চেতনানাশক ছাড়াই গাজার হাসপাতালগুলোতে চলছে অস্ত্রোপচার
১১ নভেম্বর ২০২৩, ১১:১২ এএম | আপডেট: ১১ নভেম্বর ২০২৩, ১১:১২ এএম
ছোট্ট মেয়েটি ব্যথার তীব্রতায় কাতরাচ্ছিল, কাঁদছিল। বারবার ‘মা’ ‘মা’ বলে চিৎকার করছিল। তবু ব্যথা ও চেতনানাশক ছাড়াই মেয়েটিকে চেপে ধরে তার মাথার ক্ষত সেলাই করছিলেন একজন নার্স। এ ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। কারণ, আল শিফা হাসপাতালে ব্যথা ও চেতনানাশকের মজুত ফুরিয়ে গেছে। ফলে এসব ছাড়াই চিকিৎসা চালাতে হচ্ছে গাজা উপত্যকার এই হাসপাতালে। এমনকি সিজারিয়ান অস্ত্রোপচারও হচ্ছে অ্যানেসথেসিয়া ছাড়াই। খবর রয়টার্সের।
গাজায় যুদ্ধ শুরুর পরের মুহূর্তগুলোকে নিজের জীবনের সবচেয়ে বাজে সময় বলে মনে করেন হাসপাতালটির নার্স আবু এমাদ হাসনাইন। যুদ্ধ শুরুর পর থেকে তিনি খুব কাছ থেকে অসংখ্য আহত মানুষের আর্তনাদ শুনেছেন। অগণিত মানুষের লাশের স্তূপ দেখেছেন।
ব্যথা উপশম ও চেতনানাশক ওষুধের ঘাটতির মধ্যেই আহতদের চিকিৎসাসেবা দিচ্ছেন তিনিসহ গাজার অন্য চিকিৎসক ও তাঁদের সহযোগীরা। এমন পরিস্থিতি সামাল দেওয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে হাসানিন বলেন, ‘কখনো কখনো রোগীদের ব্যথা কমানোর জন্য জীবাণুমুক্ত গজ মুখে কামড় দিয়ে ধরে থাকতে দিই আমরা।’ শিশুটিকে দেখিয়ে হাসানিন বলেন, শিশুদের ব্যথা সহ্য করার মতো না। তাদের বয়সের চেয়ে ব্যথা সহ্য করতে হচ্ছে কয়েক গুণ।
ইসরায়েলের বিমান হামলায় আহত হন মধ্যবয়সী নেমার আবু থাইর। পিঠের ক্ষতস্থানে জীবাণুনাশক দিয়ে ড্রেসিং করার জন্য আল শিফা হাসপাতালে এসেছেন তিনি। তিনি বলেন, ‘ক্ষতটি সেলাই করার সময় কোনো ব্যথা উপশমের ওষুধ দেওয়া হয়নি। সেলাই শেষ না হওয়া পর্যন্ত আমি কোরআন তিলাওয়াত করছিলাম।’
আল শিফা হাসপাতালের পরিচালক মোহাম্মদ আবু সেলমেয়াহ বলেন, যখন একই সময়ে খুব বেশি আহত রোগীকে আনা হয়, তখন ব্যথানাশক ছাড়া তাঁদের চিকিৎসা করা ছাড়া আর কোনো উপায় থাকে না। উদাহরণ হিসেবে গত ১৭ অক্টোবর আল আহলি আরব হাসপাতালে হামলার প্রসঙ্গ তোলেন তিনি। সেলমেয়াহ আরও বলেন, ‘ওই বিস্ফোরণের পরপরই আল শিফা হাসপাতালে অন্তত ২৫০ রোগী আসে। কিন্তু আমাদের মাত্র ১২টি অস্ত্রোপচারকক্ষ রয়েছে। আমরা যদি একজন করে অস্ত্রোপচার করার জন্য অপেক্ষা করতাম, তাহলে আমরা আহত অনেক ব্যক্তিকে হারাতাম।’
হাসপাতালটির পরিচালক আরও বলেন, ‘রোগীদের জীবন বাঁচানোর জন্য অ্যানেসথেসিয়া ছাড়াই অপারেশন করতে বাধ্য হয়েছিলাম। কিছু ক্ষেত্রে সাধারণ অ্যানেসথেসিয়া বা দুর্বল ব্যথানাশক ব্যবহার করা হয়েছিল।’
গত ৭ অক্টোবর থেকে গাজায় ইসরায়েলি বাহিনীর চলমান হামলায় ইতিমধ্যে ১১ হাজার ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছে। আর আহত হয়েছে হাজার হাজার মানুষ।
বিভাগ : আন্তর্জাতিক
মন্তব্য করুন
এই বিভাগের আরও
আরও পড়ুন
সুনামগঞ্জে ২২ লাখ টাকার ইলিশ জব্দ
ছাত্রজনতা হত্যার নির্দেশদাতা বিতর্কিত পুলিশ সদস্যরা এখনো লাপাত্তা
রোগীদের সুস্থ করে তুলতে ‘রোবটের মতো’ কাজ করেছে লেবাননের যে চিকিৎসক
মোদীর সফরের আগে ভারত সরকারের নামে যুক্তরাষ্ট্রে মামলা পান্নুনের
মিয়ানমার থেকে মণিপুরে অনুপ্রবেশ ৯০০ জঙ্গির, দাবি ভারতের
৪৩ দিন পর কাজে ফিরলেন আর জি করের জুনিয়র চিকিৎসকরা
গিল-পান্তের ব্যাটে পিষ্ট বাংলাদেশ
ফের মৃত্যুর খেলা! ‘স্কুইড গেম সিজন ২’র টিজারে বিপদের বার্তা
অর্ধকোটি টাকার ক্ষয়ক্ষতি কচুয়ায় যুবলীগ নেতার ৪টি দোকান পুড়েছে দুর্বৃত্তরা
চাঁদপুরের হাজীগঞ্জে বিএনপির দু’পক্ষে সংঘর্ষে আহত অর্ধশতাধিক
লেবাননের বৈরুতে ইসরাইলি হামলায় হিজবুল্লাহর শীর্ষ কমান্ডারসহ নিহত ১৪
রাঙামাটিতে সেনা, বিজিবি ও পুলিশের টহল, পরিস্থিতি শান্ত
পরমাণু দূষিত পানি নিয়ে চীন ও জাপানের কিছু ঐকমত্য
ঝিকরগাছায় বিএনপি নেতা খায়রুজ্জামান মিনুসহ ২১ নেতাকর্মী বহিষ্কার
হিজবুল্লাহর ভয়ে ইসরাইলিদের আশ্রয়কেন্দ্রের কাছে থাকার নির্দেশ
ভারতের ঘুম হারাম করে পাকিস্তানকে ভয়ঙ্কর হেলিকপ্টার দিচ্ছে চীন
পাকিস্তানে সেনানিবাসে আত্মঘাতি হামলা, সেনাসহ নিহত ১৮
জুলাই বিপ্লবে শহিদের সংখ্যা ১৪২৩, আহত ২২ হাজার
নড়াইলে স্বেচ্ছাসেবক লীগ নেতা জুয়েল গ্রেফতার
বিচারবিভাগ নিয়ে আজ রোডম্যাপ দেবেন প্রধান বিচারপতি