গাজা ইস্যুতে মার্কিন কর্মকর্তাদের মধ্যে মতপার্থক্য
০৬ নভেম্বর ২০২৩, ১২:১১ পিএম | আপডেট: ০৬ নভেম্বর ২০২৩, ১২:১১ পিএম
ফিলিস্তিনি ভূখণ্ড গাজায় ইসরাইলের চলমান হামলা নিয়ে মার্কিন পররাষ্ট্র দপ্তরের কর্মকর্তাদের মধ্যে মতপার্থক্য দেখা দিয়েছে। বিষয়টি এখন গোপন কিছু নয়। পররাষ্ট্র দপ্তরের মুখপাত্রের বক্তব্য থেকেই এটা নিশ্চিত হওয়া গেছে। ৭ অক্টোবর গাজা নিয়ন্ত্রণকারী ফিলিস্তিনি গ্রুপ হামাস ইসরাইলে ঝটিকা হামলা চালানোর পরই ইসরাইল পালটা পদক্ষেপ হিসেবে গাজায় হামলা শুরু করে। এই হামলা এখনো চলছে।
ইসরাইল বলেছে, হামাসকে পুরোপুরি পর্যুদস্ত না করা পর্যন্ত এই অভিযান চলবে। ইসরাইলের এই পদক্ষেপের প্রতি মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেনের প্রশাসন সর্বাত্মক সমর্থন জানিয়েছিল। ইসরাইলের হামলায় মূলত বেসরকারি লোকজন, বিশেষ করে নারী ও শিশুরাই বেশি সংখ্যায় আহত ও নিহত হয়েছে। বেসরকারি লক্ষ্যবস্তুতে বাছবিচারহীন হামলার প্রশ্নেই মূলত মার্কিন কর্মকর্তাদের কেউ কেউ ভিন্ন মত প্রকাশ করছেন।
গাজার অবরুদ্ধ জনগোষ্ঠীর প্রতি দেশে-বিদেশে ব্যাপক জনসমর্থন তৈরির প্রেক্ষাপটে মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন সেখানে মানবিক ত্রাণসহায়তা পৌঁছে দেওয়ার জন্য সাময়িক যুদ্ধবিরতির জন্য ইসরাইলের প্রতি আহবান জানিয়েছেন। গাজায় ইসরাইলি বাহিনী স্থল অভিযান শুরুর সময় বাইডেন প্রশাসন জানিয়েছিল, তারা ইসরাইলের জন্য কোন রেড লাইন বেঁধে দেবে না। অর্থাৎ, ইসরাইলি বাহিনী কত দূর ধ্বংসযজ্ঞ চালাবে, তা নিয়ে প্রশ্ন তুলবে না ওয়াশিংটন।
ব্যাপারটি নিয়েই মুখ খুলেছেন পররাষ্ট্র দপ্তরের কয়েক জন কর্মকর্তা। তারা বলছেন, বেসামরিক লোকজনের ওপর হামলা না করে কেবল হামাসের স্থাপনা নিশানা করে সামরিক অভিযান চালানো যেত। হামলায় নিহত ও ক্ষতিগ্রস্তদের যেসব চিত্র গণমাধ্যমে প্রকাশ পাচ্ছে, তাতে বিশ্ব জুড়ে তীব্র ক্ষোভ তৈরি হচ্ছে। বর্তমান সংঘাতের দায় প্রথম দিকে হামাসের ওপর পুরোপুরি চাপিয়ে দেওয়া হলেও ইসরাইলি বাহিনীর নির্মমতা অব্যাহত থাকায় সেটি সম্ভব হচ্ছে না।
ইসরাইল এটাও দাবি করছে যে তারা আসলে ফিলিস্তিনি জনগণের ওপর হামলা করতে চায় না। এটি হামাসের সঙ্গে তাদের যুদ্ধ। হামাস যেহেতু বেসামরিক লোকজনকে ঢাল হিসেবে ব্যবহার করছে, তাই বেসামরিক প্রাণহানির ঘটনাগুলো ঘটছে।
মার্কিন পররাষ্ট্রমন্ত্রী অ্যান্টোনি ব্লিনকেন লড়াই শুরুর পরপরই মধ্যপ্রাচ্য সফর করেন। তিনি প্রথমে যান ইসরাইলে। এরপর তিনি কয়েকটি আরব দেশ সফর করেন। দেশে ফিরে ২০ অক্টোবর ব্লিনকেন কংগ্রেসকে তার এই সফরের বিষয়ে অবহিত করেন। তিনি স্বীকার করেন যে বিষয়টি যুক্তরাষ্ট্রের জন্য চ্যালেঞ্জিং। একদিকে নিজেকে রক্ষার অধিকারের নামে ইসরাইলকে খুশিমতো সামরিক অভিযান চালানোয় সায় দেওয়া এবং দেশটিতে সামরিক সরঞ্জাম পাঠানো; অন্যদিকে গণতন্ত্র ও মানবাধিকারের প্রতি প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকা। এ নিয়ে ভিন্ন মত প্রকাশ ও বিতর্ককে স্বাগত জানান ব্লিনকেন।
