ধ রাখার একটি কারণ হলো- সীমান্তটি দিয়ে যেন হামাসের কোনো সদস্য গাজা ছেড়ে যেতে না পারে এবং বাইরে থেকে অস্ত্র ও গোলাবারুদ আনতে না পারে, ইসরাইল সেটি নিশ্চিত করতে চায়। অন্যদিকে, রাফাহ থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে লাখ লাখ উদ্বাস্তু সীমান্ত পার হবার অপেক্ষায় রয়েছে। ফলে দরজা খুলে দিলেই উদ্বাস্তুদের স্রোতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি হতে পারে- এমন আশঙ্কায় সীমানা খুলছে না মিশর। তবে বিদেশি পাসপোর্টধারী এবং মানবিক সহায়তার জন্য পুনরায় সীমান্তটি খোলার বিষয়ে মিশরের সাথে আলোচনা চালিয়ে যাচ্ছে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্য সহ বেশ কয়েকটি দেশ। গাজায় আটকে পড়া বিদেশি নাগরিকদেরকেও বলা হয়েছে রাফাহ সীমান্তে অবস্থান নিতে, যাতে সীমানা খোলামাত্রই তাদেরকে উদ্ধার করা যায়। মার্কিন গণমাধ্যমের খরবে জানানো হয়েছে যে, বিদেশি পাসপোর্টধারী এবং মানবিক সহায়তা সামগ্রী প্রবেশের উদ্দেশ্যে সীমান্তটি অল্প সময়ের জন্য খোলা হতে পারে।
রাফাহ সীমান্ত পার হবার প্রক্রিয়া কী?
ফিলিস্তিনিরা ইচ্ছা করলেই রাফাহ সীমান্ত পার হতে পারেন না। এজন্য তাদেরকে দুই থেকে চার সপ্তাহ আগে স্থানীয় ফিলিস্তিন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে আবেদন করতে হয়, যেটি ফিলিস্তিন বা মিশর সরকার যে কোনো অজুহাতে প্রত্যাখ্যান করে দিতে পারে। জাতিসংঘের হিসেবে, ২০২৩ সালের অগাস্টে ১৯ হাজার ৬০৮ জনকে ফিলিস্তিনি নাগরিককে রাফাহ সীমান্ত দিয়ে মিশরে ঢোকার অনুমতি দেয়া হয়েছে। আর প্রবেশের অনুমতি চেয়ে প্রত্যাখ্যাত হয়েছেন ৩১৪ জন। সূত্র: বিবিসি।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
শপথ নিলেন অতিশী, মমতার পর দ্বিতীয় মহিলা মুখ্যমন্ত্রী পেল ভারত
মালয়েশিয়ায় নাইট ক্লাবে স্ফূর্তি করতে গিয়ে আটক ৫ বাংলাদেশি
নতুন রেকর্ড সোনার দামে, ভরি ১৩৩০৫১ টাকা
সিলেটে একদিনে বজ্রপাতে ৪ জনের মৃত্যু
কৌশলে কোটি কোটি টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন মসিকের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী জহুরুল হক
শেখ হাসিনা সকল দপ্তরের টাকা লুট করে আমানত খেয়ানত করেছে : নোয়াখালীতে শিবির সভাপতি
ইসলামী ছাত্র মজলিসের নির্বাচন সম্পন্ন--রায়হান সভাপতি ও ইমরান সেক্রেটারি নির্বাচিত
হাজীগঞ্জে বিএনপি'র দুই গ্রুপের সংঘর্ষে চিকিৎসাধীন কিশোরের মৃত্যু
উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই-ধর্ম উপদেষ্টা
নয়ন মিয়ার আত্মত্যাগ বৃথা যাবে না : যুবদল সভাপতি মুন্না
আশুলিয়া শিল্পাঞ্চলে অস্থিতিশীল পরিস্থিতি সৃষ্টির অভিযোগে আওয়ামীলীগের পাঁচ নেতা গ্রেপ্তার
একই কর্মস্থলে অর্ধ যুগ কাটিয়েছেন পিআইও রেজা, করেছেন প্রকল্পের টাকা হরিলুট
আওয়ামীলীগ শাসনামলে যশোরে বিভিন্ন রাজনৈতিক কর্মসূচিতে প্রদর্শিত অস্ত্রের কোনো হদিস নেই
যে আইন বাংলাদেশে চলে, সেই আইনে পার্বত্য অঞ্চলেও চলবে -কুমিল্লার সমাবেশে ফয়জুল করিম চরমোনাই
সীতাকু-ের বিতর্কিত সাবেক সহকারী কমিশনার চট্টগামের এডিসি হলেন
ফরাজীকান্দি নেদায়ে ইসলাম ওয়েসীয়ান ছাত্রদের উদ্যোগে ঈদে মিলাদুন্নাবী (সা.) উপলক্ষে আনন্দ র্যালি
ব্রুনাইয়ে ভবন থেকে পড়ে গফরগাঁওয়ের প্রবাসী নিহত
গুলিবিদ্ধ ইলহামের জন্য তারেক রহমানের অনন্য উদ্যোগ
মব জাস্টিসের প্রতিবাদে চবিতে মানববন্ধন
মতলবে ছেলের ইটের আঘাতে মায়ের মৃত্যু : আটক ছেলে