উষ্ণায়নে অস্তিত্ব সংকটে এশিয়ার সামুদ্রিক প্রাণীরা
০৫ নভেম্বর ২০২৩, ১০:১৬ এএম | আপডেট: ০৫ নভেম্বর ২০২৩, ১০:১৬ এএম
বরফ গলছে অ্যান্টার্কটিকার। সমুদ্রের পানির উষ্ণতা বাড়ছে হু হু করে। বাতাসে গ্রিন হাউস গ্যাসের হার চড়ছে হাজার নিয়ন্ত্রণমূলক পদক্ষেপ করা সত্ত্বেও। অতিবৃষ্টি, অনাবৃষ্টি, দাবানল–সংখ্যা এবং প্রভাব, দুই-ই ঊর্ধ্বগামী। ফলত, আগামি দিনগুলিতে এ বিশ্ব যে ঠিক কতটা গুরুতর বিপদের মুখে পড়তে চলেছে, তার সংকেত মিলছে এখন থেকেই।
বিশেষজ্ঞরাই সতর্ক করছেন বারে বারে। সম্প্রতি জাতিসংঘের ফুড অ্যান্ড এগ্রিকালচালার অর্গানাইজেশনের (এফএও) নেতৃত্বে তিন দিনের একটি কনক্লেভ আয়োজিত হয়েছিল তামিলনাড়ুর মমল্লাপুরমে। মূলত সমুদ্র এবং সামুদ্রিক প্রাণীদের ভবিষ্যৎই ছিল চর্চার বিষয়। কিন্তু কনক্লেভ-শেষে যে তথ্য প্রকাশ্যে এল, তা রীতিমতো হাড়হিম করা বিপদের সতকর্বাতা। জানা গেল, বিশ্ব উষ্ণায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাব সবথেকে বেশি পড়তে চলেছে এশিয়ার দেশগুলির সামুদ্রিক প্রাণীজগতের উপর। ২১০০ সালের মধ্যে এশিয় দেশগুলির অন্তত ৮৬ শতাংশ মৎস্য প্রজাতি পড়বে বিপদের মুখে। বলা ভাল, অস্তিত্ত্ব সংকটে। এই হার বিশ্বের অন্যান্য দেশের তুলনায় এশীয় দেশগুলির মধ্যেই বা আরও স্পষ্ট করে বললে এশীয় দেশগুলির ‘এক্সক্লুসিভ ইকোনমিক জোন’ বা ইইজেড এলাকার মধ্যেই সবচেয়ে বেশি। উত্তর আমেরিকার ক্ষেত্রে এই হার ৭৭ শতাংশ। ওশিয়ানিয়ার ক্ষেত্রে ৭৩ শতাংশ। আর আফ্রিকার সামুদ্রিক প্রাণীকূলের ক্ষেত্রে বিপদের ঝুঁকি ৭১ শতাংশ।
শুধু তাই নয়। সামুদ্রিক জীববিজ্ঞানীদের মতে, ২১০০ সালের মধ্যে ভারতীয় উপমহাদেশের সমুদ্রগুলিতে বসবাসকারী প্রাণীগুলি সবচেয়ে বেশি বিপদের মুখে পড়বে। শতাংশের বিচারে এই হার ৫৬। এর পরেই রয়েছে উত্তর প্রশান্ত মহাসাগরীয় এলাকা, যেখানে এই হার ৪২ শতাংশ। এফএও-র ফিশারিজ অ্যান্ড অ্যাকোয়াকালচার ডিভিশনের অফিসার এবং জলবায়ু বিশারদ, তারুব ভাহরির দাবি, “জলবায়ু পরিবর্তনের কুফল গুরুতরভাবে লক্ষিত হতে চলেছে সামুদ্রিক প্রাণীকূলের বৈশ্বিক জীবভর (গ্লোবাল বায়োমাস)-এর উপর। তা অনেকটাই কমে দাঁড়াবে ২১ শতাংশে। ক্রান্তীয় এলাকাগুলিতে এই হার আরও কমবে। এটাই আসন্ন বিপদের বার্তাবহ।” সমুদ্রে বিবিধ প্রজাতির উদ্ভিদ ছাড়াও অগুনতি প্রাণীর বাস। কিন্তু উষ্ণায়নের ফলে যেভাবে ‘মেরিন হিটওয়েভ’ তথা সামুদ্রিক তাপপ্রবাহের মাত্রা বাড়ছে, তাতে আগামিদিনে প্রাণীদের অস্তিত্ব সংকটে পড়তে বাধ্য। শুধুমাত্র যে সমুদ্রের জলের তাপমাত্রাই বাড়ছে তা নয়, এর ফলে জলে দ্রবীভূত অক্সিজেনের পরিমাণও কমছে। ফলে সংকটে পড়ছে প্রবাল এবং নানা ধরনের সামুদ্রিক প্রাণী।