তার মতে, এর ফলে যুক্তরাষ্ট্রের পলিসি ও প্রতিষ্ঠানগুলো আরো শক্তিশালী হবে। তিনি এরপর আরো চার দেশ সফর করে আরেক দফা মধ্যপ্রাচ্য সফরে গেছেন। পররাষ্ট্র দপ্তর, জাতীয় নিরাপত্তা কাউন্সিল ও অন্যান্য প্রতিষ্ঠানে কর্মরত এবং সাবেক কর্মকর্তাদের অনেকে বাইডেনের ইসরাইল নীতির সমালোচনা করছেন।
যুক্তরাষ্ট্রে বিদেশি বংশোদ্ভূতদের মধ্যে অনেক আরব আমেরিকান আছেন। ২০২০ সালের প্রেসিডেন্ট নির্বাচনে তাদের ৫৯ শতাংশ বাইডেনকে সমর্থন করেছিলেন। এই সমর্থনের পরিমাণ এখন ১৭ শতাংশে নেমে এসেছে। বিষয়টি আগামী বছর অনুষ্ঠেয় নির্বাচনের জন্য বাইডেন প্রশাসনকে বিবেচনায় রাখতে হবে।
পররাষ্ট্র দপ্তরের সাবেক কর্মকর্তা অ্যারন ডেভিড মিলার বলেছেন, ‘(পররাষ্ট্র দপ্তরে) ২৫ বছর চাকরিকালে এমন ঘটনা আমি দেখিনি। এটি যেন প্রশাসনের অভ্যন্তরীণ ইসরাইল-ফিলিস্তিন দ্বন্দ্ব। কার্নেগি এনডোমেন্টের স্কলার মিলার পররাষ্ট্র দপ্তরে থাকাকালে আরব-ইসরাইল ইস্যু নিয়ে কাজ করেছেন। বর্তমানে সংঘাত শুরুর সময় বাইডেন প্রশাসন যে অবস্থান নিয়েছিল, গাজায় মানবিক বিপর্যয়ের ভয়াবহ দৃশ্যগুলো বাইরে আসার সঙ্গে সঙ্গে সেই অবস্থান বদলাতে বাধ্য হয়েছে। প্রশাসনের কর্মকর্তারা প্রকাশ্যে ও ব্যক্তিগতভাবে ইসরাইল কর্তৃপক্ষের কাছে গাজায় পানি সরবরাহ চালুসহ মানবিক সহায়তা পৌঁছাতে সুযোগ করে দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন। গাজায় ইসরাইলি হামলায় প্রাণহানির সংখ্য ইতিমধ্যে ১০ হাজারের কাছাকাছি পৌঁছে গেছে। নিহতদের বেশির ভাগ শিশু, এরপর আছে নারীরা। হামাসের কত সংখ্যক সদস্য মারা গেছেন, তার সঠিক সংখ্যা অবশ্য পাওয়া যায়নি।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
আরও পড়ুন
প্লটবঞ্চিত পূর্বাচলের আদিবাসিন্দাদের ৩শ’ ফুট সড়কে অবস্থান : বিক্ষোভ অব্যাহত
দেশে সংস্কার ও জবাবদিহি প্রতিষ্ঠার আহ্বান
ছাত্রলীগের হামলার শিকার শিক্ষার্থীদের মামলা করতে বললেন উপদেষ্টা আসিফ মাহমুদ
উম্মাহর কল্যাণে মুসলমানদের ঐক্যের বিকল্প নেই
বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ১৪
পুলিশের লুট হওয়া অস্ত্র অপরাধে ব্যবহারের আশঙ্কা
মস্কোয় হামলার উপযুক্ত ক্ষেপণাস্ত্র কিয়েভে পাঠাবে না জার্মানি
জিয়ার ভূমিকাকে অবহেলা করায় পাহাড়ে সমস্যা হচ্ছে : জামায়াত নেতা শাহজাহান চৌধুরী
মানুষের প্রত্যাশা পূরণ করতে ঐক্যবদ্ধ থাকার কোনো বিকল্প নেই: তারেক রহমান
বিচার বিভাগে দুর্নীতির বিরুদ্ধে জিরো টলারেন্স ঘোষণা প্রধান বিচারপতির
একদিনে ৮৪৩ জনের ডেঙ্গু শনাক্ত, মৃত্যু ১
কুষ্টিয়ায় বিদ্যুৎস্পৃষ্টে সুগার মিলের নিরাপত্তা প্রহরীর মৃত্যু
সাজেক ভ্রমণে আটকা পড়েছেন ৮০০ পর্যটক
‘শুধু সংস্কারে থেমে থাকলেই চলবে না, অর্থনৈতিক মুক্তি অর্জন করতে হবে’ : তারেক রহমান
যে কোনো ষড়যন্ত্রের দাঁতভাঙা জবাব দিতে প্রস্তুত: বিএনপির স্থানীয় কমিটির সদস্য ডা. জাহিদ
ভোলায় ঝড়ের কবলে পড়ে ১০ ট্রলারডুবি, নিখোঁজ ১
ছাত্ররাজনীতিতে গুণগত সংস্কার প্রয়োজন : শিবির সেক্রেটারী
মতলবে ছেলের ইটের আঘাতে মায়ের মৃত্যু : আটক ছেলে
মব জাস্টিসের প্রতিবাদে চবিতে মানববন্ধন
গুলিবিদ্ধ ইলহামের জন্য তারেক রহমানের অনন্য উদ্যোগ