ফ্ল্যাট বিক্রির নামে প্রতারণা মামলায় ইতিমধ্যেই ইডির জেরার মুখে পড়েছেন পশ্চিমবঙ্গের বসিরহাটের তৃণমূল এমপি। এই মামলায় সোমবার শুনানির দিন ধার্য ছিল আলিপুর জজ কোর্টে। তারকা সাংসদের আদালতে হাজিরা দেয়ার আবেদনের শুনানি হয় এদিন। তবে আদালতের তরফে চূড়ান্ত নির্দেশ আসেনি। দু-পক্ষের সওয়াল-জবাবের পর নুসরাতকে হাজিরা দিতে হবে কিনা সেই নিয়ে নিশ্চিতভাবে কিছু জানাননি বিচারক। মামলার পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য হয়েছে এ মাসের ২২ তারিখ।

প্রতারিতদের আইনজীবী আদালতের সামনে দরবার করেন, এই মামলায় কোর্টে সশরীরে হাজিরা দিতে হবে তারকা এমপিকে। সরকারি আইনজীবী অবশ্য বলেন, শুধুমাত্র চার্জ গঠনের দিনই নায়িকার উপস্থিতি প্রয়োজন।

সেভেন সেন্সেস ইনফ্রাস্ট্রাকচার প্রাইভেট লিমিটেড নামে একটি সংস্থার অধিকর্তা তথা ডিরেক্টর ছিলেন নুসরাত। ২০১৪ সালে তার সংস্থা ৪২৯ জনের কাছ থেকে ৫ লক্ষ ৫৫ হাজার রুপি করে নিয়েছিল ৩ বিএইচকে ফ্ল্যাট দেয়ার নাম করে। কিন্তু ৯ বছর পেরিয়ে গেলেও কেউ ফ্ল্যাট হাতে পায়নি। না হাতে পেয়েছে টাকা। নুসরাতের বিরুদ্ধে অভিযোগ, অবসরপ্রাপ্ত ব্যঙ্ক কর্মীদের টাকা মেরে তিনি নিজের ফ্ল্যাট কিনেছেন। এরপর বিজেপির যুব নেতা শঙ্কুদেব পণ্ডা প্রতারণার শিকার হওয়া বৃদ্ধদের নিয়ে ইডি দফতরে গিয়ে নালিশ জানিয়ে এসেছিলেন গত সেপ্টেম্বর মাসে।

তারপর থেকেই এই মামলায় সক্রিয় ইডি। নায়িকাকে জেরাও করেছে সংস্থা। তদন্তকারীরা নুসরাতের কাছে বেশকিছু নথি তলব করেছিল। ১২ সেপ্টেম্বর নুসরাত জাহানকে বিধাননগরের সিজিও কমপ্লেক্সে দীর্ঘ জেরা করেন ইডির গোয়েন্দারা। কিন্তু ইডি-র পালটা অভিযোগ, নুসরাত পুরো তথ্য দেননি। যদিও নায়িকার দাবি, ‘সত্য সামনে আসবেই’।

প্রসঙ্গত, দুর্নীতির অভিযোগ ওঠার পরপরই প্রেস ক্লাবে একটি সাংবাদিক সম্মেলন করেছিলেন নুসরাত জাহান। যেখানে তৃণমূল এমপি দাবি করেছিলেন, যে সংস্থা ঘিরে তাকে কাঠগড়ায় দাঁড় করানো হচ্ছে, সেই সংস্থা থেকে ঋণ নিয়ে তিনি নিজের ফ্ল্যাট কেনেন। আর তার ঋণ সুদসহ ফিরিয়েও দেন। নুসরাত টাকার অঙ্কের হিসেব দিয়ে জানান, ‘১ কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার ২৮৫ রুপি’ তিনি ঋণ নিয়েছিলেন। ২০১৭ সালের ৬ মে সুদসহ ১ কোটি ৪০ লাখ ৭১ হাজার ৯৯৫ রুপি ফেরত দিয়েছেন। সঙ্গে দাবি করেন, ২০১৭-র ১লা মার্চ তিনি ওই সংস্থা থেকে ইস্তফাও দিয়ে দিয়েছেন। যদিও নুসরাতের এই দাবি অস্বীকার করেছেন কোম্পানির মালিক রাকেশ সিং।