তাপমাত্রা বেড়ে যাওয়ার মানে বাষ্পীভবনের হার অনেকটা বেড়ে যাওয়া, যা আবার জলীয় বাষ্পের পরিমাণ বাড়িয়ে দিচ্ছে। প্রকারান্তরে এর থেকে বৃদ্ধি পাচ্ছে ভারী বৃষ্টি এবং বন্যার আশঙ্কা। আবার এর উল্টোটাও কিন্তু রয়েছে। বিজ্ঞানীদের দাবি, অ্যামাজন, অস্ট্রেলিয়া, ক্যালিফোর্নিয়ার খরা, তাপপ্রবাহ ও দাবানলের যে যে ঘটনা ঘটেছে সাম্প্রতিক অতীতে ঘটেছে, তার পিছনে হাত রয়েছে উষ্ণ সাগরের। কাজেই সতর্ক হওয়া উচিত এখনই। উষ্ণায়ন এবং জলবায়ু পরিবর্তনের কুফল রোধে কর্মসূচি রূপায়ণ এবং বাস্তবায়নের লক্ষ্যে অবিলম্বে এগিয়ে আসা উচিত বিশ্বের প্রতিটি দেশের। এমনটাই মত পরিবেশবিদ, বিজ্ঞানী এবং জলবায়ু বিশেষজ্ঞদের।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
ছাগলনাইয়া উপজেলা ইটভাটা মালিক সমিতির কমিটি গঠন
বাগেরহাটে এ্যাথলেটিক প্রতিযোগীতা ও গ্রামীন খেলা অনুষ্ঠিত
গাজা পুনর্গঠনে কার হাতে থাকবে প্রশাসনিক দায়িত্ব ?
রামগড়ে ভ্রাম্যমাণ আদালতের ৫টি ইটভাটায় জরিমানা
এখনো দেশে সাড়ে ৩৩ হাজার অবৈধ বিদেশি: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা
কম মূল্যে জমি বিক্রি না করায় দাউদকান্দিতে ছাত্রদলের নেতার বিরুদ্ধে অপপ্রচারের প্রতিবাদ
মুক্ত তিন ইসরাইলি জিম্মিকে যে ‘উপহারের ব্যাগ’ দিলো হামাস
জেরায় অবশেষে দোষ স্বীকার সাইফের হামলাকারীর
ঈশ্বরগঞ্জে ব্রেস্ট ক্যান্সার প্রতিরোধ বিষয়ক কর্মশালা
বনানীতে সড়কে সিএনজি চালকদের বিক্ষোভ, রাস্তা বন্ধ
বগুড়া সেনানিবাসে সাঁজোয়া কোরের ৪৪তম বাৎসরিক অধিনায়ক সম্মেলনে যোগ দিলেন সেনা প্রধান
গাজীপুরে এ্যাপারেলস্ কারখানায় বয়লার বিস্ফোরণে আহত ১২
ব্যবহারকারীদের আশ্বাস ট্রাম্পের, যুক্তরাষ্ট্রে ফের চালু টিকটক
পদ্মায় ধরা পড়লো ৪২ কেজির মহা বিপন্ন বাঘাইড় মাছ
আরও বিনা প্রতিদ্বন্দ্বিতায় রিয়ালের প্রেসিডেন্ট পেরেজ
সিলেটে প্রখ্যাত আলেম ইসহাক আল মাদানির ইন্তেকাল!
গাজার ধ্বংসস্তূপে নতুন স্বপ্ন বুনছেন যুদ্ধবিধ্বস্ত মানুষ
গাজা চুক্তিকে যেকারণে ‘হামাসের জয়’ বলছে ইসরায়েলি গণমাধ্যম
সত্যিকারের সুখী হওয়া অনেক কঠিনঃ মিশা
গাজায় ব্যাংক সেবা পুনরায় চালুর প্রস্তুতি শুরু ফিলিস্তিনি কর্তৃপক্ষের